সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
শুরু হয়েছে সুন্দরবন ভ্রমণের মৌসুম। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সুন্দরবন। ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এ বনকে জীব ও উদ্ভিদ জাদুঘর বললেও কম বলা হবে।
সুন্দরবনে বেড়ানোর উপযুক্ত সময়
নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এ সময় নদী ও সমুদ্র শান্ত থাকে বলে সুন্দরবনের প্রায় সব দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখা যায়। খুলনা ও মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছে করমজল ও হারবাড়িয়া বছরের যেকোনো সময় এক দিনেই ঘুরে দেখা যায়। তবে মূল সুন্দরবনের স্বাদ পেতে হলে বনের গহিনে যেতে হবে।
সুন্দরবনের দর্শনীয় জায়গা
সুন্দরবন বিশাল একটি অঞ্চল। বন বিভাগ থেকে এ বনের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গা ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। সুন্দরবন ঘুরে দেখা যায় খুলনা, মোংলা, শরণখোলা ও সাতক্ষীরা দিয়ে। তবে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ও দর্শনার্থী ভ্রমণ করে থাকেন খুলনা ও বাগেরহাটের মোংলা দিয়ে। এ দুটি জায়গা থেকে খুব সহজে যাওয়া যায় করমজল, হারবাড়িয়া, কচিখালি, কটকা, হিরণ পয়েন্ট ও দুবলার চর।
করমজল: মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছে করমজল। এটি মূলত বন বিভাগের হরিণ ও কুমির প্রজনন কেন্দ্র। এখানে আছে বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া কাঠের পুলের ট্রেইল, হরিণ, কুমির, বানরসহ নানান প্রজাতির বৃক্ষরাজি।
হারবাড়িয়া: মোংলা থেকে দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এখানকার মূল আকর্ষণ বনের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া কাঠের ট্রেইল। পুরো ট্রেইলটা ঘুরে আসতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগে। এখানে একটি পদ্মপুকুর ও ওয়াচ টাওয়ার আছে।
কটকা: কটকা ফরেস্ট স্টেশনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। অর্থাৎ সাগরের কোল ঘেঁষেই কটকা অভয়ারণ্য। এখানকার আকর্ষণীয় বিষয় হলো বন্য হরিণ দল। এখানেও আছে কাঠের ট্রেইল।
কটকা বিচ: কটকা পয়েন্টের ট্রেইল ধরে কিছু দূর হাঁটলে পৌঁছে যাওয়া যাবে কটকা সমুদ্রসৈকতে। বঙ্গোপসাগরের দেখা মিলবে এখানে। কটকা সি বিচ অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর। এখানে বেলাভূমিজুড়ে লাল কাঁকড়া দেখা যাবে।
হিরণ পয়েন্ট: এখানকার কাঠের তৈরি রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হরিণ, বানর, গুইসাপ ও কুমিরের দেখা পাওয়া যায়। কখনো কখনো এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারও দেখা যায়।
দুবলার চর: সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য চর এটি। এটি হিন্দুধর্মের পুণ্যস্নান, রাসমেলা এবং শুঁটকির জন্য বিখ্যাত। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজারের মতো জেলে অস্থায়ী বসতি গড়ে তোলে এখানে। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শুকানোর কাজ।
সুন্দরবন ভ্রমণের উপায়
কম খরচে এক দিনে সুন্দরবন ঘুরে দেখতে চাইলে মোংলা থেকে করমজল অথবা হারবাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখতে পারেন। মোংলা থেকে সকালে রওনা দিলে দুটো জায়গা এক দিনে ঘুরে দেখা সম্ভব। মোংলা ফেরিঘাট থেকে করমজল ভ্রমণের ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া পাওয়া যায়। শুধু করমজল ঘুরে দেখতে ভাড়া লাগবে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। ট্যুরিস্ট বোটে সর্বোচ্চ ২০ জন ভ্রমণ করতে পারবেন। আর করমজল ও হারবাড়িয়া দুই জায়গায় যেতে ভাড়া লাগবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। হারবাড়িয়া যেতে চাইলে ভালো মানের ট্যুরিস্ট বোট ঠিক করা উচিত। আর ভাড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই দরদাম করে নিতে হবে।
করমজলে প্রবেশে বন বিভাগের টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৪৬ টাকা। বিদেশি পর্যটকের জন্য ৫৭৫ টাকা। আর হারবাড়িয়া প্রবেশের টিকিট মূল্য ১৭২ টাকা। এ ছাড়া হারবাড়িয়া ঘুরতে হলে সেখানকার অফিস থেকে অনুমতি ও গাইড নিতে হবে। দুপুরের খাবার মোংলা থেকেই নিয়ে যেতে হবে।
করমজল ও হারবাড়িয়া ছাড়া সুন্দরবনের গহিনের কোনো পর্যটন কেন্দ্রে আপনি যেতে চাইলে অবশ্যই লঞ্চ নিয়ে যেতে হবে। সুন্দরবনের ভেতরে ভ্রমণ করতে চাইলে বাগেরহাট অথবা খুলনা ডিএফও (বিভাগীয় কার্যালয়) অফিস থেকে নির্ধারিত ফি দিয়ে অনুমতি ও সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে যেতে হবে। আর একসঙ্গে সবগুলো জায়গা ঘুরে দেখতে লঞ্চ ও ট্যুরিস্ট বোটের বিকল্প নেই।
নিরাপত্তা, অনুমতি, খরচ আর জটিল প্রক্রিয়ার কারণে সুন্দরবনের গহিনে ভ্রমণের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী উপায় হচ্ছে কোনো ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে যাওয়া। নির্ধারিত প্যাকেজের মধ্যে লঞ্চে ওঠার পর থেকে ট্যুর শেষ করে ঘাটে ফেরা পর্যন্ত থাকার ব্যবস্থা, তিন বেলার খাবার, দুই বেলা হালকা নাশতা, বন বিভাগের অনুমতি, নিরাপত্তারক্ষী ও গাইডসহ যাবতীয় খরচ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজ খরচ
সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজের খরচ নির্ভর করে জাহাজ ও খাবারের মান, কোন কোন জায়গা ঘুরে দেখাবে ও কত দিনের ভ্রমণ, এসবের ওপর। মোটামুটি মানের লঞ্চে ঘুরতে জনপ্রতি খরচ হবে ৭ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর বিলাসবহুল ট্যুরিস্ট লঞ্চে ভ্রমণ করতে চাইলে খরচ হবে জনপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্যাকেজগুলো সাধারণত দুই রাত তিন দিন অথবা তিন রাত চার দিনের হয়ে থাকে। ঢাকা, খুলনা ও মোংলার বিভিন্ন পর্যটন প্রতিষ্ঠান সুন্দরবনে তিন অথবা চার দিনের ভ্রমণ প্যাকেজের ব্যবস্থা করে থাকে। তবে ৩০ থেকে ৪০ জন একত্রে হলে নিজেরাই লঞ্চ ভাড়া করে ভ্রমণে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাবুর্চি ও গাইড সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। এতে খরচ বেশ খানিকটা কমে যাবে।
সুন্দরবন যাওয়ার উপায়
সুন্দরবন যাওয়ার জনপ্রিয় পথ খুলনা ও মোংলা। খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া শিপ মোংলা হয়েই সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ঢাকা থেকে খুলনা বাসে বা ট্রেনে সরাসরি যাওয়া যায়। গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে খুলনা যাওয়ার এসি ও ননএসি বাস পাওয়া যায়। ভাড়া ননএসি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
এ ছাড়া ঢাকা থেকে মোংলা যাওয়ার সরাসরি ননএসি চেয়ার কোচ আছে। এসব বাসের ভাড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। মোংলায় ভালো বাসে যেতে চাইলে খুলনা যাওয়ার বাসে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে খুলনার আগে কাটাখালীতে নেমে বাস, মাহিন্দ্রা, সিএনজি অথবা বাইকে করে ৩২ কিলোমিটার দূরে মোংলা যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
লঞ্চে করে ঘুরতে গেলে সেখানেই থাকার ব্যবস্থা থাকে। মোংলায় থাকার জন্য মোংলা ফেরিঘাটে পর্যটন করপোরেশনের একটি হোটেল আছে। মোংলা আবাসিক এলাকায় পর্যটকদের থাকার জন্য কিছু সাধারণ মানের হোটেল আছে। এ ছাড়া খুলনা নগরীতে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।
সুন্দরবন ভ্রমণে কিছু পরামর্শ
করমজল ছাড়া সুন্দরবনের গহিনে অধিকাংশ জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। কিছু জায়গায় টেলিটক নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়।
» প্রয়োজনীয় ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিসপত্র সঙ্গে রাখুন।
» ভ্রমণ খরচ কমাতে চাইলে বিশেষ ছুটির দিনগুলো এড়িয়ে চলুন।
» সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি রাখুন।
» ট্যুর গাইডের কথা মেনে চলুন।
» বনে ঢোকার সময় একসঙ্গে থাকুন।
» শীতকালে গেলে ভালো মানের শীতের কাপড় নিয়ে নিন।
» সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন।
শুরু হয়েছে সুন্দরবন ভ্রমণের মৌসুম। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সুন্দরবন। ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এ বনকে জীব ও উদ্ভিদ জাদুঘর বললেও কম বলা হবে।
সুন্দরবনে বেড়ানোর উপযুক্ত সময়
নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এ সময় নদী ও সমুদ্র শান্ত থাকে বলে সুন্দরবনের প্রায় সব দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখা যায়। খুলনা ও মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছে করমজল ও হারবাড়িয়া বছরের যেকোনো সময় এক দিনেই ঘুরে দেখা যায়। তবে মূল সুন্দরবনের স্বাদ পেতে হলে বনের গহিনে যেতে হবে।
সুন্দরবনের দর্শনীয় জায়গা
সুন্দরবন বিশাল একটি অঞ্চল। বন বিভাগ থেকে এ বনের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গা ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। সুন্দরবন ঘুরে দেখা যায় খুলনা, মোংলা, শরণখোলা ও সাতক্ষীরা দিয়ে। তবে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ও দর্শনার্থী ভ্রমণ করে থাকেন খুলনা ও বাগেরহাটের মোংলা দিয়ে। এ দুটি জায়গা থেকে খুব সহজে যাওয়া যায় করমজল, হারবাড়িয়া, কচিখালি, কটকা, হিরণ পয়েন্ট ও দুবলার চর।
করমজল: মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছে করমজল। এটি মূলত বন বিভাগের হরিণ ও কুমির প্রজনন কেন্দ্র। এখানে আছে বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া কাঠের পুলের ট্রেইল, হরিণ, কুমির, বানরসহ নানান প্রজাতির বৃক্ষরাজি।
হারবাড়িয়া: মোংলা থেকে দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এখানকার মূল আকর্ষণ বনের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া কাঠের ট্রেইল। পুরো ট্রেইলটা ঘুরে আসতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগে। এখানে একটি পদ্মপুকুর ও ওয়াচ টাওয়ার আছে।
কটকা: কটকা ফরেস্ট স্টেশনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। অর্থাৎ সাগরের কোল ঘেঁষেই কটকা অভয়ারণ্য। এখানকার আকর্ষণীয় বিষয় হলো বন্য হরিণ দল। এখানেও আছে কাঠের ট্রেইল।
কটকা বিচ: কটকা পয়েন্টের ট্রেইল ধরে কিছু দূর হাঁটলে পৌঁছে যাওয়া যাবে কটকা সমুদ্রসৈকতে। বঙ্গোপসাগরের দেখা মিলবে এখানে। কটকা সি বিচ অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর। এখানে বেলাভূমিজুড়ে লাল কাঁকড়া দেখা যাবে।
হিরণ পয়েন্ট: এখানকার কাঠের তৈরি রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হরিণ, বানর, গুইসাপ ও কুমিরের দেখা পাওয়া যায়। কখনো কখনো এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারও দেখা যায়।
দুবলার চর: সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য চর এটি। এটি হিন্দুধর্মের পুণ্যস্নান, রাসমেলা এবং শুঁটকির জন্য বিখ্যাত। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজারের মতো জেলে অস্থায়ী বসতি গড়ে তোলে এখানে। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শুকানোর কাজ।
সুন্দরবন ভ্রমণের উপায়
কম খরচে এক দিনে সুন্দরবন ঘুরে দেখতে চাইলে মোংলা থেকে করমজল অথবা হারবাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখতে পারেন। মোংলা থেকে সকালে রওনা দিলে দুটো জায়গা এক দিনে ঘুরে দেখা সম্ভব। মোংলা ফেরিঘাট থেকে করমজল ভ্রমণের ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া পাওয়া যায়। শুধু করমজল ঘুরে দেখতে ভাড়া লাগবে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। ট্যুরিস্ট বোটে সর্বোচ্চ ২০ জন ভ্রমণ করতে পারবেন। আর করমজল ও হারবাড়িয়া দুই জায়গায় যেতে ভাড়া লাগবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। হারবাড়িয়া যেতে চাইলে ভালো মানের ট্যুরিস্ট বোট ঠিক করা উচিত। আর ভাড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই দরদাম করে নিতে হবে।
করমজলে প্রবেশে বন বিভাগের টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৪৬ টাকা। বিদেশি পর্যটকের জন্য ৫৭৫ টাকা। আর হারবাড়িয়া প্রবেশের টিকিট মূল্য ১৭২ টাকা। এ ছাড়া হারবাড়িয়া ঘুরতে হলে সেখানকার অফিস থেকে অনুমতি ও গাইড নিতে হবে। দুপুরের খাবার মোংলা থেকেই নিয়ে যেতে হবে।
করমজল ও হারবাড়িয়া ছাড়া সুন্দরবনের গহিনের কোনো পর্যটন কেন্দ্রে আপনি যেতে চাইলে অবশ্যই লঞ্চ নিয়ে যেতে হবে। সুন্দরবনের ভেতরে ভ্রমণ করতে চাইলে বাগেরহাট অথবা খুলনা ডিএফও (বিভাগীয় কার্যালয়) অফিস থেকে নির্ধারিত ফি দিয়ে অনুমতি ও সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে যেতে হবে। আর একসঙ্গে সবগুলো জায়গা ঘুরে দেখতে লঞ্চ ও ট্যুরিস্ট বোটের বিকল্প নেই।
নিরাপত্তা, অনুমতি, খরচ আর জটিল প্রক্রিয়ার কারণে সুন্দরবনের গহিনে ভ্রমণের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী উপায় হচ্ছে কোনো ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে যাওয়া। নির্ধারিত প্যাকেজের মধ্যে লঞ্চে ওঠার পর থেকে ট্যুর শেষ করে ঘাটে ফেরা পর্যন্ত থাকার ব্যবস্থা, তিন বেলার খাবার, দুই বেলা হালকা নাশতা, বন বিভাগের অনুমতি, নিরাপত্তারক্ষী ও গাইডসহ যাবতীয় খরচ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজ খরচ
সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজের খরচ নির্ভর করে জাহাজ ও খাবারের মান, কোন কোন জায়গা ঘুরে দেখাবে ও কত দিনের ভ্রমণ, এসবের ওপর। মোটামুটি মানের লঞ্চে ঘুরতে জনপ্রতি খরচ হবে ৭ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর বিলাসবহুল ট্যুরিস্ট লঞ্চে ভ্রমণ করতে চাইলে খরচ হবে জনপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্যাকেজগুলো সাধারণত দুই রাত তিন দিন অথবা তিন রাত চার দিনের হয়ে থাকে। ঢাকা, খুলনা ও মোংলার বিভিন্ন পর্যটন প্রতিষ্ঠান সুন্দরবনে তিন অথবা চার দিনের ভ্রমণ প্যাকেজের ব্যবস্থা করে থাকে। তবে ৩০ থেকে ৪০ জন একত্রে হলে নিজেরাই লঞ্চ ভাড়া করে ভ্রমণে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাবুর্চি ও গাইড সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। এতে খরচ বেশ খানিকটা কমে যাবে।
সুন্দরবন যাওয়ার উপায়
সুন্দরবন যাওয়ার জনপ্রিয় পথ খুলনা ও মোংলা। খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া শিপ মোংলা হয়েই সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ঢাকা থেকে খুলনা বাসে বা ট্রেনে সরাসরি যাওয়া যায়। গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে খুলনা যাওয়ার এসি ও ননএসি বাস পাওয়া যায়। ভাড়া ননএসি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
এ ছাড়া ঢাকা থেকে মোংলা যাওয়ার সরাসরি ননএসি চেয়ার কোচ আছে। এসব বাসের ভাড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। মোংলায় ভালো বাসে যেতে চাইলে খুলনা যাওয়ার বাসে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে খুলনার আগে কাটাখালীতে নেমে বাস, মাহিন্দ্রা, সিএনজি অথবা বাইকে করে ৩২ কিলোমিটার দূরে মোংলা যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
লঞ্চে করে ঘুরতে গেলে সেখানেই থাকার ব্যবস্থা থাকে। মোংলায় থাকার জন্য মোংলা ফেরিঘাটে পর্যটন করপোরেশনের একটি হোটেল আছে। মোংলা আবাসিক এলাকায় পর্যটকদের থাকার জন্য কিছু সাধারণ মানের হোটেল আছে। এ ছাড়া খুলনা নগরীতে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।
সুন্দরবন ভ্রমণে কিছু পরামর্শ
করমজল ছাড়া সুন্দরবনের গহিনে অধিকাংশ জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। কিছু জায়গায় টেলিটক নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়।
» প্রয়োজনীয় ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিসপত্র সঙ্গে রাখুন।
» ভ্রমণ খরচ কমাতে চাইলে বিশেষ ছুটির দিনগুলো এড়িয়ে চলুন।
» সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি রাখুন।
» ট্যুর গাইডের কথা মেনে চলুন।
» বনে ঢোকার সময় একসঙ্গে থাকুন।
» শীতকালে গেলে ভালো মানের শীতের কাপড় নিয়ে নিন।
» সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে