আব্দুর রহমান
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সম্প্রতি নতুন কৌশলগত ধারণাপত্র প্রণয়ন করেছে। এতে নতুন কিছু না থাকলেও গুণগত বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কী অর্জন করতে চায় ন্যাটো? কেমন হবে ন্যাটোর কাঙ্ক্ষিত নতুন বিশ্বের চেহারা?
সে সম্পর্কে অবশ্য কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘ন্যাটো এমন একটি জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে যেখানে একুশ শতকের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (২০২৫ থেকে ২০৫০ সাল) যে বাস্তবতা তা প্রতিফলিত করবে।’
নতুন কৌশলগত ধারণাপত্রে ন্যাটো শত্রু–প্রতিপক্ষ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেশ স্পষ্টবাদী। জোটটি চীনকে তাদের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং রাশিয়াকে তালিকাভুক্ত করেছে ‘উল্লেখযোগ্য ও সরাসরি হুমকি’ হিসেবে। চীনকে এভাবে চিহ্নিত করার পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে মস্কো-বেইজিং ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতাকেই কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, চীনকে এভাবে চিহ্নিত করার ফলে বিশ্বে একটি অস্থির অবস্থা তৈরি হতে পারে।
বেইজিং বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ন্যাটোর তথাকথিত নতুন কৌশলগত ধারণাপত্র প্রকৃত বিষয়কে অস্বীকার করে এবং তা লিখিতভাবে চীনের পররাষ্ট্রনীতির ওপর কালিমা লেপনের একটি কৌশল মাত্র!’ চীনের প্রতিক্রিয়া এখানেই থেমে নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত চীনা প্রতিনিধি দল মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে বলেছে, ন্যাটো এর মাধ্যমে বাকি বিশ্বের জন্য ‘পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ’ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো অ্যান্ড্রু স্মল এ প্রসঙ্গে সিএনএনকে বলেছেন, ‘ন্যাটোর কৌশলগত ধারণাপত্র এবং জি–৭ সম্মেলনে চীনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহৃত ভাষা প্রকৃতপক্ষে চীনের জন্য একটি ধাক্কা।’
চীন ছাড়াও এই কৌশলগত ধারণাপত্রে রাশিয়াকে ন্যাটোর ‘সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও সরাসরি হুমকি’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ন্যাটোর মাদ্রিদ সম্মেলনে জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতা রাশিয়াকে মোকাবিলায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।’ কিন্তু মজার বিষয় হলো, যুদ্ধ শুরু হওয়ার বেশ কয়েক মাসেও ন্যাটো রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন হুট করে জোটটি রাশিয়াকে তাদের জন্য সরাসরি হুমকি বলে ঘোষণা করছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ন্যাটো আবারও সেই স্নায়ুযুদ্ধকালীন অবস্থানেই ফিরে গেল। আরও স্পষ্ট করে বললে, জোটটি যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল—কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নকে রুখতে—সেই আগের অবস্থানে আবারও ফিরে গেল। তবে, রাশিয়া শুরুতেই যেমন প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়টি পছন্দ করেনি, অস্ত্রের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এবার ন্যাটোর সম্প্রসারণ (সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে জোটভুক্তকরণ) এবং নতুন কৌশলগত ধারণাপত্র প্রকাশের মাধ্যমে জোটটি রাশিয়াকে আবারও তাদের সরাসরি শত্রু হিসেবে ঘোষণা দিল।
নিউইয়র্কভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন বলছে, রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া এখনো খুব শীতল। কিন্তু দেশটির উচ্চ পর্যায়ের নেতা এবং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে যে কোনো পদক্ষেপ নেবেন। গত মে মাসে পুতিন জানিয়েছিলেন, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়া নিয়ে তাঁর কোনো সমস্যা নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত ন্যাটো দেশ দুটোতে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ না করছে।
কিন্তু পুতিনের এই অবস্থানকে ন্যাটো নিজেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া, ধারণাপত্রে ন্যাটো সদস্যদের রক্ষায় ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাপ্রোচে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। বলেছে, জোট যেকোনো দিক থেকে, যেকোনো উৎস থেকে আসা হুমকি মোকাবিলা করবে। তবে এসবই করা হবে শান্তি এবং গণতন্ত্র রক্ষায়।
এখন প্রশ্ন হলো—এই ঘোষণা এবং রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করার মধ্যে সম্পর্ক কী। বিশ্লষকেরা মনে করছেন, এর মানে হলো রাশিয়াকে মোকাবিলা করতে ন্যাটোর সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখা। এটিই আশঙ্কার কথা। রাশিয়া সব সময়ই এ ধরনের সম্প্রসারণের বিরোধিতা করে আসছে। ন্যাটো ফিনল্যান্ডে সামরিক ঘাঁটি বসালে মস্কো হাত গুটিয়ে বসে থাকার কথা নয়।
চীন এবং রাশিয়ার বিষয় ছাড়াও আরও বেশ কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে ন্যাটোর নতুন কৌশলগত ধারণাপত্রে। আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা কামনার অমীয় বাণী দিয়ে শুরু হয়েছে ধারণাপত্র। জোটভুক্ত দেশের আঞ্চলিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র রক্ষা, বিধিবদ্ধ বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে চায় ন্যাটো। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি দিয়ে ধারণাপত্রের মুখবন্ধ শেষ করা হয়েছে তা হলো—তাঁদের লক্ষ্য পরিষ্কার। তাঁরা সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, মানবাধিকার, বিধিবদ্ধ বিশ্ব ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ও আগ্রাসন মুক্ত বিশ্ব গড়তে চায়। যেখানে প্রত্যেক দেশ নিজ নিজ নীতি-কৌশল বেছে নিতে পারবে। এসব লক্ষ্য যেসব দেশ ধারণ করে তারা জোটের মিত্র বলে বিবেচিত হবে।
এখন প্রশ্ন হলো—যেসব দেশ এই আদর্শের অনুসারী বলে বিবেচিত হবে না তাদের ব্যাপারে ন্যাটোর অবস্থা কী হবে? চীন ও রাশিয়ার মতো ‘চ্যালেঞ্জ’ বা ‘হুমকি’ হিসেবে মনে করা হবে? তাহলে, ন্যাটোর দাবিকৃত শান্তি ও নিরাপদ বিশ্ব এবং ‘প্রত্যেক দেশ তার নিজ নিজ নীতি অবলম্বন করবে’ এই দাবির কোনো সারবত্তা থাকে? ন্যাটো কি তবে স্ববিরোধিতায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এই স্ববিরোধিতার ফলাফল হিসেবে ন্যাটো কি বাকি বিশ্বের জন্য ‘পদ্ধিতগত চ্যালেঞ্জ’ তৈরি করেছে না? যেখানে এরই মধ্যে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলাফল পশ্চিমকেই দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছে, ভারতের মতো বৃহৎ রাষ্ট্রকেও মস্কোর প্রতি ঝুঁকতে প্ররোচিত করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থানও অস্পষ্ট।
ন্যাটোর কাঙ্ক্ষিত নতুন বিশ্বের রূপ কেমন হবে সেটি নির্ভর করছে আগামী দিনে ন্যাটো কীভাবে তার সমর–নিরাপত্তা কৌশল সাজায় এবং রাশিয়া–চীনসহ ন্যাটোর ‘মতাদর্শের’ বাইরে থাকা দেশগুলো সেই কৌশলের বিপরীতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তার ওপর।
তথ্যসূত্র: সিএনএন, রয়টার্স, জার্মান মার্শাল ফান্ড এবং কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন–সিএফআর
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সম্প্রতি নতুন কৌশলগত ধারণাপত্র প্রণয়ন করেছে। এতে নতুন কিছু না থাকলেও গুণগত বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কী অর্জন করতে চায় ন্যাটো? কেমন হবে ন্যাটোর কাঙ্ক্ষিত নতুন বিশ্বের চেহারা?
সে সম্পর্কে অবশ্য কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘ন্যাটো এমন একটি জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে যেখানে একুশ শতকের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (২০২৫ থেকে ২০৫০ সাল) যে বাস্তবতা তা প্রতিফলিত করবে।’
নতুন কৌশলগত ধারণাপত্রে ন্যাটো শত্রু–প্রতিপক্ষ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেশ স্পষ্টবাদী। জোটটি চীনকে তাদের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং রাশিয়াকে তালিকাভুক্ত করেছে ‘উল্লেখযোগ্য ও সরাসরি হুমকি’ হিসেবে। চীনকে এভাবে চিহ্নিত করার পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে মস্কো-বেইজিং ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতাকেই কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, চীনকে এভাবে চিহ্নিত করার ফলে বিশ্বে একটি অস্থির অবস্থা তৈরি হতে পারে।
বেইজিং বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ন্যাটোর তথাকথিত নতুন কৌশলগত ধারণাপত্র প্রকৃত বিষয়কে অস্বীকার করে এবং তা লিখিতভাবে চীনের পররাষ্ট্রনীতির ওপর কালিমা লেপনের একটি কৌশল মাত্র!’ চীনের প্রতিক্রিয়া এখানেই থেমে নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত চীনা প্রতিনিধি দল মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে বলেছে, ন্যাটো এর মাধ্যমে বাকি বিশ্বের জন্য ‘পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ’ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো অ্যান্ড্রু স্মল এ প্রসঙ্গে সিএনএনকে বলেছেন, ‘ন্যাটোর কৌশলগত ধারণাপত্র এবং জি–৭ সম্মেলনে চীনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহৃত ভাষা প্রকৃতপক্ষে চীনের জন্য একটি ধাক্কা।’
চীন ছাড়াও এই কৌশলগত ধারণাপত্রে রাশিয়াকে ন্যাটোর ‘সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও সরাসরি হুমকি’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ন্যাটোর মাদ্রিদ সম্মেলনে জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতা রাশিয়াকে মোকাবিলায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।’ কিন্তু মজার বিষয় হলো, যুদ্ধ শুরু হওয়ার বেশ কয়েক মাসেও ন্যাটো রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন হুট করে জোটটি রাশিয়াকে তাদের জন্য সরাসরি হুমকি বলে ঘোষণা করছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ন্যাটো আবারও সেই স্নায়ুযুদ্ধকালীন অবস্থানেই ফিরে গেল। আরও স্পষ্ট করে বললে, জোটটি যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল—কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নকে রুখতে—সেই আগের অবস্থানে আবারও ফিরে গেল। তবে, রাশিয়া শুরুতেই যেমন প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়টি পছন্দ করেনি, অস্ত্রের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এবার ন্যাটোর সম্প্রসারণ (সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে জোটভুক্তকরণ) এবং নতুন কৌশলগত ধারণাপত্র প্রকাশের মাধ্যমে জোটটি রাশিয়াকে আবারও তাদের সরাসরি শত্রু হিসেবে ঘোষণা দিল।
নিউইয়র্কভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন বলছে, রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া এখনো খুব শীতল। কিন্তু দেশটির উচ্চ পর্যায়ের নেতা এবং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে যে কোনো পদক্ষেপ নেবেন। গত মে মাসে পুতিন জানিয়েছিলেন, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়া নিয়ে তাঁর কোনো সমস্যা নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত ন্যাটো দেশ দুটোতে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ না করছে।
কিন্তু পুতিনের এই অবস্থানকে ন্যাটো নিজেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া, ধারণাপত্রে ন্যাটো সদস্যদের রক্ষায় ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাপ্রোচে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। বলেছে, জোট যেকোনো দিক থেকে, যেকোনো উৎস থেকে আসা হুমকি মোকাবিলা করবে। তবে এসবই করা হবে শান্তি এবং গণতন্ত্র রক্ষায়।
এখন প্রশ্ন হলো—এই ঘোষণা এবং রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করার মধ্যে সম্পর্ক কী। বিশ্লষকেরা মনে করছেন, এর মানে হলো রাশিয়াকে মোকাবিলা করতে ন্যাটোর সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখা। এটিই আশঙ্কার কথা। রাশিয়া সব সময়ই এ ধরনের সম্প্রসারণের বিরোধিতা করে আসছে। ন্যাটো ফিনল্যান্ডে সামরিক ঘাঁটি বসালে মস্কো হাত গুটিয়ে বসে থাকার কথা নয়।
চীন এবং রাশিয়ার বিষয় ছাড়াও আরও বেশ কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে ন্যাটোর নতুন কৌশলগত ধারণাপত্রে। আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা কামনার অমীয় বাণী দিয়ে শুরু হয়েছে ধারণাপত্র। জোটভুক্ত দেশের আঞ্চলিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র রক্ষা, বিধিবদ্ধ বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে চায় ন্যাটো। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি দিয়ে ধারণাপত্রের মুখবন্ধ শেষ করা হয়েছে তা হলো—তাঁদের লক্ষ্য পরিষ্কার। তাঁরা সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, মানবাধিকার, বিধিবদ্ধ বিশ্ব ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ও আগ্রাসন মুক্ত বিশ্ব গড়তে চায়। যেখানে প্রত্যেক দেশ নিজ নিজ নীতি-কৌশল বেছে নিতে পারবে। এসব লক্ষ্য যেসব দেশ ধারণ করে তারা জোটের মিত্র বলে বিবেচিত হবে।
এখন প্রশ্ন হলো—যেসব দেশ এই আদর্শের অনুসারী বলে বিবেচিত হবে না তাদের ব্যাপারে ন্যাটোর অবস্থা কী হবে? চীন ও রাশিয়ার মতো ‘চ্যালেঞ্জ’ বা ‘হুমকি’ হিসেবে মনে করা হবে? তাহলে, ন্যাটোর দাবিকৃত শান্তি ও নিরাপদ বিশ্ব এবং ‘প্রত্যেক দেশ তার নিজ নিজ নীতি অবলম্বন করবে’ এই দাবির কোনো সারবত্তা থাকে? ন্যাটো কি তবে স্ববিরোধিতায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এই স্ববিরোধিতার ফলাফল হিসেবে ন্যাটো কি বাকি বিশ্বের জন্য ‘পদ্ধিতগত চ্যালেঞ্জ’ তৈরি করেছে না? যেখানে এরই মধ্যে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলাফল পশ্চিমকেই দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছে, ভারতের মতো বৃহৎ রাষ্ট্রকেও মস্কোর প্রতি ঝুঁকতে প্ররোচিত করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থানও অস্পষ্ট।
ন্যাটোর কাঙ্ক্ষিত নতুন বিশ্বের রূপ কেমন হবে সেটি নির্ভর করছে আগামী দিনে ন্যাটো কীভাবে তার সমর–নিরাপত্তা কৌশল সাজায় এবং রাশিয়া–চীনসহ ন্যাটোর ‘মতাদর্শের’ বাইরে থাকা দেশগুলো সেই কৌশলের বিপরীতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তার ওপর।
তথ্যসূত্র: সিএনএন, রয়টার্স, জার্মান মার্শাল ফান্ড এবং কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন–সিএফআর
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে