অনলাইন ডেস্ক
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে বিপর্যস্ত ছিল সারা বিশ্ব। সেই বিপদ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই হাজির হচ্ছে নতুন সব ভাইরাস, যা ডেকে আনতে পারে আরও মহামারি। বিশেষ করে খুবই সাধারণ বলে বিবেচিত ভাইরাসগুলোর অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে শঙ্কিত বিজ্ঞানীরা। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস।
ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা মহামারির সময় মৃদু সংক্রামক ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ বেশ কম ছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে অ্যাডেনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। আগে ধারণা করা হতো, এ ধরনের ভাইরাস পেটে সামান্য সমস্যা সৃষ্টি করে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এই ভাইরাস শিশুদের মধ্যে মারাত্মক হেপাটাইটিস বাঁধিয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া, শ্বাসনালির প্রদাহ সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলো আগে সাধারণত শীতকালে রোগ ছড়াত। কিন্তু ইদানীং গ্রীষ্মেও শিশুদের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করছে এগুলো। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস আগে কেবল মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায় পাওয়া গেলেও বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় সব মহাদেশেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে।
এমন নয় যে, ভাইরাসগুলো আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। বরং বদলে গেছে মানুষের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড মহামারির সময় আমরা কমবেশি ইমিউনিটি অর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের নাজুকও করে ফেলেছি। আমাদের এই দুর্বলতাকে আমলে নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি সংবেদনশীল সময় পার করছে বিশ্ব। তাঁদের আশঙ্কা, সামনে আবারও মহামারি শুরু হতে পারে। এবার মহামারি ছড়াতে পারে আমাদের অতিপরিচিত সাধারণ ভাইরাসগুলোই।
সামনে অস্বাভাবিক কিছু রোগের মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছেন ইম্পিরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের পেডিয়াট্রিক ইমিউনোলজির অধ্যাপক পিটার ব্রডিন। স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন সংবাদমাধ্যম স্ট্যাটকে তিনি বলেন, ‘সামনে আমাদের অস্বাভাবিক কিছু রোগের মুখোমুখি হতে হবে। তার মানে এই নয় যে এসব রোগ ধ্বংস ডেকে আনবে। তবে এই রোগগুলো আমাদের পরিচিত রোগের মতো হবে না।’
একই প্রসঙ্গে নেদারল্যান্ডসের ইরাসমাস মেডিকেল সেন্টারের ভাইরোসায়েন্স বিভাগের প্রধান ম্যারিয়ন কূপম্যানস বলেন, ‘আমাদের এমন রোগ আক্রমণ করতে পারে, যা আমরা কখনো প্রত্যাশাই করিনি।’
সংক্রামক রোগের ভাইরাসের রোগাক্রান্ত করার প্যাটার্ন পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে শিশুরা। ভাইরাসের সবচেয়ে বড় বাহক হিসেবে কাজ করে শিশুরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত শিশুরা ‘জার্ম ম্যাগনেট বা জীবাণু আকর্ষক’ এবং জীবাণুর বংশবৃদ্ধিকারক হিসেবে কাজ করে থাকে।
এদিকে করোনা মহামারির মধ্যে স্কুল, খেলার মাঠসহ সামাজিক পরিমণ্ডলে শিশুদের কোনো রকম চলাফেরা না থাকায় তাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অনেকটাই বদলে গেছে। এমনকি মহামারির মধ্যে যেসব শিশু জন্ম নিয়েছে, তারাও মায়ের কাছ থেকে শ্বসনপ্রণালির মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের অ্যান্টিবডি কিংবা জীবাণু নিজের মধ্যে নিয়েই জন্ম নিয়েছে।
শিশুদের রক্তে থাকা অ্যান্টিবডি রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে কীভাবে প্রভাবিত করে, তা নিয়ে কাজ করা কূপম্যানস বলেন, ‘আপনি দেখবেন যে মহামারির দ্বিতীয় বছরে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে শ্বসনপ্রণালির রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের অ্যান্টিবডির সংখ্যা তুলনামূলক কম। এবং তারা আক্রান্তও হচ্ছে কম।’ কম অ্যান্টিবডি নিয়েও কীভাবে সুস্থ থাকছে এই ধাঁধার উত্তর খুঁজছেন গবেষকেরা। কূপম্যানসের গবেষণা হয়তো ওপরের ধাঁধার উত্তর মেলাতে সক্ষম। তবে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
করোনা মহামারি কেবল শিশুর দেহে প্রভাব ফেলেনি। মহামারি-পরবর্তী সময়ে গবেষকেরা দেখেছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরেও বিভিন্ন জীবাণু প্রতিরোধে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি প্রয়োজন, তা উৎপাদিত হচ্ছে না। ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তুলনামূলক কমে যাচ্ছে। এ কারণেই ফ্লু বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অ্যান্টিবডি কম থাকার কারণে মৃদু সংক্রামক ফ্লুও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে সমানের দিনগুলোতে।
কূপম্যানস বলছেন, ‘এন্ডেমিক ডিজিজগুলো (স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আকারে ছড়ায় এমন রোগ) ছড়িয়ে পড়ার একটি সাধারণ প্যাটার্ন রয়েছে। এই রোগগুলো একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সংক্রমণ স্থানীয় জনসংখ্যার রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপরও নির্ভর করে অনেকটা।’
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কেভিন মেসাকার দীর্ঘ আট বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকিউট ফ্ল্যাসিড মাইলাইটিস (এএফএম) নিয়ে গবেষণা করছেন। এই রোগের ফলে শিশুদের বিভিন্ন অঙ্গ শক্তিহীন হয়ে পড়ে। তিনি দেখেছেন, প্রতি দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে এই রোগের ঢেউ আসে। এর প্রথম ঢেউ দেখা যায় ২০১৪ সালে, তারপর ২০১৬, ২০১৮ সালে। ২০২০ এবং ২০২১ সালে এই রোগের সামান্যতম চিহ্নও দেখা যায়নি দেশটিতে। তবে কেভিন মেসাকারের আশঙ্কা, এ বছর রোগটি ভয়াবহ মাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি ভাবতেও পারছি না পরিস্থিতি কেমন হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) উপপরিচালক থমাস ক্লার্ক বলছেন, অনেকের ধারণা, টিকার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায় এমন রোগের প্রাদুর্ভাব বিশ্বজুড়ে আবারও হতে পারে। কারণ, সারা বিশ্বে এখনো অনেক শিশুই করোনাভাইরাস মহামারির সময় টিকা নিতে পারেনি। তবে চলমান মহামারি কেবল এভাবেই সংক্রামক রোগের ছড়িয়ে পড়াকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করেন না তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, টিকা নেওয়ার পরও অনেক শিশুই বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি এমন পরিস্থিতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের কথা বলেছেন।
আরেক দল গবেষক বলছেন, কেবল নাজুক রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা সংবলিত মানুষই সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার প্যাটার্ন পরিবর্তনের কারণ নয়। সে রকমই একজন হলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমারজেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান ডেভিড হ্যেম্যান। তাঁর মতে, আফ্রিকা থেকে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো, বিশ্বজুড়ে মহামারি চলাকালে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তা শিথিল করা। এমনকি তিনি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের আরেকটি কারণ হিসেবে পুরুষ সমকামিতাকেও সামনে এনেছেন।
হ্যেম্যান আরও বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আরোপিত বিধিনিষেধের সময়ও মাঙ্কিপক্স ছিল আফ্রিকায়। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় এই ভাইরাস ছড়িয়েছে দ্রুত।
পিটার ব্রডিনের ভাষ্য, বিশ্বজুড়ে আগামী কয়েক বছর চলতে পারে এমন অস্থিরতা। স্ট্যাটকে তিনি বলেন, ‘একবার যদি কোনোভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষ কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যায়, তবে স্বাভাবিকভাবেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে। তবে সংক্রামক ব্যাধির বিষয়ে আমাদের অবশ্যই মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।’
তবে এটিই এখন দেখার বিষয় যে কোনো ভাইরাসে হার্ড ইমিউনিটি তৈরির আগে কত প্রাণ ঝরে যায় এবং কত দিন এই অস্থিরতা চলে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম স্ট্যাটে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে বিপর্যস্ত ছিল সারা বিশ্ব। সেই বিপদ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই হাজির হচ্ছে নতুন সব ভাইরাস, যা ডেকে আনতে পারে আরও মহামারি। বিশেষ করে খুবই সাধারণ বলে বিবেচিত ভাইরাসগুলোর অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে শঙ্কিত বিজ্ঞানীরা। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস।
ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা মহামারির সময় মৃদু সংক্রামক ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ বেশ কম ছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে অ্যাডেনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। আগে ধারণা করা হতো, এ ধরনের ভাইরাস পেটে সামান্য সমস্যা সৃষ্টি করে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এই ভাইরাস শিশুদের মধ্যে মারাত্মক হেপাটাইটিস বাঁধিয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া, শ্বাসনালির প্রদাহ সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলো আগে সাধারণত শীতকালে রোগ ছড়াত। কিন্তু ইদানীং গ্রীষ্মেও শিশুদের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করছে এগুলো। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস আগে কেবল মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায় পাওয়া গেলেও বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় সব মহাদেশেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে।
এমন নয় যে, ভাইরাসগুলো আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। বরং বদলে গেছে মানুষের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড মহামারির সময় আমরা কমবেশি ইমিউনিটি অর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের নাজুকও করে ফেলেছি। আমাদের এই দুর্বলতাকে আমলে নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি সংবেদনশীল সময় পার করছে বিশ্ব। তাঁদের আশঙ্কা, সামনে আবারও মহামারি শুরু হতে পারে। এবার মহামারি ছড়াতে পারে আমাদের অতিপরিচিত সাধারণ ভাইরাসগুলোই।
সামনে অস্বাভাবিক কিছু রোগের মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছেন ইম্পিরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের পেডিয়াট্রিক ইমিউনোলজির অধ্যাপক পিটার ব্রডিন। স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন সংবাদমাধ্যম স্ট্যাটকে তিনি বলেন, ‘সামনে আমাদের অস্বাভাবিক কিছু রোগের মুখোমুখি হতে হবে। তার মানে এই নয় যে এসব রোগ ধ্বংস ডেকে আনবে। তবে এই রোগগুলো আমাদের পরিচিত রোগের মতো হবে না।’
একই প্রসঙ্গে নেদারল্যান্ডসের ইরাসমাস মেডিকেল সেন্টারের ভাইরোসায়েন্স বিভাগের প্রধান ম্যারিয়ন কূপম্যানস বলেন, ‘আমাদের এমন রোগ আক্রমণ করতে পারে, যা আমরা কখনো প্রত্যাশাই করিনি।’
সংক্রামক রোগের ভাইরাসের রোগাক্রান্ত করার প্যাটার্ন পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে শিশুরা। ভাইরাসের সবচেয়ে বড় বাহক হিসেবে কাজ করে শিশুরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত শিশুরা ‘জার্ম ম্যাগনেট বা জীবাণু আকর্ষক’ এবং জীবাণুর বংশবৃদ্ধিকারক হিসেবে কাজ করে থাকে।
এদিকে করোনা মহামারির মধ্যে স্কুল, খেলার মাঠসহ সামাজিক পরিমণ্ডলে শিশুদের কোনো রকম চলাফেরা না থাকায় তাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অনেকটাই বদলে গেছে। এমনকি মহামারির মধ্যে যেসব শিশু জন্ম নিয়েছে, তারাও মায়ের কাছ থেকে শ্বসনপ্রণালির মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের অ্যান্টিবডি কিংবা জীবাণু নিজের মধ্যে নিয়েই জন্ম নিয়েছে।
শিশুদের রক্তে থাকা অ্যান্টিবডি রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে কীভাবে প্রভাবিত করে, তা নিয়ে কাজ করা কূপম্যানস বলেন, ‘আপনি দেখবেন যে মহামারির দ্বিতীয় বছরে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে শ্বসনপ্রণালির রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের অ্যান্টিবডির সংখ্যা তুলনামূলক কম। এবং তারা আক্রান্তও হচ্ছে কম।’ কম অ্যান্টিবডি নিয়েও কীভাবে সুস্থ থাকছে এই ধাঁধার উত্তর খুঁজছেন গবেষকেরা। কূপম্যানসের গবেষণা হয়তো ওপরের ধাঁধার উত্তর মেলাতে সক্ষম। তবে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
করোনা মহামারি কেবল শিশুর দেহে প্রভাব ফেলেনি। মহামারি-পরবর্তী সময়ে গবেষকেরা দেখেছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরেও বিভিন্ন জীবাণু প্রতিরোধে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি প্রয়োজন, তা উৎপাদিত হচ্ছে না। ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তুলনামূলক কমে যাচ্ছে। এ কারণেই ফ্লু বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অ্যান্টিবডি কম থাকার কারণে মৃদু সংক্রামক ফ্লুও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে সমানের দিনগুলোতে।
কূপম্যানস বলছেন, ‘এন্ডেমিক ডিজিজগুলো (স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আকারে ছড়ায় এমন রোগ) ছড়িয়ে পড়ার একটি সাধারণ প্যাটার্ন রয়েছে। এই রোগগুলো একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সংক্রমণ স্থানীয় জনসংখ্যার রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপরও নির্ভর করে অনেকটা।’
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কেভিন মেসাকার দীর্ঘ আট বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকিউট ফ্ল্যাসিড মাইলাইটিস (এএফএম) নিয়ে গবেষণা করছেন। এই রোগের ফলে শিশুদের বিভিন্ন অঙ্গ শক্তিহীন হয়ে পড়ে। তিনি দেখেছেন, প্রতি দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে এই রোগের ঢেউ আসে। এর প্রথম ঢেউ দেখা যায় ২০১৪ সালে, তারপর ২০১৬, ২০১৮ সালে। ২০২০ এবং ২০২১ সালে এই রোগের সামান্যতম চিহ্নও দেখা যায়নি দেশটিতে। তবে কেভিন মেসাকারের আশঙ্কা, এ বছর রোগটি ভয়াবহ মাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি ভাবতেও পারছি না পরিস্থিতি কেমন হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) উপপরিচালক থমাস ক্লার্ক বলছেন, অনেকের ধারণা, টিকার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায় এমন রোগের প্রাদুর্ভাব বিশ্বজুড়ে আবারও হতে পারে। কারণ, সারা বিশ্বে এখনো অনেক শিশুই করোনাভাইরাস মহামারির সময় টিকা নিতে পারেনি। তবে চলমান মহামারি কেবল এভাবেই সংক্রামক রোগের ছড়িয়ে পড়াকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করেন না তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, টিকা নেওয়ার পরও অনেক শিশুই বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি এমন পরিস্থিতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের কথা বলেছেন।
আরেক দল গবেষক বলছেন, কেবল নাজুক রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা সংবলিত মানুষই সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার প্যাটার্ন পরিবর্তনের কারণ নয়। সে রকমই একজন হলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমারজেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান ডেভিড হ্যেম্যান। তাঁর মতে, আফ্রিকা থেকে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো, বিশ্বজুড়ে মহামারি চলাকালে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তা শিথিল করা। এমনকি তিনি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের আরেকটি কারণ হিসেবে পুরুষ সমকামিতাকেও সামনে এনেছেন।
হ্যেম্যান আরও বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আরোপিত বিধিনিষেধের সময়ও মাঙ্কিপক্স ছিল আফ্রিকায়। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় এই ভাইরাস ছড়িয়েছে দ্রুত।
পিটার ব্রডিনের ভাষ্য, বিশ্বজুড়ে আগামী কয়েক বছর চলতে পারে এমন অস্থিরতা। স্ট্যাটকে তিনি বলেন, ‘একবার যদি কোনোভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষ কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যায়, তবে স্বাভাবিকভাবেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে। তবে সংক্রামক ব্যাধির বিষয়ে আমাদের অবশ্যই মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।’
তবে এটিই এখন দেখার বিষয় যে কোনো ভাইরাসে হার্ড ইমিউনিটি তৈরির আগে কত প্রাণ ঝরে যায় এবং কত দিন এই অস্থিরতা চলে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম স্ট্যাটে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
২০ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে