ইন্টেলকে কিনতে চায় কোয়ালকম, দাম হতে পারে ১২২ বিলিয়ন ডলার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২: ১৩

কঠিন সময় পার করছে টেক জায়ান্ট ইন্টেল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়ার কারণে প্রতিনিয়ত কোম্পানিটির শেয়ারদর কমে যাচ্ছে এবং ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইন্টেলকে কেনার প্রস্তাব দিয়েছে আরেক চিপ নির্মাতা কোয়ালকম। আর এই অধিগ্রহণের জন্য কোয়ালকমের খরচ হতে পারে ১২২ বিলিয়ন ডলার। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে এসব জানানো হয়েছে। 

এই অধিগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে কোয়ালকমের পক্ষ থেকে ইনটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও কোম্পানি দুটির মধ্যে কোনো চুক্তি এখনো ‘নিশ্চিত নয়’, তবে তা ইন্টেলের জন্য ভয়ানক পতনের গল্পই শোনাবে। মূলত নিজেদের এক্স ৮৬ প্রসেসর প্রযুক্তির কারণে কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কোম্পানিটি বছরের পর বছর ধরে কোয়ালকমের আর্ম চিপগুলোর তুলনায় বেশ সফলতা অর্জন করেছে। 

ইন্টেলের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে কিনে নেওয়ার সামর্থ্য কোয়ালকমের আছে কি না, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্ন। বর্তমানে কোয়ালকমের বাজারমূল্য ১৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন ঋণসহ ইন্টেলকে কিনে নিতে হলে তাদের ১২২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। সাম্প্রতিক ট্যাক্স নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কোয়ালমের কাছে মাত্র ১৩ বিলিয়ন ডলার নগদ অর্থ রয়েছে। 

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এই প্রতিবেদনকে সমর্থন করে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, ‘ইনটেলের জন্য এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনেনি কোয়ালকম।’ 

দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি এড়িয়ে যায় এমন কোনো চুক্তি হলে কোয়ালকমের জন্য এটি অনেক ‘বড় ক্যু’র মতো বিষয় হবে। কারণ মোবাইল প্রসেসর বাজারে বছরের পর বছর আধিপত্য ধরে রাখার পর মাইক্রোসফটের এআই পিসি কৌশলের অংশ হিসেবে এ বছর ডেস্কটপ প্রসেসরের বাজারে পুনরায় প্রবেশ করেছে কোম্পানিটি। 

এদিকে ইন্টেল তার ইতিহাসের অন্যতম দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। কোম্পানির অনেক ব্যবসা এখনো লাভজনক পর্যায়ে থাকলেও গত আগস্টে কোম্পানিটির ১৬০ কোটি ডলার ক্ষতির কথা আর্থিক প্রতিবেদনে উঠে আসে। এরপর নিজেদের কৌশল পরিবর্তন এবং ১৫ শতাংশেরও বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে ইন্টেল। চলতি বছরেই ইন্টেল ৬০ শতাংশ বাজার হারিয়েছে। 

সে সময় ইন্টেলের সিইও প্যাট গেলসিঙ্গার বলেন, কোম্পানিটি সমস্ত অপ্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ করবে। এর পরে তারা তাদের চিপ উৎপাদন ব্যবসাকে পৃথক করার ঘোষণা দেয়। এই অংশ ইন্টেল দীর্ঘদিন ধরে এএমডি এবং অন্যান্য ফ্যাবলেস চিপ নির্মাতাদের বিরুদ্ধে তাদের একটি শক্তি হিসেবে ব্যবহার করছে। 
এসব কোম্পানি সিলিকন উৎপাদনের জন্য তাইওয়ানের টিএসএমসির মতো সংস্থার ওপর নির্ভর করে। এই পদক্ষেপগুলো ইন্টেলের কৌশলগত পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটায়। 

ইন্টেলও সম্প্রতি তার সর্বাধুনিক চিপগুলো উৎপাদনের জন্য আংশিকভাবে টিএসএমসির ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ এটি নিজেদের উৎপাদন প্রক্রিয়া পুনর্গঠনে কাজ করছে। এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার খরচই ইন্টেলের সাম্প্রতিক বেশির ভাগ ক্ষতির জন্য দায়ী। এ ছাড়া, তাদের নিজস্ব ১৮এ উৎপাদন প্রক্রিয়াও কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। 

সম্প্রতি কোম্পানিটির দুই প্রজন্মের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ চিপ ক্যাশ করছিল। ফলে এদের ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ বলে ভাবা হচ্ছে। তাই পিসি গেইমারদেরও আস্থা হারিয়েছে ইনটেল। 

ইন্টেলের সমস্যাগুলো শুধু উৎপাদন বা লাভের বিষয় নয়, তা অনেকটাই সিলিকন নেতৃত্বের সঙ্গেও সম্পর্কিত। পাশাপাশি বিভিন্ন এআই সার্ভারের জন্য চিপ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এনভিডিয়া আধিপত্য বিস্তার করছে। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষ সফলতা অর্জন করতে পারেনি ইন্টেল। গেমার ও নির্মাতাদের জন্য নিজস্ব জিপিইউ উৎপাদনের প্রচেষ্টায়ও তেমন মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি। 

কোয়ালকম, এমএমপি ও অ্যাপল ল্যাপটপের ক্ষেত্রে এখনো ছোট প্রতিযোগী। অন্যদিকে ফ্ল্যাগশিপ ল্যাপটপ চিপ তৈরির প্রক্রিয়া দুবার পরিবর্তন করেছে ইন্টেল। এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যাটারি ও ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিকসের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। অক্টোবরে নতুন ‘লুনার লেক’ চিপ উন্মোচন করবে ইন্টেল। এই চিপগুলো কতটা সফল হবে তা সময়ই বলে দেবে।

তথ্যসূত্র: দ্য ভার্জ ও রয়টার্স

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত