মো. আরাফাত হোসেন
হিজল বনের মধ্যে আঁকাবাঁকা পথে এগিয়ে যাওয়া অগভীর জলধারা ঠিক যেন শিল্পীর রংতুলিতে ভেসে ওঠা এক অন্য জগৎ। একে দেখতে প্রতিবছর সারা দেশ থেকে ছুটে আসে হাজারো মানুষ। বোটের ছাদে বসে রাতের আকাশের তারা দেখা কিংবা দিনের বেলা বৃষ্টিতে ভেজা অথবা গোধূলিলগ্ন উপভোগ করা—সবই পাওয়া যাবে এ জায়গায়। বলছি, ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিস্তৃত দেশের অন্যতম সুন্দর জলাধার টাঙ্গুয়ার হাওরের কথা।
পানির ওপর পানি পড়ে! বিষয়টি একটু অন্য রকম শোনালেও সত্যি। ঈশান কোণে ঘনকালো মেঘ, দমকা হাওয়া, হালকা থেকে ঘন হতে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা, থইথই পানির ওপর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার ঝংকার, পানির ওপর নিজের ছায়া দেখতে দেখতে বৃষ্টিতে ভেজা-বর্ষার এসব আয়োজন পাওয়া যাবে একমাত্র হাওরের বুকে। অথবা কিছুই হয়তো করলেন না। টানা বৃষ্টিতে বোটের জানালার পাশে চুপচাপ বসে রইলেন বাইরের দিকে চোখ রেখে।
নবীন উদ্যোক্তাদের হাত ধরে হাওরের এখানে গড়ে উঠেছে পর্যটনের এসব আয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে সীমিতভাবে হাউসবোটে করে হাওর ভ্রমণের আয়োজন আছে এখানে। আছে রাত্রি যাপনসহ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। হাওর ভ্রমণের মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখানে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের মুগ্ধতার পাশাপাশি পাওয়া যায় সুস্বাদু খাবার।
টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রতিটি বোটে আছে অতিথিদের থাকার জন্য পৃথক কেবিন, উন্নত মানের ওয়াশরুম, খাওয়াদাওয়া এবং আড্ডা দেওয়ার জন্য লবি। এ ছাড়া বোটের ছাদে আছে বসার ব্যবস্থা। তাই আপনি পরিবারের যেকোনো বয়সী সদস্যকে নিয়ে যেতে পারেন টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে। নিরাপত্তা হিসেবে থাকছে প্রতিটি বোটে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট। ফলে সাঁতার না জানলেও হাওরের নীলাভ জলরাশির বুকে ভেসে থাকা যায়। এ ছাড়া বোটগুলো যেসব এলাকায় রাতে থাকে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত থাকেন। কোনো শব্দ বা পরিবেশদূষণ যাতে না হয়, তানিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলে। তাই টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ এখন নিরাপদ।
যেমন হবে ভ্রমণ পরিকল্পনা
তিন দিনের ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে পারেন। রাত ১১টায় ঢাকা থেকে নন-এসি বা এসি বাসে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা। পরদিন সকালে পৌঁছে যাবেন সুনামগঞ্জ। সেখান থেকে হাউসবোটে ভ্রমণ শুরু। লাক্সারি হাউসবোটে থাকবে দুই দিন থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। প্রথম দিনে ঘুরে ফেলতে পারবেন ওয়াচ টাওয়ার, নীলাদ্রি লেক। রাতে থাকবেন নীলাদ্রি লেকের পাশে টেকেরঘাটে। পরের দিন সকালে ঘুরতে পারবেন যাদুকাটা নদী, বারিক্কাটিলা আর শিমুলবাগান। সেখানে পানিতে দাপাদাপি করে দুপুরের খাবার খেয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসতে পারবেন সুনামগঞ্জে। রাতের বাস ধরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে পরদিন ভোর ৫টার পরে ঢাকায় পৌঁছে যাবেন।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে কয়েকটি কোম্পানির বাস ছেড়ে যায়। এ ছাড়া মহাখালী থেকেও পাওয়া যাবে এসি বা নন-এসি বাস। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে পৌঁছাতে বাসে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বাস পাওয়া যায়। এসি বা নন-এসি ভেদে ৬০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা টিকিটের দাম।
রেলপথে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে হবে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বা বাসে সুনামগঞ্জ। সময় লাগবে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে লাগবে আরও দুই ঘণ্টা। উপবন এক্সপ্রেস ধরে সিলেট যাওয়া যায়। এটি বুধবার চলাচল করে না। ভাড়া শোভন ২৬৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩২০ টাকা, ফার্স্ট সিট ৪২৫ টাকা, ফার্স্ট বার্থ ৬৯০ টাকা এবং এসি বার্থ ১ হাজার ১৪৯ টাকা। এ ছাড়া প্লেনেও সিলেট হয়ে সুনামগঞ্জ যাওয়া যায়।
হাউসবোট ভাড়া করবেন কীভাবে
ভ্রমণকারী সংখ্যা বেশি হলে পুরো হাউসবোট ভাড়া নেওয়া যায়। হাউসবোটগুলো সুনামগঞ্জ সদর আর তাহিরপুর থেকে ছাড়ে। বেশির ভাগ হাউসবোটের ফেসবুক পেজ আছে। সেখান থেকে তাদের বুকিং নম্বর নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আগেই নৌকা বুক করে ফেলুন। যাত্রার দুই বা তিন সপ্তাহ আগে বুক করলে নিজের পছন্দের তারিখে সিট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। হাউসবোটভেদে স্ট্যান্ডার্ড কাপল প্যাকেজ ৫ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকা। এবং সিঙ্গেল প্যাকেজ ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। তবে নৌকার সার্ভিসভেদে এই দাম পরিবর্তন হয়।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, বেঙ্গল ট্রেকার্স
হিজল বনের মধ্যে আঁকাবাঁকা পথে এগিয়ে যাওয়া অগভীর জলধারা ঠিক যেন শিল্পীর রংতুলিতে ভেসে ওঠা এক অন্য জগৎ। একে দেখতে প্রতিবছর সারা দেশ থেকে ছুটে আসে হাজারো মানুষ। বোটের ছাদে বসে রাতের আকাশের তারা দেখা কিংবা দিনের বেলা বৃষ্টিতে ভেজা অথবা গোধূলিলগ্ন উপভোগ করা—সবই পাওয়া যাবে এ জায়গায়। বলছি, ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিস্তৃত দেশের অন্যতম সুন্দর জলাধার টাঙ্গুয়ার হাওরের কথা।
পানির ওপর পানি পড়ে! বিষয়টি একটু অন্য রকম শোনালেও সত্যি। ঈশান কোণে ঘনকালো মেঘ, দমকা হাওয়া, হালকা থেকে ঘন হতে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা, থইথই পানির ওপর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার ঝংকার, পানির ওপর নিজের ছায়া দেখতে দেখতে বৃষ্টিতে ভেজা-বর্ষার এসব আয়োজন পাওয়া যাবে একমাত্র হাওরের বুকে। অথবা কিছুই হয়তো করলেন না। টানা বৃষ্টিতে বোটের জানালার পাশে চুপচাপ বসে রইলেন বাইরের দিকে চোখ রেখে।
নবীন উদ্যোক্তাদের হাত ধরে হাওরের এখানে গড়ে উঠেছে পর্যটনের এসব আয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে সীমিতভাবে হাউসবোটে করে হাওর ভ্রমণের আয়োজন আছে এখানে। আছে রাত্রি যাপনসহ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। হাওর ভ্রমণের মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখানে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের মুগ্ধতার পাশাপাশি পাওয়া যায় সুস্বাদু খাবার।
টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রতিটি বোটে আছে অতিথিদের থাকার জন্য পৃথক কেবিন, উন্নত মানের ওয়াশরুম, খাওয়াদাওয়া এবং আড্ডা দেওয়ার জন্য লবি। এ ছাড়া বোটের ছাদে আছে বসার ব্যবস্থা। তাই আপনি পরিবারের যেকোনো বয়সী সদস্যকে নিয়ে যেতে পারেন টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে। নিরাপত্তা হিসেবে থাকছে প্রতিটি বোটে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট। ফলে সাঁতার না জানলেও হাওরের নীলাভ জলরাশির বুকে ভেসে থাকা যায়। এ ছাড়া বোটগুলো যেসব এলাকায় রাতে থাকে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত থাকেন। কোনো শব্দ বা পরিবেশদূষণ যাতে না হয়, তানিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলে। তাই টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ এখন নিরাপদ।
যেমন হবে ভ্রমণ পরিকল্পনা
তিন দিনের ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে পারেন। রাত ১১টায় ঢাকা থেকে নন-এসি বা এসি বাসে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা। পরদিন সকালে পৌঁছে যাবেন সুনামগঞ্জ। সেখান থেকে হাউসবোটে ভ্রমণ শুরু। লাক্সারি হাউসবোটে থাকবে দুই দিন থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। প্রথম দিনে ঘুরে ফেলতে পারবেন ওয়াচ টাওয়ার, নীলাদ্রি লেক। রাতে থাকবেন নীলাদ্রি লেকের পাশে টেকেরঘাটে। পরের দিন সকালে ঘুরতে পারবেন যাদুকাটা নদী, বারিক্কাটিলা আর শিমুলবাগান। সেখানে পানিতে দাপাদাপি করে দুপুরের খাবার খেয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসতে পারবেন সুনামগঞ্জে। রাতের বাস ধরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে পরদিন ভোর ৫টার পরে ঢাকায় পৌঁছে যাবেন।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে কয়েকটি কোম্পানির বাস ছেড়ে যায়। এ ছাড়া মহাখালী থেকেও পাওয়া যাবে এসি বা নন-এসি বাস। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে পৌঁছাতে বাসে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বাস পাওয়া যায়। এসি বা নন-এসি ভেদে ৬০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা টিকিটের দাম।
রেলপথে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে হবে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বা বাসে সুনামগঞ্জ। সময় লাগবে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে লাগবে আরও দুই ঘণ্টা। উপবন এক্সপ্রেস ধরে সিলেট যাওয়া যায়। এটি বুধবার চলাচল করে না। ভাড়া শোভন ২৬৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩২০ টাকা, ফার্স্ট সিট ৪২৫ টাকা, ফার্স্ট বার্থ ৬৯০ টাকা এবং এসি বার্থ ১ হাজার ১৪৯ টাকা। এ ছাড়া প্লেনেও সিলেট হয়ে সুনামগঞ্জ যাওয়া যায়।
হাউসবোট ভাড়া করবেন কীভাবে
ভ্রমণকারী সংখ্যা বেশি হলে পুরো হাউসবোট ভাড়া নেওয়া যায়। হাউসবোটগুলো সুনামগঞ্জ সদর আর তাহিরপুর থেকে ছাড়ে। বেশির ভাগ হাউসবোটের ফেসবুক পেজ আছে। সেখান থেকে তাদের বুকিং নম্বর নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আগেই নৌকা বুক করে ফেলুন। যাত্রার দুই বা তিন সপ্তাহ আগে বুক করলে নিজের পছন্দের তারিখে সিট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। হাউসবোটভেদে স্ট্যান্ডার্ড কাপল প্যাকেজ ৫ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকা। এবং সিঙ্গেল প্যাকেজ ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। তবে নৌকার সার্ভিসভেদে এই দাম পরিবর্তন হয়।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, বেঙ্গল ট্রেকার্স
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে