আব্দুর রহমান
ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক-বেসামরিক নেতৃত্বের মুখে একাধিকবার ইরানে হামলা চালানোর কথা বললেও কখনো কীভাবে হামলা হবে, সে বিষয়ে মুখ খুলছে না কেউ।
কয়েক দশক ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ চলছে। এর সর্বশেষ বিস্ফোরক প্রকাশ ছিল, সাম্প্রতিক ড্রোন হামলা। হামলায় ইরান তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। সেই হামলার পর থেকে ইসরায়েলের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নানাভাবে উভয় পক্ষকে সংযত আচরণের কথা বলেছে। কিন্তু সেসব সতর্কবার্তাকে কেউ আমলে নিচ্ছে না। পরস্পর বাগ্যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে; একে অপরকে হুমকি দিচ্ছে।
এসব হুমকি ছাপিয়ে ইরানের ওপর ইসরায়েলের পাল্টা আঘাতের প্রকৃতি কেমন হতে পারে, সে বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েল ইরানের ওপর সাইবার হামলা চালাতে পারে, দেশটির পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে, ইরানি বিজ্ঞানী, কূটনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদদের হত্যা করতে পারে। এমনকি ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায়ও হামলা চালাতে পারে। এ ছাড়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইরানকে আরও ছোট গণ্ডিতে বন্দী করার চেষ্টাও করতে পারে দেশটি।
ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইসরায়েলের তুলনায় অনেকটা দুর্বল বলেই মনে করেন সমরবিশারদেরা। ফলে ইসরায়েল ইরানের পরমাণু অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে এ ধরনের হামলার ঝুঁকি অনেক। কারণ, এমনটা হলে ইরানও ছেড়ে কথা বলবে না। দেশটি আবারও ইসরায়েলে সরাসরি আঘাত হানতে পারে। ইসরায়েলের আশপাশে থাকা প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে লেলিয়ে দিতে পারে ইরান।
এমনটা হলে মধ্যপ্রাচ্যে নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। যা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কোনোভাবেই চাইবে না। অতীত ইতিহাস বলে, ইসরায়েল তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করলে যেকোনো দেশেই পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। দেশটি ১৯৮১ সালে ইরাকে ও ২০০৭ সালে সিরিয়ার পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।
ইসরায়েল ইরান ও এর পারমাণবিক কর্মসূচিকে অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদানের কথা থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করবে ইরান। এই অবস্থায় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চাইলেই ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো সম্ভব কি? অনেক সমর কৌশলবিদ মনে করেন, ইরানের অধিকাংশ পারমাণবিক স্থাপনা মাটির গভীরে হওয়ায় হামলা চালানো সহজ হবে না। জাগরোস পর্বতমালার পাশে ইরানের সবচেয়ে বড় পরমাণু গবেষণা অবকাঠামোটি মাটির এত গভীরে যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী বাংকার বিধ্বংসী বোমাও সেটিকে ধ্বংসে সফল না-ও হতে পারে।
সমর কৌশলবিদেরা মনে করেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে হলে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, ইরানে ইসরায়েলি কোনো পদক্ষেপে ওয়াশিংটন পাশে থাকবে না।
ইসরায়েলের জন্য সহজ একটি টার্গেট হতে পারে ইরানের বোনাব অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার, যা ইসরায়েলের মিত্র দেশ আজারবাইজান থেকে মাত্র ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তবে এ ক্ষেত্রেও সেই পুরোনো শঙ্কা; এ ধরনের যেকোনো হামলাই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে।
পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিষয়টি বাদ দিলেও ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে। এ ধরনের হামলা একই সঙ্গে ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিমত্তা যেমন প্রদর্শন করবে, তেমনি বেসামরিক প্রাণহানিও কমাবে। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গবেষণা শাখার সাবেক প্রধান সিমা শাইনেরও একই মত।
ইসরায়েল যুদ্ধবিমান না পাঠিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েও এসব স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। ইরানে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ইতিহাসও আছে বলে দাবি তেল আবিবের। ২০২২ সালে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত দাবি করেছিলেন, তাঁর দেশের সশস্ত্র বাহিনী ইরানে হামলা চালিয়ে একটি ড্রোন ঘাঁটি ধ্বংস করেছে।
বাহ্যিক আক্রমণ ছাড়াও ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আরেক রণক্ষেত্র হতে পারে সাইবার দুনিয়া। ইরানের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ইসরায়েল তাদের সামরিক-বেসামরিক সাইবার অবকাঠামোতে নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও ইসরায়েল কখনই এমন হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ধারণা করা হয়, অতীতে ইরানি পেট্রলপাম্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প অবকাঠামো হয়ে পারমাণবিক স্থাপনায় পর্যন্ত সাইবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এবারও ইরানের হামলার জবাবে তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে তেল আবিব।
ইরানি হামলার পাল্টায় ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকা ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো—বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লাহ, সিরিয়ার বিভিন্ন শিয়া গোষ্ঠী, ইরাকের বিভিন্ন শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাতে পারে।
এসব গোষ্ঠীর মধ্যে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে কয়েক মাস ধরেই লড়াইয়ে জড়িয়ে আছে ইসরায়েল। গাজায় হামলার পর ইসরায়েল অভিমুখী জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে লোহিত সাগরে হুতিরা। কিন্তু তবু তাদের ওপর হামলা করতে ইসরায়েলকে অনেক যদি-কিন্তুর হিসাব করতে হবে।
বিশেষ করে, ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন সেনা উপস্থিতি আছে; আছে ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীও। ইসরায়েল যদি ইরানে কিংবা এর প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা চালায়, প্রতিশোধ হিসেবে ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে এসব গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দিতে পারে। এমনকি সিরিয়া ও লেবাননে থাকা প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে নামিয়ে দিতে পারে ইরান, যা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েলের আরব ও পশ্চিমা মিত্ররা কোনোভাবেই চাইবে না।
তবে সব ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীর ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ না করে ইসরায়েল গাজায় আরও বেশি করে হামাসের বিরুদ্ধে লাগতে পারে। বিশেষ করে রাফাহে জোরালো অভিযান শুরু করতে পারে তেল আবিব। ইসরায়েলের দাবি, রাফাহে এখনো হামাসের আট হাজার যোদ্ধা আছে। হামাসকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করার মাধ্যমেও ইরানকে জবাব দিতে পারে ইসরায়েল।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সাবেক গবেষণাপ্রধান ইয়োসি কুপারওয়াসার বলেন, ‘ইরানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও তহবিল পাওয়া হামাসকে পরাজিত করা দেশটির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিজয়কেই চিহ্নিত করবে।’
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই এই যুদ্ধ, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ইরান অক্ষের ক্ষতি করতে হলে গাজায় আমাদের কাজ অবশ্যই শেষ করতে হবে।’
এর বাইরে, ইসরায়েল ইরানের ভেতরে গোপন অভিযান পরিচালনা করে দেশটির রাজনীতিবিদ, পরমাণুবিজ্ঞানী ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের হত্যা করাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় অন্তর্ঘাত বা নাশকতা চালাতে পারে। এমনকি ইরানের বাইরেও ইরানি বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এমনকি কূটনীতিক মিশনেও এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে পারে তেল আবিব। এ ছাড়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে বিশ্বে ইরানের গণ্ডিকে ছোট করার চেষ্টাও করতে পারে ইসরায়েল।
তবে এসব হামলা ও অভিযানের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকিও সর্বোচ্চ। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মেরিন জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘ইরান এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সতর্ক অবস্থায় আছে। অনুমান করা যায়, দেশটির নেতৃত্বসহ শীর্ষ স্থানীয়রা বাংকারে অবস্থান করছে।’ তাঁর মতে, কৌশলগত কারণ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা চাপের কারণে ইসরায়েল হয়তো এখনই ইরানে হামলা চালাবে না, হামলা চালানো উচিতও হবে না।
লন্ডনভিত্তিক থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউসের অ্যাসোসিয়েট ফেলো বিলাল সাবের মতে, মার্কিন ফ্যাক্টরের কারণেও ইসরায়েল এখনই ইরানে হামলা করতে পারবে না। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘটনার পর অতি দ্রুত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ফোনে কথা বলেন। সেই ফোন কলে তিনি বলেন, আমরা প্রতিশোধ সমর্থন করি না।’ সে কারণে এই মুহূর্তে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসী হামলার সম্ভাবনা কম বলে তিনি মনে করেন।
মার্কিন কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ১৩ এপ্রিল ইরান ইসরায়েলে অন্তত ১০০ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও দেড় শতাধিক অ্যাটাক ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছিল। ব্যবহার করেছিল ৩০টিরও বেশি ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও। জেনারেল ম্যাকেঞ্জির মতে, ইরানের এসব অস্ত্র দেশটির ভান্ডারের একটি বড় অংশই। অর্থাৎ, এগুলো ব্যবহারের ফলে দেশটির অস্ত্রভান্ডার কিছুটা হলেও খালি হয়েছে।
তবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাপক হলেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য যে লঞ্চার প্রয়োজন, সেগুলোর সংকট আছে দেশটির। ম্যাকেঞ্জি বলছেন, ইরানের মাত্র ৩০০ বা তার আশপাশে ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার আছে। ফলে, ইরান যদি ইসরায়েলের ওপর আবারও হামলা চালাতে চায় সে ক্ষেত্রে এটি বড় দুর্বলতা হিসেবে ধরা দিতে পারে।
এ ছাড়া ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার দূরত্বও বিবেচনার বিষয়। দুই দেশের মধ্যকার দূরত্ব ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি। ফলে, ইরানের কাছে যে ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র আছে, তা দিয়ে ইসরায়েলকে খুব একটা কাবু করা যাবে না। এ বিষয়ে সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জোনাথন লর্ড বলেন, ‘ফলে ইরানের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি নেই। অন্তত আজ বুধবারই তারা এ ধরনের আক্রমণ করবে না।’
তবে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে একেবারে খাটো করে দেখছেন না বিলাল সাব। তিনি বলেন, ‘ইরানিদের উচ্চ প্রযুক্তির রুশ নির্মিত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ইসরায়েলি আক্রমণকে রুখে দেওয়ার যথেষ্ট ক্ষমতা থাকতে পারে। তারা হয়তো ইসরায়েলি পঞ্চম-প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের সঙ্গে পুরোপুরি পেরে উঠবে না। কিন্তু তাদের যে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আছে, তা হেলাফেলার বিষয় নয়।’
তথ্যসূত্র: ফরেন পলিসি, রয়টার্স, ব্লুমবার্গ, এএফপি, তেহরান টাইমস ও আরব নিউজ
ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক-বেসামরিক নেতৃত্বের মুখে একাধিকবার ইরানে হামলা চালানোর কথা বললেও কখনো কীভাবে হামলা হবে, সে বিষয়ে মুখ খুলছে না কেউ।
কয়েক দশক ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ চলছে। এর সর্বশেষ বিস্ফোরক প্রকাশ ছিল, সাম্প্রতিক ড্রোন হামলা। হামলায় ইরান তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। সেই হামলার পর থেকে ইসরায়েলের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নানাভাবে উভয় পক্ষকে সংযত আচরণের কথা বলেছে। কিন্তু সেসব সতর্কবার্তাকে কেউ আমলে নিচ্ছে না। পরস্পর বাগ্যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে; একে অপরকে হুমকি দিচ্ছে।
এসব হুমকি ছাপিয়ে ইরানের ওপর ইসরায়েলের পাল্টা আঘাতের প্রকৃতি কেমন হতে পারে, সে বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েল ইরানের ওপর সাইবার হামলা চালাতে পারে, দেশটির পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে, ইরানি বিজ্ঞানী, কূটনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদদের হত্যা করতে পারে। এমনকি ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায়ও হামলা চালাতে পারে। এ ছাড়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইরানকে আরও ছোট গণ্ডিতে বন্দী করার চেষ্টাও করতে পারে দেশটি।
ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইসরায়েলের তুলনায় অনেকটা দুর্বল বলেই মনে করেন সমরবিশারদেরা। ফলে ইসরায়েল ইরানের পরমাণু অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে এ ধরনের হামলার ঝুঁকি অনেক। কারণ, এমনটা হলে ইরানও ছেড়ে কথা বলবে না। দেশটি আবারও ইসরায়েলে সরাসরি আঘাত হানতে পারে। ইসরায়েলের আশপাশে থাকা প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে লেলিয়ে দিতে পারে ইরান।
এমনটা হলে মধ্যপ্রাচ্যে নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। যা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কোনোভাবেই চাইবে না। অতীত ইতিহাস বলে, ইসরায়েল তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করলে যেকোনো দেশেই পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। দেশটি ১৯৮১ সালে ইরাকে ও ২০০৭ সালে সিরিয়ার পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।
ইসরায়েল ইরান ও এর পারমাণবিক কর্মসূচিকে অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদানের কথা থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করবে ইরান। এই অবস্থায় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চাইলেই ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো সম্ভব কি? অনেক সমর কৌশলবিদ মনে করেন, ইরানের অধিকাংশ পারমাণবিক স্থাপনা মাটির গভীরে হওয়ায় হামলা চালানো সহজ হবে না। জাগরোস পর্বতমালার পাশে ইরানের সবচেয়ে বড় পরমাণু গবেষণা অবকাঠামোটি মাটির এত গভীরে যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী বাংকার বিধ্বংসী বোমাও সেটিকে ধ্বংসে সফল না-ও হতে পারে।
সমর কৌশলবিদেরা মনে করেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে হলে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, ইরানে ইসরায়েলি কোনো পদক্ষেপে ওয়াশিংটন পাশে থাকবে না।
ইসরায়েলের জন্য সহজ একটি টার্গেট হতে পারে ইরানের বোনাব অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার, যা ইসরায়েলের মিত্র দেশ আজারবাইজান থেকে মাত্র ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তবে এ ক্ষেত্রেও সেই পুরোনো শঙ্কা; এ ধরনের যেকোনো হামলাই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে।
পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিষয়টি বাদ দিলেও ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে। এ ধরনের হামলা একই সঙ্গে ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিমত্তা যেমন প্রদর্শন করবে, তেমনি বেসামরিক প্রাণহানিও কমাবে। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গবেষণা শাখার সাবেক প্রধান সিমা শাইনেরও একই মত।
ইসরায়েল যুদ্ধবিমান না পাঠিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েও এসব স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। ইরানে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ইতিহাসও আছে বলে দাবি তেল আবিবের। ২০২২ সালে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত দাবি করেছিলেন, তাঁর দেশের সশস্ত্র বাহিনী ইরানে হামলা চালিয়ে একটি ড্রোন ঘাঁটি ধ্বংস করেছে।
বাহ্যিক আক্রমণ ছাড়াও ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আরেক রণক্ষেত্র হতে পারে সাইবার দুনিয়া। ইরানের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ইসরায়েল তাদের সামরিক-বেসামরিক সাইবার অবকাঠামোতে নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও ইসরায়েল কখনই এমন হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ধারণা করা হয়, অতীতে ইরানি পেট্রলপাম্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প অবকাঠামো হয়ে পারমাণবিক স্থাপনায় পর্যন্ত সাইবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এবারও ইরানের হামলার জবাবে তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে তেল আবিব।
ইরানি হামলার পাল্টায় ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকা ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো—বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লাহ, সিরিয়ার বিভিন্ন শিয়া গোষ্ঠী, ইরাকের বিভিন্ন শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাতে পারে।
এসব গোষ্ঠীর মধ্যে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে কয়েক মাস ধরেই লড়াইয়ে জড়িয়ে আছে ইসরায়েল। গাজায় হামলার পর ইসরায়েল অভিমুখী জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে লোহিত সাগরে হুতিরা। কিন্তু তবু তাদের ওপর হামলা করতে ইসরায়েলকে অনেক যদি-কিন্তুর হিসাব করতে হবে।
বিশেষ করে, ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন সেনা উপস্থিতি আছে; আছে ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীও। ইসরায়েল যদি ইরানে কিংবা এর প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা চালায়, প্রতিশোধ হিসেবে ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে এসব গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দিতে পারে। এমনকি সিরিয়া ও লেবাননে থাকা প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে নামিয়ে দিতে পারে ইরান, যা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েলের আরব ও পশ্চিমা মিত্ররা কোনোভাবেই চাইবে না।
তবে সব ইরানি প্রক্সি গোষ্ঠীর ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ না করে ইসরায়েল গাজায় আরও বেশি করে হামাসের বিরুদ্ধে লাগতে পারে। বিশেষ করে রাফাহে জোরালো অভিযান শুরু করতে পারে তেল আবিব। ইসরায়েলের দাবি, রাফাহে এখনো হামাসের আট হাজার যোদ্ধা আছে। হামাসকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করার মাধ্যমেও ইরানকে জবাব দিতে পারে ইসরায়েল।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সাবেক গবেষণাপ্রধান ইয়োসি কুপারওয়াসার বলেন, ‘ইরানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও তহবিল পাওয়া হামাসকে পরাজিত করা দেশটির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিজয়কেই চিহ্নিত করবে।’
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই এই যুদ্ধ, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ইরান অক্ষের ক্ষতি করতে হলে গাজায় আমাদের কাজ অবশ্যই শেষ করতে হবে।’
এর বাইরে, ইসরায়েল ইরানের ভেতরে গোপন অভিযান পরিচালনা করে দেশটির রাজনীতিবিদ, পরমাণুবিজ্ঞানী ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের হত্যা করাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় অন্তর্ঘাত বা নাশকতা চালাতে পারে। এমনকি ইরানের বাইরেও ইরানি বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এমনকি কূটনীতিক মিশনেও এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে পারে তেল আবিব। এ ছাড়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে বিশ্বে ইরানের গণ্ডিকে ছোট করার চেষ্টাও করতে পারে ইসরায়েল।
তবে এসব হামলা ও অভিযানের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকিও সর্বোচ্চ। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মেরিন জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘ইরান এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সতর্ক অবস্থায় আছে। অনুমান করা যায়, দেশটির নেতৃত্বসহ শীর্ষ স্থানীয়রা বাংকারে অবস্থান করছে।’ তাঁর মতে, কৌশলগত কারণ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা চাপের কারণে ইসরায়েল হয়তো এখনই ইরানে হামলা চালাবে না, হামলা চালানো উচিতও হবে না।
লন্ডনভিত্তিক থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউসের অ্যাসোসিয়েট ফেলো বিলাল সাবের মতে, মার্কিন ফ্যাক্টরের কারণেও ইসরায়েল এখনই ইরানে হামলা করতে পারবে না। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘটনার পর অতি দ্রুত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ফোনে কথা বলেন। সেই ফোন কলে তিনি বলেন, আমরা প্রতিশোধ সমর্থন করি না।’ সে কারণে এই মুহূর্তে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসী হামলার সম্ভাবনা কম বলে তিনি মনে করেন।
মার্কিন কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ১৩ এপ্রিল ইরান ইসরায়েলে অন্তত ১০০ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও দেড় শতাধিক অ্যাটাক ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছিল। ব্যবহার করেছিল ৩০টিরও বেশি ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও। জেনারেল ম্যাকেঞ্জির মতে, ইরানের এসব অস্ত্র দেশটির ভান্ডারের একটি বড় অংশই। অর্থাৎ, এগুলো ব্যবহারের ফলে দেশটির অস্ত্রভান্ডার কিছুটা হলেও খালি হয়েছে।
তবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাপক হলেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য যে লঞ্চার প্রয়োজন, সেগুলোর সংকট আছে দেশটির। ম্যাকেঞ্জি বলছেন, ইরানের মাত্র ৩০০ বা তার আশপাশে ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার আছে। ফলে, ইরান যদি ইসরায়েলের ওপর আবারও হামলা চালাতে চায় সে ক্ষেত্রে এটি বড় দুর্বলতা হিসেবে ধরা দিতে পারে।
এ ছাড়া ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার দূরত্বও বিবেচনার বিষয়। দুই দেশের মধ্যকার দূরত্ব ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি। ফলে, ইরানের কাছে যে ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র আছে, তা দিয়ে ইসরায়েলকে খুব একটা কাবু করা যাবে না। এ বিষয়ে সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জোনাথন লর্ড বলেন, ‘ফলে ইরানের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি নেই। অন্তত আজ বুধবারই তারা এ ধরনের আক্রমণ করবে না।’
তবে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে একেবারে খাটো করে দেখছেন না বিলাল সাব। তিনি বলেন, ‘ইরানিদের উচ্চ প্রযুক্তির রুশ নির্মিত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ইসরায়েলি আক্রমণকে রুখে দেওয়ার যথেষ্ট ক্ষমতা থাকতে পারে। তারা হয়তো ইসরায়েলি পঞ্চম-প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের সঙ্গে পুরোপুরি পেরে উঠবে না। কিন্তু তাদের যে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আছে, তা হেলাফেলার বিষয় নয়।’
তথ্যসূত্র: ফরেন পলিসি, রয়টার্স, ব্লুমবার্গ, এএফপি, তেহরান টাইমস ও আরব নিউজ
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৬ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে