গুল নাহার বাশার পান্না
আমার বাবা চট্টগ্রাম সেনানিবাস স্টেশন সাপ্লাই ডিপোর (এসএসডি) প্রাক্তন অফিসার কমান্ডিং বিএ ৬৯৬৬ ক্যাপ্টেন আর এ এম খায়রুল বাশার, এএসসি (যিনি ক্যাপ্টেন বাশার হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন)। ১৯৭১ সালের ২৯ মে পূর্ব পাকিস্তানের কসাই জেনারেল টিক্কা খানের অধীনস্থ ক্র্যাক ফোর্সের হাতে নিহত হন। জানা যায়, মেজর সরফরাজ সেই ক্র্যাক ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পাকিস্তানি জেনারেল টিক্কা খানের নির্দেশে মেজর সরফরাজ এক জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে নিয়ে আমার বাবাকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বাবা এই সরাসরি প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তখন পাকিস্তানিরা বাবার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা, কর্নেল জুনজুয়াকে হত্যাসহ অনেক অভিযোগ আনে। পাকিস্তানি ক্র্যাক ফোর্স বাবার ওপর মাসাধিককাল বর্বরোচিত অত্যাচার করে এবং সবশেষে বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করে। কয়েকজন যুদ্ধবন্দী বাবার রক্তাক্ত দেহ দেখেছিলেন।
তৎকালীন ধানমন্ডির ২০ নম্বর রোডের ৬২৩ নম্বর বাসায় (আমার ছোট দাদি বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত বেগম আয়শা জাফরের বাসায়) তখন আমার মা নূরুন নাহার বাশার গৃহবন্দী ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা মায়ের কাছে বাবার দেহাবশেষ হস্তান্তর করেনি। তখন মা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আমার ছোট ভাই ইকবাল বাশার বাবু তখন মায়ের গর্ভে ছিল। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম মায়ের ওপর কঠোর নজরদারি করতেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম বাবার সামরিক পোশাক আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন।
স্বাধীনতার ৪০ বছর পর শহীদ লে. কর্নেল মোহাম্মদ আব্দুল কাদিরের সমাধি চট্টগ্রামে শনাক্ত করার পর ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় তাঁর দাফন করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাপ্রধানের কাছে আমার আবেদন, অনুরূপভাবে ক্যাপ্টেন বাশারের দেহাবশেষ অনুসন্ধান করা হোক। উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে খুলনার জাহানাবাদ সেনানিবাসের আর্মি সার্ভিস কোর এএসসি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমার দাদি রিজিয়া আহমেদ (প্রয়াত) আর্মি দরবার হলে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাবার বীরত্বগাথা তুলে ধরেছিলেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাবা আমার প্যারাম্বুলেটরে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা লাগিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের পুরো এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বালুচ রেজিমেন্টের অফিসার ও সৈনিকেরা আমার বাবার টাইগার্স ডেন (বাবা চট্টগ্রাম স্টেশন সাপ্লাই ডিপোকে টাইগার্স ডেন হিসেবে নাম দিয়েছিলেন) দখলের উদ্দেশ্যে আক্রমণ চালায়। কিন্তু বাবা ও তাঁর বীর অফিসার ও সৈনিকেরা বালুচদের আক্রমণ শক্ত হাতে প্রতিহত করেন এবং তাদের পিছু হটিয়ে দেন। সে সময় চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকদের মনে বাবার এ ধরনের বীরত্বের অনেক কাহিনি আজও নিশ্চয় অমলিন আছে।
আগের একটি ঘটনা:
বাবা যে মুহূর্তে অবগত হন যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল সামরিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে ‘সোয়াত’ নামের পাকিস্তানের জাহাজ নোঙর করেছে। তিনি কালক্ষেপণ না করে স্থানীয় ছাত্র ও যুবকদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেন। সে সময় বাবা আমার মেজ ফুপাকে এক পত্রে লিখেছিলেন, ‘বর্তমানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করানোর পূর্ণ ক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাবা আমার অন্তঃসত্ত্বা মা ও আমাকে নিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাসভবন ত্যাগ করেন। এখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্টের সাবেক ডেপুটি প্রিন্সিপাল ইনফরমেশন অফিসার রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদীর লেখা ‘আওয়ার ওয়ার অব লিবারেশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনটির অংশবিশেষ উল্লেখ করা প্রয়োজন। ত্রিবেদী সাহেব লিখেছিলেন, ‘সামরিক অভিযানের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সিনিয়র বাঙালি অফিসারদের নিরস্ত্র করা হচ্ছিল অথবা পশ্চিম পাকিস্তানে বদলি করা হচ্ছিল। মেজর ওসমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর শফিউল্লাহ, মেজর রফিক, মেজর আবু তাহের, ক্যাপ্টেন বাশার ও মেজর জিয়াসহ সামরিক কর্মকর্তারা বিদ্রোহে নেতৃত্ব দান করেন।’ আর সে কারণে আমার মহান বাবা ক্যাপ্টেন বাশারকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সমীপে আকুল আবেদন জানাই।
আমার বাবা চট্টগ্রাম সেনানিবাস স্টেশন সাপ্লাই ডিপোর (এসএসডি) প্রাক্তন অফিসার কমান্ডিং বিএ ৬৯৬৬ ক্যাপ্টেন আর এ এম খায়রুল বাশার, এএসসি (যিনি ক্যাপ্টেন বাশার হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন)। ১৯৭১ সালের ২৯ মে পূর্ব পাকিস্তানের কসাই জেনারেল টিক্কা খানের অধীনস্থ ক্র্যাক ফোর্সের হাতে নিহত হন। জানা যায়, মেজর সরফরাজ সেই ক্র্যাক ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পাকিস্তানি জেনারেল টিক্কা খানের নির্দেশে মেজর সরফরাজ এক জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে নিয়ে আমার বাবাকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বাবা এই সরাসরি প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তখন পাকিস্তানিরা বাবার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা, কর্নেল জুনজুয়াকে হত্যাসহ অনেক অভিযোগ আনে। পাকিস্তানি ক্র্যাক ফোর্স বাবার ওপর মাসাধিককাল বর্বরোচিত অত্যাচার করে এবং সবশেষে বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করে। কয়েকজন যুদ্ধবন্দী বাবার রক্তাক্ত দেহ দেখেছিলেন।
তৎকালীন ধানমন্ডির ২০ নম্বর রোডের ৬২৩ নম্বর বাসায় (আমার ছোট দাদি বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত বেগম আয়শা জাফরের বাসায়) তখন আমার মা নূরুন নাহার বাশার গৃহবন্দী ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা মায়ের কাছে বাবার দেহাবশেষ হস্তান্তর করেনি। তখন মা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আমার ছোট ভাই ইকবাল বাশার বাবু তখন মায়ের গর্ভে ছিল। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম মায়ের ওপর কঠোর নজরদারি করতেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম বাবার সামরিক পোশাক আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন।
স্বাধীনতার ৪০ বছর পর শহীদ লে. কর্নেল মোহাম্মদ আব্দুল কাদিরের সমাধি চট্টগ্রামে শনাক্ত করার পর ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় তাঁর দাফন করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাপ্রধানের কাছে আমার আবেদন, অনুরূপভাবে ক্যাপ্টেন বাশারের দেহাবশেষ অনুসন্ধান করা হোক। উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে খুলনার জাহানাবাদ সেনানিবাসের আর্মি সার্ভিস কোর এএসসি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমার দাদি রিজিয়া আহমেদ (প্রয়াত) আর্মি দরবার হলে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাবার বীরত্বগাথা তুলে ধরেছিলেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাবা আমার প্যারাম্বুলেটরে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা লাগিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের পুরো এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বালুচ রেজিমেন্টের অফিসার ও সৈনিকেরা আমার বাবার টাইগার্স ডেন (বাবা চট্টগ্রাম স্টেশন সাপ্লাই ডিপোকে টাইগার্স ডেন হিসেবে নাম দিয়েছিলেন) দখলের উদ্দেশ্যে আক্রমণ চালায়। কিন্তু বাবা ও তাঁর বীর অফিসার ও সৈনিকেরা বালুচদের আক্রমণ শক্ত হাতে প্রতিহত করেন এবং তাদের পিছু হটিয়ে দেন। সে সময় চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকদের মনে বাবার এ ধরনের বীরত্বের অনেক কাহিনি আজও নিশ্চয় অমলিন আছে।
আগের একটি ঘটনা:
বাবা যে মুহূর্তে অবগত হন যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল সামরিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে ‘সোয়াত’ নামের পাকিস্তানের জাহাজ নোঙর করেছে। তিনি কালক্ষেপণ না করে স্থানীয় ছাত্র ও যুবকদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেন। সে সময় বাবা আমার মেজ ফুপাকে এক পত্রে লিখেছিলেন, ‘বর্তমানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করানোর পূর্ণ ক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাবা আমার অন্তঃসত্ত্বা মা ও আমাকে নিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাসভবন ত্যাগ করেন। এখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্টের সাবেক ডেপুটি প্রিন্সিপাল ইনফরমেশন অফিসার রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদীর লেখা ‘আওয়ার ওয়ার অব লিবারেশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনটির অংশবিশেষ উল্লেখ করা প্রয়োজন। ত্রিবেদী সাহেব লিখেছিলেন, ‘সামরিক অভিযানের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সিনিয়র বাঙালি অফিসারদের নিরস্ত্র করা হচ্ছিল অথবা পশ্চিম পাকিস্তানে বদলি করা হচ্ছিল। মেজর ওসমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর শফিউল্লাহ, মেজর রফিক, মেজর আবু তাহের, ক্যাপ্টেন বাশার ও মেজর জিয়াসহ সামরিক কর্মকর্তারা বিদ্রোহে নেতৃত্ব দান করেন।’ আর সে কারণে আমার মহান বাবা ক্যাপ্টেন বাশারকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সমীপে আকুল আবেদন জানাই।
সিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
৮ মিনিট আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
১৮ মিনিট আগেএখন রাজনীতির এক গতিময়তার সময়। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীন কর্তৃত্ববাদী দুর্নীতিপরায়ণ শাসন ছাত্র আন্দোলনে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী শাসনকালে দ্রুততার সঙ্গে নানা রকম রাজনৈতিক কথাবার্তা, চিন্তা-ভাবনা, চেষ্টা-অপচেষ্টা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটছে।
১ দিন আগেবহু বছর আগে সেই ব্রিটিশ যুগে কাজী নজরুল লিখেছিলেন, ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন।’ আসলে পেটের খিদে নিয়ম, আইন, বিবেক, বিচার কোনো কিছুই মানে না। তাই তো প্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে, খিদের জ্বালা বড় জ্বালা। এর থেকে বোধ হয় আর কোনো অসহায়তা নেই। খালি পেটে কেউ তত্ত্ব শুনতে চায় না। কাওয়ালিও ন
১ দিন আগে