আলী আজম, ঢাকা
সর্বনাশ হয়ে গেছে! আমাদের ফুলগুলো ঝরে গেছে অকালে, ঘাতকের বুলেটে। ঝাঁজরা হয়ে গেছে বুক, এফোঁড়–ওফোঁড়। এতগুলো প্রাণ যে ঝরে গেল তার ক্ষতি কিছুতেই পূরণ হবার নয়। জীবন অমূল্য, তাই ক্ষতিও অনিরূপণীয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় যে মা-বাবা সন্তানহারা হলেন, যে সন্তানেরা পিতৃহারা হলো—তাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, পরিবারের হাহাকার কোনো লেখা দিয়েই বোঝানো যাবে না! কিন্তু এই সংঘাত ও অস্থিরতা ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিতে যে অভিঘাত নিয়ে এসেছে তার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দুটো কথা বলা যেতেই পারে। এই লেখার উদ্দেশ্যও তাই।
পাঠক, অর্থনীতির একটু আধটু খোঁজখবর যারা রাখেন, তাঁরা জানেন দেশটা কীভাবে চলছে। মার্কিন ডলারের সংকটে পুরো অর্থনীতি এখন টালমাটাল। টান পড়েছে রিজার্ভে। অবস্থা বেগতিক দেখে আইএমএফের কাছে হাত পেতেছে সরকার। তাতে সাময়িক সময়ের জন্য রিজার্ভ হয়তো কিছুটা বাড়ানো গেছে, কিন্তু সংকট চলছে স্থানীয় মুদ্রা টাকারও। ব্যাংকগুলোর তারল্য চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে উদার হস্তে ধার দিয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। হু হু করে বাড়ছে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম।
সবকিছুর দাম বাড়ছে, শুধু বাড়ছে না মানুষের! এই যে এত সংকট, চারদিকে এত আকাল—এমন দুঃসময়ে কোটা সংস্কারের মতো একটা জনপ্রিয় দাবি পূরণে জল ঘোলা করা হলো কেন তা এখনো বোধগম্য নয়।
রাষ্ট্র চালাতে গেলে নানা সমস্যা–সংকটের মুখোমুখি হতে হয়। নানা দিক থেকে নানা দাবি আসে। সরকারের কাজ পক্ষগুলোকে যথাসম্ভব তুষ্ট করে সমস্যার যৌক্তিক সমাধান করা। কিন্তু সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের দাবি ও মনের ভাষা বুঝতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে ক্ষমতাসীনেরা। সেই সঙ্গে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের লাগামহীন কথাবার্তা সমস্যার সমাধান দূরে থাক, তা আরও জটিল করে তুলেছে। যে সমস্যা আলোচনার টেবিলে চা খেতে খেতে সমাধান করা যেত, সেখানে শক্তি প্রয়োগে নতুন আরও অনেক সমস্যার জন্ম হয়েছে।
কথায় আছে, একটি মিথ্যা ঢাকতে হলে আরও অনেকগুলো মিথ্যা বলতে হয়। কোটা আন্দোলন মোকাবিলার ক্ষেত্রেও তা–ই ঘটেছে। বেফাঁস কথা আন্দোলন তীব্র করেছে। সেই আন্দোলন দমনে শাসকগোষ্ঠী বেছে নেয় শক্তি প্রয়োগের পথ। এই কুপথ ডেকে এনেছে সংঘাত। পরিস্থিতি চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে জারি করতে হয় কারফিউ। সবচেয়ে ক্ষতিকর যে কাজটি করতে হয়েছে, তা হলো ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করার মধ্য দিয়ে দেশকে পুরো বিশ্বের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে গত ১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় মোবাইলে ইন্টারনেট সেবা। এরপর ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে টানা পাঁচ দিন ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছিল পুরো দেশ।
সবকিছুতে ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর পুরো দেশকে টানা ৫ দিন ইন্টারনেটবিহীন রাখাটা ছোটখাটো কোনো ঘটনা নয়। এ কথা বলাই বাহুল্য যে আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্য, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সবকিছুই এখন ইন্টারনেট–নির্ভর। নেট না থাকায় পুরোপুরি অকার্যকর হয় পড়ে ব্যাংকিং সিস্টেম। মানুষ টাকা তোলার জন্য একটির পর একটি এটিএম বুথে ঘুরেছে, কিন্তু টাকা পায়নি। অচল হয়ে পড়ে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসও (এমএফএস)।
অ্যাসাইকুড়া ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে প্রবেশ করতে না পারায় শুল্কায়ন করতে পারেনি কাস্টমস হাউসগুলো। এতে বন্দর থেকে পণ্য খালাসে দেখা দেয় জটিলতা। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ম্যানুয়ালি শুল্কায়ন করে পণ্য খালাসের চেষ্টা করেছে বটে, কিন্তু কাস্টমসের সঙ্গে অন্যান্য ব্যাংক, শিপিং অফিস এবং পরিবহন বন্ধ থাকায় বন্দর–কাস্টমস খোলা থাকলেও পণ্য খালাস করা যায়নি সেভাবে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ব্যবসা–বাণিজ্যে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাব্য একটি খতিয়ান দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। আজকের পত্রিকায় এ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে গত ২৪ জুলাই। এতে কার্গো বিমানে পণ্য পরিবহন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না হওয়ায় এ খাতে দিনে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা, আর যাত্রীর টিকিট খাতে দিনে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির তথ্য দেওয়া হয়। পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, তাদের প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এতে গত ছয় দিনে এ খাতের ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
করোনা মহামারির সময় থেকে জীবনযাপনে কিছু নতুন কৌশল রপ্ত করেছে মানুষ। এখন আপনার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে, এ জন্য রেস্তোরাঁয় যাওয়ার দরকার নেই। ঘরে বসে অ্যাপে অর্ডার করলে চলে আসে মজাদার খাবার। পছন্দের কিছু কিনতে চাইলে ক্লিক করলেই অর্ডার চলে যায় পণ্য সরবরাহকারীর কাছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই পণ্য নিয়ে দরজায় কড়া নাড়ে ডেলিভারিম্যান। ভোক্তার কেনাকাটা সহজ করার এই যে প্রক্রিয়া, তা ঘিরে গড়ে উঠেছে বিশাল এক বাজার, যাকে বলা হয় ই–কমার্স। ইন্টারনেট না থাকার এই কদিনে পুরো অচল হয়ে পড়ে খাতটির কার্যক্রম।
নেটবিহীন দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হয়েছেন দেশের ফ্রিল্যান্সারেরা, যারা সংখ্যায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। এই মানুষগুলো দেশে বসে বিদেশের কাজ করেন। নীরবে আয় করেন ডলারে। কথা হয়েছিল এমন একজন ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে। স্বাভাবিক সময়ে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ওই ভদ্রলোককে সেদিন অনেকটাই অসহায় লাগছিল। বলেছিলেন, পাঁচ দিন ধরে কোনো কাজে হাত দিতে পারছেন না। এমন চললে নিশ্চিত ক্লায়েন্ট হারাবেন।
এত কেবল হাতেগোনা কয়েকটি খাতের কথা। এ রকম হাজারো খাত রয়েছে। সব মিলিয়ে গত কয়দিনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, ভাঙচুর–আগুন, ইন্টারনেট না থাকার ক্ষতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।
শেষ কথা, ইন্টারনেট এখন মানুষের মৌলিক চাহিদার মতো একটি বিষয়। মানুষের সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যে পরিষেবার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমস্যা সমাধানের যৌক্তিক উপায় হতে পারে না। নাট্যকারেরা একটি কথা প্রায়ই বলেন, ‘শো মাস্ট গো অন’। কিছু পরিষেবাও এমন। দেশে যা কিছু ঘটে যাক না কেন রাষ্ট্র কোনোভাবেই জরুরি পরিষেবা বন্ধ করতে পারে না। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট এমনই এক পরিষেবা। আশা করি, ভবিষ্যতে যে কোনো সংকটে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
লেখক: যুগ্ম বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা।
সর্বনাশ হয়ে গেছে! আমাদের ফুলগুলো ঝরে গেছে অকালে, ঘাতকের বুলেটে। ঝাঁজরা হয়ে গেছে বুক, এফোঁড়–ওফোঁড়। এতগুলো প্রাণ যে ঝরে গেল তার ক্ষতি কিছুতেই পূরণ হবার নয়। জীবন অমূল্য, তাই ক্ষতিও অনিরূপণীয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় যে মা-বাবা সন্তানহারা হলেন, যে সন্তানেরা পিতৃহারা হলো—তাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, পরিবারের হাহাকার কোনো লেখা দিয়েই বোঝানো যাবে না! কিন্তু এই সংঘাত ও অস্থিরতা ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিতে যে অভিঘাত নিয়ে এসেছে তার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দুটো কথা বলা যেতেই পারে। এই লেখার উদ্দেশ্যও তাই।
পাঠক, অর্থনীতির একটু আধটু খোঁজখবর যারা রাখেন, তাঁরা জানেন দেশটা কীভাবে চলছে। মার্কিন ডলারের সংকটে পুরো অর্থনীতি এখন টালমাটাল। টান পড়েছে রিজার্ভে। অবস্থা বেগতিক দেখে আইএমএফের কাছে হাত পেতেছে সরকার। তাতে সাময়িক সময়ের জন্য রিজার্ভ হয়তো কিছুটা বাড়ানো গেছে, কিন্তু সংকট চলছে স্থানীয় মুদ্রা টাকারও। ব্যাংকগুলোর তারল্য চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে উদার হস্তে ধার দিয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। হু হু করে বাড়ছে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম।
সবকিছুর দাম বাড়ছে, শুধু বাড়ছে না মানুষের! এই যে এত সংকট, চারদিকে এত আকাল—এমন দুঃসময়ে কোটা সংস্কারের মতো একটা জনপ্রিয় দাবি পূরণে জল ঘোলা করা হলো কেন তা এখনো বোধগম্য নয়।
রাষ্ট্র চালাতে গেলে নানা সমস্যা–সংকটের মুখোমুখি হতে হয়। নানা দিক থেকে নানা দাবি আসে। সরকারের কাজ পক্ষগুলোকে যথাসম্ভব তুষ্ট করে সমস্যার যৌক্তিক সমাধান করা। কিন্তু সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের দাবি ও মনের ভাষা বুঝতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে ক্ষমতাসীনেরা। সেই সঙ্গে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের লাগামহীন কথাবার্তা সমস্যার সমাধান দূরে থাক, তা আরও জটিল করে তুলেছে। যে সমস্যা আলোচনার টেবিলে চা খেতে খেতে সমাধান করা যেত, সেখানে শক্তি প্রয়োগে নতুন আরও অনেক সমস্যার জন্ম হয়েছে।
কথায় আছে, একটি মিথ্যা ঢাকতে হলে আরও অনেকগুলো মিথ্যা বলতে হয়। কোটা আন্দোলন মোকাবিলার ক্ষেত্রেও তা–ই ঘটেছে। বেফাঁস কথা আন্দোলন তীব্র করেছে। সেই আন্দোলন দমনে শাসকগোষ্ঠী বেছে নেয় শক্তি প্রয়োগের পথ। এই কুপথ ডেকে এনেছে সংঘাত। পরিস্থিতি চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে জারি করতে হয় কারফিউ। সবচেয়ে ক্ষতিকর যে কাজটি করতে হয়েছে, তা হলো ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করার মধ্য দিয়ে দেশকে পুরো বিশ্বের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে গত ১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় মোবাইলে ইন্টারনেট সেবা। এরপর ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে টানা পাঁচ দিন ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছিল পুরো দেশ।
সবকিছুতে ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর পুরো দেশকে টানা ৫ দিন ইন্টারনেটবিহীন রাখাটা ছোটখাটো কোনো ঘটনা নয়। এ কথা বলাই বাহুল্য যে আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্য, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সবকিছুই এখন ইন্টারনেট–নির্ভর। নেট না থাকায় পুরোপুরি অকার্যকর হয় পড়ে ব্যাংকিং সিস্টেম। মানুষ টাকা তোলার জন্য একটির পর একটি এটিএম বুথে ঘুরেছে, কিন্তু টাকা পায়নি। অচল হয়ে পড়ে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসও (এমএফএস)।
অ্যাসাইকুড়া ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে প্রবেশ করতে না পারায় শুল্কায়ন করতে পারেনি কাস্টমস হাউসগুলো। এতে বন্দর থেকে পণ্য খালাসে দেখা দেয় জটিলতা। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ম্যানুয়ালি শুল্কায়ন করে পণ্য খালাসের চেষ্টা করেছে বটে, কিন্তু কাস্টমসের সঙ্গে অন্যান্য ব্যাংক, শিপিং অফিস এবং পরিবহন বন্ধ থাকায় বন্দর–কাস্টমস খোলা থাকলেও পণ্য খালাস করা যায়নি সেভাবে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ব্যবসা–বাণিজ্যে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাব্য একটি খতিয়ান দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। আজকের পত্রিকায় এ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে গত ২৪ জুলাই। এতে কার্গো বিমানে পণ্য পরিবহন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না হওয়ায় এ খাতে দিনে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা, আর যাত্রীর টিকিট খাতে দিনে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির তথ্য দেওয়া হয়। পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, তাদের প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এতে গত ছয় দিনে এ খাতের ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
করোনা মহামারির সময় থেকে জীবনযাপনে কিছু নতুন কৌশল রপ্ত করেছে মানুষ। এখন আপনার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে, এ জন্য রেস্তোরাঁয় যাওয়ার দরকার নেই। ঘরে বসে অ্যাপে অর্ডার করলে চলে আসে মজাদার খাবার। পছন্দের কিছু কিনতে চাইলে ক্লিক করলেই অর্ডার চলে যায় পণ্য সরবরাহকারীর কাছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই পণ্য নিয়ে দরজায় কড়া নাড়ে ডেলিভারিম্যান। ভোক্তার কেনাকাটা সহজ করার এই যে প্রক্রিয়া, তা ঘিরে গড়ে উঠেছে বিশাল এক বাজার, যাকে বলা হয় ই–কমার্স। ইন্টারনেট না থাকার এই কদিনে পুরো অচল হয়ে পড়ে খাতটির কার্যক্রম।
নেটবিহীন দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হয়েছেন দেশের ফ্রিল্যান্সারেরা, যারা সংখ্যায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। এই মানুষগুলো দেশে বসে বিদেশের কাজ করেন। নীরবে আয় করেন ডলারে। কথা হয়েছিল এমন একজন ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে। স্বাভাবিক সময়ে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ওই ভদ্রলোককে সেদিন অনেকটাই অসহায় লাগছিল। বলেছিলেন, পাঁচ দিন ধরে কোনো কাজে হাত দিতে পারছেন না। এমন চললে নিশ্চিত ক্লায়েন্ট হারাবেন।
এত কেবল হাতেগোনা কয়েকটি খাতের কথা। এ রকম হাজারো খাত রয়েছে। সব মিলিয়ে গত কয়দিনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, ভাঙচুর–আগুন, ইন্টারনেট না থাকার ক্ষতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।
শেষ কথা, ইন্টারনেট এখন মানুষের মৌলিক চাহিদার মতো একটি বিষয়। মানুষের সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যে পরিষেবার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমস্যা সমাধানের যৌক্তিক উপায় হতে পারে না। নাট্যকারেরা একটি কথা প্রায়ই বলেন, ‘শো মাস্ট গো অন’। কিছু পরিষেবাও এমন। দেশে যা কিছু ঘটে যাক না কেন রাষ্ট্র কোনোভাবেই জরুরি পরিষেবা বন্ধ করতে পারে না। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট এমনই এক পরিষেবা। আশা করি, ভবিষ্যতে যে কোনো সংকটে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
লেখক: যুগ্ম বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা।
পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্ব’র তত্ত্ব তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।
৮ ঘণ্টা আগেমাঝে মাঝে মনে হয়, করোনাকালই বোধহয় ভালো ছিল। শাটডাউনে সব বন্ধ, রাস্তায় যানবাহন নেই, মানুষের চলাচল সীমিত, যারাও বাইরে যাচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক পরা। রাস্তার ধারের গাছগুলোতে ধুলার পর্দা পড়ছে না, কলকারখানার চোঙা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে না, বায়ুদূষণও কমে এসেছে। এক অদেখা জীবাণুর আতঙ্কে আমাদের কী দুঃসময়ই না কেট
৮ ঘণ্টা আগেতিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রণদা প্রসাদ সাহা ছিলেন মেজ। মা কুমুদিনী দেবীর গভীর স্নেহে বড় হয়ে উঠলেও মায়ের সঙ্গটুকু দীর্ঘস্থায়ী হয়নি; সাত বছর বয়সেই মাকে হারান তিনি।
৯ ঘণ্টা আগেমঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান ও ফার্মগেটে হকার উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তার একটা অংশ যেভাবে হকাররা দখল করে রাখেন, তাতে চলাচলে অসুবিধা হয় রাজধানীবাসীর। তাই ব্যস্ত সড়ক হকারমুক্ত করতে পারলে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সাধুবাদ পাবে।
৯ ঘণ্টা আগে