অনলাইন ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ই বেইজিং–ওয়াশিংটন বাণিজ্য যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। প্রযুক্তি পণ্যে অতিমাত্রায় চীন–নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প। চীনও পাল্টা পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। সেই থেকেই চীনের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘বিশ্বের কারখানা’ খ্যাত চীনের বিকল্প খুঁজতে গিয়ে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরের দিকেই নজর রাখছে ওয়াশিংটন। এই তালিকায় সবার আগে থাকছে ভারত এবং ভিয়েতনাম।
সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত জি–২০ সম্মেলন শেষ করেই ভিয়েতনাম সফরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ও কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা, এনজিও কার্যক্রম, জেলাখানার পরিস্থিতি এবং শ্রম আইন নিয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় সরকারের সমালোচক দুই অধিকার–কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে দিতে রাজি হয়েছে ভিয়েতনাম সরকার।
এদিকে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে উচ্চাশার কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সফররত ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে গতকাল বুধবার নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন। সেখানে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তৃতায় তিনি ভিয়েতনাম–যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে কথা বলেছেন।
দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘ যুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে সম্পর্ক উন্নয়নে উভয়ের উদ্যোগী ও সমঝোতার মনোভাবের কথাও তাঁদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার লক্ষ্যেই ভিয়েতনাম সফরে গিয়েছিলেন জো বাইডেন। এ সফর যুক্তরাষ্ট্রের চীন–নির্ভরতা কমানোর প্রচেষ্টার একটি অংশ বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক শত্রুভাবাপন্ন এ দেশ দুটি তাদের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এ পদক্ষেপের ফলে এ দুই দেশের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে।
চীনের সঙ্গে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা মোকাবিলা করতে ও চিপ তৈরির মতো প্রযুক্তিতে চীন–নির্ভরতা কমাতে এশিয়ায় বন্ধু রাষ্ট্র তৈরি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে অ্যাপল থেকে ইনটেলের মতো সংস্থাগুলো সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনতে ভিয়েতনামে প্রবেশ করেছে। এর জন্য ভিয়েতনামের কারখানার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী মন্দাকে অগ্রাহ্য করে ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ ঘটছে। চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই নিজেদের স্বার্থে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দরজা খুলতে আপত্তি করছে না হ্যানয়।
এদিকে গত ১০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ও ভিয়েতনাম এয়ারলাইনসের মধ্যে ৭৮০ কোটি ডলারের চুক্তির কথা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে ২০২২ সালে কোভিডের কারণে ভ্রমণ বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পর বিশ্বের পঞ্চম দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাভিয়েশন বাজারে পরিণত হয়েছে ভিয়েতনাম। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভিয়েতনাম ১৫ কোটি যাত্রী সেবা দেবে।
২০১৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের পর এটাই যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের প্রথম ভিয়েতনাম সফর। বাইডেন ভিয়েতনামের অর্থনীতির ‘প্রযুক্তি কেন্দ্রিক প্রবৃদ্ধির প্রচার’ করতে ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এঙ্গুয়েন ফু ত্রং ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ইউএস–আসিয়ান বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও ভিয়েতনামে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত টেড ওসিয়াস সিএনএনকে বলেন, ‘২০১৩ সালের এক অংশীদারত্ব চুক্তি অনুসারে দেশ দুটির মধ্যকার বাণিজ্য এরই মধ্যে অনেক বেড়েছে। সুতরাং সম্পর্কের উন্নয়ন বলতে “বিদ্যমান বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাই” বোঝানো হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তথ্য অনুসারে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনাম থেকে প্রায় ১২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। ২০২১ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৯০ কোটি ও ২০২০ সালে ছিল ৭ হাজার ৯৬০ কোটি ডলার।
গত বছর ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী হয়ে ওঠে, দুই বছর আগেও যা ছিল দশম অবস্থানে।
সাপ্লাই চেইনের স্থানান্তর
বাণিজ্য উপাত্তগুলো বলছে, ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমে গভীর হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বারবার ‘ফ্রেন্ড শোরিং’ বা ‘বন্ধুত্ব বৃদ্ধির’ গুরুত্বের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বন্ধুত্ব বৃদ্ধি মানে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের হাত থেকে বাণিজ্যকে রক্ষা করতে সাপ্লাই চেইনকে বন্ধু রাষ্ট্রের দিকে স্থানান্তরকে বোঝানো হয়।
গত বছর গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলে এক বিবৃতিতে জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ‘যেসব দেশের সঙ্গে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আছে, তাদের ওপর ব্যাপক ভাবে নির্ভর হওয়ার চেয়ে আমাদের সরবরাহকারীদের মধ্যে বৈচিত্র্য আনা উচিত।’
ক্রমবর্ধমান শ্রমিক ব্যয় ও অনিশ্চিত কাজের পরিবেশের মতো চাপের ওপর রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তি চাপ তৈরি করে। এ চাপগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনে কেমন ব্যবসা হতে পারে তা নিয়ে দুবার ভাবতে বাধ্য করছে। যদিও চীনকে বিশ্বের কারখানা হিসেবে ধরা হয়।
তবে, ধীরে ধীরে চীনের অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হচ্ছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সময় থেকে সব ধরনের পণ্যে বাণিজ্য শুল্কের কারণে উৎপাদনের জন্য ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো উদীয়মান বাজারের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে ওয়াশিংটন।
মহামারির প্রাদুর্ভাব ও বাণিজ্য যুদ্ধের পর প্রযুক্তিসহ প্রায় সব পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের বিকল্প নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়। অর্থাৎ উৎপাদনের জন্য বিকল্প উৎস খোঁজা শুরু করে যাতে কোনো নির্দিষ্ট একটি উৎপাদনকারীর ওপর নির্ভর করে না থাকতে হয়।
২০২২ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, অর্থনৈতিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান র্যাবোব্যাংক বলে, প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ চীনা কর্মসংস্থান সরাসরি পশ্চিমে রপ্তানির সঙ্গে জড়িত। ‘ফ্রেন্ড শোরিং’ এর ফলে এ কর্মসংস্থানগুলো চীন থেকে সরে যেতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ওই কর্মসংস্থানগুলোর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ কর্মসংস্থানই ছোটখাটো সাধারণ প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এগুলো চীন থেকে ভিয়েতনামে স্থানান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনের লেখক ও র্যাবোব্যাংকের বৈশ্বিক কৌশলী মাইকেল এভরি বলেন, ‘বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কয়েক বছর ধরেই ভিয়েতনামের বেশ উন্নতি হচ্ছে। তুলনামূলক কম শ্রমমূল্য ও তরুণ জনগোষ্ঠীর ফলে ভিয়েতনামে শক্তিশালী কর্মশক্তি ও ভোক্তা তৈরি হয়েছে। এর ফলে ৯ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার এ দেশে বিনিয়োগ করা লাভজনক বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ই বেইজিং–ওয়াশিংটন বাণিজ্য যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। প্রযুক্তি পণ্যে অতিমাত্রায় চীন–নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প। চীনও পাল্টা পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। সেই থেকেই চীনের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘বিশ্বের কারখানা’ খ্যাত চীনের বিকল্প খুঁজতে গিয়ে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরের দিকেই নজর রাখছে ওয়াশিংটন। এই তালিকায় সবার আগে থাকছে ভারত এবং ভিয়েতনাম।
সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত জি–২০ সম্মেলন শেষ করেই ভিয়েতনাম সফরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ও কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা, এনজিও কার্যক্রম, জেলাখানার পরিস্থিতি এবং শ্রম আইন নিয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় সরকারের সমালোচক দুই অধিকার–কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে দিতে রাজি হয়েছে ভিয়েতনাম সরকার।
এদিকে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে উচ্চাশার কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সফররত ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে গতকাল বুধবার নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন। সেখানে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তৃতায় তিনি ভিয়েতনাম–যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে কথা বলেছেন।
দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘ যুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে সম্পর্ক উন্নয়নে উভয়ের উদ্যোগী ও সমঝোতার মনোভাবের কথাও তাঁদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার লক্ষ্যেই ভিয়েতনাম সফরে গিয়েছিলেন জো বাইডেন। এ সফর যুক্তরাষ্ট্রের চীন–নির্ভরতা কমানোর প্রচেষ্টার একটি অংশ বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক শত্রুভাবাপন্ন এ দেশ দুটি তাদের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এ পদক্ষেপের ফলে এ দুই দেশের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে।
চীনের সঙ্গে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা মোকাবিলা করতে ও চিপ তৈরির মতো প্রযুক্তিতে চীন–নির্ভরতা কমাতে এশিয়ায় বন্ধু রাষ্ট্র তৈরি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে অ্যাপল থেকে ইনটেলের মতো সংস্থাগুলো সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনতে ভিয়েতনামে প্রবেশ করেছে। এর জন্য ভিয়েতনামের কারখানার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী মন্দাকে অগ্রাহ্য করে ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ ঘটছে। চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই নিজেদের স্বার্থে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দরজা খুলতে আপত্তি করছে না হ্যানয়।
এদিকে গত ১০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ও ভিয়েতনাম এয়ারলাইনসের মধ্যে ৭৮০ কোটি ডলারের চুক্তির কথা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে ২০২২ সালে কোভিডের কারণে ভ্রমণ বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পর বিশ্বের পঞ্চম দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাভিয়েশন বাজারে পরিণত হয়েছে ভিয়েতনাম। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভিয়েতনাম ১৫ কোটি যাত্রী সেবা দেবে।
২০১৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের পর এটাই যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের প্রথম ভিয়েতনাম সফর। বাইডেন ভিয়েতনামের অর্থনীতির ‘প্রযুক্তি কেন্দ্রিক প্রবৃদ্ধির প্রচার’ করতে ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এঙ্গুয়েন ফু ত্রং ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ইউএস–আসিয়ান বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও ভিয়েতনামে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত টেড ওসিয়াস সিএনএনকে বলেন, ‘২০১৩ সালের এক অংশীদারত্ব চুক্তি অনুসারে দেশ দুটির মধ্যকার বাণিজ্য এরই মধ্যে অনেক বেড়েছে। সুতরাং সম্পর্কের উন্নয়ন বলতে “বিদ্যমান বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাই” বোঝানো হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তথ্য অনুসারে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনাম থেকে প্রায় ১২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। ২০২১ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৯০ কোটি ও ২০২০ সালে ছিল ৭ হাজার ৯৬০ কোটি ডলার।
গত বছর ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী হয়ে ওঠে, দুই বছর আগেও যা ছিল দশম অবস্থানে।
সাপ্লাই চেইনের স্থানান্তর
বাণিজ্য উপাত্তগুলো বলছে, ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমে গভীর হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বারবার ‘ফ্রেন্ড শোরিং’ বা ‘বন্ধুত্ব বৃদ্ধির’ গুরুত্বের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বন্ধুত্ব বৃদ্ধি মানে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের হাত থেকে বাণিজ্যকে রক্ষা করতে সাপ্লাই চেইনকে বন্ধু রাষ্ট্রের দিকে স্থানান্তরকে বোঝানো হয়।
গত বছর গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলে এক বিবৃতিতে জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ‘যেসব দেশের সঙ্গে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আছে, তাদের ওপর ব্যাপক ভাবে নির্ভর হওয়ার চেয়ে আমাদের সরবরাহকারীদের মধ্যে বৈচিত্র্য আনা উচিত।’
ক্রমবর্ধমান শ্রমিক ব্যয় ও অনিশ্চিত কাজের পরিবেশের মতো চাপের ওপর রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তি চাপ তৈরি করে। এ চাপগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনে কেমন ব্যবসা হতে পারে তা নিয়ে দুবার ভাবতে বাধ্য করছে। যদিও চীনকে বিশ্বের কারখানা হিসেবে ধরা হয়।
তবে, ধীরে ধীরে চীনের অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হচ্ছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সময় থেকে সব ধরনের পণ্যে বাণিজ্য শুল্কের কারণে উৎপাদনের জন্য ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো উদীয়মান বাজারের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে ওয়াশিংটন।
মহামারির প্রাদুর্ভাব ও বাণিজ্য যুদ্ধের পর প্রযুক্তিসহ প্রায় সব পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের বিকল্প নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়। অর্থাৎ উৎপাদনের জন্য বিকল্প উৎস খোঁজা শুরু করে যাতে কোনো নির্দিষ্ট একটি উৎপাদনকারীর ওপর নির্ভর করে না থাকতে হয়।
২০২২ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, অর্থনৈতিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান র্যাবোব্যাংক বলে, প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ চীনা কর্মসংস্থান সরাসরি পশ্চিমে রপ্তানির সঙ্গে জড়িত। ‘ফ্রেন্ড শোরিং’ এর ফলে এ কর্মসংস্থানগুলো চীন থেকে সরে যেতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ওই কর্মসংস্থানগুলোর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ কর্মসংস্থানই ছোটখাটো সাধারণ প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এগুলো চীন থেকে ভিয়েতনামে স্থানান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনের লেখক ও র্যাবোব্যাংকের বৈশ্বিক কৌশলী মাইকেল এভরি বলেন, ‘বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কয়েক বছর ধরেই ভিয়েতনামের বেশ উন্নতি হচ্ছে। তুলনামূলক কম শ্রমমূল্য ও তরুণ জনগোষ্ঠীর ফলে ভিয়েতনামে শক্তিশালী কর্মশক্তি ও ভোক্তা তৈরি হয়েছে। এর ফলে ৯ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার এ দেশে বিনিয়োগ করা লাভজনক বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।’
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৮ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে