ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ উদ্যাপিত হচ্ছে সাড়ম্বরে। আবহমান বাংলার সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের ধারক ও বাহক এই নববর্ষের উৎসব শুধু বারো মাসের তেরো পার্বণের অন্যতমটি নয়, এর সঙ্গে সমসাময়িক আর্থসামাজিক জীবনযাত্রার চালচিত্রের পরিচয় বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনটির উদ্যাপনে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
পয়লা বৈশাখের আগের দিন ‘চৈত্রসংক্রান্তি’তে যুগে যুগে স্থানে ও কালে আয়োজিত হয় অনেক অনুষ্ঠান ও সংস্কারবান্ধব রীতিনীতি পালনের পর্ব। পরের দিন পয়লা বৈশাখ যেন নির্ভেজাল নির্ভার নিরাপদ আনন্দে শুরু হতে পারে, সে কারণে সংবছরের যাবতীয় লেনদেন বোঝাপড়ার সালতামামি চলে চৈত্রসংক্রান্তির দিনে। আগের বছরের শেষের হিসাবকিতাব মেলানোর মধ্যে নতুন বছরের যাত্রার বেগ ও মাত্রা নির্ভর করে। শুচি শুভ্র অবয়বে, মনের সব ক্ষোভ-খেদ, বেদনা ও বিমর্ষভাব কাটিয়ে আনন্দ-উৎসবে নতুন বছরকে নতুন দিনে বরণ করাই উদ্দেশ্য।
হালখাতা এই আর্থসামাজিক জীবনায়নে নতুন প্রেরণাপ্রাপ্তি অনুষ্ঠানের একটি অন্যতম উপলক্ষ। নতুন বছরের নতুন খাতা খোলা হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেনাবেচার দায়দেনার লেনদেনের। হালখাতা শব্দের মধ্যে অর্থনৈতিক জীবনযাপনের একটা প্রাকরণিক পদ্ধতির নির্দেশনা আছে। নতুন দিনে নতুনভাবে সবকিছু শুরুর মধ্যে একটা পূত-পবিত্র ও প্রসারিত মন প্রসারণের, হৃদয় উজাড়করণের, মনোযোগের বিবেচনার ব্যাপার জড়িত। সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা বর্ষ প্রবর্তন করেছিলেন। পয়লা বৈশাখ সেই সনের প্রথম দিন হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। সে সময় থেকে চৈত্রসংক্রান্তি অধুনা ‘জুন মাসের তিরিশ তারিখে’র মতো। চৈত্র মাসে অনেক কাজ শেষ হওয়ার, শুরুর নয়। চৈত্র মাস স্বভাবে শুষ্ক, রুক্ষ; রক্তচক্ষুর মতো তার চাহনি। সারা বছরের সব ভালো-মন্দের মেজাজ চৈত্র মাসের মগজে ঠাঁই নেয়। বিয়ের কাজের মতো শুভকাজ কেউ চৈত্র মাসে ফেলতে চায় না। কিন্তু বৈশাখ? সে যেন নতুন কিছু গড়ার, নতুন কিছু শুরুর জন্য মাহেন্দ্রক্ষণ হাজির করে। রাস্তায় আলপনা এঁকে এই নতুন সময়কে স্বাগত জানানো হয়। নতুন পোশাক পরে সবাই নতুন খুশির মেজাজে দিন বা বছর শুরু করতে চায়। রুক্ষ চৈত্র থেকে বিমল আনন্দের বৈশাখে বিবর্তন ঘটে মানুষের, প্রকারান্তরে তার মনের বনে লাগে শুভ্র সূচির ছোঁয়া, জাগে প্রসারিত হৃদয়ের দোলা। মাত্র এক দিন আগে সে ছিল উদ্বিগ্ন, উত্তপ্ত, নিতান্ত ব্যতিব্যস্ত ও মনমরা।
পত্রিকান্তরে প্রকাশ, হালখাতা উৎসব ক্রমে তার কার্যকারিতার তাৎপর্য হারাচ্ছে। বাড়ছে না হালখাতা (হিসাব রাখার নতুন খাতা) ক্রয়-বিক্রয়ের পরিমাণ। নববর্ষ উদ্যাপনে অন্য অনেক ক্ষেত্রে (অধিকাংশই অনুৎপাদনশীল খাতে) কর্মকাণ্ড বেড়েছে, যা দেখে সংবাদমাধ্যমের কাছে মনে হয়েছে অর্থনীতিতে গতিশীলতা এসেছে। মনে হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে মানুষের মধ্যে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আবহমান উৎসবে মানুষের অংশগ্রহণের মাত্রা বাজারে বৈকি, সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সে চাঞ্চল্যে নিতান্ত নানাবিধ ব্যয়ের উৎসবে মাতামাতি বেড়েছে। কিন্তু পণ্য ও সেবা উৎপাদনের ক্ষেত্রে অগ্রগতি চাহিদা অনুযায়ী না বাড়ায় সরবরাহে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বড় বৈসাদৃশ্য ও বেমানান বাড়াবাড়িতে সমাজ ও অর্থনীতির দৈন্য ও দুর্দশা ফুটে উঠেছে। ইলিশের সংগ্রহে ভাটা সত্ত্বেও একদিকে ইলিশ রপ্তানির প্রয়াস যেমন চলেছে, অন্যদিকে বর্ধিত চাহিদা মেটানোর মতো উৎপাদন বা ধরার উদ্যোগে ভাটা পড়ায় ইলিশের দাম এই পয়লা বৈশাখের দুই-চার দিন আগে থেকে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে মুখরোচক সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছে। যত দাম হাঁকা হোক না কেন, প্রতিযোগিতা করেই যেন কেউ কেউ ইলিশ কিনেছেন, ভাবখানা এই—ইলিশ না হলে যেন চলেই না। চড়া দামে ইলিশ কেনার মানুষ আছে বলেই ইলিশের চড়া দাম হাঁকার অবকাশ তৈরি হয়েছে। সরবরাহ ও চাহিদার এই মহামহিম দূরত্বের দেশে চড়া আকাশচুম্বী দাম হাঁকা হয়েছে। এ অবস্থায় সমাজে আর্থিক বৈষম্যের বিবর আরও বেদনাদায়কভাবে উন্মোচিত হয়েছে। বৈশাখের যে আবহমান সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ-ভেদাভেদ ভুলে পুরোনো দিনের বেদনা ও বৈষম্যের জঞ্জাল সরিয়ে নতুন দিনের আলো অবগাহনের মতো গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা ও পরিতৃপ্তিকে উপভোগ করার চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়েছে কতিপয় পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির এই অতি অস্বাভাবিক আচরণে।
প্রভূত পরিসংখ্যান, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ও পটভূমিতে আজ এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে দূরত্ব বাড়ছে অনেক ক্ষেত্রে—সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের ও নাগরিকদের মধ্যে, করদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে, শিল্পমালিক ও শ্রমিকের মধ্যে, নীতিনির্ধারকের সঙ্গে পোষণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, উৎপাদনকারীর সঙ্গে খুচরা ক্রেতার, ব্যাংকের আমানতকারীদের সঙ্গে ব্যাংক ব্যবস্থাপনার, সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যাশার সঙ্গে আর্থিক খরচে কর্মনৈপুণ্যের, রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে ব্যয় ব্যবস্থাপনার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সঙ্গে সাধারণ মানুষের। সমাজে অর্থ ক্ষেত্রে অপব্যয়ের জৌলুশের চাকচিক্যের ডামাডোলকে মনে হতেই পারে এটি পুঁজিবাদী মানসিকতা প্রস্তুত এবং বৈষম্যবিলাসী উদাসীন ঊর্ধ্বতনদের ইচ্ছা ও অভিলাষ উৎসারিত। এই অগ্রগতি গুণগত মান উন্নয়ন ব্যতিরেকে শিক্ষার পাসের হার বৃদ্ধির মতো সাময়িক তৃপ্তি লাভের অগ্রগতি মনে হতে পারে—ভূত-ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টিপাত করে নয়, সাময়িকভাবে, নিজেদের মতো করে অর্থনীতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সীমিতভাবে সীমাবদ্ধকরণের প্রয়াস উৎসারিত। অর্থনৈতিক বৈষম্য বিভাজন থেকে মুক্তির সংগ্রামে জয়ী একটি স্বাধীন-সার্বভৌম অর্থনীতির প্রাণবায়ু যে জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও ন্যায়নীতি-নির্ভরতা, নৈতিক মনোবল ও মূল্যবোধ—তার সার্বিক অবস্থান ও উপস্থিতি আপাত প্রাণচাঞ্চল্যে ফিরে আসা অবয়বে উৎসাহিত বোধ করা চলে না। সেগুলো ক্রমে নির্বাসনে পাঠিয়ে সাময়িক এই প্রগলভতায় সমাজ প্রকৃতপক্ষে এগোচ্ছে না পেছাচ্ছে, তার একটা সালতামামি প্রয়োজন।
লেখক: সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান
বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ উদ্যাপিত হচ্ছে সাড়ম্বরে। আবহমান বাংলার সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের ধারক ও বাহক এই নববর্ষের উৎসব শুধু বারো মাসের তেরো পার্বণের অন্যতমটি নয়, এর সঙ্গে সমসাময়িক আর্থসামাজিক জীবনযাত্রার চালচিত্রের পরিচয় বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনটির উদ্যাপনে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
পয়লা বৈশাখের আগের দিন ‘চৈত্রসংক্রান্তি’তে যুগে যুগে স্থানে ও কালে আয়োজিত হয় অনেক অনুষ্ঠান ও সংস্কারবান্ধব রীতিনীতি পালনের পর্ব। পরের দিন পয়লা বৈশাখ যেন নির্ভেজাল নির্ভার নিরাপদ আনন্দে শুরু হতে পারে, সে কারণে সংবছরের যাবতীয় লেনদেন বোঝাপড়ার সালতামামি চলে চৈত্রসংক্রান্তির দিনে। আগের বছরের শেষের হিসাবকিতাব মেলানোর মধ্যে নতুন বছরের যাত্রার বেগ ও মাত্রা নির্ভর করে। শুচি শুভ্র অবয়বে, মনের সব ক্ষোভ-খেদ, বেদনা ও বিমর্ষভাব কাটিয়ে আনন্দ-উৎসবে নতুন বছরকে নতুন দিনে বরণ করাই উদ্দেশ্য।
হালখাতা এই আর্থসামাজিক জীবনায়নে নতুন প্রেরণাপ্রাপ্তি অনুষ্ঠানের একটি অন্যতম উপলক্ষ। নতুন বছরের নতুন খাতা খোলা হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেনাবেচার দায়দেনার লেনদেনের। হালখাতা শব্দের মধ্যে অর্থনৈতিক জীবনযাপনের একটা প্রাকরণিক পদ্ধতির নির্দেশনা আছে। নতুন দিনে নতুনভাবে সবকিছু শুরুর মধ্যে একটা পূত-পবিত্র ও প্রসারিত মন প্রসারণের, হৃদয় উজাড়করণের, মনোযোগের বিবেচনার ব্যাপার জড়িত। সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা বর্ষ প্রবর্তন করেছিলেন। পয়লা বৈশাখ সেই সনের প্রথম দিন হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। সে সময় থেকে চৈত্রসংক্রান্তি অধুনা ‘জুন মাসের তিরিশ তারিখে’র মতো। চৈত্র মাসে অনেক কাজ শেষ হওয়ার, শুরুর নয়। চৈত্র মাস স্বভাবে শুষ্ক, রুক্ষ; রক্তচক্ষুর মতো তার চাহনি। সারা বছরের সব ভালো-মন্দের মেজাজ চৈত্র মাসের মগজে ঠাঁই নেয়। বিয়ের কাজের মতো শুভকাজ কেউ চৈত্র মাসে ফেলতে চায় না। কিন্তু বৈশাখ? সে যেন নতুন কিছু গড়ার, নতুন কিছু শুরুর জন্য মাহেন্দ্রক্ষণ হাজির করে। রাস্তায় আলপনা এঁকে এই নতুন সময়কে স্বাগত জানানো হয়। নতুন পোশাক পরে সবাই নতুন খুশির মেজাজে দিন বা বছর শুরু করতে চায়। রুক্ষ চৈত্র থেকে বিমল আনন্দের বৈশাখে বিবর্তন ঘটে মানুষের, প্রকারান্তরে তার মনের বনে লাগে শুভ্র সূচির ছোঁয়া, জাগে প্রসারিত হৃদয়ের দোলা। মাত্র এক দিন আগে সে ছিল উদ্বিগ্ন, উত্তপ্ত, নিতান্ত ব্যতিব্যস্ত ও মনমরা।
পত্রিকান্তরে প্রকাশ, হালখাতা উৎসব ক্রমে তার কার্যকারিতার তাৎপর্য হারাচ্ছে। বাড়ছে না হালখাতা (হিসাব রাখার নতুন খাতা) ক্রয়-বিক্রয়ের পরিমাণ। নববর্ষ উদ্যাপনে অন্য অনেক ক্ষেত্রে (অধিকাংশই অনুৎপাদনশীল খাতে) কর্মকাণ্ড বেড়েছে, যা দেখে সংবাদমাধ্যমের কাছে মনে হয়েছে অর্থনীতিতে গতিশীলতা এসেছে। মনে হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে মানুষের মধ্যে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আবহমান উৎসবে মানুষের অংশগ্রহণের মাত্রা বাজারে বৈকি, সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সে চাঞ্চল্যে নিতান্ত নানাবিধ ব্যয়ের উৎসবে মাতামাতি বেড়েছে। কিন্তু পণ্য ও সেবা উৎপাদনের ক্ষেত্রে অগ্রগতি চাহিদা অনুযায়ী না বাড়ায় সরবরাহে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বড় বৈসাদৃশ্য ও বেমানান বাড়াবাড়িতে সমাজ ও অর্থনীতির দৈন্য ও দুর্দশা ফুটে উঠেছে। ইলিশের সংগ্রহে ভাটা সত্ত্বেও একদিকে ইলিশ রপ্তানির প্রয়াস যেমন চলেছে, অন্যদিকে বর্ধিত চাহিদা মেটানোর মতো উৎপাদন বা ধরার উদ্যোগে ভাটা পড়ায় ইলিশের দাম এই পয়লা বৈশাখের দুই-চার দিন আগে থেকে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে মুখরোচক সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছে। যত দাম হাঁকা হোক না কেন, প্রতিযোগিতা করেই যেন কেউ কেউ ইলিশ কিনেছেন, ভাবখানা এই—ইলিশ না হলে যেন চলেই না। চড়া দামে ইলিশ কেনার মানুষ আছে বলেই ইলিশের চড়া দাম হাঁকার অবকাশ তৈরি হয়েছে। সরবরাহ ও চাহিদার এই মহামহিম দূরত্বের দেশে চড়া আকাশচুম্বী দাম হাঁকা হয়েছে। এ অবস্থায় সমাজে আর্থিক বৈষম্যের বিবর আরও বেদনাদায়কভাবে উন্মোচিত হয়েছে। বৈশাখের যে আবহমান সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ-ভেদাভেদ ভুলে পুরোনো দিনের বেদনা ও বৈষম্যের জঞ্জাল সরিয়ে নতুন দিনের আলো অবগাহনের মতো গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা ও পরিতৃপ্তিকে উপভোগ করার চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়েছে কতিপয় পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির এই অতি অস্বাভাবিক আচরণে।
প্রভূত পরিসংখ্যান, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ও পটভূমিতে আজ এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে দূরত্ব বাড়ছে অনেক ক্ষেত্রে—সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের ও নাগরিকদের মধ্যে, করদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে, শিল্পমালিক ও শ্রমিকের মধ্যে, নীতিনির্ধারকের সঙ্গে পোষণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, উৎপাদনকারীর সঙ্গে খুচরা ক্রেতার, ব্যাংকের আমানতকারীদের সঙ্গে ব্যাংক ব্যবস্থাপনার, সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যাশার সঙ্গে আর্থিক খরচে কর্মনৈপুণ্যের, রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে ব্যয় ব্যবস্থাপনার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সঙ্গে সাধারণ মানুষের। সমাজে অর্থ ক্ষেত্রে অপব্যয়ের জৌলুশের চাকচিক্যের ডামাডোলকে মনে হতেই পারে এটি পুঁজিবাদী মানসিকতা প্রস্তুত এবং বৈষম্যবিলাসী উদাসীন ঊর্ধ্বতনদের ইচ্ছা ও অভিলাষ উৎসারিত। এই অগ্রগতি গুণগত মান উন্নয়ন ব্যতিরেকে শিক্ষার পাসের হার বৃদ্ধির মতো সাময়িক তৃপ্তি লাভের অগ্রগতি মনে হতে পারে—ভূত-ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টিপাত করে নয়, সাময়িকভাবে, নিজেদের মতো করে অর্থনীতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সীমিতভাবে সীমাবদ্ধকরণের প্রয়াস উৎসারিত। অর্থনৈতিক বৈষম্য বিভাজন থেকে মুক্তির সংগ্রামে জয়ী একটি স্বাধীন-সার্বভৌম অর্থনীতির প্রাণবায়ু যে জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও ন্যায়নীতি-নির্ভরতা, নৈতিক মনোবল ও মূল্যবোধ—তার সার্বিক অবস্থান ও উপস্থিতি আপাত প্রাণচাঞ্চল্যে ফিরে আসা অবয়বে উৎসাহিত বোধ করা চলে না। সেগুলো ক্রমে নির্বাসনে পাঠিয়ে সাময়িক এই প্রগলভতায় সমাজ প্রকৃতপক্ষে এগোচ্ছে না পেছাচ্ছে, তার একটা সালতামামি প্রয়োজন।
লেখক: সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান
পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্ব’র তত্ত্ব তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।
১৪ ঘণ্টা আগেমাঝে মাঝে মনে হয়, করোনাকালই বোধহয় ভালো ছিল। শাটডাউনে সব বন্ধ, রাস্তায় যানবাহন নেই, মানুষের চলাচল সীমিত, যারাও বাইরে যাচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক পরা। রাস্তার ধারের গাছগুলোতে ধুলার পর্দা পড়ছে না, কলকারখানার চোঙা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে না, বায়ুদূষণও কমে এসেছে। এক অদেখা জীবাণুর আতঙ্কে আমাদের কী দুঃসময়ই না কেট
১৪ ঘণ্টা আগেতিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রণদা প্রসাদ সাহা ছিলেন মেজ। মা কুমুদিনী দেবীর গভীর স্নেহে বড় হয়ে উঠলেও মায়ের সঙ্গটুকু দীর্ঘস্থায়ী হয়নি; সাত বছর বয়সেই মাকে হারান তিনি।
১৪ ঘণ্টা আগেমঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান ও ফার্মগেটে হকার উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তার একটা অংশ যেভাবে হকাররা দখল করে রাখেন, তাতে চলাচলে অসুবিধা হয় রাজধানীবাসীর। তাই ব্যস্ত সড়ক হকারমুক্ত করতে পারলে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সাধুবাদ পাবে।
১৪ ঘণ্টা আগে