বিএনপির অনেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৷ তিনি বলেন, ‘বিএনপি উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করল প্রকাশ্যে। তবে আমাদের জানামতে, স্থানীয় পর্যায়ে তাদের অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।’

আজ মঙ্গলবার ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

উপজেলা নির্বাচনের একজন প্রার্থীকে অপহরণ করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এত বড় একটা নির্বাচন, তাতে টুকটাক কিছু ঘটনা যে ঘটবে না, ঘটেনি। তবে তা নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। কোথাও ব্যত্যয় ঘটলে প্রশাসনিকভাবে আমরা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
 
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কতজন—এমন এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমাদের কতজন প্রার্থী, আমরা সেটা হিসাব করে দেখার তাগিদ অনুভব করিনি। আমরা সবাইকে সুযোগ দিয়েছি।’

উপজেলা পরিষদের প্রথম দফার নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৮ মে প্রথম দফার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করতে। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি প্রকাশ্যে উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও আমাদের জানামতে তাদের অনেকেই অংশগ্রহণ করবেন।’ 

জামায়াতে ইসলামী উপজেলা নির্বাচনে কাউকে না যেতে আহ্বান করেছে—এবিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কাদের বলেন, ‘জামায়াতের আহ্বান নিয়ে আমরা কোনো প্রকার প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি না।’ 

বাংলাদেশ গণতন্ত্র সূচকে পিছিয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি মান্যবর রাষ্ট্রদূতকে বলব, আপনার দেশ গণতন্ত্র সূচকে কত ধাপ পিছিয়েছে?’

কাদের বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য একটা সহনীয় অবস্থায় রাখার জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে এফোর্ড দিচ্ছেন, তা বিরল। ঈদে অর্থপ্রবাহ বাড়ার কারণে আমাদের অর্থনীতি কিছুটা চাঙা হয়েছে ৷ অর্থ লেনদেনের যে গতিময়তা, তা আমাদের অর্থনীতিতে একটা গতিশীলতা নিয়ে এসেছে। সেই সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ। ব্যাংকিং খাতে লেনদেন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর যে প্র‍য়াস, তা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ পার্টি হিসেবে আমরা তার নির্দেশনা মেনে চলব।’ 

কাদের বলেন, এবার ঈদ পালন শেষে মোটামুটি স্বস্তিতে মানুষ কর্মস্থলে ফিরতে পারছে। 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে নেতানিয়াহু। আজকে সারা বিশ্বই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মনে হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিটলারের যে দাম্ভিকতা, যুদ্ধংদেহী মনোভাব, সেটা আবারও নতুন করে বিশ্বরাজনীতিতে দেখতে পাচ্ছি। হিটলার যে হলোকাস্ট ঘটিয়েছিল ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে, আজকে গাজায় গণহত্যার যে নায়ক, একই রূপে আবির্ভূত হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এই নেতানিয়াহু জাতিসংঘকে মানে না, হোয়াইট হাউসকে তোয়াক্কা করে না। আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কথা শোনে না। সে হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে। ১৪ হাজার শিশুকে গাজায় ইতিমধ্যে হত্যা করে ফেলছে।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইরানের ইসরায়েলে আক্রমণের পর পৃথিবীর ইনফ্লুয়েশিয়াল রাষ্ট্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু আবারও ইরান আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মনে হয় বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি হচ্ছেন নেতানিয়াহু। আপন ইচ্ছায় চলেন, যা খুশি করেন। যাকে ইচ্ছা তাকে মারেনও, ভাতে মারেন, পানিতে মারেন, এয়ার স্ট্রাইক করে মারেন। বাউন্ডারি সাইডে সেনাবাহিনী মারে। তাদের দুর্দমনীয় শক্তি, এর অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এটা পৃথিবীর ভয়ংকর চিত্র। তাঁর দাপট মনে হয় হিটলারকেও ছাড়িয়ে যাবে।’