অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানের রাজনীতিতে এক বিস্ময়কর চরিত্র ইমরান খান। তাঁকে গুলি করা হয়েছে, জেলে পাঠানো হয়েছে, তাঁর রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং মূলধারার মিডিয়া থেকে তাঁর ও দলের থেকে নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যত কিছুই করা হোক না কেন, ইমরান খান রয়ে গেছেন অপ্রতিরোধ্য, তিনি যেন শত আঘাতেও বলীয়ান।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলই তার প্রমাণ। সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। ভোটের দিনের শত অনিয়ম সত্ত্বেও পিটিআইয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের একটি সুযোগ রয়েছে।
নির্বাচনে পিটিআইয়ের বিখ্যাত প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট নিষিদ্ধ করা হয়। গতকাল দেশব্যাপী মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে পিটিআই নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার নিজেদের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। পাকিস্তানের হাইকোর্ট এই ধরনের পদক্ষেপকে অবৈধ বলে রায় দিলেও সরকার নিরাপত্তার কারণে এমনটি করেছিল বলে দাবি করেছে।
এ ছাড়া নির্বাচনে বুথফেরত জরিপ নিষিদ্ধ করা হয়। পিটিআই অভিযোগ করেছে, তাদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণে বাধা দেওয়া হয়। ইমরান খানের সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফি বুখারি ব্রিটিশ সাময়িকী ‘টাইম’কে বলেন, ‘যে পরিমাণে কারচুপি হয়েছে, তা অবর্ণনীয়।’
এত অনিয়মের পরেও যখন ফলাফল আসতে শুরু করে—স্বাভাবিকতার চেয়ে ১০ ঘণ্টা পরে, পর্যবেক্ষকেরা যেটিকে অত্যন্ত সন্দেহজনকভাবে দেখছেন—তাতে পিটিআই তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল। সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, মোট ১৫৬টি আসনের মধ্যে পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি, পিএমএল-এন পেয়েছে ৪৬টি, পিপিপি পেয়েছে ৩৯টি ও অন্যান্য ৯টি।
নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর পছন্দের প্রার্থী। অতীতে তাঁকে তিনবার সমর্থন ও ক্ষমতাচ্যুত করলেও ৭৪ বছর বয়সী এই রাজনীতিক যুক্তরাজ্য থেকে পাকিস্তানে ফেরার অনুমতি পেয়েছেন সামরিক বাহিনীর প্রচ্ছন্ন সমর্থনেই। তাঁর বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির অভিযোগ এবং রাজনীতি থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে ইমরান খান এবং পিটিআই নির্মূল করতে শরিফকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার ফলাফল হিতে বিপরীত হতে চলেছে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সরকার ও পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক মায়া টিউডর বলেছেন, সেনাবাহিনীর নিরঙ্কুশ সমর্থন ছাড়া কেউ শাসন করে না। এবার যা আলাদা, তা হলো সামরিক বাহিনী প্রকাশ্যে পিটিআইকে টার্গেট করছে। কারণ, দলটির তৃণমূল সমর্থন রয়েছে এবং তাঁরা প্রযুক্তিগতভাবে সচেতন।
সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে পিটিআই আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেলেও দলটির সরকার গঠনে অনেক বাধা রয়েছে।
দলটির প্রার্থীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য দলীয়ভাবে ভোট দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, ফলে অনেকের দলত্যাগের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া পিটিআই নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় পরিষদের ৭০টি ‘সংরক্ষিত আসনে’ ভাগ পাওয়ার যোগ্য হবে না, যেগুলো শুধু রাজনৈতিক দলগুলো আসনসংখ্যার অনুপাতে ভাগ পাবে। তারপরে, ইমরান খান কারাগারে আছেন এবং নিজে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারেননি। অপর দিকে, ভোটের আগে পিএমএল-এন এবং পিপিপির মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তির ব্যাপক গুজব ছিল। গুঞ্জন উঠেছিল, শরিফ প্রধানমন্ত্রী এবং বিলওয়াল জারদারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, দল দুটির জোট গঠনের সুযোগ রয়েছে।
তবু নির্বাচনে পিটিআই যে শক্তি দেখিয়েছে, তা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জন্য এক বড় ঘা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ের আগে দেশটির জেনারেলরা ইমরান খানকে সমর্থন করলেও পরবর্তীকালে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হন। তারপর ইমরান খান একটি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন এবং ১৮০টির বেশি মামলার আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তিনি দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস এবং একটি ‘অ-ইসলামিক’ বিয়ে করার জন্য মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
তবু ভোটের আগে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল গগনচুম্বী, বিশেষ করে তরুণ পাকিস্তানিদের মধ্যে। যেখানে দেশটির প্রায় ১৩ কোটি ভোটারের মধ্যে ১৮-৩৫ বছর বয়সী ভোটারই ৪৫ শতাংশ। উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, এটা খুব স্পষ্ট যে সামরিক বাহিনী দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিল এবং ফলাফলে পিটিআই যে চমক দেখাচ্ছে, তা জেনারেলদের ইগোতে বড় ধাক্কা।
পাকিস্তানের জনগণ ও রাজনীতিবিদেরা এখন সম্পূর্ণ ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। নিঃসন্দেহে এই ফলাফল বড় চমক দেখাবে, যেখানে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য সরকার গঠন নিয়ে আড়ালে চলবে শত গোপন বৈঠক। তবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী ২৪ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানের ক্ষমতার শূন্যতা কাটানোর অভিজ্ঞতা খুব কম। আর যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেই সরকারের সমস্যার কোনো শেষ থাকবে না।
পাকিস্তানিরা বর্তমানে এশিয়ার সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে রয়েছে। এক বছরের মধ্যে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে ২৯ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত গ্রীষ্মে আইএমএফের ৩০০ কোটি টাকা ঋণ পাওয়ায় দেশটি দেউলিয়াত্ব থেকে বেঁচে যায়। এ ছাড়া অর্থনৈতিক পতন এড়াতে আগামী মাসের মধ্যে পাকিস্তান আইএমএফের সঙ্গে আরেকটি নতুন চুক্তি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে সীমান্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতিও ভালো নয়। আফগান তালেবানের সঙ্গে ঐতিহাসিক দৃঢ় সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসী হামলা এবং কয়েক হাজার আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কার করা নিয়ে কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। সেসব আফগান শরণার্থীর মধ্যে অনেকে কয়েক দশক ধরে দেশটিতে বসবাস করতেন।
গত মাসে পাকিস্তান-ইরান একে অপরের ভূখণ্ডে জঙ্গিঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। সম্প্রতি ভারতকেও পাকিস্তানের মাটিতে গুপ্তহত্যা অভিযান চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে ইসলামাবাদ। ফলে ভারতের সঙ্গেও চিরাচরিত তিক্ত সম্পর্ক বিরাজ করেছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী পিটিআইকে ক্ষমতার বাইরে রাখলে পিটিআই সমর্থকেরা অধিকার হরণের কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটাও এক বড় প্রশ্ন। গত বছরের ৯ মে ইমরান খানকে সাময়িক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পিটিআই-সমর্থকেরা সামরিক চত্বরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছিল। ফলে পিটিআই ক্ষমতাবঞ্চিত হলে দেশটির অর্থনীতি ভয়াবহতার দিকে যেতে পারে।
এদিকে, কারাগারে থাকলেও গতকালের নির্বাচনে সাবেক এই ক্রিকেটার দেশটির জেনারেলদের রাজনৈতিক শক্তির সর্বোচ্চ শিক্ষা দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। কুগেলম্যান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী চায় পরবর্তী সরকার অর্থনৈতিক ফাঁড়া কাটাতে ব্যস্ত থাকুক, আর ইমরান খানকে কয়েক বছর কারাবন্দী রেখে তাঁর রাজনৈতিক শক্তির কোমর ভেঙে দিতে। কিন্তু এতে জেনারেলদের সব চ্যালেঞ্জ কেবল বাড়বে। কারণ, এতে পিটিআই শিবির আরও সংক্ষুব্ধ ও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।’
পাকিস্তানের রাজনীতিতে এক বিস্ময়কর চরিত্র ইমরান খান। তাঁকে গুলি করা হয়েছে, জেলে পাঠানো হয়েছে, তাঁর রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং মূলধারার মিডিয়া থেকে তাঁর ও দলের থেকে নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যত কিছুই করা হোক না কেন, ইমরান খান রয়ে গেছেন অপ্রতিরোধ্য, তিনি যেন শত আঘাতেও বলীয়ান।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলই তার প্রমাণ। সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। ভোটের দিনের শত অনিয়ম সত্ত্বেও পিটিআইয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের একটি সুযোগ রয়েছে।
নির্বাচনে পিটিআইয়ের বিখ্যাত প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট নিষিদ্ধ করা হয়। গতকাল দেশব্যাপী মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে পিটিআই নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার নিজেদের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। পাকিস্তানের হাইকোর্ট এই ধরনের পদক্ষেপকে অবৈধ বলে রায় দিলেও সরকার নিরাপত্তার কারণে এমনটি করেছিল বলে দাবি করেছে।
এ ছাড়া নির্বাচনে বুথফেরত জরিপ নিষিদ্ধ করা হয়। পিটিআই অভিযোগ করেছে, তাদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণে বাধা দেওয়া হয়। ইমরান খানের সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফি বুখারি ব্রিটিশ সাময়িকী ‘টাইম’কে বলেন, ‘যে পরিমাণে কারচুপি হয়েছে, তা অবর্ণনীয়।’
এত অনিয়মের পরেও যখন ফলাফল আসতে শুরু করে—স্বাভাবিকতার চেয়ে ১০ ঘণ্টা পরে, পর্যবেক্ষকেরা যেটিকে অত্যন্ত সন্দেহজনকভাবে দেখছেন—তাতে পিটিআই তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল। সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, মোট ১৫৬টি আসনের মধ্যে পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি, পিএমএল-এন পেয়েছে ৪৬টি, পিপিপি পেয়েছে ৩৯টি ও অন্যান্য ৯টি।
নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর পছন্দের প্রার্থী। অতীতে তাঁকে তিনবার সমর্থন ও ক্ষমতাচ্যুত করলেও ৭৪ বছর বয়সী এই রাজনীতিক যুক্তরাজ্য থেকে পাকিস্তানে ফেরার অনুমতি পেয়েছেন সামরিক বাহিনীর প্রচ্ছন্ন সমর্থনেই। তাঁর বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির অভিযোগ এবং রাজনীতি থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে ইমরান খান এবং পিটিআই নির্মূল করতে শরিফকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার ফলাফল হিতে বিপরীত হতে চলেছে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সরকার ও পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক মায়া টিউডর বলেছেন, সেনাবাহিনীর নিরঙ্কুশ সমর্থন ছাড়া কেউ শাসন করে না। এবার যা আলাদা, তা হলো সামরিক বাহিনী প্রকাশ্যে পিটিআইকে টার্গেট করছে। কারণ, দলটির তৃণমূল সমর্থন রয়েছে এবং তাঁরা প্রযুক্তিগতভাবে সচেতন।
সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে পিটিআই আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেলেও দলটির সরকার গঠনে অনেক বাধা রয়েছে।
দলটির প্রার্থীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য দলীয়ভাবে ভোট দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, ফলে অনেকের দলত্যাগের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া পিটিআই নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় পরিষদের ৭০টি ‘সংরক্ষিত আসনে’ ভাগ পাওয়ার যোগ্য হবে না, যেগুলো শুধু রাজনৈতিক দলগুলো আসনসংখ্যার অনুপাতে ভাগ পাবে। তারপরে, ইমরান খান কারাগারে আছেন এবং নিজে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারেননি। অপর দিকে, ভোটের আগে পিএমএল-এন এবং পিপিপির মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তির ব্যাপক গুজব ছিল। গুঞ্জন উঠেছিল, শরিফ প্রধানমন্ত্রী এবং বিলওয়াল জারদারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, দল দুটির জোট গঠনের সুযোগ রয়েছে।
তবু নির্বাচনে পিটিআই যে শক্তি দেখিয়েছে, তা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জন্য এক বড় ঘা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ের আগে দেশটির জেনারেলরা ইমরান খানকে সমর্থন করলেও পরবর্তীকালে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হন। তারপর ইমরান খান একটি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন এবং ১৮০টির বেশি মামলার আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তিনি দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস এবং একটি ‘অ-ইসলামিক’ বিয়ে করার জন্য মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
তবু ভোটের আগে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল গগনচুম্বী, বিশেষ করে তরুণ পাকিস্তানিদের মধ্যে। যেখানে দেশটির প্রায় ১৩ কোটি ভোটারের মধ্যে ১৮-৩৫ বছর বয়সী ভোটারই ৪৫ শতাংশ। উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, এটা খুব স্পষ্ট যে সামরিক বাহিনী দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিল এবং ফলাফলে পিটিআই যে চমক দেখাচ্ছে, তা জেনারেলদের ইগোতে বড় ধাক্কা।
পাকিস্তানের জনগণ ও রাজনীতিবিদেরা এখন সম্পূর্ণ ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। নিঃসন্দেহে এই ফলাফল বড় চমক দেখাবে, যেখানে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য সরকার গঠন নিয়ে আড়ালে চলবে শত গোপন বৈঠক। তবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী ২৪ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানের ক্ষমতার শূন্যতা কাটানোর অভিজ্ঞতা খুব কম। আর যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেই সরকারের সমস্যার কোনো শেষ থাকবে না।
পাকিস্তানিরা বর্তমানে এশিয়ার সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে রয়েছে। এক বছরের মধ্যে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে ২৯ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত গ্রীষ্মে আইএমএফের ৩০০ কোটি টাকা ঋণ পাওয়ায় দেশটি দেউলিয়াত্ব থেকে বেঁচে যায়। এ ছাড়া অর্থনৈতিক পতন এড়াতে আগামী মাসের মধ্যে পাকিস্তান আইএমএফের সঙ্গে আরেকটি নতুন চুক্তি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে সীমান্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতিও ভালো নয়। আফগান তালেবানের সঙ্গে ঐতিহাসিক দৃঢ় সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসী হামলা এবং কয়েক হাজার আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কার করা নিয়ে কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। সেসব আফগান শরণার্থীর মধ্যে অনেকে কয়েক দশক ধরে দেশটিতে বসবাস করতেন।
গত মাসে পাকিস্তান-ইরান একে অপরের ভূখণ্ডে জঙ্গিঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। সম্প্রতি ভারতকেও পাকিস্তানের মাটিতে গুপ্তহত্যা অভিযান চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে ইসলামাবাদ। ফলে ভারতের সঙ্গেও চিরাচরিত তিক্ত সম্পর্ক বিরাজ করেছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী পিটিআইকে ক্ষমতার বাইরে রাখলে পিটিআই সমর্থকেরা অধিকার হরণের কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটাও এক বড় প্রশ্ন। গত বছরের ৯ মে ইমরান খানকে সাময়িক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পিটিআই-সমর্থকেরা সামরিক চত্বরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছিল। ফলে পিটিআই ক্ষমতাবঞ্চিত হলে দেশটির অর্থনীতি ভয়াবহতার দিকে যেতে পারে।
এদিকে, কারাগারে থাকলেও গতকালের নির্বাচনে সাবেক এই ক্রিকেটার দেশটির জেনারেলদের রাজনৈতিক শক্তির সর্বোচ্চ শিক্ষা দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। কুগেলম্যান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী চায় পরবর্তী সরকার অর্থনৈতিক ফাঁড়া কাটাতে ব্যস্ত থাকুক, আর ইমরান খানকে কয়েক বছর কারাবন্দী রেখে তাঁর রাজনৈতিক শক্তির কোমর ভেঙে দিতে। কিন্তু এতে জেনারেলদের সব চ্যালেঞ্জ কেবল বাড়বে। কারণ, এতে পিটিআই শিবির আরও সংক্ষুব্ধ ও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।’
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে