আমান্থা পেরেরা, শ্রীলঙ্কার লেখক ও সাংবাদিকতার গবেষক
অনেক কিছুতেই প্রথম হতে চলেছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি গণ-অভ্য়ুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হচ্ছেন। তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি পদত্যাগ করছেন। তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যাকে আত্মগোপনে যেতে হলো। এ ছাড়া নিজের শাসনামলের শেষ কয়েকটি দিন উপকূলের কাছাকাছি জাহাজে ভেসেও কাটাতে হলো গোতাবায়াকে।
তিন ভাইয়ের চক্রের অংশ হিসেবে রাজকীয় লুটপাটের পর মাস দুয়েকের মধ্যেই একের পর এক অপমানের মধ্য দিয়ে তাঁকে পদত্যাগ করতে হচ্ছে। গোতাবায়ার জীবনের গল্প আর তাঁর সম্পর্কে জনগণের জানাশোনায় একটা বড় ফাঁক রয়েছে। এটি হলো অবসর নেওয়ার পর ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া থেকে ২০০৫ সালে ফের শ্রীলঙ্কায় ফেরার সময়টা। তবে একজন প্রভাবশালী প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে ফিরে আসায় তাঁর ব্যক্তিত্ব ও ভাবমূর্তি ভিন্ন মোড় নেয়। গোতাবায়ার পদত্যাগ চেয়ে এপ্রিলে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পর্যন্ত এটি টিকে ছিল।
গোতাবায়ার এই ভাবমূর্তি খুব যত্নের সঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল। একজন কঠোর সাবেক সামরিক কর্মকর্তার ভাবমূর্তি, যিনি কোনো আপস বা দুর্নীতি ছাড়াই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জনগণের কাছে এই ভাবমূর্তি তৈরির তুরুপের তাসটি ছিলেন তাঁর ভাই মাহিন্দা। তিনি জানতেন কখন চুপচাপ থাকতে হবে, কখন পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সবকিছু করেও তিনি নিজেকে এমন ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপস্থাপন করতেন, যা সিংহভাগ ভোটার পছন্দ করতেন। এই ভোটাররাই তাঁকে নির্বাচিত করতে যথেষ্ট ছিলেন।
মাহিন্দাই ডিজিটাল ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়া প্রথম দিকের রাজনীতিকদের একজন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদেরও একজন ছিলেন তিনি। শুধু মাহিন্দা একা নন; গায়ক, অভিনয় তারকা, ক্রীড়া তারকা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ীরাও এই ভাবমূর্তি প্রচারে সাহায্য করতেন।
আর ভাই গোতাবায়াও একই রাস্তা অনুসরণ করেন। তিনি নিজের এমন এক ভাবমূর্তি তৈরি করেন যে দেশের যেকোনো সংকটে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। এমন এক কড়া কথা বলা টেকনোক্র্যাট ভাবমূর্তি, যাকে জাতির সব সেরা সন্তানেরা সমর্থন দিচ্ছেন। এই ভাবমূর্তি ২০১৯ সালের নির্বাচনেই নির্ধারক ভূমিকা পালন করে।
এর পরেই এই ভাবমূর্তির খোলস খুলতে শুরু করে। ইস্টার সানডেতে জঙ্গি হামলার বিপর্যয় থেকে উঠে দাঁড়ানোর আগেই করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয়। এরপর একের পর এক আত্মঘাতী ক্ষত। দোকানে জিনিসপত্র কেনার লাইন লম্বা হতে শুরু করে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হতে শুরু করলে কোনো ডিজিটাল ভাবমূর্তিই আর কাজে আসেনি। মৌলিক সমস্যা এড়িয়ে গিয়ে এই ভাবমূর্তি গণহতাশা দমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
গণজমায়েতের যেসব কৌশল রাজাপক্ষে পরিবার এত দিন ব্যবহার করেছে, সেগুলোই তাদের পতন ত্বরান্বিত করতে শুরু করল। প্রতিটি শব্দ, পোস্ট করা প্রতিটি ছবি একেকটা বোঝা ও বিক্ষোভের নতুন কারণ হয়ে দাঁড়াল।
শ্রীলঙ্কানরা প্রথমে অনলাইনে থাকা মত প্রকাশের স্বাধীনতাটুকু ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষোভ আর হতাশা জানান দিতে থাকল। এর পরেও যখন কোনো সমাধান এল না, তারা অফলাইনে বিক্ষোভ করতে শুরু করল। অফলাইনে বিক্ষোভের আগে অনলাইনে ভিন্নমত জানানোর ট্রেন্ড এখনো চলছে।
রাজাপক্ষে ভাইদের জনসংযোগ টিম নিজেদের সুবিধার জন্য ফেসবুকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করেছিল। একই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারই অফলাইনের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলে রাজাপক্ষেদের এক ভাইকে দেশ ছাড়তে বাধা দিল।
এই গোষ্ঠী তাদের প্রতিটি কাজ ও পরিকল্পনার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট রেখে গেছে। এগুলো শেষমেশ অফলাইনে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে তার প্রমাণ এয়ারপোর্টের ঘটনায় দেখা গেল। অনলাইন ও অফলাইন একসঙ্গে মিলে একসময়ের মহাক্ষমতাধরদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে।
অনেক কিছুতেই প্রথম হতে চলেছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি গণ-অভ্য়ুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হচ্ছেন। তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি পদত্যাগ করছেন। তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যাকে আত্মগোপনে যেতে হলো। এ ছাড়া নিজের শাসনামলের শেষ কয়েকটি দিন উপকূলের কাছাকাছি জাহাজে ভেসেও কাটাতে হলো গোতাবায়াকে।
তিন ভাইয়ের চক্রের অংশ হিসেবে রাজকীয় লুটপাটের পর মাস দুয়েকের মধ্যেই একের পর এক অপমানের মধ্য দিয়ে তাঁকে পদত্যাগ করতে হচ্ছে। গোতাবায়ার জীবনের গল্প আর তাঁর সম্পর্কে জনগণের জানাশোনায় একটা বড় ফাঁক রয়েছে। এটি হলো অবসর নেওয়ার পর ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া থেকে ২০০৫ সালে ফের শ্রীলঙ্কায় ফেরার সময়টা। তবে একজন প্রভাবশালী প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে ফিরে আসায় তাঁর ব্যক্তিত্ব ও ভাবমূর্তি ভিন্ন মোড় নেয়। গোতাবায়ার পদত্যাগ চেয়ে এপ্রিলে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পর্যন্ত এটি টিকে ছিল।
গোতাবায়ার এই ভাবমূর্তি খুব যত্নের সঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল। একজন কঠোর সাবেক সামরিক কর্মকর্তার ভাবমূর্তি, যিনি কোনো আপস বা দুর্নীতি ছাড়াই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জনগণের কাছে এই ভাবমূর্তি তৈরির তুরুপের তাসটি ছিলেন তাঁর ভাই মাহিন্দা। তিনি জানতেন কখন চুপচাপ থাকতে হবে, কখন পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সবকিছু করেও তিনি নিজেকে এমন ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপস্থাপন করতেন, যা সিংহভাগ ভোটার পছন্দ করতেন। এই ভোটাররাই তাঁকে নির্বাচিত করতে যথেষ্ট ছিলেন।
মাহিন্দাই ডিজিটাল ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়া প্রথম দিকের রাজনীতিকদের একজন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদেরও একজন ছিলেন তিনি। শুধু মাহিন্দা একা নন; গায়ক, অভিনয় তারকা, ক্রীড়া তারকা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ীরাও এই ভাবমূর্তি প্রচারে সাহায্য করতেন।
আর ভাই গোতাবায়াও একই রাস্তা অনুসরণ করেন। তিনি নিজের এমন এক ভাবমূর্তি তৈরি করেন যে দেশের যেকোনো সংকটে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। এমন এক কড়া কথা বলা টেকনোক্র্যাট ভাবমূর্তি, যাকে জাতির সব সেরা সন্তানেরা সমর্থন দিচ্ছেন। এই ভাবমূর্তি ২০১৯ সালের নির্বাচনেই নির্ধারক ভূমিকা পালন করে।
এর পরেই এই ভাবমূর্তির খোলস খুলতে শুরু করে। ইস্টার সানডেতে জঙ্গি হামলার বিপর্যয় থেকে উঠে দাঁড়ানোর আগেই করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয়। এরপর একের পর এক আত্মঘাতী ক্ষত। দোকানে জিনিসপত্র কেনার লাইন লম্বা হতে শুরু করে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হতে শুরু করলে কোনো ডিজিটাল ভাবমূর্তিই আর কাজে আসেনি। মৌলিক সমস্যা এড়িয়ে গিয়ে এই ভাবমূর্তি গণহতাশা দমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
গণজমায়েতের যেসব কৌশল রাজাপক্ষে পরিবার এত দিন ব্যবহার করেছে, সেগুলোই তাদের পতন ত্বরান্বিত করতে শুরু করল। প্রতিটি শব্দ, পোস্ট করা প্রতিটি ছবি একেকটা বোঝা ও বিক্ষোভের নতুন কারণ হয়ে দাঁড়াল।
শ্রীলঙ্কানরা প্রথমে অনলাইনে থাকা মত প্রকাশের স্বাধীনতাটুকু ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষোভ আর হতাশা জানান দিতে থাকল। এর পরেও যখন কোনো সমাধান এল না, তারা অফলাইনে বিক্ষোভ করতে শুরু করল। অফলাইনে বিক্ষোভের আগে অনলাইনে ভিন্নমত জানানোর ট্রেন্ড এখনো চলছে।
রাজাপক্ষে ভাইদের জনসংযোগ টিম নিজেদের সুবিধার জন্য ফেসবুকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করেছিল। একই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারই অফলাইনের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলে রাজাপক্ষেদের এক ভাইকে দেশ ছাড়তে বাধা দিল।
এই গোষ্ঠী তাদের প্রতিটি কাজ ও পরিকল্পনার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট রেখে গেছে। এগুলো শেষমেশ অফলাইনে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে তার প্রমাণ এয়ারপোর্টের ঘটনায় দেখা গেল। অনলাইন ও অফলাইন একসঙ্গে মিলে একসময়ের মহাক্ষমতাধরদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
১ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৬ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৮ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে