অনলাইন ডেস্ক
কয়েক মাস ধরেই আর্থিক বাজারে চরম অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বিশ্ব অর্থনীতি যে চাপের মধ্যে রয়েছে, তার আলামতও বেশ। ভাবতে পারেন, এসবই ঝিমুতে থাকা বাজার ও আসন্ন মন্দার চিরাচরিত লক্ষণ। কিন্তু এ সপ্তাহের ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের বিশেষ প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে, তাতে উদ্বেগের কারণ আছে; বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন এক ব্যবস্থার যন্ত্রণাদায়ক উত্থানের ঘণ্টাধ্বনি বাজছে। অর্থনীতির এই পালাবদলের পরিণতি হতে পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ‘কেনেসিয়ানিজমের’ উত্থানের এবং ১৯৯০ এর দশকে মুক্তবাজার ও বিশ্বায়নের ভরকেন্দ্রের মতোই।
কেনেসিয়ানিজম ব্যষ্টিক বা সামষ্টিক অর্থনীতির এমন তত্ত্ব, যার মূল বিষয়বস্তু উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও মূল্যস্ফীতির উপর কোনো দেশের সামগ্রিক ব্যয়ের প্রভাব। ১৯৩০ সালের মহামন্দাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জন মেনার্ড কেইনস এই তত্ত্ব নির্মাণ করেন। চাহিদাকেন্দ্রীক এই তত্ত্বে স্বল্প মেয়াদে অর্থনীতির পরিবর্তনের উপর মনোযোগ দেওয়া হয়। এর সার কথা হলো- সরকারের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অর্থনীতি স্থিতিশীল হতে পারে। অর্থাৎ সরকারের ব্যয় বাড়লে মানুষের ভোগ বাড়ে, সেখান থেকে বাড়তি উৎপাদনের চাহিদা তৈরি হয়। এর ফলে কর্মস্থান বাড়ে ও মূল্যস্ফীতি কমে।
নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ধনী দেশগুলো ২০১০ এর দশকের স্বল্প প্রবৃদ্ধির ফাঁদ থেকে বেরিয়ে বুড়িয়ে যাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবে- এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই পালাবদল মারাত্মক বিপদও ডেকে আনতে পারে। তখন আর্থিক বিশৃঙ্খলা, ভঙ্গুর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও লাগামহীন সরকারি ব্যয়- একসঙ্গে দেখা দিতে পারে।
বাজারে এখন যে অস্থিরতা চলছে, তা এক প্রজন্ম ধরে দেখা যায়নি। ৪০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘরে পৌঁছেছে। শুরুতে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে না দেখলেও পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক পড়ি মরি করে সুদের হার বাড়াচ্ছে। ১৯৮০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র এর চেয়ে দ্রুত গতিতে সুদহার বাড়ায়নি। এর মধ্যে ডলারও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, যা আমেরিকার বাইরের টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
আপনার যদি কোনো বিনিয়োগ অথবা পেনশন থাকে, তাহলে এ বছরটি আপনার জন্য ভয়ংকর। কারণ ডলারের বিপরীতে বৈশ্বিক শেয়ার দর ২৫ শতাংশ কমেছে। ১৯৮০ সালের পরে এত খারাপ বছর মার্কিনিরা দেখেনি। এ বছর প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পর জ্বালানি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই এখন টালমাটাল।
এই সব কিছুই আসলে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার যুগের অবসানকে নির্দেশ করে। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল অবধি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পর ২০১০ সালের দিকে বিশ্ব যে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, সেই অবস্থা সম্ভবত আবার ধসে পড়ল।
মহামারি করোনা শুরু হওয়ার আগে ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো প্রায় ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক ছিল। কিন্তু মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ব্যাংকগুলোর সেই ‘বিস্ময়কর’ অবস্থা আর নেই। কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ও সৌদি আরব ইতিমধ্যে পশ্চিমের বাজার থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।
এসব কারণে এক গুরুতর ও ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে বিশ্ব। সংকট কাটাতে ফেডারেল রিজার্ভ কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ করেছে। ২০২৩ সালের শুরু নাগাদ তা ৪ দশমিক ৫ শতাংশে ঠেকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এরপর পৃথিবীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আসলে কেমন হবে? তাদের ধারণা, ব্যাংকগুলো বিস্তর সমস্যার মধ্যে পড়বে। বিশেষ করে নিরাপত্তা সমস্যা একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠবে। কারণ ব্যাংকগুলো প্রবহমান বাজারব্যবস্থা ও প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। এই ব্যবস্থার সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের জন্য ব্যবস্থাটি অস্বচ্ছ এবং লোকসানের জন্য অতি সংবেদনশীল।
ইতিমধ্যে লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধকি ও জাঙ্ক বন্ডের সুদ হার বাড়াচ্ছে। করপোরেট বাই-আউটের জন্য ব্যবহৃত সুদে বাজার দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে যদি ইলন মাস্ক টুইটার কেনেন, তাহলে ঋণ একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্যে পেনশন স্কিমসহ বিনিয়োগ তহবিলগুলোর সঞ্চিত সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ট্রেজারি মার্কেট অনিয়মিত হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে ব্রিটেনের বন্ড মার্কেটেও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
২০১০ সালের পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যয় বেড়েছে। আগামী বছরগুলোতে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য আরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন হবে। রাশিয়া ও চীনের হুমকি মোকাবিলা করতে গিয়ে ইউরোপ ও জাপানকে প্রতিরক্ষা খাতে বেশি ব্যয় করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা জোরদার, নবায়নযোগ্য অবকাঠামো থেকে শুরু করে গ্যাস টার্মিনাল পর্যন্ত নানা খাতে রাষ্ট্রগুলোকে বিনিয়োগ ব্যয় বাড়াতে হবে। এ ছাড়া ভূরাজনৈতিক কারণে সরকারগুলোকে শিল্প নীতিতে বেশি ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে।
এর ফলাফল প্রকৃত কী হবে? অর্থনীতির আকার কমতে কমতে ২০১০ সালের নিম্ন প্রবৃদ্ধি হারের ফাঁদে ফিরে গেলে তখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু করার থাকবে না। এমন অবস্থায় করণীয় কী তাহলে? অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এখন ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে, তা থেকে শিথিল করে ৪ শতাংশে উন্নীত করা। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ২০২৪ সালে ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ যখন পরবর্তী কৌশল নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করবে, তখন তাদের কর্মকৌশলের তালিকায় হয়তো এসব বিষয় থাকবে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করে, তবে নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইতিমধ্যে লাখ লাখ চুক্তি হয়েছে, সে সব চুক্তি ও বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। এটি একটি উভয় সংকট দশা। কাজেই নতুন যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান ঘটতে যাচ্ছে, তার সুযোগ ও সংকট দুটোই রয়েছে। এখনই সময়, সম্ভাব্য বিপদের ব্যাপারে নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের সতর্ক হওয়া। অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে, আজকের এই ব্যবস্থা চিরস্থায়ী হবে বলে ধরে নেওয়া। পরিবর্তন আসছে, তা স্বীকার করে নিয়ে সংকট মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হওয়াই নতুন বাস্তবতা।
দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন মারুফ ইসলাম
কয়েক মাস ধরেই আর্থিক বাজারে চরম অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বিশ্ব অর্থনীতি যে চাপের মধ্যে রয়েছে, তার আলামতও বেশ। ভাবতে পারেন, এসবই ঝিমুতে থাকা বাজার ও আসন্ন মন্দার চিরাচরিত লক্ষণ। কিন্তু এ সপ্তাহের ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের বিশেষ প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে, তাতে উদ্বেগের কারণ আছে; বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন এক ব্যবস্থার যন্ত্রণাদায়ক উত্থানের ঘণ্টাধ্বনি বাজছে। অর্থনীতির এই পালাবদলের পরিণতি হতে পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ‘কেনেসিয়ানিজমের’ উত্থানের এবং ১৯৯০ এর দশকে মুক্তবাজার ও বিশ্বায়নের ভরকেন্দ্রের মতোই।
কেনেসিয়ানিজম ব্যষ্টিক বা সামষ্টিক অর্থনীতির এমন তত্ত্ব, যার মূল বিষয়বস্তু উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও মূল্যস্ফীতির উপর কোনো দেশের সামগ্রিক ব্যয়ের প্রভাব। ১৯৩০ সালের মহামন্দাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জন মেনার্ড কেইনস এই তত্ত্ব নির্মাণ করেন। চাহিদাকেন্দ্রীক এই তত্ত্বে স্বল্প মেয়াদে অর্থনীতির পরিবর্তনের উপর মনোযোগ দেওয়া হয়। এর সার কথা হলো- সরকারের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অর্থনীতি স্থিতিশীল হতে পারে। অর্থাৎ সরকারের ব্যয় বাড়লে মানুষের ভোগ বাড়ে, সেখান থেকে বাড়তি উৎপাদনের চাহিদা তৈরি হয়। এর ফলে কর্মস্থান বাড়ে ও মূল্যস্ফীতি কমে।
নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ধনী দেশগুলো ২০১০ এর দশকের স্বল্প প্রবৃদ্ধির ফাঁদ থেকে বেরিয়ে বুড়িয়ে যাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবে- এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই পালাবদল মারাত্মক বিপদও ডেকে আনতে পারে। তখন আর্থিক বিশৃঙ্খলা, ভঙ্গুর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও লাগামহীন সরকারি ব্যয়- একসঙ্গে দেখা দিতে পারে।
বাজারে এখন যে অস্থিরতা চলছে, তা এক প্রজন্ম ধরে দেখা যায়নি। ৪০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘরে পৌঁছেছে। শুরুতে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে না দেখলেও পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক পড়ি মরি করে সুদের হার বাড়াচ্ছে। ১৯৮০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র এর চেয়ে দ্রুত গতিতে সুদহার বাড়ায়নি। এর মধ্যে ডলারও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, যা আমেরিকার বাইরের টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
আপনার যদি কোনো বিনিয়োগ অথবা পেনশন থাকে, তাহলে এ বছরটি আপনার জন্য ভয়ংকর। কারণ ডলারের বিপরীতে বৈশ্বিক শেয়ার দর ২৫ শতাংশ কমেছে। ১৯৮০ সালের পরে এত খারাপ বছর মার্কিনিরা দেখেনি। এ বছর প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পর জ্বালানি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই এখন টালমাটাল।
এই সব কিছুই আসলে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার যুগের অবসানকে নির্দেশ করে। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল অবধি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পর ২০১০ সালের দিকে বিশ্ব যে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, সেই অবস্থা সম্ভবত আবার ধসে পড়ল।
মহামারি করোনা শুরু হওয়ার আগে ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো প্রায় ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক ছিল। কিন্তু মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ব্যাংকগুলোর সেই ‘বিস্ময়কর’ অবস্থা আর নেই। কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ও সৌদি আরব ইতিমধ্যে পশ্চিমের বাজার থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।
এসব কারণে এক গুরুতর ও ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে বিশ্ব। সংকট কাটাতে ফেডারেল রিজার্ভ কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ করেছে। ২০২৩ সালের শুরু নাগাদ তা ৪ দশমিক ৫ শতাংশে ঠেকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এরপর পৃথিবীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আসলে কেমন হবে? তাদের ধারণা, ব্যাংকগুলো বিস্তর সমস্যার মধ্যে পড়বে। বিশেষ করে নিরাপত্তা সমস্যা একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠবে। কারণ ব্যাংকগুলো প্রবহমান বাজারব্যবস্থা ও প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। এই ব্যবস্থার সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের জন্য ব্যবস্থাটি অস্বচ্ছ এবং লোকসানের জন্য অতি সংবেদনশীল।
ইতিমধ্যে লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধকি ও জাঙ্ক বন্ডের সুদ হার বাড়াচ্ছে। করপোরেট বাই-আউটের জন্য ব্যবহৃত সুদে বাজার দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে যদি ইলন মাস্ক টুইটার কেনেন, তাহলে ঋণ একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্যে পেনশন স্কিমসহ বিনিয়োগ তহবিলগুলোর সঞ্চিত সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ট্রেজারি মার্কেট অনিয়মিত হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে ব্রিটেনের বন্ড মার্কেটেও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
২০১০ সালের পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যয় বেড়েছে। আগামী বছরগুলোতে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য আরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন হবে। রাশিয়া ও চীনের হুমকি মোকাবিলা করতে গিয়ে ইউরোপ ও জাপানকে প্রতিরক্ষা খাতে বেশি ব্যয় করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা জোরদার, নবায়নযোগ্য অবকাঠামো থেকে শুরু করে গ্যাস টার্মিনাল পর্যন্ত নানা খাতে রাষ্ট্রগুলোকে বিনিয়োগ ব্যয় বাড়াতে হবে। এ ছাড়া ভূরাজনৈতিক কারণে সরকারগুলোকে শিল্প নীতিতে বেশি ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে।
এর ফলাফল প্রকৃত কী হবে? অর্থনীতির আকার কমতে কমতে ২০১০ সালের নিম্ন প্রবৃদ্ধি হারের ফাঁদে ফিরে গেলে তখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু করার থাকবে না। এমন অবস্থায় করণীয় কী তাহলে? অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এখন ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে, তা থেকে শিথিল করে ৪ শতাংশে উন্নীত করা। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ২০২৪ সালে ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ যখন পরবর্তী কৌশল নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করবে, তখন তাদের কর্মকৌশলের তালিকায় হয়তো এসব বিষয় থাকবে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করে, তবে নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইতিমধ্যে লাখ লাখ চুক্তি হয়েছে, সে সব চুক্তি ও বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। এটি একটি উভয় সংকট দশা। কাজেই নতুন যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান ঘটতে যাচ্ছে, তার সুযোগ ও সংকট দুটোই রয়েছে। এখনই সময়, সম্ভাব্য বিপদের ব্যাপারে নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের সতর্ক হওয়া। অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে, আজকের এই ব্যবস্থা চিরস্থায়ী হবে বলে ধরে নেওয়া। পরিবর্তন আসছে, তা স্বীকার করে নিয়ে সংকট মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হওয়াই নতুন বাস্তবতা।
দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন মারুফ ইসলাম
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৩ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৭ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৯ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৯ দিন আগে