মইনুল হাসান, ফ্রান্স
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ১৯১৩ সালে। এর মাত্র এক দশক আগে অরভিল ও উইলবার রাইট নামের দুই ভাই ১৯০৩ সালে তাঁদের নির্মিত হাওয়াই জাহাজে ৫৯ সেকেন্ডে ২৬০ মিটার হাওয়ায় ভাসতে সক্ষম হয়েছিলেন। কবি নিশ্চয়ই সে খবর গভীর আগ্রহে পড়েছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন, একদিন ধরাতল ছেড়ে নীল আকাশের পাখি হবেন।
এমন ভাবার যুক্তিসংগত কারণ আছে। যে সময় এই বদ্বীপের মানুষ ‘ঘরকুনো’ অপবাদ ঘাড়ে নিয়ে ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’ কোথাও যাওয়ার তাগিদ অনুভব করত না, সেই সময়েই তিনি সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন জাপান থেকে মেক্সিকো, ইরান থেকে আমেরিকা, রাশিয়া থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। পাঁচটি মহাদেশের ৩৪টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। নোবেলজয়ী কবি ও দার্শনিক হিসেবে জগৎজোড়া খ্যাতি ছড়িয়ে তিনি ‘বিশ্বকবি’ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠেছিলেন একজন ‘বিশ্ব পর্যটক’।
তবে বিমানভ্রমণের জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৯২১ পর্যন্ত। কবির বয়স তখন ষাটের ঘরে। সে বছরের ১৬ এপ্রিল ফরাসি বিমান কোম্পানি ডেজ গ্র্যান্ডস এক্সপ্রেস আরিয়ান্সের একটি ছোট বিমানে লন্ডন থেকে প্যারিস—এই পথটুকু ছিল তাঁর আকাশভ্রমণের প্রথম অভিজ্ঞতা। সেই ভ্রমণে মোট যাত্রী ছিলেন ১২ জন। বিশ্বকবির প্যারিস অবতরণের সেই ঐতিহাসিক ও বর্ণিল মুহূর্তগুলো ধরা পড়েছিল সিনেমার ক্যামেরার সাদা-কালো রিলে।
আবারও আরেক এপ্রিল। পারস্যরাজ রেজা শাহ পাহলভির আমন্ত্রণে রাজকীয় অতিথি হিসেবে ৭১ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ইরান গিয়েছিলেন। ১৯৩২ সালের ১১ এপ্রিল কলকাতার দমদম থেকে শুরু করে ১৩ এপ্রিল পৌঁছেছিলেন ইরানের বুশোয়ারে। এলাহাবাদ ও যোধপুরে দুই দফায় যাত্রাবিরতি শেষে, পরদিন করাচির সমুদ্রতীরের ছোট গ্রাম জাস্ক-এ যাত্রাবিরতি ও রাতযাপন করেছিলেন তিনি। ১৩ এপ্রিল ভোর ৪টায় বিমানে চেপে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে তিনি পৌঁছে যান হাফিজ, শেখ সাদির দেশ ইরানে। এ যাত্রায় কবি পাড়ি দিয়েছিলেন প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার বা আড়াই হাজার মাইল পথ। কবির সার্বক্ষণিক দেখাশোনার সঙ্গী ছিলেন পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী। বিমানবন্দরে কবিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এটি তাঁর প্রথম বিমানযাত্রা কি না। কবি মৃদু হেসে উত্তরে বলেছিলেন, দ্বিতীয়।
যাত্রাপথে খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তা সত্ত্বেও ফেরার পথে বিমানভ্রমণের আনন্দ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেননি। ৫ জুন বাগদাদ থেকে বিমানে করেই কলকাতায় ফিরে এসেছিলেন। কবি তাঁর ‘পারস্য যাত্রী’ ভ্রমণ গ্রন্থে হাওয়াই জাহাজে ভ্রমণের সরস স্মৃতিচারণা করেছেন। সেই বর্ণাঢ্য বর্ণনায় বিমানকে বেশ কিছু চমৎকার নাম দিয়েছিলেন, যেমন ব্যোমতরী, খেচররথ, যন্ত্রপাখি এবং বায়ুযান।
বিশ্বকবি তাঁর ৮০ বছরের দীর্ঘ জীবনে মাত্র তিনবার বিমানভ্রমণ করেছিলেন। তিনি ‘পক্ষী মানব’ কবিতায় লিখেছেন, উড়ন্ত যন্ত্র মানুষকে পাখি বানিয়েছে। মানুষ আজ ধাতব ডানায় ভর করে বিশ্ব পরিভ্রমণ করে। কেউ কেউ আনমনে গেয়ে ওঠে, ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী, উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে...’।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ১৯১৩ সালে। এর মাত্র এক দশক আগে অরভিল ও উইলবার রাইট নামের দুই ভাই ১৯০৩ সালে তাঁদের নির্মিত হাওয়াই জাহাজে ৫৯ সেকেন্ডে ২৬০ মিটার হাওয়ায় ভাসতে সক্ষম হয়েছিলেন। কবি নিশ্চয়ই সে খবর গভীর আগ্রহে পড়েছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন, একদিন ধরাতল ছেড়ে নীল আকাশের পাখি হবেন।
এমন ভাবার যুক্তিসংগত কারণ আছে। যে সময় এই বদ্বীপের মানুষ ‘ঘরকুনো’ অপবাদ ঘাড়ে নিয়ে ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’ কোথাও যাওয়ার তাগিদ অনুভব করত না, সেই সময়েই তিনি সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন জাপান থেকে মেক্সিকো, ইরান থেকে আমেরিকা, রাশিয়া থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। পাঁচটি মহাদেশের ৩৪টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। নোবেলজয়ী কবি ও দার্শনিক হিসেবে জগৎজোড়া খ্যাতি ছড়িয়ে তিনি ‘বিশ্বকবি’ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠেছিলেন একজন ‘বিশ্ব পর্যটক’।
তবে বিমানভ্রমণের জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৯২১ পর্যন্ত। কবির বয়স তখন ষাটের ঘরে। সে বছরের ১৬ এপ্রিল ফরাসি বিমান কোম্পানি ডেজ গ্র্যান্ডস এক্সপ্রেস আরিয়ান্সের একটি ছোট বিমানে লন্ডন থেকে প্যারিস—এই পথটুকু ছিল তাঁর আকাশভ্রমণের প্রথম অভিজ্ঞতা। সেই ভ্রমণে মোট যাত্রী ছিলেন ১২ জন। বিশ্বকবির প্যারিস অবতরণের সেই ঐতিহাসিক ও বর্ণিল মুহূর্তগুলো ধরা পড়েছিল সিনেমার ক্যামেরার সাদা-কালো রিলে।
আবারও আরেক এপ্রিল। পারস্যরাজ রেজা শাহ পাহলভির আমন্ত্রণে রাজকীয় অতিথি হিসেবে ৭১ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ইরান গিয়েছিলেন। ১৯৩২ সালের ১১ এপ্রিল কলকাতার দমদম থেকে শুরু করে ১৩ এপ্রিল পৌঁছেছিলেন ইরানের বুশোয়ারে। এলাহাবাদ ও যোধপুরে দুই দফায় যাত্রাবিরতি শেষে, পরদিন করাচির সমুদ্রতীরের ছোট গ্রাম জাস্ক-এ যাত্রাবিরতি ও রাতযাপন করেছিলেন তিনি। ১৩ এপ্রিল ভোর ৪টায় বিমানে চেপে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে তিনি পৌঁছে যান হাফিজ, শেখ সাদির দেশ ইরানে। এ যাত্রায় কবি পাড়ি দিয়েছিলেন প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার বা আড়াই হাজার মাইল পথ। কবির সার্বক্ষণিক দেখাশোনার সঙ্গী ছিলেন পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী। বিমানবন্দরে কবিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এটি তাঁর প্রথম বিমানযাত্রা কি না। কবি মৃদু হেসে উত্তরে বলেছিলেন, দ্বিতীয়।
যাত্রাপথে খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তা সত্ত্বেও ফেরার পথে বিমানভ্রমণের আনন্দ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেননি। ৫ জুন বাগদাদ থেকে বিমানে করেই কলকাতায় ফিরে এসেছিলেন। কবি তাঁর ‘পারস্য যাত্রী’ ভ্রমণ গ্রন্থে হাওয়াই জাহাজে ভ্রমণের সরস স্মৃতিচারণা করেছেন। সেই বর্ণাঢ্য বর্ণনায় বিমানকে বেশ কিছু চমৎকার নাম দিয়েছিলেন, যেমন ব্যোমতরী, খেচররথ, যন্ত্রপাখি এবং বায়ুযান।
বিশ্বকবি তাঁর ৮০ বছরের দীর্ঘ জীবনে মাত্র তিনবার বিমানভ্রমণ করেছিলেন। তিনি ‘পক্ষী মানব’ কবিতায় লিখেছেন, উড়ন্ত যন্ত্র মানুষকে পাখি বানিয়েছে। মানুষ আজ ধাতব ডানায় ভর করে বিশ্ব পরিভ্রমণ করে। কেউ কেউ আনমনে গেয়ে ওঠে, ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী, উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে...’।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে