মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
মস্তাননগর রেললাইন পার হয়ে আরও দক্ষিণে সোনাপাহাড় গ্রামের দিকে এগোতে থাকি। সেখানেই কোথাও একটি খুম আছে। এখন সেটাই আমাদের গন্তব্য।
যেতে যেতে বুনো পথে ঢুকে পড়ি। নীরব-নিস্তব্ধ সরু পথে পাতা ঝরার শব্দ পাই। পথটুকু পেরোনোর পর চোখ আটকে গেল দুই পাহাড়ের মাঝখানের ঝিরিপথে। পাহাড় দুটো খাড়া হয়ে উঠে গেছে সেখানে। তার মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে হিম হিম ঠান্ডা পানি। সেটাই খুম। বাতাসও বেশ ঠান্ডা এখানে, সচরাচর এ রকম হাওয়া পাহাড়ে মেলে না।
অপ্রত্যাশিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মোহে পড়ে আমরা খুমে নেমে পড়লাম। তারপর মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগোতে থাকলাম। লক্ষ্য একটাই, খুমের শেষ পর্যন্ত দেখা। যতই সামনের দিকে যেতে থাকি, ততই যেন মুগ্ধতা আচ্ছন্ন করে। কখনো কখনো খুমের পথ এত সরু, নিজের দেহটাও ঠিকমতো ঢুকবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ছি। সরু পথ দিয়ে এগোনোর পরেই নতুন কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্যে চোখ আটকে যায়।
সোনাপাহাড় আকৃতি ও প্রাকৃতিকভাবেই দারুণ এক পাহাড়। প্রায় দেড় ঘণ্টা চলার পর দেখা হলো স্থানীয় কয়েকজন তরুণের সঙ্গে। তাঁরা খুম থেকে চিংড়ি ধরে। নামমাত্র মূল্যে কিছু চিংড়ি কিনে নিলাম। পাহাড়ি ঝিরির কালো চিংড়ি। বেশ বড়সড়। আমাদের এক বন্ধু আগুন জ্বালিয়ে দিল। কাঠিতে গেঁথে ঝিরির চিংড়ি পুড়িয়ে খাওয়ার আলাদা এক মজা আছে। কুচকুচে কালো চিংড়িগুলো আগুনে ঝলসানোর পর লাল হয়ে যায়। স্বাদ দুর্দান্ত। খাওয়াদাওয়া শেষ হলে চিংড়িশিকারি তরুণদের দু-একজন খুমের গভীরে যেতে নিষেধ করল। কিন্তু আমাদের এগোতেই হবে। ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দুই পাহাড়ের মাঝে প্রশস্ত এক পথে ঢুকে গেলাম। এ পাশটায় খুম বেশ গভীর। আবার সাঁতার কেটে যাওয়ার মতো প্রশস্ত নয়। অনেক পাহাড়ি বাঁক। এপাশ থেকে ওপাশের কিছুই দেখা যায় না। গুল্লাআলী খুমে প্রবেশের আসল মজাটা মনে হয় এখান থেকেই শুরু হয়।
খুমের নামটা যে গুল্লাআলী, তখনো জানা ছিল না। নিজেদের মধ্যে সলাপরামর্শ করে, দুই পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে পা ফেলে এগোতে শুরু করলাম। পা পিছলে গেলেই ভয়ানক বিপদ। যখনই মনে হয়েছে এই বাঁকের পর আর যাওয়া যাবে না, তখনই নতুন উদ্যমে দেহটা কাত-চিত করে এগিয়ে গিয়েছি। কখনোবা লিকলিকে শরীরের গাইডকে আগে পাঠিয়ে নিশ্চিত হয়েছি। যেতে যেতে কানে ভেসে আসে পানির কলকল শব্দ।
জায়গাটা দিনদুপুরেই প্রায় অন্ধকার। পাহাড়ের আকৃতিও বিশাল। বেশ রোমাঞ্চকর পরিবেশ। প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি নয়নাভিরাম। যেতে যেতে একসময় পাহাড়ের পানির ধারা স্পষ্ট হয়। আরও সামনে যেতে চাই। কিন্তু প্রকৃতির আপন খেয়ালেই পথ হয়েছে বন্ধ। আর এগোনোর সুযোগ না থাকায় ফিরতি পথ ধরলাম।
সতর্কতা
সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নেবেন। ভালো মানের ট্রেকিং উপযোগী জুতা বা স্যান্ডেল পরে যাবেন। খাওয়ার পানি, চকলেট ও পরিমাণমতো শুকনা খাবার সঙ্গে রাখবেন। দিনের আলো থাকতেই ফিরতি পথ ধরবেন।
যোগাযোগ
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা যেকোনো গাড়িতে গিয়ে নেমে যেতে হবে মস্তাননগর। সেখান থেকে সোনাপাহাড় গ্রাম পেরিয়ে গুল্লাআলী খুম। নির্বিঘ্ন ভ্রমণের জন্য গ্রাম থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিতে হবে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে।
মস্তাননগর রেললাইন পার হয়ে আরও দক্ষিণে সোনাপাহাড় গ্রামের দিকে এগোতে থাকি। সেখানেই কোথাও একটি খুম আছে। এখন সেটাই আমাদের গন্তব্য।
যেতে যেতে বুনো পথে ঢুকে পড়ি। নীরব-নিস্তব্ধ সরু পথে পাতা ঝরার শব্দ পাই। পথটুকু পেরোনোর পর চোখ আটকে গেল দুই পাহাড়ের মাঝখানের ঝিরিপথে। পাহাড় দুটো খাড়া হয়ে উঠে গেছে সেখানে। তার মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে হিম হিম ঠান্ডা পানি। সেটাই খুম। বাতাসও বেশ ঠান্ডা এখানে, সচরাচর এ রকম হাওয়া পাহাড়ে মেলে না।
অপ্রত্যাশিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মোহে পড়ে আমরা খুমে নেমে পড়লাম। তারপর মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগোতে থাকলাম। লক্ষ্য একটাই, খুমের শেষ পর্যন্ত দেখা। যতই সামনের দিকে যেতে থাকি, ততই যেন মুগ্ধতা আচ্ছন্ন করে। কখনো কখনো খুমের পথ এত সরু, নিজের দেহটাও ঠিকমতো ঢুকবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ছি। সরু পথ দিয়ে এগোনোর পরেই নতুন কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্যে চোখ আটকে যায়।
সোনাপাহাড় আকৃতি ও প্রাকৃতিকভাবেই দারুণ এক পাহাড়। প্রায় দেড় ঘণ্টা চলার পর দেখা হলো স্থানীয় কয়েকজন তরুণের সঙ্গে। তাঁরা খুম থেকে চিংড়ি ধরে। নামমাত্র মূল্যে কিছু চিংড়ি কিনে নিলাম। পাহাড়ি ঝিরির কালো চিংড়ি। বেশ বড়সড়। আমাদের এক বন্ধু আগুন জ্বালিয়ে দিল। কাঠিতে গেঁথে ঝিরির চিংড়ি পুড়িয়ে খাওয়ার আলাদা এক মজা আছে। কুচকুচে কালো চিংড়িগুলো আগুনে ঝলসানোর পর লাল হয়ে যায়। স্বাদ দুর্দান্ত। খাওয়াদাওয়া শেষ হলে চিংড়িশিকারি তরুণদের দু-একজন খুমের গভীরে যেতে নিষেধ করল। কিন্তু আমাদের এগোতেই হবে। ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দুই পাহাড়ের মাঝে প্রশস্ত এক পথে ঢুকে গেলাম। এ পাশটায় খুম বেশ গভীর। আবার সাঁতার কেটে যাওয়ার মতো প্রশস্ত নয়। অনেক পাহাড়ি বাঁক। এপাশ থেকে ওপাশের কিছুই দেখা যায় না। গুল্লাআলী খুমে প্রবেশের আসল মজাটা মনে হয় এখান থেকেই শুরু হয়।
খুমের নামটা যে গুল্লাআলী, তখনো জানা ছিল না। নিজেদের মধ্যে সলাপরামর্শ করে, দুই পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে পা ফেলে এগোতে শুরু করলাম। পা পিছলে গেলেই ভয়ানক বিপদ। যখনই মনে হয়েছে এই বাঁকের পর আর যাওয়া যাবে না, তখনই নতুন উদ্যমে দেহটা কাত-চিত করে এগিয়ে গিয়েছি। কখনোবা লিকলিকে শরীরের গাইডকে আগে পাঠিয়ে নিশ্চিত হয়েছি। যেতে যেতে কানে ভেসে আসে পানির কলকল শব্দ।
জায়গাটা দিনদুপুরেই প্রায় অন্ধকার। পাহাড়ের আকৃতিও বিশাল। বেশ রোমাঞ্চকর পরিবেশ। প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি নয়নাভিরাম। যেতে যেতে একসময় পাহাড়ের পানির ধারা স্পষ্ট হয়। আরও সামনে যেতে চাই। কিন্তু প্রকৃতির আপন খেয়ালেই পথ হয়েছে বন্ধ। আর এগোনোর সুযোগ না থাকায় ফিরতি পথ ধরলাম।
সতর্কতা
সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নেবেন। ভালো মানের ট্রেকিং উপযোগী জুতা বা স্যান্ডেল পরে যাবেন। খাওয়ার পানি, চকলেট ও পরিমাণমতো শুকনা খাবার সঙ্গে রাখবেন। দিনের আলো থাকতেই ফিরতি পথ ধরবেন।
যোগাযোগ
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা যেকোনো গাড়িতে গিয়ে নেমে যেতে হবে মস্তাননগর। সেখান থেকে সোনাপাহাড় গ্রাম পেরিয়ে গুল্লাআলী খুম। নির্বিঘ্ন ভ্রমণের জন্য গ্রাম থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিতে হবে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে