মর্তুজা হাসান সৈকত
ঢাকা: করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হচ্ছে টিকা। এই টিকা নিয়েই বিশ্ব রাজনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা, চলছে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। ভাইরাসের সংক্রমণের শুরুতে মানবিক পৃথিবী কিংবা জনস্বাস্থ্যের গুরুত্বের যে আশাবাদ সামনে এসেছিল, দিন দিন তা ফিকে হয়ে আসছে। এখন সামনে এসেছে টিকা রাজনীতি। এই টিকা রাজনীতিতে মাত করতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের জন্য টিকার পেটেন্টে সাময়িক ছাড় দিতে সম্মত হয়েছে। তবে পেটেন্ট ও মেধাস্বত্বে ছাড় দেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠার পর থেকে এর বিরোধিতাও জোরালো হয়ে উঠেছে। ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
করোনা একদিকে যেমন মানুষের প্রাণ হরণ করছে, অন্যদিকে এ নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির খেলাও জমে উঠছে দিনে দিনে। এটা প্রমাণিত, টিকাই করোনা প্রতিরোধের প্রধান উপায়। ফলে বর্তমানে ভূ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আছে টিকার আবিষ্কার ও বাজারজাতকরণ নিয়ে প্রতিযোগী দেশগুলোর কৌশল। মোটা দাগে পাঁচটি দেশ করোনার টিকার রাজনীতিতে খুবই সক্রিয়—চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও ভারত। এই দেশগুলো করোনার টিকাকে তাদের কূটনীতির হাতিয়ারে পরিণত করেছে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন হয়ে গেছে যে কে টিকা পাবে কে পাবে না, তা নির্ভর করছে এই দেশগুলোর সঙ্গে কার কেমন সম্পর্ক তার ওপরে।
আমরা দেখেছি, করোনাভাইরাসের টিকা বাজারে আসার আগে থেকেই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ভারতকেন্দ্রিক প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। দেশগুলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা সরবরাহের জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপরই নির্ভর করেছিল। এর কারণ হচ্ছে, এসব দেশে সুলভে সরবরাহের শর্তে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স নিয়েছিল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। এর বাইরেও এই দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গঠিত কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিতেও টিকা সরবরাহের কথা ছিল ভারতের। বাংলাদেশ তখন দারুণ দক্ষতা দেখিয়ে আগাম অর্থ দিয়ে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা কেনার চুক্তি করে বেশকিছু টিকাও নিয়ে আসে। অন্যদিকে ভারতও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার টিকার বাজারের একচেটিয়াকরণ করে। তারা চীনের টিকাগুলোকে আঞ্চলিক বাজার থেকে সরিয়ে দিতে কোনো কিছুই বাদ রাখেনি। এক পাকিস্তান বাদে সার্কভুক্ত প্রতিটি দেশকেই তারা বিপুল পরিমাণ টিকা উপহার দেয়। এমনকি চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, এমন কিছু দেশকেও তারা উপহার হিসেবে বিপুল পরিমাণ টিকা পাঠায়। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তারা সবচেয়ে বেশি ৩৩ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে।
তবে সম্প্রতি দেশটিতে ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, সেরাম ইনস্টিটিউট ভারতের স্থানীয় চাহিদা পূরণেই হিমশিম খাচ্ছে। ফলে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এমনকি টিকা ক্রয় বাবদ আগাম অর্থ পরিশোধ করেছে এমন দেশগুলোতেও সরবরাহ বন্ধ রেখেছে সেরাম। এর ফলে ভারত যে এই অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে ‘টিকা মৈত্রী’র সূচনা করেছিল, সেই পদক্ষেপে কার্যত বাধাগ্রস্ত হয়।
বিশ্বে ভারত ছাড়া হাতে গোনা কয়েকটি দেশ টিকা উৎপাদন করছে। তা ছাড়া সমগ্র বিশ্বের উৎপাদিত টিকার ৬০ শতাংশই দেশটি উৎপাদন করে। এর ফলে বাকি দেশগুলোর টিকাদান কর্মসূচি নির্ভর করছে এই দেশগুলোর ওপর। এ কারণে সৃষ্ট ভারসাম্যহীন নির্ভরশীলতার কারণে ভ্যাকসিনের চাহিদা ও সরবরাহে দেখা দিয়েছে অসামঞ্জস্যতা। সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাশিয়া এবং চীন নিজেদের অনুকূলে থাকা পররাষ্ট্র নীতির বিনিময়ে বিভিন্ন দেশে টিকা সরবরাহ ও উৎপাদনের অনুমতি প্রদান করেছে। করোনা মহামারি এখন বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই সুবিধাকেই সক্রিয়ভাবে কাজে লাগিয়েছে চীন ও রাশিয়া। কেবল পররাষ্ট্র নীতিমালা নিয়ে আপসের মাধ্যমে নয়, বরং টিকার বদলে তারা নিজেদের অনুকূলে ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনেও মনোযোগ দিয়েছে। ভারতের কথা তো আগেই বলেছি। চীন ও রাশিয়াও একইভাবে টিকাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় স্পুতনিক ভি পাঠানোর শর্তে সিরিয়ায় আটক রাশিয়ার নাগরিকের মুক্তির দাবি তুলেছিল রাশিয়া। একইভাবে মধ্য এবং পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের ভূ-রাজনীতির অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যে রাশিয়া ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে। ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা গেছে, টিকা কূটনীতির মাধ্যমে তাইওয়ানের বিষয়ে প্যারাগুয়ের অবস্থান পুনঃনির্ধারণের ক্ষেত্রে সফল হয়েছে চীন। এ ছাড়া টিকার চালানের পূর্বশর্ত হিসেবে ব্রাজিলের ওপর চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশটির ফাইভ-জির বাজার হুয়াওয়ের জন্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে চীন সাফল্য পেয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৭০টি দেশে টিকা পাঠাতে সম্মত হয়েছে রুশ সরকার। চীনও দ্রুত সময়ের মধ্যে ১০০টি দেশে টিকা পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। যদিও শুরুর দিকে দেশ দুটির টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ ছিল খুব কম। পশ্চিমা গণমাধ্যমও দেশ দুটির টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সময়ে। তবে ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেশ দুটি টিকা রাজনীতিতে তরতর করে এগিয়ে গেছে। দুটি দেশই দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে টিকা সরবরাহ ও উৎপাদনের অনুমতি প্রদান করেছে। সম্প্রতি চীনের উদ্যোগে ‘ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড ফর সাউথ এশিয়া’ নামক একটি প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশও যুক্ত হয়েছে। তবে বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলো দ্রুততম সময়ে অন্য কোনো উৎস থেকে টিকা পাবে কি না, কিংবা ভারত সরকারকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি করাতে পারবে কি না, তার সবকিছুই নির্ভর করছে এই ভূ-রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ এবং বিবদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে
আলোচনায় কূটনীতিকদের দক্ষতা ও বিচক্ষণতার ওপর।
ভারতে ডাবল মিউটেটেড ও ট্রিপল মিউটেটেড ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে মৃত্যুর ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। সম্প্রতি বাংলাদেশেও ভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট যদি ভারতের মতো বাংলাদেশেও ছড়িয়ে যায়, তাহলে সংক্রমণের মৃত্যুঝুঁকি মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তাই ভারত থেকে অদূর ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত টিকার চালান নাও পাওয়া যেতে পারে, আবার সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা না পাওয়া মানে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকেও টিকা না পাওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হওয়া। এসব ইক্যুয়েশনকে সামনে রেখে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রাশিয়া ও চীনের করোনা টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এটাই ছিল সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। সরকার আশা করছে, মে মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ চীন ও রাশিয়ার টিকা পাবে।
কেবল বাংলাদেশই নয়, ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানির মতো নাক উঁচু পাশ্চাত্যের অনেক দেশই এখন চীন ও রাশিয়ার টিকা নেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। পশ্চিমা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রথম দিকে চীন ও রাশিয়ার উদ্ভাবিত করোনার টিকাকে পাত্তা না দিলেও বর্তমানে পরিস্থিতি বদলে গেছে। কার্যত কোনো উপায় না পেয়েই তারা পশ্চিমা দুনিয়ার বাইরের টিকা নেওয়ার গরিমা থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। তা ছাড়া সম্প্রতি চীনের সিনোফার্মের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এসবের পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উৎপাদিত ৪০ লাখ ডোজ টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে চীন বা রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র সুনজরে নাও দেখতে পারে। ভূ-রাজনীতিতে এই দেশগুলোর অবস্থান পরস্পরবিরোধী। অন্যদিকে ভারত অসন্তুষ্ট হতে পারে এমন ধারণায় এর আগে চীনা টিকার পরীক্ষা ও সরবরাহের প্রস্তাব নাকচ করেছিল সরকার। তবে বর্তমানে একই সঙ্গে সব পক্ষকে ম্যানেজ করার নীতিতে এগোচ্ছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। কারণ, অতীত অভিজ্ঞতা সামনে রেখে ভবিষ্যতেও কেউ যদি টিকা দিতে না পারে, তখনকার পরিস্থিতি কী হতে পারে তা সামনে রেখেই বর্তমান কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করা হচ্ছে।
তা ছাড়া তথ্য-উপাত্ত বলছে, এই দুই রাষ্ট্রের উদ্ভাবিত করোনার টিকাও বেশ কার্যকর। রাশিয়ার টিকা স্পুতনিক ভি-এর মানবদেহে পরীক্ষার অন্তর্বর্তী ফলাফল প্রকাশ করেছে শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট’। এতে দেখা গেছে, টিকাটি ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর। অন্যদিকে টিকাটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দাবি স্পুতনিক ভি-এর কার্যকারিতা আরও বেশি। প্রায় ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে সম্প্রতি টিকাটির আরেকটি সংস্করণ এনেছে রাশিয়া। এক ডোজের এই টিকার নাম দেওয়া হয়েছে স্পুতনিক লাইট। দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা প্রতিরোধে এক ডোজের এই টিকা ৭৯ দশমিক ৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশ এই টিকাটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমতি এখনো দেয়নি, যেটিকেও একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
পুরোনো ভূ-রাজনৈতিক সম্পদের দখলদারি থেকে যে উপনিবেশবাদ রাজনীতির সূচনা হয়েছিল, করোনার এই সময়ে তা রূপ নিয়েছে বৈশ্বিক টিকা রাজনীতিতে। এই ভূ-রাজনৈতির ইক্যুয়েশনে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো ভবিষ্যতে কী কী বাধার সম্মুখীন হতে পারে, তা এখনই হিসেবে নিতে হবে। কারণ, বিশ্ব রাজনীতির এই ইক্যুয়েশন আগামী দিনগুলোতেও টিকা প্রাপ্তি ও সরবরাহে প্রভাব ফেলবে বলে এখনই বোঝা যাচ্ছে। তা ছাড়া যদি প্রতিবছর টিকার বুস্টার হিসেবে একাধিক ডোজের প্রয়োজন পড়ে, তাহলে বিশ্বের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাই বেশি। সেক্ষেত্রে আমাদের জন্য আশার আলো হতে পারে বঙ্গভ্যাক্স। টিকাটির মানবদেহে ট্রায়ালের বিষয়ে দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসা উচিত। হবে হবে করেও অনেক দিন ধরেই এটি হচ্ছে না। টিকাটি ৯৫ শতাংশ কার্যকর এবং গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাজনীতির কারণে এই টিকাটি নিয়ে যেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় ভবিষ্যতে, যা বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। নতুন নতুন টিকার আমদানি আর দেশে উৎপাদিত টিকার হাত ধরে করোনাকেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতি সফলভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে করোনা জয়ের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ—এটাই প্রত্যাশা।
ঢাকা: করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হচ্ছে টিকা। এই টিকা নিয়েই বিশ্ব রাজনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা, চলছে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। ভাইরাসের সংক্রমণের শুরুতে মানবিক পৃথিবী কিংবা জনস্বাস্থ্যের গুরুত্বের যে আশাবাদ সামনে এসেছিল, দিন দিন তা ফিকে হয়ে আসছে। এখন সামনে এসেছে টিকা রাজনীতি। এই টিকা রাজনীতিতে মাত করতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের জন্য টিকার পেটেন্টে সাময়িক ছাড় দিতে সম্মত হয়েছে। তবে পেটেন্ট ও মেধাস্বত্বে ছাড় দেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠার পর থেকে এর বিরোধিতাও জোরালো হয়ে উঠেছে। ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
করোনা একদিকে যেমন মানুষের প্রাণ হরণ করছে, অন্যদিকে এ নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির খেলাও জমে উঠছে দিনে দিনে। এটা প্রমাণিত, টিকাই করোনা প্রতিরোধের প্রধান উপায়। ফলে বর্তমানে ভূ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আছে টিকার আবিষ্কার ও বাজারজাতকরণ নিয়ে প্রতিযোগী দেশগুলোর কৌশল। মোটা দাগে পাঁচটি দেশ করোনার টিকার রাজনীতিতে খুবই সক্রিয়—চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও ভারত। এই দেশগুলো করোনার টিকাকে তাদের কূটনীতির হাতিয়ারে পরিণত করেছে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন হয়ে গেছে যে কে টিকা পাবে কে পাবে না, তা নির্ভর করছে এই দেশগুলোর সঙ্গে কার কেমন সম্পর্ক তার ওপরে।
আমরা দেখেছি, করোনাভাইরাসের টিকা বাজারে আসার আগে থেকেই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ভারতকেন্দ্রিক প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। দেশগুলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা সরবরাহের জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপরই নির্ভর করেছিল। এর কারণ হচ্ছে, এসব দেশে সুলভে সরবরাহের শর্তে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স নিয়েছিল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। এর বাইরেও এই দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গঠিত কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিতেও টিকা সরবরাহের কথা ছিল ভারতের। বাংলাদেশ তখন দারুণ দক্ষতা দেখিয়ে আগাম অর্থ দিয়ে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা কেনার চুক্তি করে বেশকিছু টিকাও নিয়ে আসে। অন্যদিকে ভারতও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার টিকার বাজারের একচেটিয়াকরণ করে। তারা চীনের টিকাগুলোকে আঞ্চলিক বাজার থেকে সরিয়ে দিতে কোনো কিছুই বাদ রাখেনি। এক পাকিস্তান বাদে সার্কভুক্ত প্রতিটি দেশকেই তারা বিপুল পরিমাণ টিকা উপহার দেয়। এমনকি চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, এমন কিছু দেশকেও তারা উপহার হিসেবে বিপুল পরিমাণ টিকা পাঠায়। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তারা সবচেয়ে বেশি ৩৩ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে।
তবে সম্প্রতি দেশটিতে ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, সেরাম ইনস্টিটিউট ভারতের স্থানীয় চাহিদা পূরণেই হিমশিম খাচ্ছে। ফলে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এমনকি টিকা ক্রয় বাবদ আগাম অর্থ পরিশোধ করেছে এমন দেশগুলোতেও সরবরাহ বন্ধ রেখেছে সেরাম। এর ফলে ভারত যে এই অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে ‘টিকা মৈত্রী’র সূচনা করেছিল, সেই পদক্ষেপে কার্যত বাধাগ্রস্ত হয়।
বিশ্বে ভারত ছাড়া হাতে গোনা কয়েকটি দেশ টিকা উৎপাদন করছে। তা ছাড়া সমগ্র বিশ্বের উৎপাদিত টিকার ৬০ শতাংশই দেশটি উৎপাদন করে। এর ফলে বাকি দেশগুলোর টিকাদান কর্মসূচি নির্ভর করছে এই দেশগুলোর ওপর। এ কারণে সৃষ্ট ভারসাম্যহীন নির্ভরশীলতার কারণে ভ্যাকসিনের চাহিদা ও সরবরাহে দেখা দিয়েছে অসামঞ্জস্যতা। সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাশিয়া এবং চীন নিজেদের অনুকূলে থাকা পররাষ্ট্র নীতির বিনিময়ে বিভিন্ন দেশে টিকা সরবরাহ ও উৎপাদনের অনুমতি প্রদান করেছে। করোনা মহামারি এখন বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই সুবিধাকেই সক্রিয়ভাবে কাজে লাগিয়েছে চীন ও রাশিয়া। কেবল পররাষ্ট্র নীতিমালা নিয়ে আপসের মাধ্যমে নয়, বরং টিকার বদলে তারা নিজেদের অনুকূলে ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনেও মনোযোগ দিয়েছে। ভারতের কথা তো আগেই বলেছি। চীন ও রাশিয়াও একইভাবে টিকাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় স্পুতনিক ভি পাঠানোর শর্তে সিরিয়ায় আটক রাশিয়ার নাগরিকের মুক্তির দাবি তুলেছিল রাশিয়া। একইভাবে মধ্য এবং পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের ভূ-রাজনীতির অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যে রাশিয়া ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে। ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা গেছে, টিকা কূটনীতির মাধ্যমে তাইওয়ানের বিষয়ে প্যারাগুয়ের অবস্থান পুনঃনির্ধারণের ক্ষেত্রে সফল হয়েছে চীন। এ ছাড়া টিকার চালানের পূর্বশর্ত হিসেবে ব্রাজিলের ওপর চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশটির ফাইভ-জির বাজার হুয়াওয়ের জন্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে চীন সাফল্য পেয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৭০টি দেশে টিকা পাঠাতে সম্মত হয়েছে রুশ সরকার। চীনও দ্রুত সময়ের মধ্যে ১০০টি দেশে টিকা পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। যদিও শুরুর দিকে দেশ দুটির টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ ছিল খুব কম। পশ্চিমা গণমাধ্যমও দেশ দুটির টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সময়ে। তবে ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেশ দুটি টিকা রাজনীতিতে তরতর করে এগিয়ে গেছে। দুটি দেশই দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে টিকা সরবরাহ ও উৎপাদনের অনুমতি প্রদান করেছে। সম্প্রতি চীনের উদ্যোগে ‘ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড ফর সাউথ এশিয়া’ নামক একটি প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশও যুক্ত হয়েছে। তবে বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলো দ্রুততম সময়ে অন্য কোনো উৎস থেকে টিকা পাবে কি না, কিংবা ভারত সরকারকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি করাতে পারবে কি না, তার সবকিছুই নির্ভর করছে এই ভূ-রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ এবং বিবদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে
আলোচনায় কূটনীতিকদের দক্ষতা ও বিচক্ষণতার ওপর।
ভারতে ডাবল মিউটেটেড ও ট্রিপল মিউটেটেড ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে মৃত্যুর ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। সম্প্রতি বাংলাদেশেও ভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট যদি ভারতের মতো বাংলাদেশেও ছড়িয়ে যায়, তাহলে সংক্রমণের মৃত্যুঝুঁকি মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তাই ভারত থেকে অদূর ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত টিকার চালান নাও পাওয়া যেতে পারে, আবার সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা না পাওয়া মানে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকেও টিকা না পাওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হওয়া। এসব ইক্যুয়েশনকে সামনে রেখে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রাশিয়া ও চীনের করোনা টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এটাই ছিল সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। সরকার আশা করছে, মে মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ চীন ও রাশিয়ার টিকা পাবে।
কেবল বাংলাদেশই নয়, ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানির মতো নাক উঁচু পাশ্চাত্যের অনেক দেশই এখন চীন ও রাশিয়ার টিকা নেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। পশ্চিমা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রথম দিকে চীন ও রাশিয়ার উদ্ভাবিত করোনার টিকাকে পাত্তা না দিলেও বর্তমানে পরিস্থিতি বদলে গেছে। কার্যত কোনো উপায় না পেয়েই তারা পশ্চিমা দুনিয়ার বাইরের টিকা নেওয়ার গরিমা থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। তা ছাড়া সম্প্রতি চীনের সিনোফার্মের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এসবের পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উৎপাদিত ৪০ লাখ ডোজ টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে চীন বা রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র সুনজরে নাও দেখতে পারে। ভূ-রাজনীতিতে এই দেশগুলোর অবস্থান পরস্পরবিরোধী। অন্যদিকে ভারত অসন্তুষ্ট হতে পারে এমন ধারণায় এর আগে চীনা টিকার পরীক্ষা ও সরবরাহের প্রস্তাব নাকচ করেছিল সরকার। তবে বর্তমানে একই সঙ্গে সব পক্ষকে ম্যানেজ করার নীতিতে এগোচ্ছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। কারণ, অতীত অভিজ্ঞতা সামনে রেখে ভবিষ্যতেও কেউ যদি টিকা দিতে না পারে, তখনকার পরিস্থিতি কী হতে পারে তা সামনে রেখেই বর্তমান কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করা হচ্ছে।
তা ছাড়া তথ্য-উপাত্ত বলছে, এই দুই রাষ্ট্রের উদ্ভাবিত করোনার টিকাও বেশ কার্যকর। রাশিয়ার টিকা স্পুতনিক ভি-এর মানবদেহে পরীক্ষার অন্তর্বর্তী ফলাফল প্রকাশ করেছে শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট’। এতে দেখা গেছে, টিকাটি ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর। অন্যদিকে টিকাটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দাবি স্পুতনিক ভি-এর কার্যকারিতা আরও বেশি। প্রায় ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে সম্প্রতি টিকাটির আরেকটি সংস্করণ এনেছে রাশিয়া। এক ডোজের এই টিকার নাম দেওয়া হয়েছে স্পুতনিক লাইট। দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা প্রতিরোধে এক ডোজের এই টিকা ৭৯ দশমিক ৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশ এই টিকাটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমতি এখনো দেয়নি, যেটিকেও একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
পুরোনো ভূ-রাজনৈতিক সম্পদের দখলদারি থেকে যে উপনিবেশবাদ রাজনীতির সূচনা হয়েছিল, করোনার এই সময়ে তা রূপ নিয়েছে বৈশ্বিক টিকা রাজনীতিতে। এই ভূ-রাজনৈতির ইক্যুয়েশনে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো ভবিষ্যতে কী কী বাধার সম্মুখীন হতে পারে, তা এখনই হিসেবে নিতে হবে। কারণ, বিশ্ব রাজনীতির এই ইক্যুয়েশন আগামী দিনগুলোতেও টিকা প্রাপ্তি ও সরবরাহে প্রভাব ফেলবে বলে এখনই বোঝা যাচ্ছে। তা ছাড়া যদি প্রতিবছর টিকার বুস্টার হিসেবে একাধিক ডোজের প্রয়োজন পড়ে, তাহলে বিশ্বের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাই বেশি। সেক্ষেত্রে আমাদের জন্য আশার আলো হতে পারে বঙ্গভ্যাক্স। টিকাটির মানবদেহে ট্রায়ালের বিষয়ে দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসা উচিত। হবে হবে করেও অনেক দিন ধরেই এটি হচ্ছে না। টিকাটি ৯৫ শতাংশ কার্যকর এবং গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাজনীতির কারণে এই টিকাটি নিয়ে যেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় ভবিষ্যতে, যা বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। নতুন নতুন টিকার আমদানি আর দেশে উৎপাদিত টিকার হাত ধরে করোনাকেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতি সফলভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে করোনা জয়ের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ—এটাই প্রত্যাশা।
সিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
১৪ মিনিট আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
২৪ মিনিট আগেএখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১ দিন আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১ দিন আগে