জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
দেশে বর্ষায় ভ্রমণের যে গন্তব্যগুলো এখন জনপ্রিয়, এর মধ্যে অন্যতম সুনামগঞ্জ। চারদিকে থইথই পানি, করচগাছ, হাওর, লেক, ঐতিহাসিক জায়গা—সবই আছে এখানে।
টাঙ্গুয়ার হাওর
‘নয় কুড়ি কান্দা ছয় কুড়ি বিল’ হিসেবে পরিচিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর। কান্দাভর্তি হাওরে রয়েছে সারি সারি হিজল ও করচগাছ এবং নলখাগড়ার বন। একদিকে মেঘালয় পাহাড়। বাকি তিন দিকে তিনটি উপজেলা তাহিরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা। ৫১টি বিল আর ৮৮টি গ্রামবেষ্টিত টাঙ্গুয়ার হাওরের আয়তন বর্ষায় ও হেমন্তে বাড়ে-কমে। হাওরের দৈর্ঘ্য ১১ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৭ কিলোমিটার। বর্ষায় এর আয়তন বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার একরের বেশি। হেমন্তে তা নেমে আসে প্রায় ৭ হাজার একরে। এই হাওরে রয়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির গাছগাছালি। ছয় কুড়ি বিলের কারণেই টাঙ্গুয়া ‘মাদার ফিশারিজ’ হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের ১ হাজার ৩১টি রামসার সাইটের মধ্যে টাঙ্গুয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট। বর্ষা ও হেমন্ত দুই ঋতুতেই টাঙ্গুয়া আকর্ষণীয়। বর্ষায় জল থইথই হাওরকে মনে হয় সাগর। চার বছর ধরে হাওরে হাউস বোটসহ নানান ধরনের সজ্জিত ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে হাওর ভ্রমণ এখন অনেক সহজ।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, মহাখালী ও উত্তরা থেকে বিভিন্ন পরিবহন সংস্থার বাসে সুনামগঞ্জ যাওয়া যায়। বাস ভাড়া এখন প্রায় ৮০০ টাকা। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতুতে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মোটরসাইকেলে যেতে হবে তাহিরপুর। সময় লাগবে এক ঘণ্টা। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১০০ টাকা। তারপর পছন্দমতো নৌকায় করে ঘুরে বেড়াতে পারবেন টাঙ্গুয়ার হাওর। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়ে থাকে। সেগুলোর খোঁজ করেও যেতে পারেন।
রূপের নদী যাদুকাটা
সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী যাদুকাটাকে বলা হয় রূপের নদী। সকালের স্রোত-ঢেউহীন এই নদীর মৌনতা সীমান্ত ছুঁয়ে আসা পাহাড়ি ঠান্ডা বাতাসে এক অন্য রকম আবহ তৈরি করে।স্বচ্ছ পানির এ নদীর তলদেশ পর্যন্ত দেখা যায়।
খাসিয়া পাহাড় থেকে যাদুকাটা নদীর উৎপত্তি। এই নদী এলাকার লোকদের জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত। বারো মাসই নদীটি থেকে বারকি শ্রমিকেরা বালু ও পাথর আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখানে আছে বারেকের টিলা। খাড়া এই টিলার নিচ দিয়ে বয়ে চলছে রূপের নদী যাদুকাটা। তাহিরপুরের বারেকের টিলা বা বারিক্কার টিলাও একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট।
নীলাদ্রি বা শহীদ সিরাজ লেক
নীলাদ্রি হচ্ছে অনেক পানির টিলা আর পাহাড়ের সমারোহ, যার একপাশে রয়েছে নীল স্বচ্ছ লেক। আবার সেই লেকের মাঝখানেও আছে ছোট ছোট টিলা। অদূরে ভারত সীমান্তের সুউচ্চ সবুজ পাহাড়। নীলাদ্রি লেকের স্বচ্ছ পানিতে গোসল করা যাবে। পাহাড়-টিলা আর লেকের স্বচ্ছ পানির প্রাকৃতিক দৃশ্য দারুণ অনুভূতি দেবে। নীলাদ্রি লেকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা ভাড়া করতে হবে।
তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে ট্রলারে চেপেও নীলাদ্রি যাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ট্রলারেই রাত যাপন করতে হবে। ট্রলারে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
যেভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেতে হবে সুনামগঞ্জ। শহরের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে টেকেরঘাট যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল ভাড়া পাওয়া যাবে। রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। যাত্রাপথে যাদুকাটা নদী পার হওয়ার সময় জনপ্রতি ৫ টাকা এবং মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা মাশুল দিতে হবে।
শিমুলবাগান
মাঘের শুরু থেকে মানিগাঁও গ্রামের বাগানের শিমুলগাছগুলো রক্তিম আভা ছড়াতে শুরু করে। তার রূপ একধরনের। কিন্তু বর্ষায় তাহিরপুরের মানিগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদীন শিমুলবাগানের রূপ একেবারে অন্য রকম। এ সময় লাল নয়, শিমুলবাগানের চারদিকে সবুজ আর সবুজ। একসঙ্গে প্রায় ৩ হাজার গাছ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে এখানে সবুজ পাতা নিয়ে।
ডলুরা
সুনামগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে ডলুরা শহীদ স্মৃতিসৌধ এলাকা। মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে শহীদ হওয়া ৪৮ বীর শহীদকে এখানে সমাহিত করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের ঠিক নিচের এ জায়গাটি দেখতে আসেন ইতিহাস-সন্ধানী মানুষ। প্রতিদিনই পড়ন্ত বিকেলে শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা আর প্রকৃতির ভালোবাসার টানে শত শত মানুষ ভিড় জমান এখানে। এর পাশেই আছে নারায়ণতলা খ্রিষ্টান মিশন। সেখানে দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির দেখা পাওয়া যাবে।
যেখানেই ভ্রমণে যান না কেন আপনার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পানির বোতল কিংবা চিপসের প্যাকেট অথবা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য দ্রব্য সেখানে ছেড়ে আসবেন না।
দেশে বর্ষায় ভ্রমণের যে গন্তব্যগুলো এখন জনপ্রিয়, এর মধ্যে অন্যতম সুনামগঞ্জ। চারদিকে থইথই পানি, করচগাছ, হাওর, লেক, ঐতিহাসিক জায়গা—সবই আছে এখানে।
টাঙ্গুয়ার হাওর
‘নয় কুড়ি কান্দা ছয় কুড়ি বিল’ হিসেবে পরিচিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর। কান্দাভর্তি হাওরে রয়েছে সারি সারি হিজল ও করচগাছ এবং নলখাগড়ার বন। একদিকে মেঘালয় পাহাড়। বাকি তিন দিকে তিনটি উপজেলা তাহিরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা। ৫১টি বিল আর ৮৮টি গ্রামবেষ্টিত টাঙ্গুয়ার হাওরের আয়তন বর্ষায় ও হেমন্তে বাড়ে-কমে। হাওরের দৈর্ঘ্য ১১ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৭ কিলোমিটার। বর্ষায় এর আয়তন বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার একরের বেশি। হেমন্তে তা নেমে আসে প্রায় ৭ হাজার একরে। এই হাওরে রয়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির গাছগাছালি। ছয় কুড়ি বিলের কারণেই টাঙ্গুয়া ‘মাদার ফিশারিজ’ হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের ১ হাজার ৩১টি রামসার সাইটের মধ্যে টাঙ্গুয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট। বর্ষা ও হেমন্ত দুই ঋতুতেই টাঙ্গুয়া আকর্ষণীয়। বর্ষায় জল থইথই হাওরকে মনে হয় সাগর। চার বছর ধরে হাওরে হাউস বোটসহ নানান ধরনের সজ্জিত ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে হাওর ভ্রমণ এখন অনেক সহজ।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, মহাখালী ও উত্তরা থেকে বিভিন্ন পরিবহন সংস্থার বাসে সুনামগঞ্জ যাওয়া যায়। বাস ভাড়া এখন প্রায় ৮০০ টাকা। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতুতে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মোটরসাইকেলে যেতে হবে তাহিরপুর। সময় লাগবে এক ঘণ্টা। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১০০ টাকা। তারপর পছন্দমতো নৌকায় করে ঘুরে বেড়াতে পারবেন টাঙ্গুয়ার হাওর। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়ে থাকে। সেগুলোর খোঁজ করেও যেতে পারেন।
রূপের নদী যাদুকাটা
সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী যাদুকাটাকে বলা হয় রূপের নদী। সকালের স্রোত-ঢেউহীন এই নদীর মৌনতা সীমান্ত ছুঁয়ে আসা পাহাড়ি ঠান্ডা বাতাসে এক অন্য রকম আবহ তৈরি করে।স্বচ্ছ পানির এ নদীর তলদেশ পর্যন্ত দেখা যায়।
খাসিয়া পাহাড় থেকে যাদুকাটা নদীর উৎপত্তি। এই নদী এলাকার লোকদের জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত। বারো মাসই নদীটি থেকে বারকি শ্রমিকেরা বালু ও পাথর আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখানে আছে বারেকের টিলা। খাড়া এই টিলার নিচ দিয়ে বয়ে চলছে রূপের নদী যাদুকাটা। তাহিরপুরের বারেকের টিলা বা বারিক্কার টিলাও একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট।
নীলাদ্রি বা শহীদ সিরাজ লেক
নীলাদ্রি হচ্ছে অনেক পানির টিলা আর পাহাড়ের সমারোহ, যার একপাশে রয়েছে নীল স্বচ্ছ লেক। আবার সেই লেকের মাঝখানেও আছে ছোট ছোট টিলা। অদূরে ভারত সীমান্তের সুউচ্চ সবুজ পাহাড়। নীলাদ্রি লেকের স্বচ্ছ পানিতে গোসল করা যাবে। পাহাড়-টিলা আর লেকের স্বচ্ছ পানির প্রাকৃতিক দৃশ্য দারুণ অনুভূতি দেবে। নীলাদ্রি লেকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা ভাড়া করতে হবে।
তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে ট্রলারে চেপেও নীলাদ্রি যাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ট্রলারেই রাত যাপন করতে হবে। ট্রলারে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
যেভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেতে হবে সুনামগঞ্জ। শহরের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে টেকেরঘাট যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল ভাড়া পাওয়া যাবে। রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। যাত্রাপথে যাদুকাটা নদী পার হওয়ার সময় জনপ্রতি ৫ টাকা এবং মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা মাশুল দিতে হবে।
শিমুলবাগান
মাঘের শুরু থেকে মানিগাঁও গ্রামের বাগানের শিমুলগাছগুলো রক্তিম আভা ছড়াতে শুরু করে। তার রূপ একধরনের। কিন্তু বর্ষায় তাহিরপুরের মানিগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদীন শিমুলবাগানের রূপ একেবারে অন্য রকম। এ সময় লাল নয়, শিমুলবাগানের চারদিকে সবুজ আর সবুজ। একসঙ্গে প্রায় ৩ হাজার গাছ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে এখানে সবুজ পাতা নিয়ে।
ডলুরা
সুনামগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে ডলুরা শহীদ স্মৃতিসৌধ এলাকা। মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে শহীদ হওয়া ৪৮ বীর শহীদকে এখানে সমাহিত করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের ঠিক নিচের এ জায়গাটি দেখতে আসেন ইতিহাস-সন্ধানী মানুষ। প্রতিদিনই পড়ন্ত বিকেলে শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা আর প্রকৃতির ভালোবাসার টানে শত শত মানুষ ভিড় জমান এখানে। এর পাশেই আছে নারায়ণতলা খ্রিষ্টান মিশন। সেখানে দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির দেখা পাওয়া যাবে।
যেখানেই ভ্রমণে যান না কেন আপনার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পানির বোতল কিংবা চিপসের প্যাকেট অথবা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য দ্রব্য সেখানে ছেড়ে আসবেন না।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে