আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
‘কী চমৎকার দেখা গেল, দুলদুল ঘোড়া আইসা গেল! এইবারেতে দেখেন ভালো, ক্ষুদিরামের ফাঁসি হলো! কী চমৎকার দেখা গেল।’ -এমন সুর আর ছন্দের তালে তালে এক সময় সব বয়সী দর্শক শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখতেন আতোয়ার। শিশু কিশোরসহ সব বয়সীদের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন বায়োস্কোপওয়ালা। এই নাম পুঁজি করে আয়ের পথও বেছে নেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে আতোয়ারের বায়োস্কোপের স্থির চিত্র দেখার মতো মানুষের বড় অভাব। এ জন্য সংসারের খরচ চালাতে তিনি এখন পুরোদস্তুর একজন রিকশাচালক।
তবে মাঝে মাঝে এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পেলে বায়োস্কোপ দেখান আতোয়ার। দক্ষ হাতে বায়োস্কোপ দেখানোর পাশাপাশি সুরেলা কণ্ঠে বাঁশিও বাজাতে পারেন আতোয়ার। চিত্র বর্ণনার ছন্দে দর্শকদের দেন আনন্দ। তাই রিকশা ছেড়ে পুরোদস্তুর বায়োস্কোপওয়ালা হয়ে জীবনের বাকি দিনগুলো কাটাতে চান আতোয়ার।
আতোয়ারের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা গ্রামে। বাবা পাষাণ পাগলার কাছ থেকে ছোটবেলায় তাঁর বায়োস্কোপের হাতেখড়ি। তবে নিজ উদ্যোগে বায়োস্কোপ দেখানোর কাজ শুরু করেন দুই যুগ আগে। এর আগে বাবার সঙ্গে কাজ করেছেন প্রায় ১০ বছর। মানিকগঞ্জ ও এর আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেলা, পূজা, পার্বণে বায়োস্কোপ প্রদর্শনীতে তাঁর পরিচিতি মানুষের মুখে মুখে।
আতোয়ার রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, বায়োস্কোপে সর্বোচ্চ ৬ জন একটি প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারেন। রিল হিসেবে টিকিট মূল্য নির্ধারণ করা হয়। প্রদর্শনীর সময়সীমা অনুযায়ী টিকিট মূল্য কম-বেশিও হয়ে থাকে। আবার শহর-গ্রামাঞ্চল ভেদে প্রদর্শনী মূল্যের পার্থক্য আছে। গ্রাম্য মেলাগুলোতে প্রতি শো ২০-৩০ টাকা এবং শহরাঞ্চলে শো প্রতি ৫০-৬০ টাকা নির্ধারিত হয়ে থাকে। মেলা কেন্দ্রিক এই পরিবেশনায় সাধারণত দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় বেশি থাকে। ফলে ভিড়ের অবস্থা অনুযায়ী রিল টানা দ্রুত ও ধীর হয়ে থাকে।
বর্তমানে বায়োস্কোপওয়ালা থেকে রিকশাচালক বনে যাওয়া আতোয়ারের দিনে আয় ৩-৪ শত টাকা। কিন্তু এই আয় দিয়ে ৫ সদস্যের পরিবারের খরচ চালাতে তাঁকে হিমশিম খেতে হয়। মাঝে মাঝে দু একটি শো দেখান বিভিন্ন গ্রামীণ অনুষ্ঠানে। তা থেকে বাড়তি কিছু আয় হয় আতোয়ারের। তা দিয়েই চলছে তাঁর জীবন।
বায়োস্কোপ প্রদর্শনীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আতোয়ার জানান, বায়োস্কোপ আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্য বহন করে। তবে আজ এর অবস্থা একেবারেই সংকটাপন্ন। বিশেষ করে টিভি, ডিশ, মোবাইল, সিডি ও ভিসিডির সহজলভ্যতার কারণেই এর প্রচলন কমে গেছে।
আতোয়ার রহমান বলেন, ‘আমার ‘টুকি বায়োস্কোপ’-এর জনপ্রিয়তা শুধু মানিকগঞ্জ জেলার মধ্যেই আবদ্ধ থাকেনি। বিভিন্ন সময় আমন্ত্রণ পেয়ে আমি ঢাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বগুড়া, টাঙ্গাইল জেলা থেকে ঘুরে এসেছি। রঙিন মনের মানুষ হয়ে রিকশার শক্ত হাতল আর ভালো লাগে না। পরিস্থিতি ভালো হলে আবার ফিরে যেতে চাই বায়োস্কোপের রঙিন জগতে। যত দিন বেঁচে থাকব, বায়োস্কোপ পরিবেশনের মাধ্যমে মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ আর আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করে যাব।’
পয়লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বায়োস্কোপে নানা রং-ঢংয়ের মাধ্যমে বর্ণনা দিয়ে একটি দৃশ্যকে বাস্তবে রূপান্তর করতে হয়। এই কাজ কষ্টসাধ্য। আর এই কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন আতোয়ার। আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তিনি।’
‘কী চমৎকার দেখা গেল, দুলদুল ঘোড়া আইসা গেল! এইবারেতে দেখেন ভালো, ক্ষুদিরামের ফাঁসি হলো! কী চমৎকার দেখা গেল।’ -এমন সুর আর ছন্দের তালে তালে এক সময় সব বয়সী দর্শক শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখতেন আতোয়ার। শিশু কিশোরসহ সব বয়সীদের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন বায়োস্কোপওয়ালা। এই নাম পুঁজি করে আয়ের পথও বেছে নেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে আতোয়ারের বায়োস্কোপের স্থির চিত্র দেখার মতো মানুষের বড় অভাব। এ জন্য সংসারের খরচ চালাতে তিনি এখন পুরোদস্তুর একজন রিকশাচালক।
তবে মাঝে মাঝে এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পেলে বায়োস্কোপ দেখান আতোয়ার। দক্ষ হাতে বায়োস্কোপ দেখানোর পাশাপাশি সুরেলা কণ্ঠে বাঁশিও বাজাতে পারেন আতোয়ার। চিত্র বর্ণনার ছন্দে দর্শকদের দেন আনন্দ। তাই রিকশা ছেড়ে পুরোদস্তুর বায়োস্কোপওয়ালা হয়ে জীবনের বাকি দিনগুলো কাটাতে চান আতোয়ার।
আতোয়ারের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা গ্রামে। বাবা পাষাণ পাগলার কাছ থেকে ছোটবেলায় তাঁর বায়োস্কোপের হাতেখড়ি। তবে নিজ উদ্যোগে বায়োস্কোপ দেখানোর কাজ শুরু করেন দুই যুগ আগে। এর আগে বাবার সঙ্গে কাজ করেছেন প্রায় ১০ বছর। মানিকগঞ্জ ও এর আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেলা, পূজা, পার্বণে বায়োস্কোপ প্রদর্শনীতে তাঁর পরিচিতি মানুষের মুখে মুখে।
আতোয়ার রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, বায়োস্কোপে সর্বোচ্চ ৬ জন একটি প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারেন। রিল হিসেবে টিকিট মূল্য নির্ধারণ করা হয়। প্রদর্শনীর সময়সীমা অনুযায়ী টিকিট মূল্য কম-বেশিও হয়ে থাকে। আবার শহর-গ্রামাঞ্চল ভেদে প্রদর্শনী মূল্যের পার্থক্য আছে। গ্রাম্য মেলাগুলোতে প্রতি শো ২০-৩০ টাকা এবং শহরাঞ্চলে শো প্রতি ৫০-৬০ টাকা নির্ধারিত হয়ে থাকে। মেলা কেন্দ্রিক এই পরিবেশনায় সাধারণত দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় বেশি থাকে। ফলে ভিড়ের অবস্থা অনুযায়ী রিল টানা দ্রুত ও ধীর হয়ে থাকে।
বর্তমানে বায়োস্কোপওয়ালা থেকে রিকশাচালক বনে যাওয়া আতোয়ারের দিনে আয় ৩-৪ শত টাকা। কিন্তু এই আয় দিয়ে ৫ সদস্যের পরিবারের খরচ চালাতে তাঁকে হিমশিম খেতে হয়। মাঝে মাঝে দু একটি শো দেখান বিভিন্ন গ্রামীণ অনুষ্ঠানে। তা থেকে বাড়তি কিছু আয় হয় আতোয়ারের। তা দিয়েই চলছে তাঁর জীবন।
বায়োস্কোপ প্রদর্শনীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আতোয়ার জানান, বায়োস্কোপ আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্য বহন করে। তবে আজ এর অবস্থা একেবারেই সংকটাপন্ন। বিশেষ করে টিভি, ডিশ, মোবাইল, সিডি ও ভিসিডির সহজলভ্যতার কারণেই এর প্রচলন কমে গেছে।
আতোয়ার রহমান বলেন, ‘আমার ‘টুকি বায়োস্কোপ’-এর জনপ্রিয়তা শুধু মানিকগঞ্জ জেলার মধ্যেই আবদ্ধ থাকেনি। বিভিন্ন সময় আমন্ত্রণ পেয়ে আমি ঢাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বগুড়া, টাঙ্গাইল জেলা থেকে ঘুরে এসেছি। রঙিন মনের মানুষ হয়ে রিকশার শক্ত হাতল আর ভালো লাগে না। পরিস্থিতি ভালো হলে আবার ফিরে যেতে চাই বায়োস্কোপের রঙিন জগতে। যত দিন বেঁচে থাকব, বায়োস্কোপ পরিবেশনের মাধ্যমে মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ আর আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করে যাব।’
পয়লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বায়োস্কোপে নানা রং-ঢংয়ের মাধ্যমে বর্ণনা দিয়ে একটি দৃশ্যকে বাস্তবে রূপান্তর করতে হয়। এই কাজ কষ্টসাধ্য। আর এই কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন আতোয়ার। আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তিনি।’
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২০ দিন আগেফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ দিন আগেকথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪