মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
গল্পের শুরু ২০১৬ সালের এপ্রিলে। বৃষ্টিস্নাত এক সকালের কথা। কেবল ঘুম থেকে উঠেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রফিকুল ইসলাম। হঠাৎ খবর পেলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে জালের সঙ্গে আটকে আছে বিশালাকৃতির এক সাপ। তখন উদ্ধার তো দূরের কথা, সাপের প্রজাতিগুলোই ভালো করে চিনতেন না। তবু একবুক সাহস নিয়ে ছুটে গেলেন সাপটিকে বাঁচাতে। গিয়ে দেখেন, আটকে পড়া সাপটি জলঢোঁড়া। কয়েকজনের সহায়তায় ব্লেড দিয়ে জাল কেটে অক্ষত অবস্থায় সাপটিকে উদ্ধার করে অবমুক্ত করলেন পাশের খালে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এ খবর ছড়িয়ে যায় ক্যাম্পাসজুড়ে।
২০১৬ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক সাপ জীবিত উদ্ধার করেছেন রফিকুল। সেগুলোর অধিকাংশই বিষধর। রাতে কিংবা দিনে, রোদ কিংবা বৃষ্টি–যখনই কোথাও সাপ আটকে পড়ার খবর পান, রফিক ছুটে যান। সাপ উদ্ধার করেই থেমে থাকেন না তিনি; অসুস্থ হলে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে ছেড়ে দিয়ে আসেন নিরাপদ জায়গায়। পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করেন সাপ না মারতে।
রফিকের বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়ে বর্তমানে ভেনম রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা করছেন রফিক। সাপ উদ্ধার করা, অসুস্থ ও আক্রান্ত সাপকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে নিরাপদ জায়গায় অবমুক্ত করা রফিকের নেশা। সে জন্য তিনি ইতিমধ্যে ‘সর্পবন্ধু’ উপাধি পেয়েছেন ক্যাম্পাসে। মানুষের মন থেকে সাপের ভয় দূর করতে এবং তাদের বাঁচাতে রফিকুল ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন ফেসবুকভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্নেক অ্যাওয়ারনেস’। যার অধিকাংশ সদস্যই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
রফিক বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের দেশে ছয় হাজারের বেশি মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। সাপ সম্পর্কে মানুষ প্রচলিত ভুল, কুসংস্কার ও গুজবগুলো এখনো বিশ্বাস করে আসছে, যার নেতিবাচক প্রভাবে মানুষের প্রাণ পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। দেশকে সাপবিষয়ক কুসংস্কার ও গুজবমুক্ত রাখতে এই সংগঠন করার ভাবনা মাথায় আসে।’ প্রতিষ্ঠার পর ধীরে ধীরে সদস্য বাড়তে থাকে গ্রুপটির। এখানকার সদস্যরা সাপ-সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানতে গ্রুপে পোস্ট করেন। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা বিস্তারিত তথ্য জানান। এই গ্রুপের পরিচিতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও পৌঁছে গেছে ইতিমধ্যে। বর্তমানে এই গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজার। মাধ্যমে গত কয়েক বছর উদ্ধার হওয়া বিষধর সাপগুলোর মধ্যে আছে শঙ্খচূড়, পদ্মগোখরা, বড় কালকেউটে, শঙ্খিনী, চন্দ্রবোড়া, ওয়ালস্ ক্রেইট, সবুজ বোড়া ও লাল ঘাড় ঢোঁড়া সাপ। মৃদু বিষধর সাপের মধ্যে লাউঢগা, নকল বোড়া, ফণীমনসা। নির্বিষ সাপের মধ্যে আছে অজগর, দাঁড়াশ, ঘরগিন্নি, ঢোঁড়া সাপ, দুধরাজ, বেত আছড়া, দুমুখো পুয়ে সাপ ইত্যাদি।
রফিক জানিয়েছেন, শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাঁর সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা মুন্সিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলেও সাপ উদ্ধার করেছেন। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে সাপ গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা আছে তাঁর। পাশাপাশি সাপের কামড়ে মৃত্যু কমাতে দেশের প্রতিটি জেলায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার ইচ্ছা আছে রফিকের।
সাপ নিরীহ প্রাণী। এই প্রাণী না কানে শুনতে পায়, না মানুষকে মনে রাখতে পারে। সাপের স্মৃতিশক্তি প্রখর নয়। এটি পোষ মানার মতোও নয়। রফিকের ভাষ্য, সাপ কেবল সহজাত প্রবৃত্তি হিসেবে নিজের প্রাণ বাঁচাতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং বাধ্য হয়ে দংশন করে। নিজের খাবারের জন্য শিকার করতে মজুত রাখা মূল্যবান বিষ সাপ অপচয় করতে চায় না। সাপ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি, যার সঙ্গে মানুষের জীবন-মৃত্যুর বিষয় জড়িত।
গল্পের শুরু ২০১৬ সালের এপ্রিলে। বৃষ্টিস্নাত এক সকালের কথা। কেবল ঘুম থেকে উঠেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রফিকুল ইসলাম। হঠাৎ খবর পেলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে জালের সঙ্গে আটকে আছে বিশালাকৃতির এক সাপ। তখন উদ্ধার তো দূরের কথা, সাপের প্রজাতিগুলোই ভালো করে চিনতেন না। তবু একবুক সাহস নিয়ে ছুটে গেলেন সাপটিকে বাঁচাতে। গিয়ে দেখেন, আটকে পড়া সাপটি জলঢোঁড়া। কয়েকজনের সহায়তায় ব্লেড দিয়ে জাল কেটে অক্ষত অবস্থায় সাপটিকে উদ্ধার করে অবমুক্ত করলেন পাশের খালে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এ খবর ছড়িয়ে যায় ক্যাম্পাসজুড়ে।
২০১৬ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক সাপ জীবিত উদ্ধার করেছেন রফিকুল। সেগুলোর অধিকাংশই বিষধর। রাতে কিংবা দিনে, রোদ কিংবা বৃষ্টি–যখনই কোথাও সাপ আটকে পড়ার খবর পান, রফিক ছুটে যান। সাপ উদ্ধার করেই থেমে থাকেন না তিনি; অসুস্থ হলে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে ছেড়ে দিয়ে আসেন নিরাপদ জায়গায়। পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করেন সাপ না মারতে।
রফিকের বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়ে বর্তমানে ভেনম রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা করছেন রফিক। সাপ উদ্ধার করা, অসুস্থ ও আক্রান্ত সাপকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে নিরাপদ জায়গায় অবমুক্ত করা রফিকের নেশা। সে জন্য তিনি ইতিমধ্যে ‘সর্পবন্ধু’ উপাধি পেয়েছেন ক্যাম্পাসে। মানুষের মন থেকে সাপের ভয় দূর করতে এবং তাদের বাঁচাতে রফিকুল ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন ফেসবুকভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্নেক অ্যাওয়ারনেস’। যার অধিকাংশ সদস্যই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
রফিক বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের দেশে ছয় হাজারের বেশি মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। সাপ সম্পর্কে মানুষ প্রচলিত ভুল, কুসংস্কার ও গুজবগুলো এখনো বিশ্বাস করে আসছে, যার নেতিবাচক প্রভাবে মানুষের প্রাণ পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। দেশকে সাপবিষয়ক কুসংস্কার ও গুজবমুক্ত রাখতে এই সংগঠন করার ভাবনা মাথায় আসে।’ প্রতিষ্ঠার পর ধীরে ধীরে সদস্য বাড়তে থাকে গ্রুপটির। এখানকার সদস্যরা সাপ-সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানতে গ্রুপে পোস্ট করেন। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা বিস্তারিত তথ্য জানান। এই গ্রুপের পরিচিতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও পৌঁছে গেছে ইতিমধ্যে। বর্তমানে এই গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজার। মাধ্যমে গত কয়েক বছর উদ্ধার হওয়া বিষধর সাপগুলোর মধ্যে আছে শঙ্খচূড়, পদ্মগোখরা, বড় কালকেউটে, শঙ্খিনী, চন্দ্রবোড়া, ওয়ালস্ ক্রেইট, সবুজ বোড়া ও লাল ঘাড় ঢোঁড়া সাপ। মৃদু বিষধর সাপের মধ্যে লাউঢগা, নকল বোড়া, ফণীমনসা। নির্বিষ সাপের মধ্যে আছে অজগর, দাঁড়াশ, ঘরগিন্নি, ঢোঁড়া সাপ, দুধরাজ, বেত আছড়া, দুমুখো পুয়ে সাপ ইত্যাদি।
রফিক জানিয়েছেন, শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাঁর সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা মুন্সিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলেও সাপ উদ্ধার করেছেন। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে সাপ গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা আছে তাঁর। পাশাপাশি সাপের কামড়ে মৃত্যু কমাতে দেশের প্রতিটি জেলায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার ইচ্ছা আছে রফিকের।
সাপ নিরীহ প্রাণী। এই প্রাণী না কানে শুনতে পায়, না মানুষকে মনে রাখতে পারে। সাপের স্মৃতিশক্তি প্রখর নয়। এটি পোষ মানার মতোও নয়। রফিকের ভাষ্য, সাপ কেবল সহজাত প্রবৃত্তি হিসেবে নিজের প্রাণ বাঁচাতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং বাধ্য হয়ে দংশন করে। নিজের খাবারের জন্য শিকার করতে মজুত রাখা মূল্যবান বিষ সাপ অপচয় করতে চায় না। সাপ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি, যার সঙ্গে মানুষের জীবন-মৃত্যুর বিষয় জড়িত।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে