মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া
গত ৫ আগস্ট ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ ক্যাপটেন শেখ কামালের তিয়াত্তরতম জন্মদিন। তিনি বেঁচে থাকলে এই দিনে তাঁর বয়স ৭২ বছর পূর্ণ হতো। শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বড়বোন শেখ হাসিনা বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বাল্যকাল থেকেই শেখ কামাল ছিলেন দুরন্ত ও চঞ্চল প্রকৃতির। তাঁর বয়স যখন মাত্র কয়েক মাস, ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁর বাবা রাজবন্দী হিসেবে জেলে যান। সেবার বঙ্গবন্ধু একনাগাড়ে ২ বছর ৩ মাস; অর্থাৎ, ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই শেখ কামাল শৈশবের সোনালি সময় পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কিছুদিন টুঙ্গিপাড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান। তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একদিন সকালে আমি ও রেণু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর “আব্বা” “আব্বা” বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। এক সময় কামাল হাচিনাকে বলছে, ‘হাচু আপা, হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি?’ আমি আর রেণু দু ‘জনই শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে যেয়ে ওকে নিয়ে বললাম, “আমি তো তোমারও আব্বা। ” কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না। আজ গলা ধরে পড়ে রইল।’
১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পর শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হন এবং তাঁর পরিবার ঢাকায় চলে আসে। প্রথমে শেখ কামালকে সেগুন বাগিচার একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে ১৯৬১ সালে বিএএফ শাহীন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। শেখ কামাল ঢাকার বিএএফ শাহীন স্কুল থেকে ১৯৬৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে যখন সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন শেখ কামাল ভারতে চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর প্রথম ওয়ার কোর্স প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং ক্যাপ্টেন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর এডিসি নিযুক্ত হন। দেশ স্বাধীন হলে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন।
শৈশব থেকেই তাঁর অনন্য প্রতিভা ও মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সুযোগ্যা সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সন্তানদের স্বাভাবিক স্নেহ ও শাসনে বড় করতে থাকেন। বাবা–মার সৎস্বভাব ও নেতৃত্বের গুণাবলি সন্তানদের মধ্যেও বিকশিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বভাব ও গুণাবলির অনেক কিছুই শেখ কামালের মধ্যেও দেখা যায়। তিনি বাবার মতো মিশুক, বন্ধুবৎসল, পরোপকারী ও খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। শাহীন স্কুল ও ঢাকা কলেজে পড়ার সময়েই ফুটবল, অ্যাথলেটিকস, ক্রিকেট, বাস্কেটবল প্রভৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সংস্কৃতির নানা দিকে তাঁর দখল, খ্যাতি ও ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়ে। ক্রিকেটে তিনি ছিলেন পেস বোলার, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বাস্কেটবল টিমের অধিনায়ক, ফুটবল ও হকি খেলোয়াড়। ক্রীড়া ক্ষেত্রে এমন বহুমুখী নৈপুণ্য সচরাচর দেখা যায় না। ১৯৭২ সালে তাঁর হাতেই আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী মাইলফলক। তাঁর চেষ্টা ও উদ্যোগে বাংলাদেশের ফুটবলে বিদেশি কোচ হিসেবে বিল হার্ট নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বাংলাদেশের ফুটবল ও ক্রিকেটের অগ্রগতির পেছনে সংগঠক শেখ কামালের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শুধু খেলাধুলায়ই নয় সংগীত, অভিনয়, বিতর্ক, বক্তৃতা প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে ছিল শেখ কামালের পারদর্শিতা। তিনি ছায়ানটে গান ও সেতার বাদন শিখতেন। ঢাকা থিয়েটারে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। শেখ কামাল ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ নামে বাংলাদেশের প্রথম পপ সংগীতের দল গঠন করেন, যেখানে দেশীয় সংগীতের সঙ্গে পাশ্চাত্য সুরের সংমিশ্রণ ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যগোষ্ঠীতে ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি।
এ পর্যন্ত যা কিছু উল্লেখ করা হলো, তার অনেক কিছুরই আমি প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী। ১৯৭২ সালে এসএসসি পাস করে আমি ১৯৭৩-৭৪ সালে ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করি। ওই সময় শেখ কামালকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকটি সাংগঠনিক সভায় অংশ নিতে দেখেছি। অনুজ ছাত্রদের পিঠে হাত দিয়ে আদর করতেন, সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল থাকতেন। ১৯৭৫ সালের মে-জুন মাসে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন শেখ কামালদের ব্যাচ এমএ পরীক্ষা সমাপ্ত করে ছাত্রত্ব ত্যাগ করার পথে। তা সত্ত্বেও শেখ কামালকে নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যেত। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতির ছেলে হিসেবে তাঁর মধ্যে কোনো আলাদা অভিব্যক্তি, গরিমা বা অহংবোধ ছিল না। সহপাঠী শিক্ষার্থী, সিনিয়র–জুনিয়র সবার সঙ্গে ছিল তাঁর আন্তরিক ও প্রাণখোলা মেলামেশা। তাঁর বহুমুখী প্রতিভা প্রত্যক্ষ করে আমি অভিভূত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম দিনগুলোতে ক্লাসের চাপ না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মকাণ্ড দেখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে কাটাতাম। একদিনের কথা মনে আছে—সেদিন ছিল শেখ কামালদের ব্যাচের এমএ ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের ‘র্যাগ ডে’। ওই সময়ের র্যাগ–ডের আনন্দ উৎসব, রং মাখামাখি ওই ক্লাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত এবং তা শালীনতার সীমা অতিক্রম করত না। পরে অবশ্য র্যাগ–ডে উৎসবের আতিশয্যে অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থী, এমনকি পথচারীরাও উৎপীড়িত হতো, যার ফলে এটি অজনপ্রিয় হয়ে যায়। র্যাগ–ডের বিকেলে কলাভবন চত্বরে উন্মুক্ত মঞ্চে একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনুষ্ঠিত হলো ‘ট্যালেন্ট শো’। প্যারোডি গান, স্বরচিত কবিতা, উপস্থিত অভিনয়, কৌতুক, উপস্থিত বক্তৃতা, নাচ প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে ছাত্ররা তাদের প্রতিভা বিকশিত করেন। শেখ কামাল অন্যদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে দর্শক–শ্রোতাদের আনন্দ দান করেন। তাঁর সাংস্কৃতিক প্রতিভা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরব উপস্থিতি আমাকে মুগ্ধ করে।
কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এসব অনুষ্ঠান তৃপ্তি নিয়ে উপভোগ করেছি। উপস্থিত বক্তৃতা ও অভিনয়ে শেখ কামাল প্রথম হন। এ ছাড়া সব অনুষ্ঠানেই তিনি ছিলেন প্রাণবন্ত। বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা, কথা বলা, হাসাহাসি কোনো কিছুতেই তাঁর কোনো অহমিকা, কৃত্রিমতা কিংবা গাম্ভীর্য ছিল না, যা রাষ্ট্রপতির ছেলে হিসেবে তাঁর থাকতে পারত। তিনি ছিলেন তখন ছাত্রলীগের সংগঠক ও অভিভাবক। কিন্তু ছাত্র ইউনিয়নের বন্ধুদের সঙ্গেও তিনি একইভাবে মেলামেশা করতেন।
বাসায় সময় কাটাতেন কম। তবে যতটুকু সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতেন, তা ছিল পরিশীলিত ও হৃদ্যতাপূর্ণ। বাবা–মার আদর্শ অনুসরণ ও ভাইবোনদের সঙ্গে মূল্যবান সময়গুলো ছিল নানা জ্ঞানগর্ভ আলোচনা, গান-বাজনা ও গল্পগুজবে পরিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হয়ে গেলেও শেখ কামালকে প্রায়ই ক্যাম্পাসে দেখা যেত। বেশির ভাগ সময়ই হাওয়াই শার্ট বা টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায়। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই শেখ কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি অ্যাথলেট এবং প্রথম নারী ব্লু সুলতানা কামাল খুকীকে বিয়ে করেন। খুকী তাঁরই সহপাঠী ছিলেন। কলাভবনে অর্থনীতি বিভাগের পাশেই ছিল সোসিওলজি বিভাগ। মাঝেমধ্যে অর্থনীতি বিভাগের তিন তলায় স্ত্রী খুকীকেসহ হেঁটে যেতেন। আমাদের মধ্য থেকে কেউ ‘কামাল ভাই, ভালো আছেন?’ , বলে কথা বলতে চাইলে তিনি থেমে সস্নেহে করমর্দন করতেন। কাঁধে হাত রাখতেন ও কুশল বিনিময় করতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৫ আগস্ট উপস্থিত থাকবেন। সে জন্য আগে থেকেই সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু গাড়ি থেকে কোথায় এসে নামবেন, অনুষ্ঠানস্থলে কারা তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন, সাধারণ ছাত্ররা কোন দিকটায় থাকবে প্রভৃতি নির্ধারিত হয়েছে। আমরা কিছু বন্ধুবান্ধব ঠিক করে রেখেছি, রাষ্ট্রপতি আসার বেশ কিছু সময় আগেই উপস্থিত হয়ে সুবিধামতো জায়গায় অবস্থান নেব। ১৪ আগস্ট বিকেলেও শেখ কামালকে দেখা গেছে অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের লোকজনের সঙ্গে নানা খুঁটিনাটি তদারক করছেন।
১৫ আগস্ট সকালে রেডিওতে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে নির্মমভাবে হত্যা করার বিষয়টি শুনে স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে, তা ছিল কল্পনারও বাইরে। ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে ঘাতকেরা যখন বাড়িতে প্রবেশ করে তখন শেখ কামালই প্রথম বেরিয়ে আসেন কী হচ্ছে তার খোঁজ নেওয়ার জন্য। ঘাতকেরা তাঁকেই প্রথম ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। তারপর বঙ্গবন্ধুসহ একে একে পরিবারের সবাইকে গুলি করে বা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এই নির্মমতা জাতির জন্য এক বিরাট কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
শেখ কামাল তাঁর প্রতিভা বিকাশের যতটুকু সুযোগ তাঁর ২৬ বছর জীবনে পেয়েছিলেন, তাতেই আঁচ করা গিয়েছিল যে, পরবর্তী জীবনে তিনি দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর আরও অনেক কিছু করতে পারতেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই সম্ভাবনাময় এই তরুণকে হত্যা করা হলো। বনানী কবরস্থানে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি ঘুমিয়ে আছেন। দেশের বাইরে জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে তাঁর দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান।
পরে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য শহীদ শেখ কামালকে ১৯৯৮ সালে স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়। ২০১১ সালে তাঁকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রবাদপ্রতিম, কিংবদন্তি সাহসী ও দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী যুবক ছিলেন শেখ কামাল। তাঁর ৭৩ তম জন্মদিনে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। মহান আল্লাহ তাঁকে এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এই দোয়া করি। ক্ষুদ্র জীবনে দেশ ও জাতির জন্য তিনি যে অবদান রেখে গেছেন, বন্ধুবান্ধব সহপাঠীসহ সব স্তরের মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় যেভাবে স্থান করে নিয়েছেন, তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া: সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
গত ৫ আগস্ট ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ ক্যাপটেন শেখ কামালের তিয়াত্তরতম জন্মদিন। তিনি বেঁচে থাকলে এই দিনে তাঁর বয়স ৭২ বছর পূর্ণ হতো। শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বড়বোন শেখ হাসিনা বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বাল্যকাল থেকেই শেখ কামাল ছিলেন দুরন্ত ও চঞ্চল প্রকৃতির। তাঁর বয়স যখন মাত্র কয়েক মাস, ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁর বাবা রাজবন্দী হিসেবে জেলে যান। সেবার বঙ্গবন্ধু একনাগাড়ে ২ বছর ৩ মাস; অর্থাৎ, ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই শেখ কামাল শৈশবের সোনালি সময় পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কিছুদিন টুঙ্গিপাড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান। তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একদিন সকালে আমি ও রেণু বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর “আব্বা” “আব্বা” বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। এক সময় কামাল হাচিনাকে বলছে, ‘হাচু আপা, হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি?’ আমি আর রেণু দু ‘জনই শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে যেয়ে ওকে নিয়ে বললাম, “আমি তো তোমারও আব্বা। ” কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না। আজ গলা ধরে পড়ে রইল।’
১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পর শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হন এবং তাঁর পরিবার ঢাকায় চলে আসে। প্রথমে শেখ কামালকে সেগুন বাগিচার একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে ১৯৬১ সালে বিএএফ শাহীন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। শেখ কামাল ঢাকার বিএএফ শাহীন স্কুল থেকে ১৯৬৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে যখন সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন শেখ কামাল ভারতে চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর প্রথম ওয়ার কোর্স প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং ক্যাপ্টেন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর এডিসি নিযুক্ত হন। দেশ স্বাধীন হলে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন।
শৈশব থেকেই তাঁর অনন্য প্রতিভা ও মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সুযোগ্যা সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সন্তানদের স্বাভাবিক স্নেহ ও শাসনে বড় করতে থাকেন। বাবা–মার সৎস্বভাব ও নেতৃত্বের গুণাবলি সন্তানদের মধ্যেও বিকশিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বভাব ও গুণাবলির অনেক কিছুই শেখ কামালের মধ্যেও দেখা যায়। তিনি বাবার মতো মিশুক, বন্ধুবৎসল, পরোপকারী ও খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। শাহীন স্কুল ও ঢাকা কলেজে পড়ার সময়েই ফুটবল, অ্যাথলেটিকস, ক্রিকেট, বাস্কেটবল প্রভৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সংস্কৃতির নানা দিকে তাঁর দখল, খ্যাতি ও ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়ে। ক্রিকেটে তিনি ছিলেন পেস বোলার, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বাস্কেটবল টিমের অধিনায়ক, ফুটবল ও হকি খেলোয়াড়। ক্রীড়া ক্ষেত্রে এমন বহুমুখী নৈপুণ্য সচরাচর দেখা যায় না। ১৯৭২ সালে তাঁর হাতেই আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী মাইলফলক। তাঁর চেষ্টা ও উদ্যোগে বাংলাদেশের ফুটবলে বিদেশি কোচ হিসেবে বিল হার্ট নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বাংলাদেশের ফুটবল ও ক্রিকেটের অগ্রগতির পেছনে সংগঠক শেখ কামালের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শুধু খেলাধুলায়ই নয় সংগীত, অভিনয়, বিতর্ক, বক্তৃতা প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে ছিল শেখ কামালের পারদর্শিতা। তিনি ছায়ানটে গান ও সেতার বাদন শিখতেন। ঢাকা থিয়েটারে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। শেখ কামাল ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ নামে বাংলাদেশের প্রথম পপ সংগীতের দল গঠন করেন, যেখানে দেশীয় সংগীতের সঙ্গে পাশ্চাত্য সুরের সংমিশ্রণ ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যগোষ্ঠীতে ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি।
এ পর্যন্ত যা কিছু উল্লেখ করা হলো, তার অনেক কিছুরই আমি প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী। ১৯৭২ সালে এসএসসি পাস করে আমি ১৯৭৩-৭৪ সালে ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করি। ওই সময় শেখ কামালকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকটি সাংগঠনিক সভায় অংশ নিতে দেখেছি। অনুজ ছাত্রদের পিঠে হাত দিয়ে আদর করতেন, সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল থাকতেন। ১৯৭৫ সালের মে-জুন মাসে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন শেখ কামালদের ব্যাচ এমএ পরীক্ষা সমাপ্ত করে ছাত্রত্ব ত্যাগ করার পথে। তা সত্ত্বেও শেখ কামালকে নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যেত। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতির ছেলে হিসেবে তাঁর মধ্যে কোনো আলাদা অভিব্যক্তি, গরিমা বা অহংবোধ ছিল না। সহপাঠী শিক্ষার্থী, সিনিয়র–জুনিয়র সবার সঙ্গে ছিল তাঁর আন্তরিক ও প্রাণখোলা মেলামেশা। তাঁর বহুমুখী প্রতিভা প্রত্যক্ষ করে আমি অভিভূত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম দিনগুলোতে ক্লাসের চাপ না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মকাণ্ড দেখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে কাটাতাম। একদিনের কথা মনে আছে—সেদিন ছিল শেখ কামালদের ব্যাচের এমএ ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের ‘র্যাগ ডে’। ওই সময়ের র্যাগ–ডের আনন্দ উৎসব, রং মাখামাখি ওই ক্লাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত এবং তা শালীনতার সীমা অতিক্রম করত না। পরে অবশ্য র্যাগ–ডে উৎসবের আতিশয্যে অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থী, এমনকি পথচারীরাও উৎপীড়িত হতো, যার ফলে এটি অজনপ্রিয় হয়ে যায়। র্যাগ–ডের বিকেলে কলাভবন চত্বরে উন্মুক্ত মঞ্চে একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনুষ্ঠিত হলো ‘ট্যালেন্ট শো’। প্যারোডি গান, স্বরচিত কবিতা, উপস্থিত অভিনয়, কৌতুক, উপস্থিত বক্তৃতা, নাচ প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে ছাত্ররা তাদের প্রতিভা বিকশিত করেন। শেখ কামাল অন্যদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে দর্শক–শ্রোতাদের আনন্দ দান করেন। তাঁর সাংস্কৃতিক প্রতিভা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরব উপস্থিতি আমাকে মুগ্ধ করে।
কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এসব অনুষ্ঠান তৃপ্তি নিয়ে উপভোগ করেছি। উপস্থিত বক্তৃতা ও অভিনয়ে শেখ কামাল প্রথম হন। এ ছাড়া সব অনুষ্ঠানেই তিনি ছিলেন প্রাণবন্ত। বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা, কথা বলা, হাসাহাসি কোনো কিছুতেই তাঁর কোনো অহমিকা, কৃত্রিমতা কিংবা গাম্ভীর্য ছিল না, যা রাষ্ট্রপতির ছেলে হিসেবে তাঁর থাকতে পারত। তিনি ছিলেন তখন ছাত্রলীগের সংগঠক ও অভিভাবক। কিন্তু ছাত্র ইউনিয়নের বন্ধুদের সঙ্গেও তিনি একইভাবে মেলামেশা করতেন।
বাসায় সময় কাটাতেন কম। তবে যতটুকু সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতেন, তা ছিল পরিশীলিত ও হৃদ্যতাপূর্ণ। বাবা–মার আদর্শ অনুসরণ ও ভাইবোনদের সঙ্গে মূল্যবান সময়গুলো ছিল নানা জ্ঞানগর্ভ আলোচনা, গান-বাজনা ও গল্পগুজবে পরিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হয়ে গেলেও শেখ কামালকে প্রায়ই ক্যাম্পাসে দেখা যেত। বেশির ভাগ সময়ই হাওয়াই শার্ট বা টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায়। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই শেখ কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি অ্যাথলেট এবং প্রথম নারী ব্লু সুলতানা কামাল খুকীকে বিয়ে করেন। খুকী তাঁরই সহপাঠী ছিলেন। কলাভবনে অর্থনীতি বিভাগের পাশেই ছিল সোসিওলজি বিভাগ। মাঝেমধ্যে অর্থনীতি বিভাগের তিন তলায় স্ত্রী খুকীকেসহ হেঁটে যেতেন। আমাদের মধ্য থেকে কেউ ‘কামাল ভাই, ভালো আছেন?’ , বলে কথা বলতে চাইলে তিনি থেমে সস্নেহে করমর্দন করতেন। কাঁধে হাত রাখতেন ও কুশল বিনিময় করতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৫ আগস্ট উপস্থিত থাকবেন। সে জন্য আগে থেকেই সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু গাড়ি থেকে কোথায় এসে নামবেন, অনুষ্ঠানস্থলে কারা তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন, সাধারণ ছাত্ররা কোন দিকটায় থাকবে প্রভৃতি নির্ধারিত হয়েছে। আমরা কিছু বন্ধুবান্ধব ঠিক করে রেখেছি, রাষ্ট্রপতি আসার বেশ কিছু সময় আগেই উপস্থিত হয়ে সুবিধামতো জায়গায় অবস্থান নেব। ১৪ আগস্ট বিকেলেও শেখ কামালকে দেখা গেছে অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের লোকজনের সঙ্গে নানা খুঁটিনাটি তদারক করছেন।
১৫ আগস্ট সকালে রেডিওতে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে নির্মমভাবে হত্যা করার বিষয়টি শুনে স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে, তা ছিল কল্পনারও বাইরে। ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে ঘাতকেরা যখন বাড়িতে প্রবেশ করে তখন শেখ কামালই প্রথম বেরিয়ে আসেন কী হচ্ছে তার খোঁজ নেওয়ার জন্য। ঘাতকেরা তাঁকেই প্রথম ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। তারপর বঙ্গবন্ধুসহ একে একে পরিবারের সবাইকে গুলি করে বা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এই নির্মমতা জাতির জন্য এক বিরাট কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
শেখ কামাল তাঁর প্রতিভা বিকাশের যতটুকু সুযোগ তাঁর ২৬ বছর জীবনে পেয়েছিলেন, তাতেই আঁচ করা গিয়েছিল যে, পরবর্তী জীবনে তিনি দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর আরও অনেক কিছু করতে পারতেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই সম্ভাবনাময় এই তরুণকে হত্যা করা হলো। বনানী কবরস্থানে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি ঘুমিয়ে আছেন। দেশের বাইরে জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে তাঁর দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান।
পরে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য শহীদ শেখ কামালকে ১৯৯৮ সালে স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়। ২০১১ সালে তাঁকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রবাদপ্রতিম, কিংবদন্তি সাহসী ও দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী যুবক ছিলেন শেখ কামাল। তাঁর ৭৩ তম জন্মদিনে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। মহান আল্লাহ তাঁকে এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এই দোয়া করি। ক্ষুদ্র জীবনে দেশ ও জাতির জন্য তিনি যে অবদান রেখে গেছেন, বন্ধুবান্ধব সহপাঠীসহ সব স্তরের মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় যেভাবে স্থান করে নিয়েছেন, তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া: সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্ব’র তত্ত্ব তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।
১১ ঘণ্টা আগেমাঝে মাঝে মনে হয়, করোনাকালই বোধহয় ভালো ছিল। শাটডাউনে সব বন্ধ, রাস্তায় যানবাহন নেই, মানুষের চলাচল সীমিত, যারাও বাইরে যাচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক পরা। রাস্তার ধারের গাছগুলোতে ধুলার পর্দা পড়ছে না, কলকারখানার চোঙা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে না, বায়ুদূষণও কমে এসেছে। এক অদেখা জীবাণুর আতঙ্কে আমাদের কী দুঃসময়ই না কেট
১১ ঘণ্টা আগেতিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রণদা প্রসাদ সাহা ছিলেন মেজ। মা কুমুদিনী দেবীর গভীর স্নেহে বড় হয়ে উঠলেও মায়ের সঙ্গটুকু দীর্ঘস্থায়ী হয়নি; সাত বছর বয়সেই মাকে হারান তিনি।
১১ ঘণ্টা আগেমঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান ও ফার্মগেটে হকার উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তার একটা অংশ যেভাবে হকাররা দখল করে রাখেন, তাতে চলাচলে অসুবিধা হয় রাজধানীবাসীর। তাই ব্যস্ত সড়ক হকারমুক্ত করতে পারলে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সাধুবাদ পাবে।
১১ ঘণ্টা আগে