অসুস্থতাজনিতসহ সব ছুটি বাতিল করল কোম্পানি, সমালোচনার ঝড়

অনলাইন ডেস্ক    
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৫৬
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ২৫
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডিটে কোম্পানির এ ধরনের কড়া নিয়ম প্রকাশ করেন এক কর্মী। ছবি: টার্কি পে রোল

উৎসবের মৌসুমে বা নতুন বছর আসার আগে প্রায় সবাই ছুটি উপভোগ করেন। এই সময়টিতে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, বিশ্রাম নেওয়া এবং গত বছরের কঠিন কাজের চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া একটি সাধারণ বিষয়। অনেক কোম্পানি এ সময় কর্মীদের ছুটি দেয়, যাতে তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। তবে এক কোম্পানি উল্টো এমন নীতি গ্রহণ করল, যেখানে সব ছুটিই বাতিল করা হলো। এমনকি কেউ অসুস্থ হলেও ছুটি নিতে পারবেন না।

আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের পর্যন্ত কর্মীদের সব ধরনের ছুটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে একটি কোম্পানি। সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করার পাশাপাশি কোম্পানিটি অসুস্থতাজনিত ছুটিও বাতিল করেছে। তবে এমন কঠোর নির্দেশনা দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

এই নির্দেশনায় কারণ হিসেবে কোম্পানিটি বলছে, এ সময়ে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং ‘বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত দিনগুলোতে’ কোম্পানির সকল কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক নোটিশে বলা হয়, ‘অধিকাংশ ছুটি এবং অসুস্থজনিত ছুটি বাতিল হবে। কর্মচারীদের কাজে পূর্ণ মনোযোগ এবং কোনো শিথিলতা না দেওয়ার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উৎসব মৌসুমের একেবারে শেষ পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটে কোম্পানির এ ধরনের কড়া নিয়ম প্রকাশ করেন এক কর্মী। এটি শেয়ার করার পরই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়। একজন কর্মী বলেন ‘করপোরেটরা কেন মনে করে এটা ঠিক? ঈশ্বর না করুন, যদি আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।’

এদিকে, কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এই ধরনের পদক্ষেপের বিপক্ষে নিজেদের মতামত জানিয়ে বলছেন, এমন কঠোর নীতি কর্মচারীদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এক ব্যক্তি কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছেন, ‘যদি আপনি মারা যান, তাহলে তিন দিন আগে ম্যানেজমেন্ট বা ব্যবস্থাপককে জানিয়ে দিতে হবে।’

অন্যদিকে কিছু সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারী তাদের স্থানীয় ব্যবসায়িক কৌশল শেয়ার করেছেন। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী আরেক কোম্পানির গল্প শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, যিনি গ্রীষ্মকালীন সময়ে কোনো ছুটি দিতে অস্বীকার করেন তার কোম্পানির মালিক। কোম্পানিটিতে কর্মী অতিরিক্ত কাজের চাপের মধ্যে পড়ে, কম বেতন পায় এবং বারবার চাকরি ছাড়ে। এরপর মালিক উল্টো অভিযোগ করে, ‘কেউ কাজ করতে চায় না!’

অপরদিকে একজন ব্যবহারকারী তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন একটি স্থানীয় কফি শপের সঙ্গে, যা দুটি বোন পরিচালনা করেন। এই কফি শপ জানুয়ারিতে পুরো মাসে বন্ধ থাকে। তবে কর্মচারীদের বেতন পুরোপুরি প্রদান করা হয়। এটি কর্মচারীদের পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করার সুযোগ দেয় এবং তাদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

এই ধরনের পরিস্থিতি কর্মী অধিকার এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এসব আলোচনায় কাজের চাপ এবং ব্যক্তি ও কর্মজীবনের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত