হিলাল ফয়েজী
হাসান আজিজুল হকের গল্পে বড় হয়ে যা পড়েছিলাম, ছোটবেলায় চাঁদপুরের কোড়ালিয়া গ্রামে দেখা দৃশ্যের হুবহু। একটি গরু মরে গেছে। খোলা মাঠে রাখা ছিল। দেখি মেঘলা আকাশ থেকে ক্রমে ক্রমে নেমে আসছে পাখা মেলে। আমরা ছোটরা তখন চিৎকার করতাম লাফিয়ে লাফিয়ে: ‘হহুন’ আইছেরে! ‘হহুন’ আইছে! হহুন মানে শকুন। কেমন করে যেন ওরা মরা গরুর গন্ধ পেয়ে যায় অনেক উঁচু আকাশ থেকে। দলবদ্ধ। দলপ্রধান রাজশকুনের লাল প্রাকৃতিক চিহ্ন। খুবলে খুবলে শকুনেরা মরা গরু দিয়ে ভোজন সারে মহানন্দে। আমরা খাওয়া-দাওয়া-নাওয়া ফেলে দেখি। সবুজ বিপ্লবের কীটনাশক এসে গরুভোজী শকুনকুলকে বলতে গেলে ‘নাই’ করে দিয়েছে। চাঁদপুরের এখনকার বালক-বালিকারা ‘হহুন’ চেনে কি না জানি না। একটা বচন ছোটবেলায় বেশ শুনেছি। ‘হহুনের দোয়ায় গরু মরে না।’ এই বচনও বোধকরি নির্বাসিত হয়ে গেছে। এখন ‘শকুন বিকাশ প্রকল্প’ উপমহাদেশে। সেটা কত দূরে, ‘সফল-বিফল-তহবিল তছরুপ’ ইত্যাদি অভিধা পেয়ে ধাক্কা-অক্কা বরণ করেছে কি না জানি না। তবে পক্ষী ‘হহুন’ নিয়ে আজকের বয়ান নয়।
আজ যে ছোটবেলায় চাঁদপুরের ‘হহুন’ দেখি দুনিয়াজুড়ে। এসব মানবরূপী শকুনের দোয়ায় গরু মরে। এখানে দোয়া মানে বীভৎস হার্মাদি কৌশল। শকুনের কৌশলে কত যে গরু মরে দুনিয়াজুড়ে।
চীনের উহান শহরের এক গবেষণাগারে ২০১৯ সালের নভেম্বরে জানা গেল, ভয়াবহ এক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। কীভাবে? কীভাবে? ট্রাম্প বলল, ইচ্ছে করে চীনই এটা উহান থেকে ছড়িয়ে দিয়েছে। চীন প্রথমে বলল, কী সব বানরজাতীয় প্রাণী, বাদুড় ইত্যাদি থেকে। ফের বলল, চীনের ঘাটে তরি ভেড়ানো মার্কিন সৈন্যদের থেকে।
এ রকম ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক চলছে এখনো। এটি এই ধরনের তিন নম্বর ভাইরাস। দুই নম্বর ভাইরাসটিও চীন থেকে উৎপন্ন হয়ে তাইওয়ান, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে ছড়িয়েই থেমে গেছে। অনেকেই ভাবল, তিন নম্বরটিও বুঝি এই রকমই হবে। আমাদের দেশেও তাই। এদিকে চীনাদের পকেটে এখন অনেক পয়সা। চীনা নববর্ষ উপলক্ষে ওরা বেড়াতে গেল নানা দেশে, ইউরোপে। বাংলাদেশে আমরা শুধু চীনা ফ্লাইটের ওপর নজর রাখলাম। ওদিকে যে বিশেষত ইতালি ফ্লাইট দিয়ে ভাইরাসটি এ দেশে ঢুকে গেল, তা শুরুতে ভাবতেও পারিনি। আর ভাবতে পারিনি ইউরোপ-আমেরিকার সর্বাধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাও কতটুকু নাজুক। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত লাখ চল্লিশেক মানুষ প্রাণ হারাল, বেশির ভাগই ইউরোপ-আমেরিকায়।
আর আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা? দুর্বল, নাজুক, ঝুরঝুর বললে কম বলা হবে; পাঠক আমাকে অভিযুক্ত করতে পারেন। তবু শুনি, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া মন্দ সামাল দিইনি। এমনকি অজানা এক আজব করোনাভাইরাস এসে আমাদের হাজার হাজার স্বাস্থ্যসেবীকে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করল, সেটা সামাল দিতেও তারা জান দিয়ে লড়ে যাচ্ছে। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগের পুরোনো ‘কেনাকাটা ব্যামো’ অনেক কিছু গুবলেট করে দিয়েছিল শুরুতেই। এক জুটি প্রতারক শাহেদ-সাবরিনা তো ভুয়া পরীক্ষার তেলেসমাতি কারবার দেখাল। এই সব ‘হহুন’ নিয়েই আমরা মেতে থাকলাম। কিন্তু আসল ‘রাজশকুন’দের কোনো খবরই আমাদের তখনো নেই জানা।
২০১৬ সালেই প্রযুক্তি-মার্শাল বিল গেটস নাকি এমনই ভাইরাসের ভয়ংকর আবির্ভাবের কথা আগাম বলে দিয়েছিলেন। সে জন্য নাকি প্রস্তুতিও রেখেছেন প্রযুক্তির নববিন্যাসের এক নম্বর হতে। পেন্ডেমিক মানে বৈশ্বিক মহামারি, পশ্চিম বাংলায় উচ্চারিত হলো ‘অতিমারি’ অনুবাদে। বাংলাদেশে আমরা অত সব পণ্ডিতি শব্দে নেই, আমরা জানি আমরা করোনায় কুপোকাত, জব্দ।
পৃথিবীতে বিশ-বাইশ হাজার বছর আগে থেকেই এই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা গেছে। মানুষের জিনেই নাকি তার প্রমাণ। পৃথিবীর সব গবেষক পণ্ডিত জানালেন, এখন শুধু টিকা এবং মাস্ক...! পৃথিবীর সব মানুষকে মাস্ক পরতে বলো, সব মানুষকে করোনার টিকা দিয়ে দাও। যত দ্রুত পার। না হলে মানবজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
এবার শুরু হলো ‘টিকা-হহুনের’ উঁচু আকাশে নীরব ঘোরাঘুরি। বড় বড় বানরের বড় বড় লেজ। সেই লেজও আকাশসমান উঁচু। গোপনে গোপনে। কে আগে টিকা তৈরি করবে! বিশেষত চীন, রাশিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেন, ভারত। অক্সফোর্ড কীর্তিমান গবেষণা-মগজ দিনরাত দিগ্গজ কর্মকাণ্ডে রত। হিউম্যান ট্রায়াল ঠিকমতো না দিয়েই রাশিয়া তার ‘পৃথিবীর প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ’ স্পুতনিকের নাম দিয়ে সবার আগে টিকার বাজার মাত করে দিতে চাইল। এদিকে গোপনে গোপনে চীন কয়েক রকম টিকা উৎপাদনে নিয়োজিত রইল। সবার আগে অক্সফোর্ড সহযোগে যে টিকা এল, সেটা পেল মান্যতা। তারপরে মডার্না, জনসন–কত কী! এদিকে ইরান-কিউবা-কাজাখস্তান প্রভৃতি দেশও নিজেদের টিকা বানিয়ে ফেলল। দেখা গেল ‘হহুন’ হিসেবে সবচেয়ে ক্ষিপ্র, তেজি, আগুয়ান চীনা ‘হহুন’। কোথা সে ব্রাজিল। সেখানেও চীনা টিকার বাজার। রাশিয়াও কম গেল না। মার্কিনিরা নিজ দেশ সামাল দেওয়ার কাজটি নিয়েই বেশি মগ্ন থাকল। করোনা হুহু করে বাড়ে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রটোকল বাণীও হুহু করে বাড়তেই থাকে।
২০২০ সালজুড়ে ইউরোপ-আমেরিকা-জাপানসহ বড় বড় দেশ ‘অতিমারি’ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত থাকল। এসব দেশের সর্বাধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ‘কোভিড-১৯’ শিরোনাম পাওয়া ভাইরাসটি রীতিমতো তাদের ‘স্টুপিড’ বানিয়ে দিল। পৃথিবীজুড়ে সৃষ্টি হলো লাখ লাখ ট্র্যাজেডি।
তা টিকা উৎপাদনের মতো মহৎ কাজের সঙ্গে ছোটবেলার চাঁদপুরের ‘হহুন’-এর মিল দেখে পাঠক রেগে উঠবেন না। কার আগে কে বিশ্ব টিকার বাজার দখল করে–এ নিয়ে চলল তেলেসমাতি কাণ্ড। কার মুনাফা কত হতে চলল, তার বিশাল নিঃশব্দ পাঁয়তারা। ব্রাজিলে চীনারা টিকার কারখানা গড়ে দিল। কথামতো কাঁচামাল সময়মতো দিল না। ব্রাজিলের ‘ট্রাম্প’ ওই কারখানা দিল ভেঙে। ভারত সরকারের সঙ্গে মিলে যে ভারতীয় বেসরকারি কোম্পানি ‘কোভ্যাক্সিন’ উৎপাদন শুরু করল, যা রপ্তানি করা ছিল বেআইনি, তারা সিঙ্গাপুরে এক কোম্পানি গড়ে তুলে ব্রাজিলে অনেক বেশি দামে গোপনে টিকা সরবরাহ শুরু করে ধরা খেল ব্রাজিলীয় সরকারের হাতেই। ছোট-বড়-মাঝারি নানা ‘হহুন’ টিকা আকাশে উড়তেই থাকল। মরা গরুর সন্ধান পেলেই নিচে জমিনে নেমে আসে।
২০২০ সালের করোনা সামাল দিয়ে ভারত-মহাশাসক তো ২০২১ সালের মার্চে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মল্লবীরের মতো বলে উঠলেন, ‘আমরা করোনাকে হারিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছি। পৃথিবীকে পথ দেখাব আমরাই।’ করোনা মুচকি হাসল। করোনা-করোনা তখন একান্তে মিলেমিশে দিল্লি-মুম্বাইয়ে একসঙ্গে গোপন শলাপরামর্শ করে ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলে হঠাৎ ‘ভারত-ভেরিয়েন্ট’ হিসেবে আবির্ভূত হয়ে ভারত মুলুককে এমন নাকানি-চুবানি-ঠাসানি ভক্ষণ করাল যে, লাখ লাখ ট্র্যাজেডি গড়ে উঠল সে দেশে দুনিয়াকে চমকে দিয়ে। পৃথিবীর আরেক দিকে ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ভেরিয়েন্ট’। দিল্লিতে খোদ চিকিৎসকেরা পর্যন্ত অক্সিজেন না পেয়ে মারা গেলেন। এদিকে নামে নাকি গোস্বা। অতএব ‘ভারত ভেরিয়েন্টের’ নতুন নাম ‘ডেলটা ভেরিয়েন্ট’। দক্ষিণ আফ্রিকা ‘আলফা ভেরিয়েন্ট’।
হায় হায় হঠাৎ বিপদে পড়ে গেলাম আমরা বাংলাদেশ। টিকা না বানাতেই ডিজিটাল স্মার্টনেসে আমরা অগ্রিম অর্থ দিয়ে বিশ্বে বৃহত্তম টিকা উৎপাদক ভারতের সিরাম কোম্পানি থেকে টিকা প্রদান কার্যক্রম নিশ্চিত করে নিলাম। এবং পেলাম প্রথম চালানও। বিশ্বময় প্রবাসী বাঙালিরা যখন উন্নত দেশে অবস্থান করেও টিকার সিরিয়াল পায় না, বাংলাদেশে ডাবল ডোজ টিকাদানে সফলদের ফেসবুকিং ছবি যেন বাজিমাতের মতো। শত দুঃখেও আলোর রেখা। সরকারের পাঁড় বিরোধীরাও সেই টিকা শুরুতে গ্রহণে পাগলপারা হয়ে গেল। আর হাঁ! হঠাৎ বজ্রপাত! ভারত হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধ করে দিল সে দেশে উৎপাদিত সব টিকা। সে দেশের খোদ কংগ্রেস পর্যন্ত দাবি তুলল, ভারতে উৎপাদিত টিকা সবার আগে ভারতীয়রাই পাবে। হায়রে কী করা! সরকারের প্রাথমিক সাফল্যের রোশনাই কেমন অন্ধকার হয়ে গেল। এমনই জটিল সময়ে নানা প্রকারের দেশি ‘হহুন’ নতুন করে জেগে উঠল। গোপন ‘হহুন’। এবার টিকা কেনার জন্য নতুন করে এখানে-সেখানে-ওখানে। মন্ত্রণালয়ে, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বেনিয়া মহব্বতে সরকারের বিপন্নতার সুযোগ নেওয়ার ধুম পড়ে গেল। সে যাই হোক, চীন-রাশিয়ার নানা দেনদরবারে, মার্কিনি সংখ্যাতিরিক্ত উপহারে, আমরা ফের টিকাদানের কাজ শুরু করে আপাতত হাঁপ ছেড়েছি। কিন্তু ভবিষ্যৎ? কমপক্ষে তিরিশ কোটি টিকা আমাদের প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজন মেটাতে দেশি-বিদেশি-সরকারি-বেসরকারি ‘হহুনের’ যে মহোৎসব! মাল বানাও। মাল বানাও। গানের সুরে কান হবে ঝালাপালা।
কিন্তু পাঠক, জেনে কষ্ট পাবেন, আমাদেরও একটি নিজস্ব সরকারি টিকা উৎপাদন কারখানা ছিল এই ঢাকাতেই। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখান থেকে সংক্রামক ব্যাধির টিকা নিয়ে পৃথিবীতে বিতরণ করত। আমাদের সরকারি-বেসরকারি ‘হহুনেরা’ আমদানি-বাণিজ্যের স্বার্থে ওই টিকা কারখানাটি গলাটিপে হত্যা করে ফেলল।
তবুও আছে আর একটি চমকপ্রদ খবর। আমাদের দেশেই এখন আমরা প্রয়োজনীয় শতকরা আটানব্বই ভাগ ওষুধ নিজেরাই প্রস্তুত করি। পৃথিবীর বহু দেশে আমরা ওষুধ রপ্তানি করি, খোদ আমেরিকা সুদ্ধু।
সেই আমরা কি নিজেরা টিকা বানানোর উদ্যোগ নিতে পারব না? সরকারি-বেসরকারি বৈপ্লবিক উদ্যোগ একত্র করলে পদ্মা সেতুর মতো বিস্ময়কর সাফল্য আমরাও অর্জন করতে সক্ষম হব না? গোপালগঞ্জে আমাদের যে বিশাল হাব অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, সেটা প্রস্তুত করে শুধু করোনা কেন, সংক্রামক ব্যাধিসহ একালের সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারে ২০৪১ ভিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত করতে পারি না? পারি। আমরাই পারি। সরকারের ভেতর-বাহিরের ‘হহুন’ মতলবিদের থাবা চূর্ণ করে এগোতে হবে। ওরা নানা কূটচাল করছে–করবেই। ওসব পরোয়া না করে ‘জয় বাংলা’ বলে এগিয়ে চলি। নিজেদের চাহিদা মেটাব, আমরা পৃথিবীর নানা দেশের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হব।
এখন প্রশ্ন একটিই: ওই ‘হহুনেরা’ কি তা হতে দেবে? উত্তরও একটিই: পদ্মা সেতুতে অন্য ধরনের ‘হহুনেরা’ ব্যর্থ হয়েছে। শক্তপোক্ত ডিজিটাল নেতৃত্ব থাকলে এই টিকা অঙ্গনেও ‘হহুনেরা’ ব্যর্থ হতে বাধ্য! পৃথিবীতে নব নব জীবাণু ভেরিয়েন্ট বেরোবে। আর আমরা হাপিত্যেশ করে দুনিয়াজুড়ে কান্নাকাটির ভিক্ষার প্যাটরা হাতে ঘুরে বেড়াব, সে জন্য বাংলাদেশ আনিনি। পদ্মা সেতুর চ্যালেঞ্জে একাত্তর বিজয়ী হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় মর্যাদার সেতুসৌধ। আসুন এবার আমরা সরকারিভাবে ‘জাতীয় টিকা সার্বভৌমত্বের’ তথা একাত্তরের নব গৌরবসৌধ নির্মাণ করি। ‘হহুনেরা’ এটা করতে উন্মাদ হয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর বেলায় যখন জাঁদরেল মনুষ্য ‘হহুন’দের নাক-মুখ থ্যাবড়া করে দিতে পেরেছি, সব ধরনের টিকাসহ আনুষঙ্গিক ইনসুলিন ইত্যাকার বিশাল স্থাপনা নির্মাণেও আমরা ওদের বাধা ঝুরঝুর করে দিতে পারবই। ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিযাত্রায় আসবেই নব নব বিজয়।
হাসান আজিজুল হকের গল্পে বড় হয়ে যা পড়েছিলাম, ছোটবেলায় চাঁদপুরের কোড়ালিয়া গ্রামে দেখা দৃশ্যের হুবহু। একটি গরু মরে গেছে। খোলা মাঠে রাখা ছিল। দেখি মেঘলা আকাশ থেকে ক্রমে ক্রমে নেমে আসছে পাখা মেলে। আমরা ছোটরা তখন চিৎকার করতাম লাফিয়ে লাফিয়ে: ‘হহুন’ আইছেরে! ‘হহুন’ আইছে! হহুন মানে শকুন। কেমন করে যেন ওরা মরা গরুর গন্ধ পেয়ে যায় অনেক উঁচু আকাশ থেকে। দলবদ্ধ। দলপ্রধান রাজশকুনের লাল প্রাকৃতিক চিহ্ন। খুবলে খুবলে শকুনেরা মরা গরু দিয়ে ভোজন সারে মহানন্দে। আমরা খাওয়া-দাওয়া-নাওয়া ফেলে দেখি। সবুজ বিপ্লবের কীটনাশক এসে গরুভোজী শকুনকুলকে বলতে গেলে ‘নাই’ করে দিয়েছে। চাঁদপুরের এখনকার বালক-বালিকারা ‘হহুন’ চেনে কি না জানি না। একটা বচন ছোটবেলায় বেশ শুনেছি। ‘হহুনের দোয়ায় গরু মরে না।’ এই বচনও বোধকরি নির্বাসিত হয়ে গেছে। এখন ‘শকুন বিকাশ প্রকল্প’ উপমহাদেশে। সেটা কত দূরে, ‘সফল-বিফল-তহবিল তছরুপ’ ইত্যাদি অভিধা পেয়ে ধাক্কা-অক্কা বরণ করেছে কি না জানি না। তবে পক্ষী ‘হহুন’ নিয়ে আজকের বয়ান নয়।
আজ যে ছোটবেলায় চাঁদপুরের ‘হহুন’ দেখি দুনিয়াজুড়ে। এসব মানবরূপী শকুনের দোয়ায় গরু মরে। এখানে দোয়া মানে বীভৎস হার্মাদি কৌশল। শকুনের কৌশলে কত যে গরু মরে দুনিয়াজুড়ে।
চীনের উহান শহরের এক গবেষণাগারে ২০১৯ সালের নভেম্বরে জানা গেল, ভয়াবহ এক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। কীভাবে? কীভাবে? ট্রাম্প বলল, ইচ্ছে করে চীনই এটা উহান থেকে ছড়িয়ে দিয়েছে। চীন প্রথমে বলল, কী সব বানরজাতীয় প্রাণী, বাদুড় ইত্যাদি থেকে। ফের বলল, চীনের ঘাটে তরি ভেড়ানো মার্কিন সৈন্যদের থেকে।
এ রকম ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক চলছে এখনো। এটি এই ধরনের তিন নম্বর ভাইরাস। দুই নম্বর ভাইরাসটিও চীন থেকে উৎপন্ন হয়ে তাইওয়ান, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে ছড়িয়েই থেমে গেছে। অনেকেই ভাবল, তিন নম্বরটিও বুঝি এই রকমই হবে। আমাদের দেশেও তাই। এদিকে চীনাদের পকেটে এখন অনেক পয়সা। চীনা নববর্ষ উপলক্ষে ওরা বেড়াতে গেল নানা দেশে, ইউরোপে। বাংলাদেশে আমরা শুধু চীনা ফ্লাইটের ওপর নজর রাখলাম। ওদিকে যে বিশেষত ইতালি ফ্লাইট দিয়ে ভাইরাসটি এ দেশে ঢুকে গেল, তা শুরুতে ভাবতেও পারিনি। আর ভাবতে পারিনি ইউরোপ-আমেরিকার সর্বাধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাও কতটুকু নাজুক। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত লাখ চল্লিশেক মানুষ প্রাণ হারাল, বেশির ভাগই ইউরোপ-আমেরিকায়।
আর আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা? দুর্বল, নাজুক, ঝুরঝুর বললে কম বলা হবে; পাঠক আমাকে অভিযুক্ত করতে পারেন। তবু শুনি, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া মন্দ সামাল দিইনি। এমনকি অজানা এক আজব করোনাভাইরাস এসে আমাদের হাজার হাজার স্বাস্থ্যসেবীকে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করল, সেটা সামাল দিতেও তারা জান দিয়ে লড়ে যাচ্ছে। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগের পুরোনো ‘কেনাকাটা ব্যামো’ অনেক কিছু গুবলেট করে দিয়েছিল শুরুতেই। এক জুটি প্রতারক শাহেদ-সাবরিনা তো ভুয়া পরীক্ষার তেলেসমাতি কারবার দেখাল। এই সব ‘হহুন’ নিয়েই আমরা মেতে থাকলাম। কিন্তু আসল ‘রাজশকুন’দের কোনো খবরই আমাদের তখনো নেই জানা।
২০১৬ সালেই প্রযুক্তি-মার্শাল বিল গেটস নাকি এমনই ভাইরাসের ভয়ংকর আবির্ভাবের কথা আগাম বলে দিয়েছিলেন। সে জন্য নাকি প্রস্তুতিও রেখেছেন প্রযুক্তির নববিন্যাসের এক নম্বর হতে। পেন্ডেমিক মানে বৈশ্বিক মহামারি, পশ্চিম বাংলায় উচ্চারিত হলো ‘অতিমারি’ অনুবাদে। বাংলাদেশে আমরা অত সব পণ্ডিতি শব্দে নেই, আমরা জানি আমরা করোনায় কুপোকাত, জব্দ।
পৃথিবীতে বিশ-বাইশ হাজার বছর আগে থেকেই এই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা গেছে। মানুষের জিনেই নাকি তার প্রমাণ। পৃথিবীর সব গবেষক পণ্ডিত জানালেন, এখন শুধু টিকা এবং মাস্ক...! পৃথিবীর সব মানুষকে মাস্ক পরতে বলো, সব মানুষকে করোনার টিকা দিয়ে দাও। যত দ্রুত পার। না হলে মানবজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
এবার শুরু হলো ‘টিকা-হহুনের’ উঁচু আকাশে নীরব ঘোরাঘুরি। বড় বড় বানরের বড় বড় লেজ। সেই লেজও আকাশসমান উঁচু। গোপনে গোপনে। কে আগে টিকা তৈরি করবে! বিশেষত চীন, রাশিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেন, ভারত। অক্সফোর্ড কীর্তিমান গবেষণা-মগজ দিনরাত দিগ্গজ কর্মকাণ্ডে রত। হিউম্যান ট্রায়াল ঠিকমতো না দিয়েই রাশিয়া তার ‘পৃথিবীর প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ’ স্পুতনিকের নাম দিয়ে সবার আগে টিকার বাজার মাত করে দিতে চাইল। এদিকে গোপনে গোপনে চীন কয়েক রকম টিকা উৎপাদনে নিয়োজিত রইল। সবার আগে অক্সফোর্ড সহযোগে যে টিকা এল, সেটা পেল মান্যতা। তারপরে মডার্না, জনসন–কত কী! এদিকে ইরান-কিউবা-কাজাখস্তান প্রভৃতি দেশও নিজেদের টিকা বানিয়ে ফেলল। দেখা গেল ‘হহুন’ হিসেবে সবচেয়ে ক্ষিপ্র, তেজি, আগুয়ান চীনা ‘হহুন’। কোথা সে ব্রাজিল। সেখানেও চীনা টিকার বাজার। রাশিয়াও কম গেল না। মার্কিনিরা নিজ দেশ সামাল দেওয়ার কাজটি নিয়েই বেশি মগ্ন থাকল। করোনা হুহু করে বাড়ে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রটোকল বাণীও হুহু করে বাড়তেই থাকে।
২০২০ সালজুড়ে ইউরোপ-আমেরিকা-জাপানসহ বড় বড় দেশ ‘অতিমারি’ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত থাকল। এসব দেশের সর্বাধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ‘কোভিড-১৯’ শিরোনাম পাওয়া ভাইরাসটি রীতিমতো তাদের ‘স্টুপিড’ বানিয়ে দিল। পৃথিবীজুড়ে সৃষ্টি হলো লাখ লাখ ট্র্যাজেডি।
তা টিকা উৎপাদনের মতো মহৎ কাজের সঙ্গে ছোটবেলার চাঁদপুরের ‘হহুন’-এর মিল দেখে পাঠক রেগে উঠবেন না। কার আগে কে বিশ্ব টিকার বাজার দখল করে–এ নিয়ে চলল তেলেসমাতি কাণ্ড। কার মুনাফা কত হতে চলল, তার বিশাল নিঃশব্দ পাঁয়তারা। ব্রাজিলে চীনারা টিকার কারখানা গড়ে দিল। কথামতো কাঁচামাল সময়মতো দিল না। ব্রাজিলের ‘ট্রাম্প’ ওই কারখানা দিল ভেঙে। ভারত সরকারের সঙ্গে মিলে যে ভারতীয় বেসরকারি কোম্পানি ‘কোভ্যাক্সিন’ উৎপাদন শুরু করল, যা রপ্তানি করা ছিল বেআইনি, তারা সিঙ্গাপুরে এক কোম্পানি গড়ে তুলে ব্রাজিলে অনেক বেশি দামে গোপনে টিকা সরবরাহ শুরু করে ধরা খেল ব্রাজিলীয় সরকারের হাতেই। ছোট-বড়-মাঝারি নানা ‘হহুন’ টিকা আকাশে উড়তেই থাকল। মরা গরুর সন্ধান পেলেই নিচে জমিনে নেমে আসে।
২০২০ সালের করোনা সামাল দিয়ে ভারত-মহাশাসক তো ২০২১ সালের মার্চে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মল্লবীরের মতো বলে উঠলেন, ‘আমরা করোনাকে হারিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছি। পৃথিবীকে পথ দেখাব আমরাই।’ করোনা মুচকি হাসল। করোনা-করোনা তখন একান্তে মিলেমিশে দিল্লি-মুম্বাইয়ে একসঙ্গে গোপন শলাপরামর্শ করে ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলে হঠাৎ ‘ভারত-ভেরিয়েন্ট’ হিসেবে আবির্ভূত হয়ে ভারত মুলুককে এমন নাকানি-চুবানি-ঠাসানি ভক্ষণ করাল যে, লাখ লাখ ট্র্যাজেডি গড়ে উঠল সে দেশে দুনিয়াকে চমকে দিয়ে। পৃথিবীর আরেক দিকে ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ভেরিয়েন্ট’। দিল্লিতে খোদ চিকিৎসকেরা পর্যন্ত অক্সিজেন না পেয়ে মারা গেলেন। এদিকে নামে নাকি গোস্বা। অতএব ‘ভারত ভেরিয়েন্টের’ নতুন নাম ‘ডেলটা ভেরিয়েন্ট’। দক্ষিণ আফ্রিকা ‘আলফা ভেরিয়েন্ট’।
হায় হায় হঠাৎ বিপদে পড়ে গেলাম আমরা বাংলাদেশ। টিকা না বানাতেই ডিজিটাল স্মার্টনেসে আমরা অগ্রিম অর্থ দিয়ে বিশ্বে বৃহত্তম টিকা উৎপাদক ভারতের সিরাম কোম্পানি থেকে টিকা প্রদান কার্যক্রম নিশ্চিত করে নিলাম। এবং পেলাম প্রথম চালানও। বিশ্বময় প্রবাসী বাঙালিরা যখন উন্নত দেশে অবস্থান করেও টিকার সিরিয়াল পায় না, বাংলাদেশে ডাবল ডোজ টিকাদানে সফলদের ফেসবুকিং ছবি যেন বাজিমাতের মতো। শত দুঃখেও আলোর রেখা। সরকারের পাঁড় বিরোধীরাও সেই টিকা শুরুতে গ্রহণে পাগলপারা হয়ে গেল। আর হাঁ! হঠাৎ বজ্রপাত! ভারত হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধ করে দিল সে দেশে উৎপাদিত সব টিকা। সে দেশের খোদ কংগ্রেস পর্যন্ত দাবি তুলল, ভারতে উৎপাদিত টিকা সবার আগে ভারতীয়রাই পাবে। হায়রে কী করা! সরকারের প্রাথমিক সাফল্যের রোশনাই কেমন অন্ধকার হয়ে গেল। এমনই জটিল সময়ে নানা প্রকারের দেশি ‘হহুন’ নতুন করে জেগে উঠল। গোপন ‘হহুন’। এবার টিকা কেনার জন্য নতুন করে এখানে-সেখানে-ওখানে। মন্ত্রণালয়ে, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বেনিয়া মহব্বতে সরকারের বিপন্নতার সুযোগ নেওয়ার ধুম পড়ে গেল। সে যাই হোক, চীন-রাশিয়ার নানা দেনদরবারে, মার্কিনি সংখ্যাতিরিক্ত উপহারে, আমরা ফের টিকাদানের কাজ শুরু করে আপাতত হাঁপ ছেড়েছি। কিন্তু ভবিষ্যৎ? কমপক্ষে তিরিশ কোটি টিকা আমাদের প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজন মেটাতে দেশি-বিদেশি-সরকারি-বেসরকারি ‘হহুনের’ যে মহোৎসব! মাল বানাও। মাল বানাও। গানের সুরে কান হবে ঝালাপালা।
কিন্তু পাঠক, জেনে কষ্ট পাবেন, আমাদেরও একটি নিজস্ব সরকারি টিকা উৎপাদন কারখানা ছিল এই ঢাকাতেই। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখান থেকে সংক্রামক ব্যাধির টিকা নিয়ে পৃথিবীতে বিতরণ করত। আমাদের সরকারি-বেসরকারি ‘হহুনেরা’ আমদানি-বাণিজ্যের স্বার্থে ওই টিকা কারখানাটি গলাটিপে হত্যা করে ফেলল।
তবুও আছে আর একটি চমকপ্রদ খবর। আমাদের দেশেই এখন আমরা প্রয়োজনীয় শতকরা আটানব্বই ভাগ ওষুধ নিজেরাই প্রস্তুত করি। পৃথিবীর বহু দেশে আমরা ওষুধ রপ্তানি করি, খোদ আমেরিকা সুদ্ধু।
সেই আমরা কি নিজেরা টিকা বানানোর উদ্যোগ নিতে পারব না? সরকারি-বেসরকারি বৈপ্লবিক উদ্যোগ একত্র করলে পদ্মা সেতুর মতো বিস্ময়কর সাফল্য আমরাও অর্জন করতে সক্ষম হব না? গোপালগঞ্জে আমাদের যে বিশাল হাব অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, সেটা প্রস্তুত করে শুধু করোনা কেন, সংক্রামক ব্যাধিসহ একালের সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারে ২০৪১ ভিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত করতে পারি না? পারি। আমরাই পারি। সরকারের ভেতর-বাহিরের ‘হহুন’ মতলবিদের থাবা চূর্ণ করে এগোতে হবে। ওরা নানা কূটচাল করছে–করবেই। ওসব পরোয়া না করে ‘জয় বাংলা’ বলে এগিয়ে চলি। নিজেদের চাহিদা মেটাব, আমরা পৃথিবীর নানা দেশের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হব।
এখন প্রশ্ন একটিই: ওই ‘হহুনেরা’ কি তা হতে দেবে? উত্তরও একটিই: পদ্মা সেতুতে অন্য ধরনের ‘হহুনেরা’ ব্যর্থ হয়েছে। শক্তপোক্ত ডিজিটাল নেতৃত্ব থাকলে এই টিকা অঙ্গনেও ‘হহুনেরা’ ব্যর্থ হতে বাধ্য! পৃথিবীতে নব নব জীবাণু ভেরিয়েন্ট বেরোবে। আর আমরা হাপিত্যেশ করে দুনিয়াজুড়ে কান্নাকাটির ভিক্ষার প্যাটরা হাতে ঘুরে বেড়াব, সে জন্য বাংলাদেশ আনিনি। পদ্মা সেতুর চ্যালেঞ্জে একাত্তর বিজয়ী হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় মর্যাদার সেতুসৌধ। আসুন এবার আমরা সরকারিভাবে ‘জাতীয় টিকা সার্বভৌমত্বের’ তথা একাত্তরের নব গৌরবসৌধ নির্মাণ করি। ‘হহুনেরা’ এটা করতে উন্মাদ হয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর বেলায় যখন জাঁদরেল মনুষ্য ‘হহুন’দের নাক-মুখ থ্যাবড়া করে দিতে পেরেছি, সব ধরনের টিকাসহ আনুষঙ্গিক ইনসুলিন ইত্যাকার বিশাল স্থাপনা নির্মাণেও আমরা ওদের বাধা ঝুরঝুর করে দিতে পারবই। ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিযাত্রায় আসবেই নব নব বিজয়।
পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্ব’র তত্ত্ব তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।
১ দিন আগেমাঝে মাঝে মনে হয়, করোনাকালই বোধহয় ভালো ছিল। শাটডাউনে সব বন্ধ, রাস্তায় যানবাহন নেই, মানুষের চলাচল সীমিত, যারাও বাইরে যাচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক পরা। রাস্তার ধারের গাছগুলোতে ধুলার পর্দা পড়ছে না, কলকারখানার চোঙা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে না, বায়ুদূষণও কমে এসেছে। এক অদেখা জীবাণুর আতঙ্কে আমাদের কী দুঃসময়ই না কেট
১ দিন আগেতিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রণদা প্রসাদ সাহা ছিলেন মেজ। মা কুমুদিনী দেবীর গভীর স্নেহে বড় হয়ে উঠলেও মায়ের সঙ্গটুকু দীর্ঘস্থায়ী হয়নি; সাত বছর বয়সেই মাকে হারান তিনি।
১ দিন আগেমঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান ও ফার্মগেটে হকার উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তার একটা অংশ যেভাবে হকাররা দখল করে রাখেন, তাতে চলাচলে অসুবিধা হয় রাজধানীবাসীর। তাই ব্যস্ত সড়ক হকারমুক্ত করতে পারলে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সাধুবাদ পাবে।
১ দিন আগে