মোস্তাকিম ফারুকী
ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে বাবুবাজার ব্রিজের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে বিষণ্ন কিছু মানুষ। চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। এমন বৃষ্টির দিনে, লকডাউনে আপনারা বাইরে কেন? প্রশ্ন শেষ করতেই একজন কান্না চাপতে গিয়ে বুঁজে আসা কণ্ঠে বলে ওঠেন, ঘরে বউ বাচ্চা না খেয়ে বসে আছে; সেই দৃশ্য দেখার জন্য ঘরে যামু?
আচমকা এমন উত্তর শুনে কাছে গেলাম, জানতে চাইলাম কী হয়েছে? জবাবে আরেকজন বলে উঠলেন, ‘কী হয়েছে বুঝেন না? এই যে লকডাউন দিছে, সবকিছু চলাচল বন্ধ করে দিছে, আমাদের সংসার চালানো বন্ধ করার কোনো উপায় আছে? সংসারে তো ঠিকই প্রতিদিন চাল-ডাল, বাজার-সদাই লাগতেছে।’
এই লোকটির নাম আব্দুল মালেক (৫৪)। পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনকারী। বয়সের ভারে শরীরে ভাঁজ হয়ে পড়া মালেক ১২ বছর আগে পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় এসেছেন। রিকশা–ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। জানালেন, এক মাস আগে ধার করা টাকা দিয়ে নিজেই একটি ভ্যান কিনেছেন। গত এক মাসে ভ্যানের ঋণ, সংসার চালানোর খরচ মিলে ১৫ হাজার টাকা কর্জ করেছেন। এখন কঠোর লকডাউনে ভ্যান ভাড়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর প্রশ্ন, ‘কীভাবে দেনার টাকা পরিশোধ করব? কীভাবে সংসার চালাব?'
পাশের একজনকে দেখিয়ে মালেক বলেন, ‘ফয়জুল ভাই গতকাল থেকে না খেয়ে এইহানে আছে।’ দেখলাম একজন ভ্যানে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছেন। তাঁর ভ্যানের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি উঠে মাস্ক পরতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। জিজ্ঞেস করলাম, ‘ফয়জুল ভাই, কেমন আছেন?’ ছলছল দৃষ্টি অভিমানের জলে টইটুম্বুর। আত্মসম্মানবোধের বলিষ্ঠ কণ্ঠে বললেন, ‘ভালো আছি।’ জানতে চাইলাম বাসায় যান না কেন? কিছুক্ষণ নীরব থেকে উত্তর দিলেন, ‘কোন মুখে ঘরে যামু? গতকালই চাউল নিয়া ঘরে যাওনের কথা ছিল। ছোট ছেলেডা মাংস দিয়া ভাত খাইতে চাইছিল আরও সপ্তাখানেক আগে। বড় মেয়েডারে নতুন কাপড় কিনে দিমু বলে আশা দিতাছি রোজার ঈদ থেকে। কত দিন হইল ঠিকমতো গাড়ি চালাইতে পারি না। ভ্যানের চাকা না ঘুরলে যে আমাদের ঘরেও খাবারের ব্যবস্থা হয় না।’
এসব বলতে বলতেই শব্দ হয়ে উগড়ে বেরিয়ে আসে তাঁর চাপা কান্না। মুহূর্তেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে ওঠেন, ‘আপনার কাছে এসব কইয়া লাভ কী? হয়তো আগামীকাল থেকে এইহানেও আর বসতে পারুম না। পুলিশ এই জায়গাও খালি কইরা দিব।’
ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে বাবুবাজার ব্রিজের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে বিষণ্ন কিছু মানুষ। চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। এমন বৃষ্টির দিনে, লকডাউনে আপনারা বাইরে কেন? প্রশ্ন শেষ করতেই একজন কান্না চাপতে গিয়ে বুঁজে আসা কণ্ঠে বলে ওঠেন, ঘরে বউ বাচ্চা না খেয়ে বসে আছে; সেই দৃশ্য দেখার জন্য ঘরে যামু?
আচমকা এমন উত্তর শুনে কাছে গেলাম, জানতে চাইলাম কী হয়েছে? জবাবে আরেকজন বলে উঠলেন, ‘কী হয়েছে বুঝেন না? এই যে লকডাউন দিছে, সবকিছু চলাচল বন্ধ করে দিছে, আমাদের সংসার চালানো বন্ধ করার কোনো উপায় আছে? সংসারে তো ঠিকই প্রতিদিন চাল-ডাল, বাজার-সদাই লাগতেছে।’
এই লোকটির নাম আব্দুল মালেক (৫৪)। পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনকারী। বয়সের ভারে শরীরে ভাঁজ হয়ে পড়া মালেক ১২ বছর আগে পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় এসেছেন। রিকশা–ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। জানালেন, এক মাস আগে ধার করা টাকা দিয়ে নিজেই একটি ভ্যান কিনেছেন। গত এক মাসে ভ্যানের ঋণ, সংসার চালানোর খরচ মিলে ১৫ হাজার টাকা কর্জ করেছেন। এখন কঠোর লকডাউনে ভ্যান ভাড়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর প্রশ্ন, ‘কীভাবে দেনার টাকা পরিশোধ করব? কীভাবে সংসার চালাব?'
পাশের একজনকে দেখিয়ে মালেক বলেন, ‘ফয়জুল ভাই গতকাল থেকে না খেয়ে এইহানে আছে।’ দেখলাম একজন ভ্যানে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছেন। তাঁর ভ্যানের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি উঠে মাস্ক পরতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। জিজ্ঞেস করলাম, ‘ফয়জুল ভাই, কেমন আছেন?’ ছলছল দৃষ্টি অভিমানের জলে টইটুম্বুর। আত্মসম্মানবোধের বলিষ্ঠ কণ্ঠে বললেন, ‘ভালো আছি।’ জানতে চাইলাম বাসায় যান না কেন? কিছুক্ষণ নীরব থেকে উত্তর দিলেন, ‘কোন মুখে ঘরে যামু? গতকালই চাউল নিয়া ঘরে যাওনের কথা ছিল। ছোট ছেলেডা মাংস দিয়া ভাত খাইতে চাইছিল আরও সপ্তাখানেক আগে। বড় মেয়েডারে নতুন কাপড় কিনে দিমু বলে আশা দিতাছি রোজার ঈদ থেকে। কত দিন হইল ঠিকমতো গাড়ি চালাইতে পারি না। ভ্যানের চাকা না ঘুরলে যে আমাদের ঘরেও খাবারের ব্যবস্থা হয় না।’
এসব বলতে বলতেই শব্দ হয়ে উগড়ে বেরিয়ে আসে তাঁর চাপা কান্না। মুহূর্তেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে ওঠেন, ‘আপনার কাছে এসব কইয়া লাভ কী? হয়তো আগামীকাল থেকে এইহানেও আর বসতে পারুম না। পুলিশ এই জায়গাও খালি কইরা দিব।’
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২১ দিন আগেফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ দিন আগেকথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪