নাজমুল করিম ফারুক
শারমিন আক্তার, আমিরন বেগম, রত্না আক্তার, শারমিন জাহান ও শাহিদা বেগমের জীবনের গল্প একেবারে ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু তাঁরা এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছেন জয়িতা হিসেবে। সম্প্রতি কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা। ব্যক্তিগত জীবনের বিভীষিকা মুছে এই পাঁচ নারী জীবনযুদ্ধের বাকিটা সময়ও হার মানতে নারাজ। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন নাজমুল করিম ফারুক।
শারমিন আক্তার
‘এক এক করে স্বপ্নগুলো যখন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করছিল, তখন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো আবির্ভাব হয় আমার স্বামীর আসল রূপ। যখন শুনতে পেলাম, আমাকে না জানিয়ে সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে, নিজের অস্তিত্বকে বিলীন করতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে শারমিন আক্তার তাঁর স্বামীর নামটি পর্যন্ত মুখে আনতে চাননি। বুকের ভেতর কষ্ট লালন করে জীবনের বাকিটা পথ পাড়ি দিতে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে একাই পথ চলছেন শারমিন আক্তার।
আমিরন বেগম
‘স্বামীর অসহায়ত্বের কথাগুলো যখন মা-বাবাকে জানাই, তখন নিজের ভেতর খুব লজ্জাবোধ হচ্ছিল। মা-বাবা নিরাশ করেননি। ঘুরে দাঁড়াতে আমার হাতে বিয়ের উপঢৌকন বিক্রি করে টাকা তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা।’ অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ৪৫ বছরের আমিরন এভাবেই স্মৃতিচারণ করেন। অষ্টম শ্রেণি পাস পাঁচ সন্তানের জননী আমিরন হাঁস, মুরগি ও ছাগল পালনের মধ্য দিয়ে আয়ের সূচনা করেন। উপার্জিত অর্থ দিয়ে প্রথমে দুটি গাভি কিনে শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর একটি খামার রয়েছে। এসব গাভি থেকে পাওয়া দুধ বিক্রি করে আমিরন মাসে আয় করেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
রত্না আক্তার
এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানের জননী রত্না আক্তার ইঞ্জিনিয়ার হারুন-উর-রশিদ গার্লস কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক। রত্না আক্তার এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ২০১০ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ২০১১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৭ সালে তিনি ইঞ্জিনিয়ার হারুন-উর-রশিদ গার্লস কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী রত্না আক্তার জানান, তাঁর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। কিন্তু তিনি নিজের খরচ চালানোর জন্য প্রাইভেট পড়াতেন এবং কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিতেন। সে বিষয়গুলোই তাঁকে শিক্ষক হতে সহায়তা করেছে বলে মনে করেন রত্না আক্তার।
শারমিন জাহান
‘আমার স্বামী মো. কামরুজ্জামান সহজ-সরল প্রকৃতির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকায় সংসারে তেমন মন দিতে পারতেন না। সংসারটা আপন করে নিয়েছিলাম বলেই আজ ছয় সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।’ সফল জননী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া শারমিন জাহান এভাবে তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। ১৯৭৭ সালে জন্মানো শারমিন নিজেও বিএসএস পাস করেছেন। নিজেকে উচ্চশিক্ষার শীর্ষ আসনে নিতে চাইলেও সময় তাঁকে থামিয়ে দেয়। কিন্তু সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করে তিনি নিজের খামতি দূর করেছেন বলে মনে করেন।
শাহিদা বেগম
স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া স্থাবর সম্পদ থেকে মৌটুপী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কমপ্লেক্স ভবন, মাদ্রাসার নিজস্ব মসজিদ, ঈদগাহ ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ৮০ শতক জমি দান করেন। শাহিদা বেগম বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠানে যখন ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া ও খেলাধুলা করে, আনন্দে বুক ভরে যায়।’ ১৯৬২ সালে জন্ম শাহিদা বেগমের। সমাজের উন্নয়নে কাজ করাকে জীবনের ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এলাকায় দুস্থ ব্যক্তিদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, চিকিৎসাসহ মাদকবিরোধী আন্দোলন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের মতো কর্মসূচি বাস্তবায়নে যুক্ত আছেন শাহিদা।
শারমিন আক্তার, আমিরন বেগম, রত্না আক্তার, শারমিন জাহান ও শাহিদা বেগমের জীবনের গল্প একেবারে ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু তাঁরা এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছেন জয়িতা হিসেবে। সম্প্রতি কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা। ব্যক্তিগত জীবনের বিভীষিকা মুছে এই পাঁচ নারী জীবনযুদ্ধের বাকিটা সময়ও হার মানতে নারাজ। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন নাজমুল করিম ফারুক।
শারমিন আক্তার
‘এক এক করে স্বপ্নগুলো যখন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করছিল, তখন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো আবির্ভাব হয় আমার স্বামীর আসল রূপ। যখন শুনতে পেলাম, আমাকে না জানিয়ে সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে, নিজের অস্তিত্বকে বিলীন করতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে শারমিন আক্তার তাঁর স্বামীর নামটি পর্যন্ত মুখে আনতে চাননি। বুকের ভেতর কষ্ট লালন করে জীবনের বাকিটা পথ পাড়ি দিতে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে একাই পথ চলছেন শারমিন আক্তার।
আমিরন বেগম
‘স্বামীর অসহায়ত্বের কথাগুলো যখন মা-বাবাকে জানাই, তখন নিজের ভেতর খুব লজ্জাবোধ হচ্ছিল। মা-বাবা নিরাশ করেননি। ঘুরে দাঁড়াতে আমার হাতে বিয়ের উপঢৌকন বিক্রি করে টাকা তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা।’ অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ৪৫ বছরের আমিরন এভাবেই স্মৃতিচারণ করেন। অষ্টম শ্রেণি পাস পাঁচ সন্তানের জননী আমিরন হাঁস, মুরগি ও ছাগল পালনের মধ্য দিয়ে আয়ের সূচনা করেন। উপার্জিত অর্থ দিয়ে প্রথমে দুটি গাভি কিনে শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর একটি খামার রয়েছে। এসব গাভি থেকে পাওয়া দুধ বিক্রি করে আমিরন মাসে আয় করেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
রত্না আক্তার
এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানের জননী রত্না আক্তার ইঞ্জিনিয়ার হারুন-উর-রশিদ গার্লস কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক। রত্না আক্তার এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ২০১০ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ২০১১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৭ সালে তিনি ইঞ্জিনিয়ার হারুন-উর-রশিদ গার্লস কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী রত্না আক্তার জানান, তাঁর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। কিন্তু তিনি নিজের খরচ চালানোর জন্য প্রাইভেট পড়াতেন এবং কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিতেন। সে বিষয়গুলোই তাঁকে শিক্ষক হতে সহায়তা করেছে বলে মনে করেন রত্না আক্তার।
শারমিন জাহান
‘আমার স্বামী মো. কামরুজ্জামান সহজ-সরল প্রকৃতির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকায় সংসারে তেমন মন দিতে পারতেন না। সংসারটা আপন করে নিয়েছিলাম বলেই আজ ছয় সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।’ সফল জননী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া শারমিন জাহান এভাবে তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। ১৯৭৭ সালে জন্মানো শারমিন নিজেও বিএসএস পাস করেছেন। নিজেকে উচ্চশিক্ষার শীর্ষ আসনে নিতে চাইলেও সময় তাঁকে থামিয়ে দেয়। কিন্তু সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করে তিনি নিজের খামতি দূর করেছেন বলে মনে করেন।
শাহিদা বেগম
স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া স্থাবর সম্পদ থেকে মৌটুপী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কমপ্লেক্স ভবন, মাদ্রাসার নিজস্ব মসজিদ, ঈদগাহ ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ৮০ শতক জমি দান করেন। শাহিদা বেগম বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠানে যখন ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া ও খেলাধুলা করে, আনন্দে বুক ভরে যায়।’ ১৯৬২ সালে জন্ম শাহিদা বেগমের। সমাজের উন্নয়নে কাজ করাকে জীবনের ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এলাকায় দুস্থ ব্যক্তিদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, চিকিৎসাসহ মাদকবিরোধী আন্দোলন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের মতো কর্মসূচি বাস্তবায়নে যুক্ত আছেন শাহিদা।
প্রবাদ আছে, দুঃসাহসে দুঃখ হয়। কিন্তু বাগেরহাটের প্রজাপতি স্কোয়াড দুঃসাহসে ভর করে আলোর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। আমাদের সমাজ বাস্তবতায় বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়া এখনো যে কতটা কঠিন কাজ, তা কারও অজানা নয়। সেই কঠিন কাজই করে চলেছে বাগেরহাটের কিশোরীরা। প্রজাপতি স্কোয়াড নামে দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছে তার
২ দিন আগেগাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে নিহত হয়েছে ৩৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন বা ওএইচসিএইচআর এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের
২ দিন আগেআপনি শিক্ষিত ও সচেতন একজন মানুষ। সম্পর্কের একটি সুন্দর পর্যায়ে আছেন। তবে আপনার সঙ্গীর যে সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন, তা কিন্তু বড় ধরনের আবেগীয়
২ দিন আগেশওকত আরা খন্দকার ওরফে ঝর্ণা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ঘর-সংসার সামলে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে।
২ দিন আগে