আবির আবরাজ
‘সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু/অনলে পুড়িয়া গেল।’ মধ্যযুগের কবি জ্ঞানদাসের লেখা এ বাক্য যে কত সত্য, তা শুধু অভিজ্ঞজনই জানে। আর অভিজ্ঞতা বাড়ে বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ফলে বয়স্ক ব্যক্তিদের মনে সাধারণত সুখ নামর বোধটি কম থাকে। বিপরীতে তরুণেরা নিজ স্বভাবেই সুখী। গোটা বিশ্বেই সুখের চিত্র এত দিন এমন থাকলেও কোভিড মহামারি এসব পাল্টে দিয়েছে। বৈশ্বিক এই মহামারির সময়ে বৃদ্ধরা আগের চেয়ে বেশি সুখী হয়ে উঠেছে। আর তরুণেরা এই সময়কে দেখছে অভিশাপ হিসেবে।
শুনে যতই অবাক লাগুক, এই মহামারি বৈশ্বিকভাবে সুখের বিদ্যমান ধারণা আমূল বদলে দিয়েছে। বৃদ্ধরা, যারা সচরাচর অসুখী জীবনযাপন করেন বা করতেন, তাঁরা মহামারির সময়ে আগের চেয়ে বেশি সুখী বোধ করছেন। অন্যদিকে সুখ কমেছে কম বয়সীদের। তারা রীতিমতো শোচনীয় অবস্থায় পড়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিকেরা প্রায়ই জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর কোভিড–১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে আয়োজিত টক–শোতেও এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা চলে। কিন্তু এসব আলোচনায় সংখ্যার হিসাব ছাড়া তেমন কিছুই পাওয়া যায় না, যা সাধারণ মানুষের কাছে অনেকটাই দুর্বোধ্য ঠেকে। কারণ, এই সংখ্যার হিসাব দিয়ে তো আর সুখের সমীকরণ মেলে না। সবার সুখের সমীকরণ একও নয়।
মহামারির কারণে তরুণ থেকে বুড়ো—সবার সুখের সমীকরণে এসেছে বিরাট এক বদল। জাতিসংঘের সাস্টেইনেবল উন্নয়ন সলিউশনস নেটওয়ার্ক সম্প্রতি এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জরিপকারী সংস্থা গ্যালাপের জরিপের তথ্য তুলে ধরে তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন বয়সী মানুষের মধ্যে গড় সুখবোধের মাত্রায় পরিবর্তন এসেছে।
গ্যালাপ তার জরিপে প্রশ্ন করেছিল, যদি এক থেকে দশ মানদণ্ডে সুখ বিচার করা হয়, তবে নিজেকে কতটুকু সুখী বলবেন একজন মানুষ। এতে দেখা গেছে, গড় সুখবোধের মাত্রায় তেমন বড় কোনো হেরফের হয়নি। বিশ্বের ৯৫টি দেশ থেকে সংগৃহীত তথ্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০২০ সালেও মানুষের গড় সুখবোধের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৮৫। অর্থাৎ গড়ে সাধারণ মানুষ মাঝারি মাত্রার সুখী ছিল। ২০১৭–১৯ সময়ে এই গড় ছিল ৫ দশমিক ৮১। এমনকি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঘটেছে একই ঘটনা।
২০২১ সালের ২২ মার্চ প্রকাশিত সুখের সূচকে বাংলাদেশ ৬৮ তম অবস্থানে রয়েছে। এ থেকে পরিস্থিতিটি বোঝা যাবে না। ২০২০ সালে যেখানে বাংলাদেশের মানুষের গড় সুখবোধের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট, সেখানে ২০২১ সালে তা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২ পয়েন্টে। অথচ করোনাকালের আগের তিন বছরে এর মাত্রা ছিল সাড়ে ৪ পয়েন্টের আশপাশে। তার মানে, গত বছর মানুষের মধ্যে সুখবোধ আগের তুলনায় কিছুটা হলেও বেড়েছে। কিন্তু কীভাবে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পাওয়া গেল চমকে যাওয়ার তথ্য। কোভিড–১৯ মহামারি তরুণদের চেয়ে বুড়োদের বেশি চোখ রাঙিয়েছে। কতটা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সের প্রতি আট বছর বৃদ্ধিতে কোভিড–১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়। সে হিসেবে তাদের অসুখী থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেছে উল্টো। ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে গড় সুখবোধ বেড়েছে দশমিক ২২ পয়েন্ট। আর এটা ঘটেছে গোটা বিশ্বেই। দু–একটি অঞ্চল এর বাইরে থাকতে পারে স্থানীয় নানা সংকটের কারণে।
ব্রিটেন সুখী দেশগুলোর তালিকার শীর্ষে না হলেও ওপরের দিকেই অবস্থান করে। মহামারির কারণে সেখানেও বয়স ভেদে মানুষের মধ্যে সুখবোধ কমেছে। আগে ব্রিটেনসহ ধনী দেশগুলোয় বয়সভিত্তিক সুখবোধের গ্রাফটি ছিল অনেকটা ইংরেজি ইউ বর্ণের মতো। অর্থাৎ, কম বয়সীদের মধ্যে সুখ ছিল বেশি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্য বয়সে এই সুখ তলানিতে গিয়ে ঠেকে। আবার বয়স ৫০ পেরোলে বাড়তে থাকে সুখের মাত্রা। এই বয়স যখন আবার আরও বাড়ে, তখন তা আবার উল্টো যাত্রা শুরু করে। কিন্তু এখন এই গ্রাফ বা লেখচিত্র বদলে গেছে। মাত্র এক বছরে এত বছরের ইউ–গ্রাফটি বদলে তা প্রায় ঢাল–এর আকৃতি নিয়েছে। অর্থাৎ, বয়স যত কম, সুখ তত কম। আর বয়স যত বেশি, সুখ তত বেশি।
কথা হলো, কারণটি কী? তরুণেরা স্বভাবতই স্বপ্নবাজ। বন্ধুদের নিয়ে হইহল্লায় মেতে থাকা আর ঘুরে বেড়ানোটা তারুণ্যেরই সমার্থক। কিন্তু এই করোনাকাল এই সবকিছুতেই একটা যতি চিহ্ন এঁকে দিয়েছে। ঘুরে বেড়ানো মানা, রেস্তোরাঁ বা খোলা ময়দানে জনসমাগম বারণ, এমনকি বেড়াতে যাওয়ায়ও রয়েছে হাজারটা বিধিনিষেধ। নিয়ম ভাঙার বয়সে এত নিয়ম কি আর সয়? সয় না। সঙ্গে রয়েছে বাড়ির বয়স্ক মানুষটির প্রতি, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ। নিজের নিয়ম ভাঙার দায় এখন শুধু তার ওপর বর্তায় না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে গোটা সমাজ। তাই তারা এই মহামারিকালে আগের চেয়ে বেশি অসুখী হয়ে উঠেছে। তরুণদের মধ্যে সুখের অনুভূতি কমেছে।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই এক তরুণের কথা। সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্নাতকার্থী এই তরুণের নাম পার্ক হা-ইয়ং। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের বেশির ভাগ সময়ই তার কেটেছে এই মহামারি নিয়ে দুশ্চিন্তা করে। শুধু নিজের আক্রান্ত হওয়া নয়, তাঁর মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ে কিনা, তা নিয়েও তাকে প্রতিনিয়ত ভুগতে হয়েছে শঙ্কায়। পার্কের ভাষ্য, ‘আমি খুবই আতঙ্কগ্রস্ত ছিলাম। সব সময় মনে হয়েছে—আমি যেন কোনো বড় প্রাদুর্ভাবের কারণ না হয়ে উঠি।’
এত সব দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কারণে পার্ক হা–ইয়ংয়ের মতো তরুণদের স্বাধীনতা বহুলাংশেই সংকুচিত হয়েছে। বন্ধুদের সশরীরে দেখার সুযোগ পর্যন্ত ছিল না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সে সংক্রান্ত কোনো ব্যস্ততাও নেই। কোথায় যেতে পারবে বা পারবে না—তা ঠিক করে দিচ্ছে প্রশাসন। সত্যি বলতে গেলে প্রশাসনও নয়, একটি অণুজীব সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। জন্ম দিয়েছে এক বিরাট অনিশ্চয়তার। বিশেষত শিক্ষার্থীদের অবস্থা শোচনীয়। তাদের পড়াশোনা শেষ হবে কি না, কবে শেষ হবে ইত্যাদি প্রশ্ন অবধারিতভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে তরুণদের মাথায়। নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মাত্রা সময়ের সঙ্গে বেড়েছে। বিশেষত চাকরি বা যেকোনোভাবে কর্মজীবন শুরু করার বিষয়টি পড়েছে ঘোরতর অনিশ্চয়তায়।
অন্যদিকে বৃদ্ধদের চিত্রটি একেবারে আলাদা। বয়সের কারণে শরীরে বাসা বাঁধা নানা রোগ বা নানা পরিস্থিতির কারণে সাধারণত বৃদ্ধদের জগৎটা ছোট হয়ে আসে। বয়স যত বাড়ে, এ জগৎ তত ছোট হয়। পরিবারের তরুণ সদস্যদের সঙ্গও দিন দিন দুর্লভ হয়ে ওঠে। সঙ্গে নিয়মিত আসতে থাকা বন্ধু বা পরিচিত সমবয়সীজনদের মৃত্যুর খবর তো রয়েছেই। ফলে এক ধরনের অসুখী বোধ বাড়তে থাকে বয়সীদের মধ্যে। কিন্তু এখন এই দৃশ্যেই বদল এসেছে। মহামারি আবার পরিবারগুলোকে এক করে দিয়েছে।
বৃদ্ধরা দেখছেন, এত দিন যে তরুণ সদস্যটিকে তাঁর বিষয়ে উদাসীন দেখেছেন, এখন তার মধ্যে তিনি তাঁকে নিয়ে দেখছেন উদ্বেগ। একই সময়ে নানা প্ল্যাটফর্মে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সুযোগ এই মহামারির সময়েই হয়েছে অবারিত। প্রযুক্তির এই সম্প্রসারণ বৃদ্ধদের সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছে। এগুলো তাঁদের পরিবারের কাছাকাছি থাকতে পারার একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। শুধু নিজ পরিবার নয়, বয়স্করা ঝুঁকিতে আছে, এই কথাটি গণমাধ্যমে বারবার করে প্রচার করা হচ্ছে। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহামারি মোকাবিলায় নেওয়া নানা উদ্যোগের কেন্দ্রেও রয়েছে বয়স্ক জনগোষ্ঠীই। ফলে লকডাউন আরোপ হয়েছে এমন দেশগুলোয় থাকা বৃদ্ধরা একটি বার্তা সুস্পষ্টভাবে পেয়েছেন যে, তাঁদের নিয়ে তাঁদের দেশ ও প্রশাসন ভাবছে।
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অর্থনীতিবিদ জন হেলিওয়েলের এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন করেছেন সম্প্রতি। তাঁর গবেষণায় বলা হচ্ছে, মহামারির এই সময়ে বৃদ্ধরা আগের চেয়ে বেশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে উঠেছেন। ২০২০ সালে ষাটোর্ধ্ব মানুষদের ৩৬ শতাংশই নানা রকম শারীরিক সমস্যা ভুগেছেন বলে জানিয়েছেন। এর আগের তিন বছরে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা ছিল ওই বয়সীদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ।
এর ঠিক বিপরীত মেরুতে রয়েছেন তরুণ–যুবারা। তাদের অনেকের শিক্ষাজীবন থমকে গেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যের দিকে তাকালেই বিষয়টি বোঝা যাবে। মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশটিতে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্ব ২০২০ সালের শুরুতেও ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ হার বেড়ে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়ায়। এখন পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো হলেও মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে যায়নি। গত মে মাসে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ হার এখন ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় রয়েছেন নারীরা। নারীদের অনেকেই পর্যটন বা সেবা খাতের সঙ্গে যুক্ত। মহামারিতে তাঁদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন।
কম বয়সীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি তৈরি করেছে বন্ধুর সঙ্গহীনতা। ইউনিভার্সিটি অব এসেক্সের বেন এথরিজ ও লিসা স্প্যাটিংয়ের দেওয়া তথ্যমতে, প্রতি চারজনের একজন নারী বন্ধুহীনতার কারণে এই সময়ে চরম বিষাদে ভুগছেন। শুধু নারী নয়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে সময় পার করা তরুণদের প্রায় সবার মধ্যেই এই মহামারি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যে সুখবোধের হিসাব উল্টে–পাল্টে দিলেও সুখী দেশের তালিকায় মহামারি তেমন বদল আনতে পারেনি। এবারের তালিকার শীর্ষে থাকা তিন দেশ——ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও ডেনমার্ক ২০১৭-১৯ সময়েও শীর্ষ চারে ছিল। এই সবগুলো দেশই কোভিড–১৯ মহামারি মোকাবিলায় সাফল্য দেখিয়েছে। এই প্রবণতা সবগুলো দেশের ক্ষেত্রেই চোখে পড়েছে। বৈশ্বিক সুখ প্রতিবেদনে বলছে, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়ার মতো লাতিন আমেরিকার দেশগুলো সুখের তালিকায় পিছিয়ে গেছে। অন্যদিকে চীন, জাপান ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলো এ তালিকায় এগিয়েছে। মূল কারণ, কোভিড মোকাবিলায় সাফল্য।
আরও একটি ব্যাপার এখানে লক্ষণীয়, যেসব দেশের মানুষ সামাজিক সম্পর্কের কারণে সুখী, তারা গত বছর বা এই মহামারিকালে সুখী দেশের তালিকায় পিছিয়েছে। আর যেসব দেশের মানুষের সুখের মূল কারণ, অন্যের ওপর আস্থা, তারা এই তালিকায় এগিয়েছে। লাতিন অঞ্চল ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোয় সামাজিক মেলামেশা ও সম্পর্ককেই সুখের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। আর কোভিডকালে এই বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি ব্যাহত হয়েছে। ফলে তারা এই তালিকায় পিছিয়েছে। অন্যদিকে চীন, জাপান বা নর্ডিক রাষ্ট্রগুলোয় থাকা মানুষের সুখের মূল ভিত্তি অন্যের ওপর, আইন ও প্রশাসনের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস। এই দুর্যোগে এই বিষয়গুলোকে তারা সক্রিয় হতে দেখেছে। ফলে তারা আগের তুলনায় সুখী হয়েছে বেশি। সুখী দেশের তালিকায় মহামারি প্রভাব যতটা, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব পড়েছে বয়স ভেদে সুখবোধের গড় প্রবণতায়।
‘সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু/অনলে পুড়িয়া গেল।’ মধ্যযুগের কবি জ্ঞানদাসের লেখা এ বাক্য যে কত সত্য, তা শুধু অভিজ্ঞজনই জানে। আর অভিজ্ঞতা বাড়ে বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ফলে বয়স্ক ব্যক্তিদের মনে সাধারণত সুখ নামর বোধটি কম থাকে। বিপরীতে তরুণেরা নিজ স্বভাবেই সুখী। গোটা বিশ্বেই সুখের চিত্র এত দিন এমন থাকলেও কোভিড মহামারি এসব পাল্টে দিয়েছে। বৈশ্বিক এই মহামারির সময়ে বৃদ্ধরা আগের চেয়ে বেশি সুখী হয়ে উঠেছে। আর তরুণেরা এই সময়কে দেখছে অভিশাপ হিসেবে।
শুনে যতই অবাক লাগুক, এই মহামারি বৈশ্বিকভাবে সুখের বিদ্যমান ধারণা আমূল বদলে দিয়েছে। বৃদ্ধরা, যারা সচরাচর অসুখী জীবনযাপন করেন বা করতেন, তাঁরা মহামারির সময়ে আগের চেয়ে বেশি সুখী বোধ করছেন। অন্যদিকে সুখ কমেছে কম বয়সীদের। তারা রীতিমতো শোচনীয় অবস্থায় পড়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিকেরা প্রায়ই জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর কোভিড–১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে আয়োজিত টক–শোতেও এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা চলে। কিন্তু এসব আলোচনায় সংখ্যার হিসাব ছাড়া তেমন কিছুই পাওয়া যায় না, যা সাধারণ মানুষের কাছে অনেকটাই দুর্বোধ্য ঠেকে। কারণ, এই সংখ্যার হিসাব দিয়ে তো আর সুখের সমীকরণ মেলে না। সবার সুখের সমীকরণ একও নয়।
মহামারির কারণে তরুণ থেকে বুড়ো—সবার সুখের সমীকরণে এসেছে বিরাট এক বদল। জাতিসংঘের সাস্টেইনেবল উন্নয়ন সলিউশনস নেটওয়ার্ক সম্প্রতি এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জরিপকারী সংস্থা গ্যালাপের জরিপের তথ্য তুলে ধরে তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন বয়সী মানুষের মধ্যে গড় সুখবোধের মাত্রায় পরিবর্তন এসেছে।
গ্যালাপ তার জরিপে প্রশ্ন করেছিল, যদি এক থেকে দশ মানদণ্ডে সুখ বিচার করা হয়, তবে নিজেকে কতটুকু সুখী বলবেন একজন মানুষ। এতে দেখা গেছে, গড় সুখবোধের মাত্রায় তেমন বড় কোনো হেরফের হয়নি। বিশ্বের ৯৫টি দেশ থেকে সংগৃহীত তথ্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০২০ সালেও মানুষের গড় সুখবোধের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৮৫। অর্থাৎ গড়ে সাধারণ মানুষ মাঝারি মাত্রার সুখী ছিল। ২০১৭–১৯ সময়ে এই গড় ছিল ৫ দশমিক ৮১। এমনকি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঘটেছে একই ঘটনা।
২০২১ সালের ২২ মার্চ প্রকাশিত সুখের সূচকে বাংলাদেশ ৬৮ তম অবস্থানে রয়েছে। এ থেকে পরিস্থিতিটি বোঝা যাবে না। ২০২০ সালে যেখানে বাংলাদেশের মানুষের গড় সুখবোধের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট, সেখানে ২০২১ সালে তা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২ পয়েন্টে। অথচ করোনাকালের আগের তিন বছরে এর মাত্রা ছিল সাড়ে ৪ পয়েন্টের আশপাশে। তার মানে, গত বছর মানুষের মধ্যে সুখবোধ আগের তুলনায় কিছুটা হলেও বেড়েছে। কিন্তু কীভাবে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পাওয়া গেল চমকে যাওয়ার তথ্য। কোভিড–১৯ মহামারি তরুণদের চেয়ে বুড়োদের বেশি চোখ রাঙিয়েছে। কতটা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সের প্রতি আট বছর বৃদ্ধিতে কোভিড–১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়। সে হিসেবে তাদের অসুখী থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেছে উল্টো। ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে গড় সুখবোধ বেড়েছে দশমিক ২২ পয়েন্ট। আর এটা ঘটেছে গোটা বিশ্বেই। দু–একটি অঞ্চল এর বাইরে থাকতে পারে স্থানীয় নানা সংকটের কারণে।
ব্রিটেন সুখী দেশগুলোর তালিকার শীর্ষে না হলেও ওপরের দিকেই অবস্থান করে। মহামারির কারণে সেখানেও বয়স ভেদে মানুষের মধ্যে সুখবোধ কমেছে। আগে ব্রিটেনসহ ধনী দেশগুলোয় বয়সভিত্তিক সুখবোধের গ্রাফটি ছিল অনেকটা ইংরেজি ইউ বর্ণের মতো। অর্থাৎ, কম বয়সীদের মধ্যে সুখ ছিল বেশি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্য বয়সে এই সুখ তলানিতে গিয়ে ঠেকে। আবার বয়স ৫০ পেরোলে বাড়তে থাকে সুখের মাত্রা। এই বয়স যখন আবার আরও বাড়ে, তখন তা আবার উল্টো যাত্রা শুরু করে। কিন্তু এখন এই গ্রাফ বা লেখচিত্র বদলে গেছে। মাত্র এক বছরে এত বছরের ইউ–গ্রাফটি বদলে তা প্রায় ঢাল–এর আকৃতি নিয়েছে। অর্থাৎ, বয়স যত কম, সুখ তত কম। আর বয়স যত বেশি, সুখ তত বেশি।
কথা হলো, কারণটি কী? তরুণেরা স্বভাবতই স্বপ্নবাজ। বন্ধুদের নিয়ে হইহল্লায় মেতে থাকা আর ঘুরে বেড়ানোটা তারুণ্যেরই সমার্থক। কিন্তু এই করোনাকাল এই সবকিছুতেই একটা যতি চিহ্ন এঁকে দিয়েছে। ঘুরে বেড়ানো মানা, রেস্তোরাঁ বা খোলা ময়দানে জনসমাগম বারণ, এমনকি বেড়াতে যাওয়ায়ও রয়েছে হাজারটা বিধিনিষেধ। নিয়ম ভাঙার বয়সে এত নিয়ম কি আর সয়? সয় না। সঙ্গে রয়েছে বাড়ির বয়স্ক মানুষটির প্রতি, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ। নিজের নিয়ম ভাঙার দায় এখন শুধু তার ওপর বর্তায় না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে গোটা সমাজ। তাই তারা এই মহামারিকালে আগের চেয়ে বেশি অসুখী হয়ে উঠেছে। তরুণদের মধ্যে সুখের অনুভূতি কমেছে।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই এক তরুণের কথা। সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্নাতকার্থী এই তরুণের নাম পার্ক হা-ইয়ং। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের বেশির ভাগ সময়ই তার কেটেছে এই মহামারি নিয়ে দুশ্চিন্তা করে। শুধু নিজের আক্রান্ত হওয়া নয়, তাঁর মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ে কিনা, তা নিয়েও তাকে প্রতিনিয়ত ভুগতে হয়েছে শঙ্কায়। পার্কের ভাষ্য, ‘আমি খুবই আতঙ্কগ্রস্ত ছিলাম। সব সময় মনে হয়েছে—আমি যেন কোনো বড় প্রাদুর্ভাবের কারণ না হয়ে উঠি।’
এত সব দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কারণে পার্ক হা–ইয়ংয়ের মতো তরুণদের স্বাধীনতা বহুলাংশেই সংকুচিত হয়েছে। বন্ধুদের সশরীরে দেখার সুযোগ পর্যন্ত ছিল না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সে সংক্রান্ত কোনো ব্যস্ততাও নেই। কোথায় যেতে পারবে বা পারবে না—তা ঠিক করে দিচ্ছে প্রশাসন। সত্যি বলতে গেলে প্রশাসনও নয়, একটি অণুজীব সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। জন্ম দিয়েছে এক বিরাট অনিশ্চয়তার। বিশেষত শিক্ষার্থীদের অবস্থা শোচনীয়। তাদের পড়াশোনা শেষ হবে কি না, কবে শেষ হবে ইত্যাদি প্রশ্ন অবধারিতভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে তরুণদের মাথায়। নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মাত্রা সময়ের সঙ্গে বেড়েছে। বিশেষত চাকরি বা যেকোনোভাবে কর্মজীবন শুরু করার বিষয়টি পড়েছে ঘোরতর অনিশ্চয়তায়।
অন্যদিকে বৃদ্ধদের চিত্রটি একেবারে আলাদা। বয়সের কারণে শরীরে বাসা বাঁধা নানা রোগ বা নানা পরিস্থিতির কারণে সাধারণত বৃদ্ধদের জগৎটা ছোট হয়ে আসে। বয়স যত বাড়ে, এ জগৎ তত ছোট হয়। পরিবারের তরুণ সদস্যদের সঙ্গও দিন দিন দুর্লভ হয়ে ওঠে। সঙ্গে নিয়মিত আসতে থাকা বন্ধু বা পরিচিত সমবয়সীজনদের মৃত্যুর খবর তো রয়েছেই। ফলে এক ধরনের অসুখী বোধ বাড়তে থাকে বয়সীদের মধ্যে। কিন্তু এখন এই দৃশ্যেই বদল এসেছে। মহামারি আবার পরিবারগুলোকে এক করে দিয়েছে।
বৃদ্ধরা দেখছেন, এত দিন যে তরুণ সদস্যটিকে তাঁর বিষয়ে উদাসীন দেখেছেন, এখন তার মধ্যে তিনি তাঁকে নিয়ে দেখছেন উদ্বেগ। একই সময়ে নানা প্ল্যাটফর্মে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সুযোগ এই মহামারির সময়েই হয়েছে অবারিত। প্রযুক্তির এই সম্প্রসারণ বৃদ্ধদের সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছে। এগুলো তাঁদের পরিবারের কাছাকাছি থাকতে পারার একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। শুধু নিজ পরিবার নয়, বয়স্করা ঝুঁকিতে আছে, এই কথাটি গণমাধ্যমে বারবার করে প্রচার করা হচ্ছে। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহামারি মোকাবিলায় নেওয়া নানা উদ্যোগের কেন্দ্রেও রয়েছে বয়স্ক জনগোষ্ঠীই। ফলে লকডাউন আরোপ হয়েছে এমন দেশগুলোয় থাকা বৃদ্ধরা একটি বার্তা সুস্পষ্টভাবে পেয়েছেন যে, তাঁদের নিয়ে তাঁদের দেশ ও প্রশাসন ভাবছে।
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অর্থনীতিবিদ জন হেলিওয়েলের এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন করেছেন সম্প্রতি। তাঁর গবেষণায় বলা হচ্ছে, মহামারির এই সময়ে বৃদ্ধরা আগের চেয়ে বেশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে উঠেছেন। ২০২০ সালে ষাটোর্ধ্ব মানুষদের ৩৬ শতাংশই নানা রকম শারীরিক সমস্যা ভুগেছেন বলে জানিয়েছেন। এর আগের তিন বছরে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা ছিল ওই বয়সীদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ।
এর ঠিক বিপরীত মেরুতে রয়েছেন তরুণ–যুবারা। তাদের অনেকের শিক্ষাজীবন থমকে গেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যের দিকে তাকালেই বিষয়টি বোঝা যাবে। মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশটিতে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্ব ২০২০ সালের শুরুতেও ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ হার বেড়ে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়ায়। এখন পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো হলেও মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে যায়নি। গত মে মাসে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ হার এখন ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় রয়েছেন নারীরা। নারীদের অনেকেই পর্যটন বা সেবা খাতের সঙ্গে যুক্ত। মহামারিতে তাঁদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন।
কম বয়সীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি তৈরি করেছে বন্ধুর সঙ্গহীনতা। ইউনিভার্সিটি অব এসেক্সের বেন এথরিজ ও লিসা স্প্যাটিংয়ের দেওয়া তথ্যমতে, প্রতি চারজনের একজন নারী বন্ধুহীনতার কারণে এই সময়ে চরম বিষাদে ভুগছেন। শুধু নারী নয়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে সময় পার করা তরুণদের প্রায় সবার মধ্যেই এই মহামারি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যে সুখবোধের হিসাব উল্টে–পাল্টে দিলেও সুখী দেশের তালিকায় মহামারি তেমন বদল আনতে পারেনি। এবারের তালিকার শীর্ষে থাকা তিন দেশ——ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও ডেনমার্ক ২০১৭-১৯ সময়েও শীর্ষ চারে ছিল। এই সবগুলো দেশই কোভিড–১৯ মহামারি মোকাবিলায় সাফল্য দেখিয়েছে। এই প্রবণতা সবগুলো দেশের ক্ষেত্রেই চোখে পড়েছে। বৈশ্বিক সুখ প্রতিবেদনে বলছে, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়ার মতো লাতিন আমেরিকার দেশগুলো সুখের তালিকায় পিছিয়ে গেছে। অন্যদিকে চীন, জাপান ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলো এ তালিকায় এগিয়েছে। মূল কারণ, কোভিড মোকাবিলায় সাফল্য।
আরও একটি ব্যাপার এখানে লক্ষণীয়, যেসব দেশের মানুষ সামাজিক সম্পর্কের কারণে সুখী, তারা গত বছর বা এই মহামারিকালে সুখী দেশের তালিকায় পিছিয়েছে। আর যেসব দেশের মানুষের সুখের মূল কারণ, অন্যের ওপর আস্থা, তারা এই তালিকায় এগিয়েছে। লাতিন অঞ্চল ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোয় সামাজিক মেলামেশা ও সম্পর্ককেই সুখের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। আর কোভিডকালে এই বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি ব্যাহত হয়েছে। ফলে তারা এই তালিকায় পিছিয়েছে। অন্যদিকে চীন, জাপান বা নর্ডিক রাষ্ট্রগুলোয় থাকা মানুষের সুখের মূল ভিত্তি অন্যের ওপর, আইন ও প্রশাসনের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস। এই দুর্যোগে এই বিষয়গুলোকে তারা সক্রিয় হতে দেখেছে। ফলে তারা আগের তুলনায় সুখী হয়েছে বেশি। সুখী দেশের তালিকায় মহামারি প্রভাব যতটা, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব পড়েছে বয়স ভেদে সুখবোধের গড় প্রবণতায়।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৫ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৭ দিন আগে