ইসমাঈল হোসাইন সোহেল, ঢাকা
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া বলেছেন, ‘কোনো একটা নূতন কাজ করিতে গেলে সমাজ প্রথমত গোলযোগ উপস্থিত করে এবং পরে সেই নূতন চালচলন সহিয়া লয়।’ পৃথিবীতে সম্ভবত এমন কিছু সৃষ্টি হয়নি, যেটা নিয়ে সমাজে নেতিবাচক কথা ছিল না। তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানার ‘আউটডোর’ বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে মুক্ত স্থানে ক্লাস নিয়েও প্রথমে অনেক সমালোচনা এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ আসতে থাকে।
তবে চিন্তার পরিবর্তন আনতে হলে কোনো ভালো কাজে যে ক্ষান্তি দিতে নেই। এ জন্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়তো বলেছেন, ‘সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান। সংকটের কল্পনাতে হোয়ো না ম্রিয়মাণ। মুক্ত করো ভয়, আপনা-মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়।’ রবীন্দ্রনাথের গানের এই কথাগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে, সব নেতিবাচকতাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলেছেন ড. রেবেকা সুলতানা।
প্রথমে একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া শুরু করেন ড. রেবেকা সুলতানা। বলা যায়, শখের বশে এবং পরীক্ষামূলকভাবে এটি শুরু করেন তিনি। এরপর অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন আসতে থাকে।
তাই সেমিস্টারের সর্বশেষ একটি বাড়তি ক্লাস নেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে, উন্মুক্ত জায়গায়। তবে এই ক্লাসের ধারণা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে গিয়ে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ড. রেবেকা সুলতানা। সেখানে বটতলা, কদমতলা, হিজলতলা—এমন বিভিন্ন গাছের নামে পরিচিত হওয়া জায়গায় ক্লাস হয়। সেখান থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ক্লাস নেওয়ার চিন্তা আসে তাঁর মাথায়। রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘বিশ্বভারতীতে দেখলাম, উন্মুক্ত স্থানে ক্লাস করা নিয়ে বাচ্চাদের (শিক্ষার্থী) মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই। তারা সেখানে জুতা খুলে শিক্ষককে প্রণাম করে ক্লাসে অংশ নিচ্ছে। ঘাসের ওপর বসে পড়ছে। আবার ক্লাস শেষে শিক্ষককে প্রণাম করে জুতা পরছে। কিছুক্ষণ পরেই তারা আবার টং দোকানে বসে শিক্ষকের সঙ্গে বসে চা খাচ্ছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। কিন্তু সম্মানের কোনো ঘাটতি দেখা যাচ্ছে না। তখন আমি চিন্তা করলাম দেশে গিয়ে একটা ক্লাস এভাবে নেওয়ার।’
সেই ভাবনা থেকে ২০১৭ সালে দর্শন বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রথম একটি ক্লাস নেন ড. রেবেকা সুলতানা। ক্লাসটি নেওয়ার পরে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। এরপরের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও জানান, তাঁদের শেষ ক্লাসটা বদ্ধ কামরার বাইরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে গিয়ে করতে চান তাঁরা। পরে কলাভবনের সামনের বটতলায় তাঁদেরও একটি ক্লাস নেওয়া হয়। মাঝে করোনা মহামারির কারণে ২০১৯ ও ২০২০ সালে বাইরে ক্লাস নেওয়া বন্ধ থাকে। পরে আবার ২০২১ সাল থেকে প্রতি সেমিস্টারের শেষ ক্লাসটি শ্রেণিকক্ষের বাইরে উন্মুক্ত জায়গায় নেওয়া হয়।
ড. রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘এখানে শুধু দর্শনের ক্লাসই হয় না, ২ ঘণ্টার ক্লাসের প্রথম ৪০ মিনিট থাকে অনুপ্রেরণামূলক গল্ল ও আলাপচারিতা। বাকি অংশে বিগত ক্লাসগুলো নিয়ে একটা বিস্তৃত ধারণা দিই। আমি মনে করি, একজন শিক্ষার্থী এভাবে ধুলায় বসে ক্লাস করতে পারলে, তখনই তার অহংবোধ ধুলায় মিশে যায়। তার মানে এই বাচ্চা (শিক্ষার্থী) যেকোনো জায়গায়, যেকোনো পরিস্থিতিতে উঠে আসতে পারবে। শিক্ষার্থীদের মানসিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করতে হলে, তাকে নতুন কোনো ধারণা দিতে হলে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে গিয়ে সেটা করা সহজ।’
উন্মুক্ত জায়গায় ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি প্রথমে এতটা স্বাভাবিক ছিল না বলে জানান অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা। প্রথম দিকে অনেকে বলেছেন, এটা একধরনের পাগলামি। তিনি মনে করেন, নতুন কিছু সৃষ্টি হয় পাগলামির ভেতর দিয়েই। আবার বিভাগ থেকেও বলা হয়েছিল, তিনি কেন তাঁদের অনুমতি ছাড়া বাইরে ক্লাস নিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে ড. রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘আমি বলেছি, এই ক্লাসটা তো আমার নিয়মিত ক্লাস না। যদি সেটা হতো, তাহলে অনুমতি নেওয়ার প্রসঙ্গ আসত। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও চাপ আসায় আমি তাঁদের বলেছি, কোনো সন্দেহ থাকলে আপনারাও ক্লাসে অংশ নিতে পারেন। তবে ক্লাস চালানোর দুই বছর পরে সব সমালোচনা দূর হয়ে যায়। আমাদের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এই ক্লাসে যোগ দেওয়া শুরু করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ক্লাস থাকা উচিত বলে মনে করেন ড. রেবেকা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি ২০ শতাংশ শিক্ষকও এই সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শেষ ক্লাসে বসতেন, শেষ হয়ে যাওয়ার আগে তাদের সঙ্গে একটা সেশন থাকত, তাহলে শিক্ষার্থীদের হতাশা অনেকটাই কমে যেত। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে থাকা শক্তিকে উপলব্ধি করতে পারত। অনুপ্রেরণা পেত সব সংকটকে জয় করার।’
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া বলেছেন, ‘কোনো একটা নূতন কাজ করিতে গেলে সমাজ প্রথমত গোলযোগ উপস্থিত করে এবং পরে সেই নূতন চালচলন সহিয়া লয়।’ পৃথিবীতে সম্ভবত এমন কিছু সৃষ্টি হয়নি, যেটা নিয়ে সমাজে নেতিবাচক কথা ছিল না। তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানার ‘আউটডোর’ বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে মুক্ত স্থানে ক্লাস নিয়েও প্রথমে অনেক সমালোচনা এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ আসতে থাকে।
তবে চিন্তার পরিবর্তন আনতে হলে কোনো ভালো কাজে যে ক্ষান্তি দিতে নেই। এ জন্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়তো বলেছেন, ‘সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান। সংকটের কল্পনাতে হোয়ো না ম্রিয়মাণ। মুক্ত করো ভয়, আপনা-মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়।’ রবীন্দ্রনাথের গানের এই কথাগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে, সব নেতিবাচকতাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলেছেন ড. রেবেকা সুলতানা।
প্রথমে একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া শুরু করেন ড. রেবেকা সুলতানা। বলা যায়, শখের বশে এবং পরীক্ষামূলকভাবে এটি শুরু করেন তিনি। এরপর অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন আসতে থাকে।
তাই সেমিস্টারের সর্বশেষ একটি বাড়তি ক্লাস নেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে, উন্মুক্ত জায়গায়। তবে এই ক্লাসের ধারণা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে গিয়ে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ড. রেবেকা সুলতানা। সেখানে বটতলা, কদমতলা, হিজলতলা—এমন বিভিন্ন গাছের নামে পরিচিত হওয়া জায়গায় ক্লাস হয়। সেখান থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ক্লাস নেওয়ার চিন্তা আসে তাঁর মাথায়। রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘বিশ্বভারতীতে দেখলাম, উন্মুক্ত স্থানে ক্লাস করা নিয়ে বাচ্চাদের (শিক্ষার্থী) মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই। তারা সেখানে জুতা খুলে শিক্ষককে প্রণাম করে ক্লাসে অংশ নিচ্ছে। ঘাসের ওপর বসে পড়ছে। আবার ক্লাস শেষে শিক্ষককে প্রণাম করে জুতা পরছে। কিছুক্ষণ পরেই তারা আবার টং দোকানে বসে শিক্ষকের সঙ্গে বসে চা খাচ্ছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। কিন্তু সম্মানের কোনো ঘাটতি দেখা যাচ্ছে না। তখন আমি চিন্তা করলাম দেশে গিয়ে একটা ক্লাস এভাবে নেওয়ার।’
সেই ভাবনা থেকে ২০১৭ সালে দর্শন বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রথম একটি ক্লাস নেন ড. রেবেকা সুলতানা। ক্লাসটি নেওয়ার পরে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। এরপরের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও জানান, তাঁদের শেষ ক্লাসটা বদ্ধ কামরার বাইরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে গিয়ে করতে চান তাঁরা। পরে কলাভবনের সামনের বটতলায় তাঁদেরও একটি ক্লাস নেওয়া হয়। মাঝে করোনা মহামারির কারণে ২০১৯ ও ২০২০ সালে বাইরে ক্লাস নেওয়া বন্ধ থাকে। পরে আবার ২০২১ সাল থেকে প্রতি সেমিস্টারের শেষ ক্লাসটি শ্রেণিকক্ষের বাইরে উন্মুক্ত জায়গায় নেওয়া হয়।
ড. রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘এখানে শুধু দর্শনের ক্লাসই হয় না, ২ ঘণ্টার ক্লাসের প্রথম ৪০ মিনিট থাকে অনুপ্রেরণামূলক গল্ল ও আলাপচারিতা। বাকি অংশে বিগত ক্লাসগুলো নিয়ে একটা বিস্তৃত ধারণা দিই। আমি মনে করি, একজন শিক্ষার্থী এভাবে ধুলায় বসে ক্লাস করতে পারলে, তখনই তার অহংবোধ ধুলায় মিশে যায়। তার মানে এই বাচ্চা (শিক্ষার্থী) যেকোনো জায়গায়, যেকোনো পরিস্থিতিতে উঠে আসতে পারবে। শিক্ষার্থীদের মানসিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করতে হলে, তাকে নতুন কোনো ধারণা দিতে হলে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে গিয়ে সেটা করা সহজ।’
উন্মুক্ত জায়গায় ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি প্রথমে এতটা স্বাভাবিক ছিল না বলে জানান অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা। প্রথম দিকে অনেকে বলেছেন, এটা একধরনের পাগলামি। তিনি মনে করেন, নতুন কিছু সৃষ্টি হয় পাগলামির ভেতর দিয়েই। আবার বিভাগ থেকেও বলা হয়েছিল, তিনি কেন তাঁদের অনুমতি ছাড়া বাইরে ক্লাস নিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে ড. রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘আমি বলেছি, এই ক্লাসটা তো আমার নিয়মিত ক্লাস না। যদি সেটা হতো, তাহলে অনুমতি নেওয়ার প্রসঙ্গ আসত। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও চাপ আসায় আমি তাঁদের বলেছি, কোনো সন্দেহ থাকলে আপনারাও ক্লাসে অংশ নিতে পারেন। তবে ক্লাস চালানোর দুই বছর পরে সব সমালোচনা দূর হয়ে যায়। আমাদের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এই ক্লাসে যোগ দেওয়া শুরু করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ক্লাস থাকা উচিত বলে মনে করেন ড. রেবেকা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি ২০ শতাংশ শিক্ষকও এই সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শেষ ক্লাসে বসতেন, শেষ হয়ে যাওয়ার আগে তাদের সঙ্গে একটা সেশন থাকত, তাহলে শিক্ষার্থীদের হতাশা অনেকটাই কমে যেত। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে থাকা শক্তিকে উপলব্ধি করতে পারত। অনুপ্রেরণা পেত সব সংকটকে জয় করার।’
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে