নাজমুল করিম ফারুক
বৃষ্টি মানেই পাহাড়ি ঝরনার প্রাণ ফিরে পাওয়া। বৃষ্টিস্নানে অপরূপ সাজে সেজে ওঠে পাহাড়ি জনপদ। প্রাণ খুলে হাসির ঝিলিক ছড়ায় পাহাড়ের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা ঝরনাগুলো। খাগড়াছড়ি জেলায় লুকিয়ে আছে অজানা অনেক ঝিরি ও ঝরনা। সঙ্গে আলুটিলা গুহা, জেলা পরিষদ পার্ক, দেবতা পুকুর, বনবিহার ও শান্তিপুর অরণ্য কুটির।
ঢাকা থেকে রাতের যাত্রাটা সকালে গিয়ে শেষ হলো খাগড়াছড়ি শাপলা চত্বরে। সকালের নাশতা শেষে চান্দের গাড়িতে ছুটতে থাকলাম রিছাং ও রিব্রাং ঝরনার উদ্দেশে।
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অবস্থিত মায়াবী ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক ঝরনা রিছাং। জেলা শহর থেকে ১১ এবং আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র থেকে ৪ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরে রিছাং ঝরনা। এর একটু নিচেই লুকিয়ে আছে আরেক ঝরনা। পাহাড়ি লোকজন তাকে রিব্রাং নামে ডাকলেও পর্যটকদের কাছে এটি অপু ঝরনা নামে পরিচিত। রিব্রাংয়ের বাংলা অর্থ জলপ্রপাত।
শিল্পীর কারুকাজের মতো সৌন্দর্য ফুটিয়ে পর্যটকের হৃদয় মন আকর্ষণ করে চলেছে রিছাং। মূল রাস্তার পাশেই রিছাং ঝরনায় যাওয়ার রাস্তা। একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি ভিজিয়ে দিয়ে গেছে পাহাড়ি বুনো পথ। হাঁটার গতির সঙ্গে ঝরনার পানি ছলছল শব্দ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। দৃষ্টিনন্দন সিঁড়ি বেয়ে রিছাংয়ের কাছাকাছি যাওয়া গেল। লোকজনের কোনো কমতি নেই। মনে হলো, যাঁরা ভ্রমণে খাগড়াছড়ি আসেন, তাঁরা একে না দেখে ফেরেন না। কিছু হইহুল্লোড় আর ছবি তোলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম রিব্রাং দেখতে যাওয়ার। যেই কথা সেই কাজ।
রিছাং ঝরনায় যাওয়ার মূল রাস্তা থেকে সামনের ইট বাঁধানো পথ ধরে কিছুদূর গেলে হাতের বাম দিকে রিব্রাং ঝরনার রাস্তা। তবে ডান দিকের ইট বাঁধানো ঢালু পথ ধরে নিচের দিকে হাঁটতে গিয়ে পেয়ে গেলাম ঝিরির দেখা। পাহাড় থেকে অনবরত পানি নিচের দিকে নেমে আসছে। ঝিরিতে নেমে যেদিক থেকে পানি প্রবাহিত হয়ে আসছে, সেদিকে পা বাড়ালাম। ঝিরি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। প্রবল স্রোতে পা দুটি ক্লান্ত হচ্ছে বেশি। তার পরও এগোতে থাকলাম। কখনো পাহাড়ের গা ঘেঁষে, কখনো পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝোপঝাড় ধরে, কখনো ঝিরির মাঝামাঝি দিয়ে, কখনো সাঁতার কেটে! এর মধ্যে জোঁকের ভয় তো মনে লেগেই আছে। এই পথ পুরোটাই রোমাঞ্চকর। ঝিরিতে ছোট-বড় পাথরের সমারোহ। ওপরের দিকে তাকালে মনে হবে দুই পাশের পাহাড়গুলো আকাশে মিশে গেছে। প্রায় ৩০ মিনিট ট্রেকিং করার পর পড়লাম মহা বিপদে, সামনে দুই ঝিরির সঙ্গমস্থল। কোনটা দিয়ে যাব? সঙ্গে থাকা অভিজ্ঞ মানুষ শওকতের ওপর দায়িত্বটা দিলাম। দাঁড়িয়ে একটু ভাবলেন তিনি। তারপর হাতের বাম দিকের ঝিরি ধরে মিনিট দশেক হাঁটার পর ঝরনার শব্দ কান এল।
প্রায় ৬০ মিটার উঁচু থেকে পানি পড়ছে। মায়াবী এক পরিবেশ, কোনো পর্যটক নেই। মহা খুশিতে উৎফুল্ল আমরা। প্রচুর মানুষের স্নানজনিত চিৎকার-চেঁচামেচিতে রিছাং ঝরনায় যাঁরা আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি, তাঁরা নিশ্চিত প্রশান্তি পাবেন রিব্রাং বা অপু ঝরনা দর্শনে। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় স্থানীয় অধিবাসীরা ছাড়া এখানে তেমন পর্যটক আসেন না। একদম নিরিবিলি। ঝরনার কাছে গেলেই দেখবেন এক পাশে ওপর থেকে ঝিরঝির শব্দে নেমে আসছে রিব্রাং ঝরনার জলধারা, আরেক পাশে পাথরের খোলা উদ্যান। এর তিন দিক উঁচু পাহাড়ে ঘেরা। অদ্ভুত সুন্দর সেই প্রকৃতি! ঝরনার কাছে যাঁদের ক্যাম্পিং করে রাত কাটানোর ইচ্ছে, তাঁরা এখানে ক্যাম্পিং করতে পারেন। অর্জন হবে ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা।
কীভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেতে হবে খাগড়াছড়ি। এরপর সারা দিনের জন্য চান্দের গাড়ির ভাড়া করতে হবে কিংবা মোটরসাইকেল। চান্দের গাড়ির ভাড়া পড়বে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা এবং মোটরসাইকেলের ভাড়া দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
থাকা ও খাওয়া
খাগড়াছড়ি শহরে বিভিন্ন ধরনের থাকার হোটেল আছে। জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা। খাগড়াছড়ি শহরেই পাওয়া যাবে রেস্তোরাঁ। সেগুলোতেই খেতে হবে।
বৃষ্টি মানেই পাহাড়ি ঝরনার প্রাণ ফিরে পাওয়া। বৃষ্টিস্নানে অপরূপ সাজে সেজে ওঠে পাহাড়ি জনপদ। প্রাণ খুলে হাসির ঝিলিক ছড়ায় পাহাড়ের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা ঝরনাগুলো। খাগড়াছড়ি জেলায় লুকিয়ে আছে অজানা অনেক ঝিরি ও ঝরনা। সঙ্গে আলুটিলা গুহা, জেলা পরিষদ পার্ক, দেবতা পুকুর, বনবিহার ও শান্তিপুর অরণ্য কুটির।
ঢাকা থেকে রাতের যাত্রাটা সকালে গিয়ে শেষ হলো খাগড়াছড়ি শাপলা চত্বরে। সকালের নাশতা শেষে চান্দের গাড়িতে ছুটতে থাকলাম রিছাং ও রিব্রাং ঝরনার উদ্দেশে।
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অবস্থিত মায়াবী ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক ঝরনা রিছাং। জেলা শহর থেকে ১১ এবং আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র থেকে ৪ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরে রিছাং ঝরনা। এর একটু নিচেই লুকিয়ে আছে আরেক ঝরনা। পাহাড়ি লোকজন তাকে রিব্রাং নামে ডাকলেও পর্যটকদের কাছে এটি অপু ঝরনা নামে পরিচিত। রিব্রাংয়ের বাংলা অর্থ জলপ্রপাত।
শিল্পীর কারুকাজের মতো সৌন্দর্য ফুটিয়ে পর্যটকের হৃদয় মন আকর্ষণ করে চলেছে রিছাং। মূল রাস্তার পাশেই রিছাং ঝরনায় যাওয়ার রাস্তা। একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি ভিজিয়ে দিয়ে গেছে পাহাড়ি বুনো পথ। হাঁটার গতির সঙ্গে ঝরনার পানি ছলছল শব্দ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। দৃষ্টিনন্দন সিঁড়ি বেয়ে রিছাংয়ের কাছাকাছি যাওয়া গেল। লোকজনের কোনো কমতি নেই। মনে হলো, যাঁরা ভ্রমণে খাগড়াছড়ি আসেন, তাঁরা একে না দেখে ফেরেন না। কিছু হইহুল্লোড় আর ছবি তোলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম রিব্রাং দেখতে যাওয়ার। যেই কথা সেই কাজ।
রিছাং ঝরনায় যাওয়ার মূল রাস্তা থেকে সামনের ইট বাঁধানো পথ ধরে কিছুদূর গেলে হাতের বাম দিকে রিব্রাং ঝরনার রাস্তা। তবে ডান দিকের ইট বাঁধানো ঢালু পথ ধরে নিচের দিকে হাঁটতে গিয়ে পেয়ে গেলাম ঝিরির দেখা। পাহাড় থেকে অনবরত পানি নিচের দিকে নেমে আসছে। ঝিরিতে নেমে যেদিক থেকে পানি প্রবাহিত হয়ে আসছে, সেদিকে পা বাড়ালাম। ঝিরি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। প্রবল স্রোতে পা দুটি ক্লান্ত হচ্ছে বেশি। তার পরও এগোতে থাকলাম। কখনো পাহাড়ের গা ঘেঁষে, কখনো পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝোপঝাড় ধরে, কখনো ঝিরির মাঝামাঝি দিয়ে, কখনো সাঁতার কেটে! এর মধ্যে জোঁকের ভয় তো মনে লেগেই আছে। এই পথ পুরোটাই রোমাঞ্চকর। ঝিরিতে ছোট-বড় পাথরের সমারোহ। ওপরের দিকে তাকালে মনে হবে দুই পাশের পাহাড়গুলো আকাশে মিশে গেছে। প্রায় ৩০ মিনিট ট্রেকিং করার পর পড়লাম মহা বিপদে, সামনে দুই ঝিরির সঙ্গমস্থল। কোনটা দিয়ে যাব? সঙ্গে থাকা অভিজ্ঞ মানুষ শওকতের ওপর দায়িত্বটা দিলাম। দাঁড়িয়ে একটু ভাবলেন তিনি। তারপর হাতের বাম দিকের ঝিরি ধরে মিনিট দশেক হাঁটার পর ঝরনার শব্দ কান এল।
প্রায় ৬০ মিটার উঁচু থেকে পানি পড়ছে। মায়াবী এক পরিবেশ, কোনো পর্যটক নেই। মহা খুশিতে উৎফুল্ল আমরা। প্রচুর মানুষের স্নানজনিত চিৎকার-চেঁচামেচিতে রিছাং ঝরনায় যাঁরা আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি, তাঁরা নিশ্চিত প্রশান্তি পাবেন রিব্রাং বা অপু ঝরনা দর্শনে। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় স্থানীয় অধিবাসীরা ছাড়া এখানে তেমন পর্যটক আসেন না। একদম নিরিবিলি। ঝরনার কাছে গেলেই দেখবেন এক পাশে ওপর থেকে ঝিরঝির শব্দে নেমে আসছে রিব্রাং ঝরনার জলধারা, আরেক পাশে পাথরের খোলা উদ্যান। এর তিন দিক উঁচু পাহাড়ে ঘেরা। অদ্ভুত সুন্দর সেই প্রকৃতি! ঝরনার কাছে যাঁদের ক্যাম্পিং করে রাত কাটানোর ইচ্ছে, তাঁরা এখানে ক্যাম্পিং করতে পারেন। অর্জন হবে ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা।
কীভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেতে হবে খাগড়াছড়ি। এরপর সারা দিনের জন্য চান্দের গাড়ির ভাড়া করতে হবে কিংবা মোটরসাইকেল। চান্দের গাড়ির ভাড়া পড়বে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা এবং মোটরসাইকেলের ভাড়া দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
থাকা ও খাওয়া
খাগড়াছড়ি শহরে বিভিন্ন ধরনের থাকার হোটেল আছে। জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা। খাগড়াছড়ি শহরেই পাওয়া যাবে রেস্তোরাঁ। সেগুলোতেই খেতে হবে।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে