অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের শীর্ষ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের পরিধি বাড়ছে। জোহানেসবার্গ শীর্ষ সম্মেলনে ছয়টি দেশ সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে। কোন বিবেচনায় ২৩ আবেদনকারীর তালিকা থেকে এসব দেশকে বেছে নেওয়া হলো এবং কার কী লাভ হবে—তা নিয়ে চলছে আলোচনা। প্রথম প্রশ্নে ব্রিকস থেকে স্পষ্ট কোনো ধারণা মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিয়ে গড়া পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব কমিয়ে নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যেই জোটের সম্প্রসারণ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের পঞ্চদশ সম্মেলনে ইরান, সৌদি আরব, মিসর, ইয়েমেন, আর্জেন্টিনা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে জোটের সদস্য ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি তাদের ব্রিকস সদস্যপদ কার্যকর হবে।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দীর্ঘদিন ধরে ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা মূলত আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হিসেবে উপস্থাপন করছেন। তাই জোট সম্প্রসারণের মুহূর্তকে তিনি ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন। পরিধি বাড়লেও এই জোট বিশ্বমঞ্চে কীভাবে ও কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে—তা এখনো পরিষ্কার নয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সদস্য দেশগুলো কতটা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবে, তার ওপর জোটের প্রভাব নির্ভর করবে। নতুন সদস্য এলে জোটে অসামঞ্জস্য বাড়বে। কারণ, শাসনতান্ত্রিক, ক্ষমতাকাঠামো ও অর্থনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় দেশগুলোর পরিস্থিতি ভিন্ন ভিন্ন। কোনো দেশ মধ্যম আয়ের, কোনো দেশ প্রায় উন্নত। কোনো দেশে রাজতন্ত্র চলে, কোনো দেশে চলে একদলীয় শাসন এবং কোনো দেশে গণতন্ত্র। তবে এই জোট থেকে স্বভাবতই চীন ও রাশিয়া সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টার আমেরিকান ডায়ালগের এশিয়া ও লাতিন আমেরিকা প্রোগ্রামের পরিচালক মার্গারেট মায়ার্স বলেন, ব্রিকসের নতুন সদস্যদের সুবিধার বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। বলতে গেলে, নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ার ধারণা নিয়ে এই জোট এখনো অনেকটাই প্রতীকী এবং একই সঙ্গে ‘গ্লোবাল সাউথ তথা দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোর স্পষ্ট সমর্থনের নিদর্শন’।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পরোয়ানা থাকায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকা আদালতের চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হওয়ায় পুতিন আইনি ঝামেলা এড়াতে জোহানেসবার্গের এই সম্মেলনে যোগ দেননি। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণে ব্যাকফুটে থাকা পুতিনের জন্য এই সম্প্রসারণ অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক; বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ‘একঘরে’ হয়ে থাকা থেকে বাঁচাতে এই সম্প্রসারণ পুতিনের জন্য আশীর্বাদ হয়েই দেখা দেবে।
এই জোটে ইরানের অন্তর্ভুক্তি তেহরান, বেইজিং ও মস্কো সবাইকেই সুবিধা দেবে; বিশেষ করে এই তিন পক্ষই নানাভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার শিকার। ফলে এসব নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বহুপক্ষীয় লেনদেন বাড়ানোর জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হতে পারে না। একই সঙ্গে ইরানকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে জোটের পশ্চিম এবং গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থান আরও দৃঢ় হবে।
অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত থাকা আর্জেন্টিনার জন্যও এই জোট দারুণ সুযোগ নিয়ে এসেছে; বিশেষ করে আর্থিক সংকট ঘনীভূত হতে থাকা দেশটির ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে ব্রিকস। আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ বলেছেন, ‘এটি (ব্রিকসের সদস্য পদ লাভ) দেশের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। এর মাধ্যমে আমরা নতুন বাজারে নিজেদের প্রবেশাধিকার, বিদ্যমান বাজার দৃঢ় করার সুযোগ পেয়েছি।’ এই জোটের কারণে বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাড়ার মাধ্যমে দেশে বেকারত্ব কমবে বলে তিনি আশাবাদী।
একমাত্র নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে জোটে যোগ দিয়েছে ইথিওপিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস জোটে সদস্য পদ লাভের বিষয়টিকে দেশের জন্য ‘দারুণ মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন।
এর বাইরেও সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও বিষয়টিকে তাদের জন্য ইতিবাচক বলেই মন্তব্য করেছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা প্রভাব বলয় থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি নানাভাবে দেশ দুটির সঙ্গে চীনের সম্পর্কও গভীর হচ্ছে।
নতুন ছয়টি দেশ ছাড়াও আরও প্রায় দুই ডজন দেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করে রেখেছে। তবে দেশগুলোকে সদস্য হতে হলে জোটের মূল পাঁচ সদস্য দেশের—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—ঐকমত্য প্রয়োজন। জোটটি এরই মধ্যে নতুন সদস্য গ্রহণের লক্ষ্যে নথি তৈরি করেছে, যাতে বিভিন্ন শর্ত, মানদণ্ড ইত্যাদি নির্ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, ‘জোটের সদস্য দেশগুলো জোট পরিচালনার মূলনীতি, মানদণ্ড এবং জোট সম্প্রসারণের শর্তাবলি ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে।’ তবে এতে কী রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি। উদাহরণ হিসেবে ইথিওপিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কথা বলা যায়। প্রায় সব সূচক এবং গুরুত্বে পিছিয়ে থাকা ইথিওপিয়াকে সদস্য করা হলেও ইন্দোনেশিয়াকে করা হয়নি।
মার্কিন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আমেরিকা প্রোগ্রামের প্রধান রায়ান ব্রিগ বলেন, ‘চীন ও রাশিয়ার জন্য এটি বড় জয়। তারা পাঁচ বছর ধরেই বিষয়টি নিয়ে জোটে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছিল।’
এই সম্প্রসারণের ফলে চীন-রাশিয়ার কী ফায়দা, সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ব্রিগ বলেন, ‘চীনের জন্য এই সম্প্রসারণ বেইজিংকেন্দ্রিক একটি ব্যবস্থা গড়ার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। আর আগামী বছর ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজক দেশ রাশিয়ার জন্য এই সম্প্রসারণ নিজেকে একঘরে হওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ।’
ব্রিগ আরও বলেন, ‘জোটটিতে চীনের মতো একটি বিশ্বশক্তি রয়েছে, রয়েছে ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশও। যারা জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে কম আগ্রহী, কিন্তু জোটের সদস্য হিসেবে এটি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জোটে বেশি সদস্য হওয়া মানে জোটের ভেতরে সদস্য হিসেবে তাদের প্রভাব বিভাজিত হওয়া।’
জোটের নতুন সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যেগুলোর সঙ্গে চীনের আগে থেকেই সম্পর্ক বিদ্যমান, সেসব দেশ হয়তো খুব বেশি আর্থিকভাবে লাভবান হবে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জোটের ব্র্যান্ডেড আর্থিক প্রতিষ্ঠান—নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)। এটি এখনো আকারে যথেষ্ট ছোট। তবে আকারে ছোট হোক বা বড়, জোটের সম্প্রসারণ প্রতীকী হোক বা না হোক, জোটের জন্য ব্রিকস ব্যাংকের গুরুত্ব মোটেও কম নয় বলেই মনে করেন মার্গারেট মায়ার্স।
মায়ার্স বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭ আমলে না নিলে ভুল করবে; বিশেষ করে যখন তেল উৎপাদনকারী কিছু দেশসহ নতুন সদস্য হচ্ছে, তখন ব্রিকস বিশ্ব অর্থনীতি তো বটেই, বিশ্বের জনসংখ্যারও বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করে।’
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
বিশ্বের শীর্ষ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের পরিধি বাড়ছে। জোহানেসবার্গ শীর্ষ সম্মেলনে ছয়টি দেশ সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে। কোন বিবেচনায় ২৩ আবেদনকারীর তালিকা থেকে এসব দেশকে বেছে নেওয়া হলো এবং কার কী লাভ হবে—তা নিয়ে চলছে আলোচনা। প্রথম প্রশ্নে ব্রিকস থেকে স্পষ্ট কোনো ধারণা মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিয়ে গড়া পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব কমিয়ে নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যেই জোটের সম্প্রসারণ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের পঞ্চদশ সম্মেলনে ইরান, সৌদি আরব, মিসর, ইয়েমেন, আর্জেন্টিনা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে জোটের সদস্য ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি তাদের ব্রিকস সদস্যপদ কার্যকর হবে।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দীর্ঘদিন ধরে ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা মূলত আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হিসেবে উপস্থাপন করছেন। তাই জোট সম্প্রসারণের মুহূর্তকে তিনি ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন। পরিধি বাড়লেও এই জোট বিশ্বমঞ্চে কীভাবে ও কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে—তা এখনো পরিষ্কার নয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সদস্য দেশগুলো কতটা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবে, তার ওপর জোটের প্রভাব নির্ভর করবে। নতুন সদস্য এলে জোটে অসামঞ্জস্য বাড়বে। কারণ, শাসনতান্ত্রিক, ক্ষমতাকাঠামো ও অর্থনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় দেশগুলোর পরিস্থিতি ভিন্ন ভিন্ন। কোনো দেশ মধ্যম আয়ের, কোনো দেশ প্রায় উন্নত। কোনো দেশে রাজতন্ত্র চলে, কোনো দেশে চলে একদলীয় শাসন এবং কোনো দেশে গণতন্ত্র। তবে এই জোট থেকে স্বভাবতই চীন ও রাশিয়া সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টার আমেরিকান ডায়ালগের এশিয়া ও লাতিন আমেরিকা প্রোগ্রামের পরিচালক মার্গারেট মায়ার্স বলেন, ব্রিকসের নতুন সদস্যদের সুবিধার বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। বলতে গেলে, নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ার ধারণা নিয়ে এই জোট এখনো অনেকটাই প্রতীকী এবং একই সঙ্গে ‘গ্লোবাল সাউথ তথা দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোর স্পষ্ট সমর্থনের নিদর্শন’।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পরোয়ানা থাকায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকা আদালতের চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হওয়ায় পুতিন আইনি ঝামেলা এড়াতে জোহানেসবার্গের এই সম্মেলনে যোগ দেননি। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণে ব্যাকফুটে থাকা পুতিনের জন্য এই সম্প্রসারণ অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক; বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ‘একঘরে’ হয়ে থাকা থেকে বাঁচাতে এই সম্প্রসারণ পুতিনের জন্য আশীর্বাদ হয়েই দেখা দেবে।
এই জোটে ইরানের অন্তর্ভুক্তি তেহরান, বেইজিং ও মস্কো সবাইকেই সুবিধা দেবে; বিশেষ করে এই তিন পক্ষই নানাভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার শিকার। ফলে এসব নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বহুপক্ষীয় লেনদেন বাড়ানোর জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হতে পারে না। একই সঙ্গে ইরানকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে জোটের পশ্চিম এবং গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থান আরও দৃঢ় হবে।
অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত থাকা আর্জেন্টিনার জন্যও এই জোট দারুণ সুযোগ নিয়ে এসেছে; বিশেষ করে আর্থিক সংকট ঘনীভূত হতে থাকা দেশটির ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে ব্রিকস। আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ বলেছেন, ‘এটি (ব্রিকসের সদস্য পদ লাভ) দেশের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। এর মাধ্যমে আমরা নতুন বাজারে নিজেদের প্রবেশাধিকার, বিদ্যমান বাজার দৃঢ় করার সুযোগ পেয়েছি।’ এই জোটের কারণে বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাড়ার মাধ্যমে দেশে বেকারত্ব কমবে বলে তিনি আশাবাদী।
একমাত্র নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে জোটে যোগ দিয়েছে ইথিওপিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস জোটে সদস্য পদ লাভের বিষয়টিকে দেশের জন্য ‘দারুণ মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন।
এর বাইরেও সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও বিষয়টিকে তাদের জন্য ইতিবাচক বলেই মন্তব্য করেছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা প্রভাব বলয় থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি নানাভাবে দেশ দুটির সঙ্গে চীনের সম্পর্কও গভীর হচ্ছে।
নতুন ছয়টি দেশ ছাড়াও আরও প্রায় দুই ডজন দেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করে রেখেছে। তবে দেশগুলোকে সদস্য হতে হলে জোটের মূল পাঁচ সদস্য দেশের—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—ঐকমত্য প্রয়োজন। জোটটি এরই মধ্যে নতুন সদস্য গ্রহণের লক্ষ্যে নথি তৈরি করেছে, যাতে বিভিন্ন শর্ত, মানদণ্ড ইত্যাদি নির্ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, ‘জোটের সদস্য দেশগুলো জোট পরিচালনার মূলনীতি, মানদণ্ড এবং জোট সম্প্রসারণের শর্তাবলি ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে।’ তবে এতে কী রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি। উদাহরণ হিসেবে ইথিওপিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কথা বলা যায়। প্রায় সব সূচক এবং গুরুত্বে পিছিয়ে থাকা ইথিওপিয়াকে সদস্য করা হলেও ইন্দোনেশিয়াকে করা হয়নি।
মার্কিন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আমেরিকা প্রোগ্রামের প্রধান রায়ান ব্রিগ বলেন, ‘চীন ও রাশিয়ার জন্য এটি বড় জয়। তারা পাঁচ বছর ধরেই বিষয়টি নিয়ে জোটে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছিল।’
এই সম্প্রসারণের ফলে চীন-রাশিয়ার কী ফায়দা, সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ব্রিগ বলেন, ‘চীনের জন্য এই সম্প্রসারণ বেইজিংকেন্দ্রিক একটি ব্যবস্থা গড়ার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। আর আগামী বছর ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজক দেশ রাশিয়ার জন্য এই সম্প্রসারণ নিজেকে একঘরে হওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ।’
ব্রিগ আরও বলেন, ‘জোটটিতে চীনের মতো একটি বিশ্বশক্তি রয়েছে, রয়েছে ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশও। যারা জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে কম আগ্রহী, কিন্তু জোটের সদস্য হিসেবে এটি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জোটে বেশি সদস্য হওয়া মানে জোটের ভেতরে সদস্য হিসেবে তাদের প্রভাব বিভাজিত হওয়া।’
জোটের নতুন সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যেগুলোর সঙ্গে চীনের আগে থেকেই সম্পর্ক বিদ্যমান, সেসব দেশ হয়তো খুব বেশি আর্থিকভাবে লাভবান হবে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জোটের ব্র্যান্ডেড আর্থিক প্রতিষ্ঠান—নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)। এটি এখনো আকারে যথেষ্ট ছোট। তবে আকারে ছোট হোক বা বড়, জোটের সম্প্রসারণ প্রতীকী হোক বা না হোক, জোটের জন্য ব্রিকস ব্যাংকের গুরুত্ব মোটেও কম নয় বলেই মনে করেন মার্গারেট মায়ার্স।
মায়ার্স বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭ আমলে না নিলে ভুল করবে; বিশেষ করে যখন তেল উৎপাদনকারী কিছু দেশসহ নতুন সদস্য হচ্ছে, তখন ব্রিকস বিশ্ব অর্থনীতি তো বটেই, বিশ্বের জনসংখ্যারও বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করে।’
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
২০ ঘণ্টা আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৫ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৭ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৮ দিন আগে