অনলাইন ডেস্ক
ভেনেজুয়েলার ভোট ব্যবস্থা পৃথিবীর অন্যতম সেরা। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) পাশাপাশি কাগজে ছাপা রসিদও আছে। পরে দুই ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের হাতে। বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের ওপরই অনাস্থা জানিয়েছেন। এর অবশ্য কারণও আছে।
ভোটের ফল জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে উত্তাল ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসাটা এবার কঠিন হয়ে উঠেছে। বিরোধী দল বলছে, ফলাফল জালিয়াতি করা হয়েছে। বিরোধী প্রার্থী এদমুন্দো গঞ্জালেস বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।
ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল (সিএনই) হলে ভেনেজুয়েলার নির্বাচন কমিশন। এই স্বাধীন সংস্থা মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করলেও তারা এখন পর্যন্ত প্রতিটি ভোট কেন্দ্র থেকে পাওয়া ভোটের সংখ্যা প্রকাশ করতে পারেনি। বিরোধীরা বলছেন, কেন্দ্র ভিত্তিক ভোটের ফলাফল তাঁদের হাতে আছে। এতে গঞ্জালেস বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকেও সিএনই-এর ওপর চাপ বাড়ছে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট মাদুরো নিজেই ভেনেজুয়েলার শীর্ষ আদালতে রিট করে বসেছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ আরও বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই উদ্বেগের কারণ বুঝতে ভেনেজুয়েলার পুরো নির্বাচন ও সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা দরকার।
ভেনেজুয়েলার ইভিএমে পছন্দের প্রার্থীর জন্য নির্দিষ্ট বোতাম থাকে। ভোটার সেটিতে চাপ দেন। বোতাম টিপলে মেশিনটি একটি কাগজের রসিদও প্রিন্ট করে। ভোটার সেই রসিদটি একটি ব্যালট বাক্সে ফেলেন।
ভোটগ্রহণ শেষে সেখানেই গণনা শুরু হয়। প্রতিটি ভোটিং মেশিন ভোটারদের দেওয়া সব ভোটের একটি সারাংশও প্রিন্ট করে। পাশাপাশি মেশিনের হিসাব সঠিক কিনা তা নিশ্চিত হতে প্রতিটি পৃথক ভোট কেন্দ্রে কাগজের রসিদগুলোও গণনা করা হয়।
আইন অনুসারে, এই প্রক্রিয়াটি সর্বজনীন এবং যে কেউ উপস্থিত থেকে তা প্রত্যক্ষ করতে পারে। বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী স্বীকৃত প্রত্যক্ষদর্শীও থাকেন।
গণনা কার্যক্রমের প্রধান এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর স্বীকৃত সাক্ষীরা সন্তুষ্ট হলে তাঁরা ট্যালিতে (ভোটের সংখ্যা) স্বাক্ষর করেন। এরপরই এটি ইলেকট্রনিকভাবে সিএনই–তে পাঠানো হয়।
স্বীকৃত সাক্ষীদের হাতেও একটি করে কপি দেওয়া হয়। কাগজের প্রিন্টআউটগুলো সামরিক বাহিনী সিএনইতে পৌঁছে দেয়।
খাতা কলমে প্রক্রিয়াটি বেশ স্বচ্ছ। কিন্তু সমস্যা হলো ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল (সিএনই) গঠনে। এই কাউন্সিলের পাঁচ সদস্যের তিনজনই সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র। সিএনই-এর প্রেসিডেন্ট এলভিস আমরোসো প্রেসিডেন্ট মাদুরোর আইনি পরামর্শক ছিলেন বহুদিন।
সিএনই নির্বাচনের ফলাফলে হস্তক্ষেপ করতে পারে সেই আশঙ্কায় বিরোধীরা হাজার হাজার নাগরিককে ভোট গণনার সময় সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল।
নির্বাচনের দিন মধ্যরাতের ঠিক পরে সিএনই প্রথম আংশিক ফলাফল ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, ৮০% ভোট গণনা শেষ হয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাদুরো পেয়েছেন ৫১ লাখ ৫০ হাজার ভোট, আর বিরোধী নেতা গঞ্জালেস পেয়েছেন ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ভোট।
সিএনই প্রেসিডেন্ট এলভিস আমরোসো বলেন, এই পরিসংখ্যান বলে যে, মাদুরো ৫১ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে নিশ্চিতভাবে এগিয়ে আছেন, যেখানে বিরোধীরা ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ পেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
কিন্তু বিরোধীরা তাৎক্ষণিকভাবে সেই ফলাফলের প্রতিবাদ করেন। বিরোধী দলের সাক্ষীরা সারা দেশের ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটের সংখ্যার কপি পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা সেই হিসাব মিলিয়ে দেখেছেন। নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা পর বিরোধী নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো ঘোষণা করেন, ৪০ শতাংশ ট্যালি দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, তাঁদের প্রার্থী স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
নির্বাচনের পরের দিনগুলোতে বিরোধীরা ৮৪ শতাংশ ভোটের ট্যালি পাওয়ার কথা দাবি করে আসছেন। বিরোধীরা বলছেন, সব মিলিয়ে তাঁদের প্রার্থী গঞ্জালেস ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
বিরোধীরা তাঁদের নথিপত্র আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্বাধীন গবেষকদের দিয়েছেন। একটি ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে। নাগরিকেরা নিজ নিজ আইডি দিয়ে সেখানে ঢুকে বিস্তারিত দেখতে পারছেন।
সিএনইকে তার স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছেন বিরোধীরা। কলম্বিয়া এবং ব্রাজিলের বামপন্থী নেতারা–সহ লাতিন আমেরিকান নেতারা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং স্বতন্ত্র নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরাও সিএনইকে ভোটের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে।
সর্বশেষ বুধবার (৩১ জুলাই), ভোটের তিন দিন পর, মাদুরো বলেছেন, তাঁর জোট তাঁদের হাতে থাকা শতভাগ ভোটের হিসাব প্রকাশ করতে প্রস্তুত।
ভেনেজুয়েলার সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম ট্রাইব্যুনাল অব জাস্টিসে (টিএসজে) গিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রেসিডেন্ট মাদুরো এর আগে, ‘একটি নজিরবিহীন সাইবার হামলা’–এর কারণে ভোটের ট্যালি প্রকাশে সিএনই–এর বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। এ কারণেই নাকি ভোটকেন্দ্র থেকে ট্যালি আসতে দেরি হয়েছে।
কিন্তু তিন দিন পর ভোটের সংখ্যা প্রকাশ না করে প্রেসিডেন্ট কেন উচ্চ আদালতে গেলেন? এটিই এখন সন্দেহের বড় কারণ। প্রেসিডেন্ট মাদুরো হাইকোর্টে ‘আম্পারো রিট’ করেছেন। প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এমন রিট অস্বাভাবিক। কারণ এই আইনি পদক্ষেপ সাধারণত নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত, যারা মনে করেন যে তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কোন অধিকার ক্ষণ্ন হলো সেটি স্পষ্ট নয়!
তিনি শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছেন যেন, সিএনই প্রকাশিত ফলাফল যে সঠিক তা নিশ্চিত করার জন্য ভোটের সংখ্যা নিরীক্ষা করা হয়। হাইকোর্ট উতরে গেলেই মাদুরো আবার ছয় বছরের জন্য ক্ষমতায় বসবেন।
আপাতদৃষ্টিতে এটি জনগণের প্রতি মাদুরোর নতি স্বীকার বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সেখানেও অন্য উদ্দেশ্য দেখছেন বিরোধীরা। তাঁরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট মাদুরো মূলত সিএনই থেকে নজর সরাতেই শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। তিনি মূলত ভোটের ফল প্রকাশে সময় ক্ষেপণ করার উপায় খুঁজছেন।
বল এখন সুপ্রিম ট্রাইব্যুনালের (টিএসজে) কোর্টে। কিন্তু উচ্চ আদালতের বিচারকেরা বারবার সরকারের প্রতি তাঁদের আনুগত্য প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং এখানে দরজার আড়ালে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। মাদুরো যদি ভোটের হিসাব সরবরাহ করেনও সেটি দেখার এখতিয়ার থাকবে শুধু অনুগত বিচারপতিদের।
স্বল্পমেয়াদে এটি সিএনই–এর ওপর চাপব কমাবে, সেই সঙ্গে মাদুরোকেও একটি এমন যুক্তি দাঁড় করানোর সুযোগ দেবে যে, ভোটের হিসাব হস্তান্তর করতে আন্তর্জাতিক অনুরোধগুলো তিনি রক্ষা করেছেন। আর মধ্যবর্তী আদেশে আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিলে নির্বাচনে জয়ের দাবিই শক্তিশালী হবে।
অবশ্য এরই মধ্যে মাদুরোর এই পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছেন কার্টার সেন্টারসহ স্বাধীন সংস্থাগুলো। এই সংস্থাগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য মাদুরো সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য সব আয়োজনই ছিল মাদুরোর। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো ইচ্ছে তাঁর নেই। তিনি শুধু চান স্বীকৃতি!
এবারই কিন্তু প্রথম নয়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীদের কারাগারে পাঠানো, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাধা দেওয়া বা নির্বাসনে বাধ্য করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন মাদুরো। আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভেনেজুয়েলার ভোট ব্যবস্থা পৃথিবীর অন্যতম সেরা। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) পাশাপাশি কাগজে ছাপা রসিদও আছে। পরে দুই ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের হাতে। বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের ওপরই অনাস্থা জানিয়েছেন। এর অবশ্য কারণও আছে।
ভোটের ফল জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে উত্তাল ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসাটা এবার কঠিন হয়ে উঠেছে। বিরোধী দল বলছে, ফলাফল জালিয়াতি করা হয়েছে। বিরোধী প্রার্থী এদমুন্দো গঞ্জালেস বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।
ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল (সিএনই) হলে ভেনেজুয়েলার নির্বাচন কমিশন। এই স্বাধীন সংস্থা মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করলেও তারা এখন পর্যন্ত প্রতিটি ভোট কেন্দ্র থেকে পাওয়া ভোটের সংখ্যা প্রকাশ করতে পারেনি। বিরোধীরা বলছেন, কেন্দ্র ভিত্তিক ভোটের ফলাফল তাঁদের হাতে আছে। এতে গঞ্জালেস বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকেও সিএনই-এর ওপর চাপ বাড়ছে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট মাদুরো নিজেই ভেনেজুয়েলার শীর্ষ আদালতে রিট করে বসেছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ আরও বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই উদ্বেগের কারণ বুঝতে ভেনেজুয়েলার পুরো নির্বাচন ও সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা দরকার।
ভেনেজুয়েলার ইভিএমে পছন্দের প্রার্থীর জন্য নির্দিষ্ট বোতাম থাকে। ভোটার সেটিতে চাপ দেন। বোতাম টিপলে মেশিনটি একটি কাগজের রসিদও প্রিন্ট করে। ভোটার সেই রসিদটি একটি ব্যালট বাক্সে ফেলেন।
ভোটগ্রহণ শেষে সেখানেই গণনা শুরু হয়। প্রতিটি ভোটিং মেশিন ভোটারদের দেওয়া সব ভোটের একটি সারাংশও প্রিন্ট করে। পাশাপাশি মেশিনের হিসাব সঠিক কিনা তা নিশ্চিত হতে প্রতিটি পৃথক ভোট কেন্দ্রে কাগজের রসিদগুলোও গণনা করা হয়।
আইন অনুসারে, এই প্রক্রিয়াটি সর্বজনীন এবং যে কেউ উপস্থিত থেকে তা প্রত্যক্ষ করতে পারে। বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী স্বীকৃত প্রত্যক্ষদর্শীও থাকেন।
গণনা কার্যক্রমের প্রধান এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর স্বীকৃত সাক্ষীরা সন্তুষ্ট হলে তাঁরা ট্যালিতে (ভোটের সংখ্যা) স্বাক্ষর করেন। এরপরই এটি ইলেকট্রনিকভাবে সিএনই–তে পাঠানো হয়।
স্বীকৃত সাক্ষীদের হাতেও একটি করে কপি দেওয়া হয়। কাগজের প্রিন্টআউটগুলো সামরিক বাহিনী সিএনইতে পৌঁছে দেয়।
খাতা কলমে প্রক্রিয়াটি বেশ স্বচ্ছ। কিন্তু সমস্যা হলো ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল (সিএনই) গঠনে। এই কাউন্সিলের পাঁচ সদস্যের তিনজনই সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র। সিএনই-এর প্রেসিডেন্ট এলভিস আমরোসো প্রেসিডেন্ট মাদুরোর আইনি পরামর্শক ছিলেন বহুদিন।
সিএনই নির্বাচনের ফলাফলে হস্তক্ষেপ করতে পারে সেই আশঙ্কায় বিরোধীরা হাজার হাজার নাগরিককে ভোট গণনার সময় সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল।
নির্বাচনের দিন মধ্যরাতের ঠিক পরে সিএনই প্রথম আংশিক ফলাফল ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, ৮০% ভোট গণনা শেষ হয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাদুরো পেয়েছেন ৫১ লাখ ৫০ হাজার ভোট, আর বিরোধী নেতা গঞ্জালেস পেয়েছেন ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ভোট।
সিএনই প্রেসিডেন্ট এলভিস আমরোসো বলেন, এই পরিসংখ্যান বলে যে, মাদুরো ৫১ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে নিশ্চিতভাবে এগিয়ে আছেন, যেখানে বিরোধীরা ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ পেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
কিন্তু বিরোধীরা তাৎক্ষণিকভাবে সেই ফলাফলের প্রতিবাদ করেন। বিরোধী দলের সাক্ষীরা সারা দেশের ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটের সংখ্যার কপি পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা সেই হিসাব মিলিয়ে দেখেছেন। নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা পর বিরোধী নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো ঘোষণা করেন, ৪০ শতাংশ ট্যালি দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, তাঁদের প্রার্থী স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
নির্বাচনের পরের দিনগুলোতে বিরোধীরা ৮৪ শতাংশ ভোটের ট্যালি পাওয়ার কথা দাবি করে আসছেন। বিরোধীরা বলছেন, সব মিলিয়ে তাঁদের প্রার্থী গঞ্জালেস ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
বিরোধীরা তাঁদের নথিপত্র আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্বাধীন গবেষকদের দিয়েছেন। একটি ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে। নাগরিকেরা নিজ নিজ আইডি দিয়ে সেখানে ঢুকে বিস্তারিত দেখতে পারছেন।
সিএনইকে তার স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছেন বিরোধীরা। কলম্বিয়া এবং ব্রাজিলের বামপন্থী নেতারা–সহ লাতিন আমেরিকান নেতারা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং স্বতন্ত্র নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরাও সিএনইকে ভোটের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে।
সর্বশেষ বুধবার (৩১ জুলাই), ভোটের তিন দিন পর, মাদুরো বলেছেন, তাঁর জোট তাঁদের হাতে থাকা শতভাগ ভোটের হিসাব প্রকাশ করতে প্রস্তুত।
ভেনেজুয়েলার সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম ট্রাইব্যুনাল অব জাস্টিসে (টিএসজে) গিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রেসিডেন্ট মাদুরো এর আগে, ‘একটি নজিরবিহীন সাইবার হামলা’–এর কারণে ভোটের ট্যালি প্রকাশে সিএনই–এর বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। এ কারণেই নাকি ভোটকেন্দ্র থেকে ট্যালি আসতে দেরি হয়েছে।
কিন্তু তিন দিন পর ভোটের সংখ্যা প্রকাশ না করে প্রেসিডেন্ট কেন উচ্চ আদালতে গেলেন? এটিই এখন সন্দেহের বড় কারণ। প্রেসিডেন্ট মাদুরো হাইকোর্টে ‘আম্পারো রিট’ করেছেন। প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এমন রিট অস্বাভাবিক। কারণ এই আইনি পদক্ষেপ সাধারণত নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত, যারা মনে করেন যে তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কোন অধিকার ক্ষণ্ন হলো সেটি স্পষ্ট নয়!
তিনি শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছেন যেন, সিএনই প্রকাশিত ফলাফল যে সঠিক তা নিশ্চিত করার জন্য ভোটের সংখ্যা নিরীক্ষা করা হয়। হাইকোর্ট উতরে গেলেই মাদুরো আবার ছয় বছরের জন্য ক্ষমতায় বসবেন।
আপাতদৃষ্টিতে এটি জনগণের প্রতি মাদুরোর নতি স্বীকার বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সেখানেও অন্য উদ্দেশ্য দেখছেন বিরোধীরা। তাঁরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট মাদুরো মূলত সিএনই থেকে নজর সরাতেই শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। তিনি মূলত ভোটের ফল প্রকাশে সময় ক্ষেপণ করার উপায় খুঁজছেন।
বল এখন সুপ্রিম ট্রাইব্যুনালের (টিএসজে) কোর্টে। কিন্তু উচ্চ আদালতের বিচারকেরা বারবার সরকারের প্রতি তাঁদের আনুগত্য প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং এখানে দরজার আড়ালে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। মাদুরো যদি ভোটের হিসাব সরবরাহ করেনও সেটি দেখার এখতিয়ার থাকবে শুধু অনুগত বিচারপতিদের।
স্বল্পমেয়াদে এটি সিএনই–এর ওপর চাপব কমাবে, সেই সঙ্গে মাদুরোকেও একটি এমন যুক্তি দাঁড় করানোর সুযোগ দেবে যে, ভোটের হিসাব হস্তান্তর করতে আন্তর্জাতিক অনুরোধগুলো তিনি রক্ষা করেছেন। আর মধ্যবর্তী আদেশে আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিলে নির্বাচনে জয়ের দাবিই শক্তিশালী হবে।
অবশ্য এরই মধ্যে মাদুরোর এই পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছেন কার্টার সেন্টারসহ স্বাধীন সংস্থাগুলো। এই সংস্থাগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য মাদুরো সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য সব আয়োজনই ছিল মাদুরোর। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো ইচ্ছে তাঁর নেই। তিনি শুধু চান স্বীকৃতি!
এবারই কিন্তু প্রথম নয়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীদের কারাগারে পাঠানো, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাধা দেওয়া বা নির্বাসনে বাধ্য করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন মাদুরো। আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১৪ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৭ দিন আগে