সালেহীন আরশাদী
দুর্গম হিমালয়ে নিজেকে একা আবিষ্কারের তীব্র আকাঙ্ক্ষা মাসের পর মাস পরিকল্পনার পর হিমালয়ে চলেই এলাম। প্রথম একাকী অভিযানের জন্য ঠিক করলাম হিমালয়ের অন্যতম চূড়া ইয়ালুং রিকে। এই শৃঙ্গ আরোহণ অভিযানে নিজেকে প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় ফেলব। দলের সঙ্গে থাকলে অনেক ভার ভাগাভাগি হয়ে যায়। কিন্তু এবার তো একা আছি! এমন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য যা যা লাগে, তার সবই আমাকে বইতে হচ্ছে। থাকার জন্য তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, রান্নার উপকরণ, খাবারদাবার, কী নেই সঙ্গে!
শেষ গ্রামটির পর থেকে ইয়ালুং রি চূড়া পর্যন্ত কোনো মানব বসতি নেই। এমনকি এখানে কোনো ইয়াক খারকাও নেই, যেখানে কেউ ইয়াক চরাতে আসবে। আমি চিৎকার করে ডাকলেও কেউ আমার কথা শুনবে না। বিপদে পড়লেও কেউ বাঁচাতে আসবে না। আমার দায়ভার সম্পূর্ণ আমার, একার। পৃথিবীর এমন একটি দুর্গম জায়গায় আমি সম্পূর্ণ একা! এই রোমাঞ্চকর অনুভূতি লিখে বর্ণনা করা অসম্ভব।
আমার অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল নেপালের রাজধানীর ডোলাখা অঞ্চলের বড় শহর চারিকোট থেকে। সহধর্মিণীসহ গিয়েছিলাম স্কির জন্য বিখ্যাত কালিনচক গ্রামে। সেখান থেকে ফিরে পরদিন তাকে কাঠমান্ডুর বাসে তুলে দিলাম। জরুরি কাজ চলে আসায় তাকে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে। হঠাৎ করে সম্পূর্ণ একা হয়ে গেলাম। নেপাল হিমালয়ের নানান অঞ্চলে বেশ কয়েকবার আসা হলেও এই অঞ্চলে এবারই প্রথম।
নেপালের অন্যান্য ট্রেকিং অঞ্চল থেকে চারিকোট আমার কাছে ভিন্ন রকম লাগল। পর্যটকদের আনাগোনা এখানে নেই বললেই চলে। দুদিন ধরে আমি একজনও বিদেশি পর্যটক দেখিনি। পরদিন সকালে চারিকোট থেকে লোকাল বাসে করে রোড হেডের শেষ গ্রাম চেটচেটের পথে রওনা হলাম। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে শহরে শীত চলে গেলেও যত পাহাড়ে চড়াই উঠছি, ততই ঠান্ডা বাড়ছে। দূরের উঁচু পর্বতগুলোর মাথায় এখনো সাদা বরফ জমে আছে। ঘণ্টা চারেকের মাথায় জগৎ চলে এলাম। এখানে তামাকোশি নদীর ওপর বিরাট হাইড্রো ইলেকট্রিক ড্যাম বানানো হচ্ছে। পুরো অপারেশনে যথারীতি একটি চায়নিজ প্রতিষ্ঠান।
জগৎ থেকে ঘণ্টা দুয়েক বাস চলার পর বিকেলের মধ্যে চেটচেটে পৌঁছে গেলাম। বাস যেখানে নামিয়ে দিল, তার ঠিক ডান পাশের পাহাড় থেকে বিরাট এক জলপ্রপাত নিচের তামাকোশি নদীতে বিকট শব্দে আছড়ে পড়ছে। রাস্তার দুই পাশে টিনের কয়েকটি ঝুপড়ি দেখা যাচ্ছে। এক-দুই তলা তিন-চারটি বিল্ডিংও আছে। গৌরী শংকর কনজারভেশন এরিয়ার প্রবেশপথ চেটচেট আসলে ছোট্ট একটি গ্রাম। একে গ্রাম না বলে আউটপোস্ট বলাই বোধ হয় সমীচীন হবে। এটিই যেহেতু রোলওয়ালিং উপত্যকার প্রবেশদ্বার, তাই আশপাশের গ্রাম থেকে কিছু পরিবার রাস্তায় এসে কয়েকটি দোকানঘর খুলে বসেছে। পথের শেষে দোতলা একটি গেস্টহাউসও আছে দেখতে পেলাম। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে অন্ধকার হয়ে যাবে দেখে ভেবেছিলাম, এক রাত এখানে থেকে যাই। পরে কী মনে হতে নদীর ওপারে যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করলাম।
তামাকোশি নদীর ওপর তৈরি সাসপেনশন ব্রিজটি অতিক্রম করে ওপারে যেতেই প্রথমে চোখে পড়ল একটি গুহার দেয়ালে বজ্র গুরু পদ্মসম্ভবের বিশাল এক রঙিন ম্যুরাল। যিনি হিমালয়ের এই অংশে গুরু রিনপোচে নামেই বেশি পরিচিত। গুহাটির পাশ দিয়ে খাড়াভাবে উঠে গেছে ঢালাই করা সিঁড়ি। এই সিঁড়ি দিয়ে ৭০০ মিটার চড়াইয়ের পর মিলবে পরবর্তী গ্রাম সিমিগাঁও—রোলওয়ালিং উপত্যকার প্রবেশদ্বার। লাঙল দিয়ে জমি কর্ষণের ফলে যে খাতের সৃষ্টি হয়, তিব্বতি ভাষায় এই খাতকেই বলা হয় রোলওয়ালিং। স্থানীয় বৌদ্ধরা বিশ্বাস করে, গুরু রিনপোচে হিমালয় পেরিয়ে তিব্বতে যাওয়ার সময় নিজ হাতে কর্ষণে এই উপত্যকাকে উন্মোচন করে একে বেয়ুল হিসেবে সংরক্ষণ করেছিলেন।
বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান ধারায় বেয়ুল খুব চিত্তাকর্ষক ধারণা। তিব্বতি ভাষায় বেয়ুল শব্দের অর্থ, যে জায়গা লুকিয়ে আছে। প্রাচীন আমলের বৌদ্ধদের ধর্মীয় পুস্তকে হিমালয়ের এমন কিছু রহস্যময় ও পবিত্র জায়গার কথা উল্লেখ আছে, যা পার্থিব জগৎ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এই জায়গাগুলো ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিকতার দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নিবেদিতরা পৃথিবীর বিশৃঙ্খলা ও কোলাহল থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে আধ্যাত্মিক ধ্যান-সাধনার জন্য আশ্রয় নিতে পারেন। কথিত আছে, হিমালয়জুড়ে গুরু রিনপোচে এমন আটটি বেয়ুল বা সংরক্ষিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রোলওয়ালিং এমনই একটি বেয়ুল।
সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে ভাবছিলাম এই সব কিংবদন্তির পেছনের গল্প নিয়ে। এই উপত্যকার অবস্থান সত্যিকার অর্থেই এমন এক জায়গায়, যা লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে থাকবে। একদিকে লাংতাং, অন্যদিকে এভারেস্ট ম্যাসিকের মাঝে রোলওয়ালিং উপত্যকা যেন কোনো কারণে নিজেকে লুকিয়েই রেখেছে। পরিকল্পনা করার সময় স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম, এত সংকীর্ণ পথ দিয়ে যাওয়ার পর হিমালয়ের ঢালে এমন বিস্তৃত একটি খোলা ময়দানের মতো উপত্যকা থাকতে পারে, তা ঠিক বিশ্বাস হয় না।
সিঁড়ি ভেঙে ২০০ মিটার চড়াইয়ের পর শুরু হলো রডোডেনড্রনের বন। সিঁড়ির দুই পাশে গাছজুড়ে থোকা থোকা লাল ফুল ফুটে আছে। এই লালি গুরাস বা রডোডেনড্রন নেপালের জাতীয় ফুল। বাংলায় একে রোদরঞ্জনও বলে। রডোডেনড্রনের ফাঁকে ফাঁকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী ওক ও জুনিপারগাছ। এদের এবড়োখেবড়ো পাকানো ডানপালা ও কাণ্ডগুলো বাদামি রঙের মসের কার্পেট দিয়ে মোড়ানো। জুন-জুলাইয়ের দিকে বর্ষা শুরু হলে মসের এই কার্পেটগুলোই আবার উজ্জ্বল সবুজ হয়ে যাবে। আরও ঘণ্টাখানেক চড়াই ভেঙে গ্রামের প্রথম ঘরটায় যখন পৌঁছালাম, ততক্ষণে চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেছে। আরও প্রায় ১০০ মিটার ওপরে রিজলাইনে গ্রামের শেষ ঘরটিতে আমাকে যেতে হবে। অভিযাত্রীদের জন্য ওখানেই শুধু থাকার ব্যবস্থা আছে। অন্ধকারে পথ চলতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না; কারণ, পুরো পথটাই কংক্রিটের ঢালাই করা।
অবশেষে আরও আধা ঘণ্টা পর গ্রামের শেষ মাথায় কোচি শেরপার ট্যুরিস্ট লজে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখি পরিবারের সবাই খেতে বসেছে। দেরি না করে ঝটপট তাঁদের সঙ্গে বসে পড়লাম। ভাত, ডাল, রাইশাক আর আলুর উমদা তরকারি দিয়ে উদরপূর্তির পর শরীর ছেড়ে দিল। লজের দোতলা ঘরে গিয়ে কম্বলের নিচে ঢুকে পড়লাম। (অসমাপ্ত)
দুর্গম হিমালয়ে নিজেকে একা আবিষ্কারের তীব্র আকাঙ্ক্ষা মাসের পর মাস পরিকল্পনার পর হিমালয়ে চলেই এলাম। প্রথম একাকী অভিযানের জন্য ঠিক করলাম হিমালয়ের অন্যতম চূড়া ইয়ালুং রিকে। এই শৃঙ্গ আরোহণ অভিযানে নিজেকে প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় ফেলব। দলের সঙ্গে থাকলে অনেক ভার ভাগাভাগি হয়ে যায়। কিন্তু এবার তো একা আছি! এমন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য যা যা লাগে, তার সবই আমাকে বইতে হচ্ছে। থাকার জন্য তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, রান্নার উপকরণ, খাবারদাবার, কী নেই সঙ্গে!
শেষ গ্রামটির পর থেকে ইয়ালুং রি চূড়া পর্যন্ত কোনো মানব বসতি নেই। এমনকি এখানে কোনো ইয়াক খারকাও নেই, যেখানে কেউ ইয়াক চরাতে আসবে। আমি চিৎকার করে ডাকলেও কেউ আমার কথা শুনবে না। বিপদে পড়লেও কেউ বাঁচাতে আসবে না। আমার দায়ভার সম্পূর্ণ আমার, একার। পৃথিবীর এমন একটি দুর্গম জায়গায় আমি সম্পূর্ণ একা! এই রোমাঞ্চকর অনুভূতি লিখে বর্ণনা করা অসম্ভব।
আমার অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল নেপালের রাজধানীর ডোলাখা অঞ্চলের বড় শহর চারিকোট থেকে। সহধর্মিণীসহ গিয়েছিলাম স্কির জন্য বিখ্যাত কালিনচক গ্রামে। সেখান থেকে ফিরে পরদিন তাকে কাঠমান্ডুর বাসে তুলে দিলাম। জরুরি কাজ চলে আসায় তাকে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে। হঠাৎ করে সম্পূর্ণ একা হয়ে গেলাম। নেপাল হিমালয়ের নানান অঞ্চলে বেশ কয়েকবার আসা হলেও এই অঞ্চলে এবারই প্রথম।
নেপালের অন্যান্য ট্রেকিং অঞ্চল থেকে চারিকোট আমার কাছে ভিন্ন রকম লাগল। পর্যটকদের আনাগোনা এখানে নেই বললেই চলে। দুদিন ধরে আমি একজনও বিদেশি পর্যটক দেখিনি। পরদিন সকালে চারিকোট থেকে লোকাল বাসে করে রোড হেডের শেষ গ্রাম চেটচেটের পথে রওনা হলাম। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে শহরে শীত চলে গেলেও যত পাহাড়ে চড়াই উঠছি, ততই ঠান্ডা বাড়ছে। দূরের উঁচু পর্বতগুলোর মাথায় এখনো সাদা বরফ জমে আছে। ঘণ্টা চারেকের মাথায় জগৎ চলে এলাম। এখানে তামাকোশি নদীর ওপর বিরাট হাইড্রো ইলেকট্রিক ড্যাম বানানো হচ্ছে। পুরো অপারেশনে যথারীতি একটি চায়নিজ প্রতিষ্ঠান।
জগৎ থেকে ঘণ্টা দুয়েক বাস চলার পর বিকেলের মধ্যে চেটচেটে পৌঁছে গেলাম। বাস যেখানে নামিয়ে দিল, তার ঠিক ডান পাশের পাহাড় থেকে বিরাট এক জলপ্রপাত নিচের তামাকোশি নদীতে বিকট শব্দে আছড়ে পড়ছে। রাস্তার দুই পাশে টিনের কয়েকটি ঝুপড়ি দেখা যাচ্ছে। এক-দুই তলা তিন-চারটি বিল্ডিংও আছে। গৌরী শংকর কনজারভেশন এরিয়ার প্রবেশপথ চেটচেট আসলে ছোট্ট একটি গ্রাম। একে গ্রাম না বলে আউটপোস্ট বলাই বোধ হয় সমীচীন হবে। এটিই যেহেতু রোলওয়ালিং উপত্যকার প্রবেশদ্বার, তাই আশপাশের গ্রাম থেকে কিছু পরিবার রাস্তায় এসে কয়েকটি দোকানঘর খুলে বসেছে। পথের শেষে দোতলা একটি গেস্টহাউসও আছে দেখতে পেলাম। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে অন্ধকার হয়ে যাবে দেখে ভেবেছিলাম, এক রাত এখানে থেকে যাই। পরে কী মনে হতে নদীর ওপারে যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করলাম।
তামাকোশি নদীর ওপর তৈরি সাসপেনশন ব্রিজটি অতিক্রম করে ওপারে যেতেই প্রথমে চোখে পড়ল একটি গুহার দেয়ালে বজ্র গুরু পদ্মসম্ভবের বিশাল এক রঙিন ম্যুরাল। যিনি হিমালয়ের এই অংশে গুরু রিনপোচে নামেই বেশি পরিচিত। গুহাটির পাশ দিয়ে খাড়াভাবে উঠে গেছে ঢালাই করা সিঁড়ি। এই সিঁড়ি দিয়ে ৭০০ মিটার চড়াইয়ের পর মিলবে পরবর্তী গ্রাম সিমিগাঁও—রোলওয়ালিং উপত্যকার প্রবেশদ্বার। লাঙল দিয়ে জমি কর্ষণের ফলে যে খাতের সৃষ্টি হয়, তিব্বতি ভাষায় এই খাতকেই বলা হয় রোলওয়ালিং। স্থানীয় বৌদ্ধরা বিশ্বাস করে, গুরু রিনপোচে হিমালয় পেরিয়ে তিব্বতে যাওয়ার সময় নিজ হাতে কর্ষণে এই উপত্যকাকে উন্মোচন করে একে বেয়ুল হিসেবে সংরক্ষণ করেছিলেন।
বৌদ্ধধর্মের বজ্রযান ধারায় বেয়ুল খুব চিত্তাকর্ষক ধারণা। তিব্বতি ভাষায় বেয়ুল শব্দের অর্থ, যে জায়গা লুকিয়ে আছে। প্রাচীন আমলের বৌদ্ধদের ধর্মীয় পুস্তকে হিমালয়ের এমন কিছু রহস্যময় ও পবিত্র জায়গার কথা উল্লেখ আছে, যা পার্থিব জগৎ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এই জায়গাগুলো ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিকতার দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নিবেদিতরা পৃথিবীর বিশৃঙ্খলা ও কোলাহল থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে আধ্যাত্মিক ধ্যান-সাধনার জন্য আশ্রয় নিতে পারেন। কথিত আছে, হিমালয়জুড়ে গুরু রিনপোচে এমন আটটি বেয়ুল বা সংরক্ষিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রোলওয়ালিং এমনই একটি বেয়ুল।
সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে ভাবছিলাম এই সব কিংবদন্তির পেছনের গল্প নিয়ে। এই উপত্যকার অবস্থান সত্যিকার অর্থেই এমন এক জায়গায়, যা লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে থাকবে। একদিকে লাংতাং, অন্যদিকে এভারেস্ট ম্যাসিকের মাঝে রোলওয়ালিং উপত্যকা যেন কোনো কারণে নিজেকে লুকিয়েই রেখেছে। পরিকল্পনা করার সময় স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম, এত সংকীর্ণ পথ দিয়ে যাওয়ার পর হিমালয়ের ঢালে এমন বিস্তৃত একটি খোলা ময়দানের মতো উপত্যকা থাকতে পারে, তা ঠিক বিশ্বাস হয় না।
সিঁড়ি ভেঙে ২০০ মিটার চড়াইয়ের পর শুরু হলো রডোডেনড্রনের বন। সিঁড়ির দুই পাশে গাছজুড়ে থোকা থোকা লাল ফুল ফুটে আছে। এই লালি গুরাস বা রডোডেনড্রন নেপালের জাতীয় ফুল। বাংলায় একে রোদরঞ্জনও বলে। রডোডেনড্রনের ফাঁকে ফাঁকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী ওক ও জুনিপারগাছ। এদের এবড়োখেবড়ো পাকানো ডানপালা ও কাণ্ডগুলো বাদামি রঙের মসের কার্পেট দিয়ে মোড়ানো। জুন-জুলাইয়ের দিকে বর্ষা শুরু হলে মসের এই কার্পেটগুলোই আবার উজ্জ্বল সবুজ হয়ে যাবে। আরও ঘণ্টাখানেক চড়াই ভেঙে গ্রামের প্রথম ঘরটায় যখন পৌঁছালাম, ততক্ষণে চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেছে। আরও প্রায় ১০০ মিটার ওপরে রিজলাইনে গ্রামের শেষ ঘরটিতে আমাকে যেতে হবে। অভিযাত্রীদের জন্য ওখানেই শুধু থাকার ব্যবস্থা আছে। অন্ধকারে পথ চলতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না; কারণ, পুরো পথটাই কংক্রিটের ঢালাই করা।
অবশেষে আরও আধা ঘণ্টা পর গ্রামের শেষ মাথায় কোচি শেরপার ট্যুরিস্ট লজে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখি পরিবারের সবাই খেতে বসেছে। দেরি না করে ঝটপট তাঁদের সঙ্গে বসে পড়লাম। ভাত, ডাল, রাইশাক আর আলুর উমদা তরকারি দিয়ে উদরপূর্তির পর শরীর ছেড়ে দিল। লজের দোতলা ঘরে গিয়ে কম্বলের নিচে ঢুকে পড়লাম। (অসমাপ্ত)
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে