দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৪ ঘোষণা করেছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির ইশতেহারে ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ইশতেহারে দলটি নিজেদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তুলনা করছে ১৭ বছর আগে ক্ষমতায় থাকা বিএনপির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোটখাটো অভিঘাত আজ আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
আজ বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ইশতেহার ঘোষণা করেছন। এবারের ইশতেহারের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’।
ইশতেহার ঘোষণার সময় দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের রূপান্তর ঘটেছে। আজকের বাংলাদেশ দারিদ্র্যক্লিষ্ট, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর বাংলাদেশ নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। সম্ভাবনার হাতছানি দেওয়া দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা দুরন্ত বাংলাদেশ। ছোটখাটো অভিঘাত আজ আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। করোনা মহামারিসহ নানা অভিঘাত মোকাবিলা করে সেই প্রমাণ আমরা রেখেছি।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে বিভিন্ন আর্থসামাজিক সূচকে বাংলাদেশ কোথায় ছিল আর আজ বাংলাদেশ কোথায় অবস্থান করছে, তার সংক্ষিপ্ত একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে জানান, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, যা এখন ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। মাথাপিছু আয় (নমিনাল) ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলার, যা ৫ গুণ বৃদ্ধি। বাজেটের আকার ৬১ হাজার কোটি টাকা থেকে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা ১২ গুণ বৃদ্ধি। জিডিপির আকার ৪ লাখ ১৫ হাজার ৭২ কোটি টাকা থেকে ৫০ দশমিক ৩১ লাখ কোটি টাকা, যা ১২ গুণ বৃদ্ধি। রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পাঁচ গুণ বৃদ্ধি। বার্ষিক রেমিট্যান্স আয় ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২৪ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ছয় গুণ বৃদ্ধি। বার্ষিক রাজস্ব আয় ৩৭ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা থেকে ৫ লাখ কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ, অর্থাৎ অর্ধেক কমেছে। অতিদারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা প্রায় পাঁচ গুণ কমে এসেছে। শিশু মৃত্যুর হার (প্রতি হাজারে) ৮৪ জন থেকে ২১ জন, যা চার গুণ কমেছে। মাতৃমৃত্যুর হার (প্রতি লাখে) ৩৭০ জন থেকে ১৬১ জন, যা প্রায় আড়াই গুণ কমেছে।
শেখ হাসিনা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৩ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট থেকে ২৮ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট, যা ৮ গুণ বৃদ্ধি। বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর হার মোট জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ থেকে মোট জনসংখ্যার ১০০ শতাংশ, প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি।