সাহস মোস্তাফিজ
রাত ১২ টা! ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোনটা হাতে নিলেন সাত্তার সাহেব (ছদ্মনাম)। এটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আজকাল শোয়ার আগে, আর ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনের স্ক্রিনে চোখ না রাখলে যেন ‘কিছুই তো হলো না’—এমন অনুভূতি হয় তাঁর।
ষাটোর্ধ্ব সাত্তার আহমেদ সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গেছেন এ বছরের জানুয়ারি মাসে। নানা রকম ব্যাধিতে আক্রান্ত। তার ওপর এই করোনাকাল বনের বাঘ না দেখালেও মনের বাঘ দেখাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আশপাশে মৃত্যুর খবর বিষণ্ণ করে তুলেছে সাত্তার সাহেবের মন। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলের কাছ থেকে ফেসবুক আইডিটা খুলিয়ে নিয়েছিলেন বছর দুয়েক হলো। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এখন ব্যস্ততা আর বিনোদন বলতে এই ফেসবুকই।
সেদিন ফেসবুক আর ঘুমাতে দিল না সাত্তার সাহেবকে। কোনো এক বিখ্যাত বক্তার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ কেটে কেউ একজন পোস্ট করেছেন—আগামী ২০ দিনের মধ্যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর আগেই সব সম্পদ দান করতে হবে। এর জন্য সেখানে কয়েকজন ‘অসহায় মানুষের’ বিকাশ নম্বরও দেওয়া আছে। সেই পোস্টের ক্যাপশন, ডিজাইন এতটাই বাস্তবধর্মী যে সরকারি চাকুরে সাত্তার সাহেবও বিশ্বাস করে ফেললেন। খবরটিকে সত্য বলে ধরে নিয়ে মৃত্যুচিন্তায় সারা রাত ছটফট করলেন। সকালে ছেলেকে বলতেই সে হেসে অজ্ঞান। সে নানাভাবে বাবাকে বোঝাতে লাগল পোস্টটি মজা করে দেওয়া হয়েছে।
দুই.
বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিলেন সাত্তার সাহেব ও তাঁর স্ত্রী তাহেরা খানম। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ এল, করোনাকালে সবাইকে বিকাশে রাষ্ট্রপতি ৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছেন, সঙ্গে থাকছে রাষ্ট্রপতির একটি ভিডিও বার্তা। তাহেরা খানম ঢুকে গেলেন লিংকে। সেই লিংক তাঁকে নিয়ে গেল একটা ওয়েবসাইটে। তাহেরা ওয়েবসাইট বোঝেন না। তিনি নির্দেশনা অনুসরণ করে এগোতে লাগলেন। এত নিখুঁত সেই নির্দেশনা যে দেখে বোঝার উপায় নেই এটা কোনো প্রতারক চক্রের হাতিয়ার। সব শেষ ধাপে বিকাশের পাসওয়ার্ড চাইলে তাহেরা খানম সরল মনে দিয়েও দিলেন। বড় ছেলে বিদেশ থেকে প্রতি মাসে টাকা পাঠায় বিকাশের মাধ্যমে। মুহূর্তেই খালি হয়ে গেল তাহেরা খানমের বিকাশ অ্যাকাউন্ট।
তিন.
সাত্তার সাহেব ও তাহেরা খানমের তিন ছেলেমেয়ে। বড় ছেলে আকাশ দেশের বাইরে চাকরি করেন। মেজ ছেলে নাবিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। মেয়ে মেঘলা উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায়। করোনাকালে ফাঁকা টিএসসিতে স্বপন মামার চায়ের দোকানে বসে ফেসবুক স্ক্রল করছিল নাবিল। হঠাৎ একটা লাইভ ভিডিওতে চোখ আটকে যায়। একটি যুগলকে আটকে রাখা হয়েছে কার্জন হলের বারান্দায়। ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরা হয়েছে তাদের। নাবিল ভালো করে খেয়াল করে মেয়েটা তাঁর ছোট বোন মেঘলা। ছেলেটাকেও সে চেনে। আপত্তিকর কোনো কিছু ভিডিওতে না থাকলেও বিব্রত করার জন্য যতটুকু পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার, তার সবই করছে লাইভ ভিডিও ধারণকারীরা।
দ্রুত কার্জনে ছুটে গেল নাবিল। ততক্ষণে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। লোকগুলো হেসে হেসে সরি বলছিল আর জানাচ্ছিল, এটা একটা প্র্যাংক ভিডিও ছিল। ওই যে ক্যামেরা! ততক্ষণে সেই ভিডিওর খণ্ডিত অংশ বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে আপলোড শুরু হয়ে গেছে। মেঘলাকে ট্যাগ দিয়ে পোস্ট করছে অনেকে। ইনবক্সে পাঠাচ্ছে ভাইরাল ভিডিওর লিংক। মেঘলা ও তার পরিবার এরপর অনেকদিন এই ট্রমা থেকে বের হতে পারেনি।
এটা শুধু একটি পরিবারের গল্প নয়। বাংলাদেশের লাখো পরিবারে ভেসে বেড়ায় এ রকম অজস্র গল্প। কখনো সাঈদীকে চাঁদে দেখা যায়, কখনো পদ্মা সেতুতে কাটা মাথা লাগে, কখনো স্বপ্নে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন না নেওয়ার তরিকা পাঠানো হয়, কখনো ভুয়া এক শ টাকার নোট চলে আসে ইনবক্সে, কখনো করোনা নির্মূলে দেশব্যাপী হারপিক ও ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয় বেসিনে—এ রকম আরও কত গল্প!
আমরা এ টি এম শামসুজ্জামানকে এরই মধ্যে তিনবার মেরে ফেলেছি। নায়ক ফারুক ও আলমগীরও মরার আগেই মরে গেছেন আমাদের হাতে। প্রয়াত আব্দুল কাদেরের ছোট্ট নাতনিকে লাইভে এসে বলতে হয়েছে, তার নানা এখনো মারা যাননি।
এই গল্পের ফাঁদে পড়ে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া সাত্তার সাহেবেরা যেমন দগ্ধ হচ্ছেন, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেঘলারাও নিঃস্ব হচ্ছেন। গ্রামে কিংবা শহরে, সবার ডিভাইসে এখন গল্প। শব্দটা বোধ হয় গল্প না বলে ‘গুজব’ বললে ভালো হয়। চিলে কান নিয়ে গেল বলে সবাই চিলের পেছনে দৌড়াচ্ছি আমরা।
শুধু কি ফেসবুক? সংবাদমাধ্যমগুলোও অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাল খবরের পেছনে ছুটে বা ভাইরাল হওয়ার লোভে ভুল সংবাদ পরিবেশন করছে। বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটে নাম, লোগো ক্লোন করে অন্য আরেকটি ওয়েবসাইট বানিয়ে খবর পরিবেশন করে উদ্দেশ্য হাসিল করছে কিছু প্রতারক। সাধারণ পাঠক শুধু লিংক পড়ছেন, দেখছেন না ওয়েবসাইটের নাম—‘আজকের পত্রিকা’ নাকি ‘আজকে পত্রিকা’, ‘প্রথম আলো’ নাকি ‘পথম আলো’, ‘বিবিসি’ নাকি ‘বি-বিসি’?
দোষ আসলে কার? পাঠকের নাকি সাংবাদিকের? নাকি সব দোষ ওই প্রতারকদের, যারা এসব ভুয়া সংবাদ ছড়াচ্ছে? অনলাইন বা ভার্চ্যুয়াল পরিসর যে ধীরে ধীরে আমাদের একটা সমান্তরাল পৃথিবী হয়ে উঠেছে, সেটা কি আমরা বুঝতে পারছি? এই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সেখানে রয়েছে আরেকটি সত্তা। কখনো কখনো এই সত্তা বাস্তব সত্তাটির চেয়েও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। অনেক ক্ষেত্রেই এই শক্তির প্রকাশ ও প্রচার ঘটছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমেই, যেখানে কোনো গ্রামার নেই। প্রচারের সে দুনিয়ায় একচেটিয়াকরণ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে থাকছে। আধুনিক কাঠামোর ক্ষেত্রে এই গণতান্ত্রিক আবহ একটি সুযোগ সৃষ্টি করছে মেনে নিলেও একচেটিয়াকরণের বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে বলতে হয়—দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি এখানে বড় অনাচারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারেন। ঠিক এমনটাই হচ্ছে। বাস্তব দুনিয়ার চেয়ে বরং বেশিই হচ্ছে।
ওই পৃথিবীর মানুষগুলোকে বাঁচাতে হলে দরকার মিথ্যা ধরিয়ে দিয়ে সঠিক তথ্যের উন্মোচন। গুজব, অসচেতনতা, অজ্ঞানতা, সংস্কার, অসত্য, বিভ্রান্তি—এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য আমরা আজকের পত্রিকায় ফ্যাক্টচেক বিভাগ রেখেছি। প্রযুক্তির মোকাবিলা আমরা করব প্রযুক্তি দিয়েই। আমাদের হাতে গড়ে ওঠা আরেক পৃথিবীর শান্তির লড়াইয়ে আজ থেকে শামিল হলো আজকের পত্রিকা।
রাত ১২ টা! ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোনটা হাতে নিলেন সাত্তার সাহেব (ছদ্মনাম)। এটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আজকাল শোয়ার আগে, আর ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনের স্ক্রিনে চোখ না রাখলে যেন ‘কিছুই তো হলো না’—এমন অনুভূতি হয় তাঁর।
ষাটোর্ধ্ব সাত্তার আহমেদ সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গেছেন এ বছরের জানুয়ারি মাসে। নানা রকম ব্যাধিতে আক্রান্ত। তার ওপর এই করোনাকাল বনের বাঘ না দেখালেও মনের বাঘ দেখাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আশপাশে মৃত্যুর খবর বিষণ্ণ করে তুলেছে সাত্তার সাহেবের মন। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলের কাছ থেকে ফেসবুক আইডিটা খুলিয়ে নিয়েছিলেন বছর দুয়েক হলো। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এখন ব্যস্ততা আর বিনোদন বলতে এই ফেসবুকই।
সেদিন ফেসবুক আর ঘুমাতে দিল না সাত্তার সাহেবকে। কোনো এক বিখ্যাত বক্তার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ কেটে কেউ একজন পোস্ট করেছেন—আগামী ২০ দিনের মধ্যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর আগেই সব সম্পদ দান করতে হবে। এর জন্য সেখানে কয়েকজন ‘অসহায় মানুষের’ বিকাশ নম্বরও দেওয়া আছে। সেই পোস্টের ক্যাপশন, ডিজাইন এতটাই বাস্তবধর্মী যে সরকারি চাকুরে সাত্তার সাহেবও বিশ্বাস করে ফেললেন। খবরটিকে সত্য বলে ধরে নিয়ে মৃত্যুচিন্তায় সারা রাত ছটফট করলেন। সকালে ছেলেকে বলতেই সে হেসে অজ্ঞান। সে নানাভাবে বাবাকে বোঝাতে লাগল পোস্টটি মজা করে দেওয়া হয়েছে।
দুই.
বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিলেন সাত্তার সাহেব ও তাঁর স্ত্রী তাহেরা খানম। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ এল, করোনাকালে সবাইকে বিকাশে রাষ্ট্রপতি ৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছেন, সঙ্গে থাকছে রাষ্ট্রপতির একটি ভিডিও বার্তা। তাহেরা খানম ঢুকে গেলেন লিংকে। সেই লিংক তাঁকে নিয়ে গেল একটা ওয়েবসাইটে। তাহেরা ওয়েবসাইট বোঝেন না। তিনি নির্দেশনা অনুসরণ করে এগোতে লাগলেন। এত নিখুঁত সেই নির্দেশনা যে দেখে বোঝার উপায় নেই এটা কোনো প্রতারক চক্রের হাতিয়ার। সব শেষ ধাপে বিকাশের পাসওয়ার্ড চাইলে তাহেরা খানম সরল মনে দিয়েও দিলেন। বড় ছেলে বিদেশ থেকে প্রতি মাসে টাকা পাঠায় বিকাশের মাধ্যমে। মুহূর্তেই খালি হয়ে গেল তাহেরা খানমের বিকাশ অ্যাকাউন্ট।
তিন.
সাত্তার সাহেব ও তাহেরা খানমের তিন ছেলেমেয়ে। বড় ছেলে আকাশ দেশের বাইরে চাকরি করেন। মেজ ছেলে নাবিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। মেয়ে মেঘলা উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায়। করোনাকালে ফাঁকা টিএসসিতে স্বপন মামার চায়ের দোকানে বসে ফেসবুক স্ক্রল করছিল নাবিল। হঠাৎ একটা লাইভ ভিডিওতে চোখ আটকে যায়। একটি যুগলকে আটকে রাখা হয়েছে কার্জন হলের বারান্দায়। ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরা হয়েছে তাদের। নাবিল ভালো করে খেয়াল করে মেয়েটা তাঁর ছোট বোন মেঘলা। ছেলেটাকেও সে চেনে। আপত্তিকর কোনো কিছু ভিডিওতে না থাকলেও বিব্রত করার জন্য যতটুকু পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার, তার সবই করছে লাইভ ভিডিও ধারণকারীরা।
দ্রুত কার্জনে ছুটে গেল নাবিল। ততক্ষণে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। লোকগুলো হেসে হেসে সরি বলছিল আর জানাচ্ছিল, এটা একটা প্র্যাংক ভিডিও ছিল। ওই যে ক্যামেরা! ততক্ষণে সেই ভিডিওর খণ্ডিত অংশ বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে আপলোড শুরু হয়ে গেছে। মেঘলাকে ট্যাগ দিয়ে পোস্ট করছে অনেকে। ইনবক্সে পাঠাচ্ছে ভাইরাল ভিডিওর লিংক। মেঘলা ও তার পরিবার এরপর অনেকদিন এই ট্রমা থেকে বের হতে পারেনি।
এটা শুধু একটি পরিবারের গল্প নয়। বাংলাদেশের লাখো পরিবারে ভেসে বেড়ায় এ রকম অজস্র গল্প। কখনো সাঈদীকে চাঁদে দেখা যায়, কখনো পদ্মা সেতুতে কাটা মাথা লাগে, কখনো স্বপ্নে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন না নেওয়ার তরিকা পাঠানো হয়, কখনো ভুয়া এক শ টাকার নোট চলে আসে ইনবক্সে, কখনো করোনা নির্মূলে দেশব্যাপী হারপিক ও ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয় বেসিনে—এ রকম আরও কত গল্প!
আমরা এ টি এম শামসুজ্জামানকে এরই মধ্যে তিনবার মেরে ফেলেছি। নায়ক ফারুক ও আলমগীরও মরার আগেই মরে গেছেন আমাদের হাতে। প্রয়াত আব্দুল কাদেরের ছোট্ট নাতনিকে লাইভে এসে বলতে হয়েছে, তার নানা এখনো মারা যাননি।
এই গল্পের ফাঁদে পড়ে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া সাত্তার সাহেবেরা যেমন দগ্ধ হচ্ছেন, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেঘলারাও নিঃস্ব হচ্ছেন। গ্রামে কিংবা শহরে, সবার ডিভাইসে এখন গল্প। শব্দটা বোধ হয় গল্প না বলে ‘গুজব’ বললে ভালো হয়। চিলে কান নিয়ে গেল বলে সবাই চিলের পেছনে দৌড়াচ্ছি আমরা।
শুধু কি ফেসবুক? সংবাদমাধ্যমগুলোও অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাল খবরের পেছনে ছুটে বা ভাইরাল হওয়ার লোভে ভুল সংবাদ পরিবেশন করছে। বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটে নাম, লোগো ক্লোন করে অন্য আরেকটি ওয়েবসাইট বানিয়ে খবর পরিবেশন করে উদ্দেশ্য হাসিল করছে কিছু প্রতারক। সাধারণ পাঠক শুধু লিংক পড়ছেন, দেখছেন না ওয়েবসাইটের নাম—‘আজকের পত্রিকা’ নাকি ‘আজকে পত্রিকা’, ‘প্রথম আলো’ নাকি ‘পথম আলো’, ‘বিবিসি’ নাকি ‘বি-বিসি’?
দোষ আসলে কার? পাঠকের নাকি সাংবাদিকের? নাকি সব দোষ ওই প্রতারকদের, যারা এসব ভুয়া সংবাদ ছড়াচ্ছে? অনলাইন বা ভার্চ্যুয়াল পরিসর যে ধীরে ধীরে আমাদের একটা সমান্তরাল পৃথিবী হয়ে উঠেছে, সেটা কি আমরা বুঝতে পারছি? এই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সেখানে রয়েছে আরেকটি সত্তা। কখনো কখনো এই সত্তা বাস্তব সত্তাটির চেয়েও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। অনেক ক্ষেত্রেই এই শক্তির প্রকাশ ও প্রচার ঘটছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমেই, যেখানে কোনো গ্রামার নেই। প্রচারের সে দুনিয়ায় একচেটিয়াকরণ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে থাকছে। আধুনিক কাঠামোর ক্ষেত্রে এই গণতান্ত্রিক আবহ একটি সুযোগ সৃষ্টি করছে মেনে নিলেও একচেটিয়াকরণের বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে বলতে হয়—দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি এখানে বড় অনাচারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারেন। ঠিক এমনটাই হচ্ছে। বাস্তব দুনিয়ার চেয়ে বরং বেশিই হচ্ছে।
ওই পৃথিবীর মানুষগুলোকে বাঁচাতে হলে দরকার মিথ্যা ধরিয়ে দিয়ে সঠিক তথ্যের উন্মোচন। গুজব, অসচেতনতা, অজ্ঞানতা, সংস্কার, অসত্য, বিভ্রান্তি—এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য আমরা আজকের পত্রিকায় ফ্যাক্টচেক বিভাগ রেখেছি। প্রযুক্তির মোকাবিলা আমরা করব প্রযুক্তি দিয়েই। আমাদের হাতে গড়ে ওঠা আরেক পৃথিবীর শান্তির লড়াইয়ে আজ থেকে শামিল হলো আজকের পত্রিকা।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
২১ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে