রজত কান্তি রায়, ঢাকা
আমাদের সাহিত্যের কিংবদন্তি চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বেহুলা, মহুয়া, মলুয়া, চন্দ্রাবতী। ব্যক্তিত্বে তারা দৃঢ়, সজ্জায় পরিপাটি। কবিকল্পনার বাহুল্য বাদ দিলে তাদের সাজসজ্জায় সমকালের প্রভাব আছে। এসব চরিত্রের বর্ণনা থেকে আমাদের এ অঞ্চলের নারীদের প্রাচীন সাজসজ্জা প্রক্রিয়া ও উপকরণের হদিস মেলে।
সাজসজ্জার মূল বিষয় হলো পরিপাটি করে গুছিয়ে নিজেকে ব্যক্তিত্বময় ও আকর্ষণীয় করে তোলা। এ বিষয়ে প্রাচীন বা আধুনিক নারীদের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না। আধুনিককালে নারীদের সাজসজ্জার যে ধারা, সেটা বহু চর্চিত। বলা হয়, নারীর সাজসজ্জা গভীর পরম্পরার বিষয়। আজ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ শ বছর আগে লেখা বইপত্রে নারীর সাজসজ্জার যেসব বর্ণনা পাওয়া যায়, সেগুলো এখনো ব্যবহার করা হয় বিভিন্নভাবে। প্রাচীন ও বর্তমানকালে সাজসজ্জার মূল পার্থক্য উপাদানের সহজলভ্যতা এবং নতুন উপাদানের সংযুক্তি।
একেত বেহুলার রূপ আরো আভরণ।
রূপেতে করিল আলো শতেক যোজন।।
কবি বিজয়গুপ্ত তাঁর ‘পদ্মপুরাণে’-এ বেহুলার সাজসজ্জা বিষয়ে লাইন দুটি লিখেছিলেন আজ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ শ বছর আগে। নারীদের সাজসজ্জার বেলায় কবিরা কোনোকালেই কার্পণ্য দেখাননি। কিন্তু বর্ণনার ইন্দ্রজাল তৈরির ফাঁকে ফাঁকে কবিরা আমাদের জন্য ছেড়ে গিয়েছিলেন প্রচুর তথ্য। একটু খুঁজে নিলে সেগুলো দিয়ে কয়েক শ বছরের পরম্পরা তৈরি করা যায়। বেহুলার বিয়ের বর্ণনায় বিজয়গুপ্ত সে রকমই এক সেতু রচনা করেছিলেন আমাদের জন্য আজ থেকে বহু বহু বছর আগে।
দিনটি ছিল বুধবার। শুভক্ষণে সোয়া পাঁচ শ বছরের ইতিহাস থেকে উঠে আসা চরিত্র চান্দ সওদাগর চলেছেন পুত্রবধূ আনতে। সঙ্গে শতসহস্র মানুষসহ বিশাল লটবহর। উজানী নগরের আকাশে-বাতাসে তখন অদ্ভুত আনন্দ গীত। পাটের শাড়ি পরে বসে আছে ‘ইন্দ্রের অপ্সরী’ বেহুলা। কিন্তু বিয়ে তো আর এমনি এমনি হয় না। তার আগে থাকে কনের সাজসজ্জা। কবি বিজয়গুপ্ত বিয়ের সাজসজ্জার যে বয়ান দিয়েছেন তা এখনকার তারকা হোটেলে বিয়ের সাজসজ্জার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
সে বর্ণনায় পাওয়া যায়, তখন বেহুলার আঙুলে আংটি, গলায় মুক্তার মালা, নাকে বেশর, হাতে সোনার বালা। বেহুলা ফুল দিয়ে চুল বেঁধেছে, পিঠে দুলছে বেণি, পুরো চুলের বিন্যাসে আছে আগরের সুগন্ধ। তার ভ্রুযুগল সুসজ্জিত, তাতে কাজলের ছোঁয়া। আর পোশাক? কবি বলছেন,
অঙ্গেতে পরায় বেহুলার নানা আভরণ।
কটিতে পরায় বেহুলার বিচিত্র বসন।। […]
নেতের বসন দিল কুঁচাইয়া স্থান।
স্বর্গ-বিদ্যাধরী যেন হয় অনুমান।।
এখানে ‘নেতের বসন’ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অভিধান বলছে, নেত অর্থ প্রাচীনকালে ব্যবহৃত একপ্রকার সূক্ষ্ণ বস্ত্রের নাম; পট্টবস্ত্র; গরদ। পট্টবস্ত্র বিষয়টি বহু কারণে রহস্যময় বস্ত্রবয়ন বিশারদদের কাছে। গরদ মূলত রেশমের শাড়ি। নেত শব্দটির কাছাকাছি দুটি শব্দ পাওয়া যায়— নেতধটি ও নেতবাস। ‘নেতধটি’ অর্থ রেশমের তৈরি সূক্ষ্ম বস্ত্র আর ‘নেতবাস’ অর্থ তসরের কাপড়। তসর হলো একধরনের সিল্ক। দেখা যাচ্ছে, নেত, নেতধটি ও নেতবাস তিনটি শব্দই মোটামুটি রেশম বা সিল্কের কাপড় নির্দেশ করছে। এই সিল্ক এখনো যেমন দামি, বেহুলার সমকালেও এটি তেমনই দামি ছিল বলেই ধারণা করা যায়। ফলে দেখা যাচ্ছে, বিয়ের সময় বেহুলা রেশমের দামি শাড়ি পরেছিল। এখনো বিয়ের শাড়ি জামদানি নাকি বেনারসি নাকি বহুমূল্যের রেশমের হবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এ তো গেল বেহুলার সাজসজ্জার কথা। কিন্তু বর লখিন্দর কি সাজেনি বিয়েতে? সেজেছিল। সে সাজ পুরুষালি। কিন্তু তাতেও অতীত আর বর্তমানে তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না। বিয়েযাত্রার আগে স্নানের সময় লখিন্দর আগর দিয়ে কেশ সুবাসিত করেছিল। তারপর নাপিত তার ক্ষৌরকর্ম করে দিয়েছিল অর্থাৎ ক্লিন শেভ। এরপর শরীরে কস্তুরি-চন্দনের সুগন্ধ মেখে গলায় গজমুক্তার হার আর পারিজাত ফুলের মালা দিয়ে, পায়ে নূপুর, মাথায় সোনার মুকুট আর হাতে সোনায় বাঁধানো কাচের আয়না নিয়ে লখিন্দর বিয়ে করতে গিয়েছিল। সোনায় বাঁধানো কাচের আয়না কেন?
অবাক হওয়ার কিছু নেই বিষয়টিতে। আয়না সে সময়ের আভিজাত্যের প্রতীক। সাধারণ মানুষের কাছে আয়না ছিল বহুমূল্যের জিনিস। ফলে সবাই সেটা কিনতে বা সংগ্রহ করতে পারত না। মূল্যবান জিনিস, ফলে সেটা সোনায় বাধানো হওয়াটা স্বাভাবিক ছিল।
সুন্দর নূপুর পায়, রুণুঝুনু শব্দ পায়,
রত্ন আভরণ শোভা পায়।।…
লখিন্দরের পরনেও ছিল বহুমূল্যের পোশাক, কবি যাকে ‘রত্ন আভরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, বিয়ের পোশাক নিয়ে আজকালকার মতো অতীতেও মানুষ ভালোই চিন্তাভাবনা করেছিল।
বিয়ের পোশাক, বিয়ের সজ্জা, বিয়ের গয়না–সবই হতে হবে শ্রেষ্ঠ— এ ভাবনা এখনো যেমন প্রবল, অতীতেও তা-ই ছিল। শুধু বিয়েই নয়, এগুলো যে প্রতিদিনের চর্চায় ব্যবহার করা হতো, তাও জানা যায়। এতে ফ্যাশন, গয়না কিংবা রূপচর্চার ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ঘরানার সন্দেশ মেলে এই একুশ শতকে দাঁড়িয়ে।
আমাদের সাহিত্যের কিংবদন্তি চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বেহুলা, মহুয়া, মলুয়া, চন্দ্রাবতী। ব্যক্তিত্বে তারা দৃঢ়, সজ্জায় পরিপাটি। কবিকল্পনার বাহুল্য বাদ দিলে তাদের সাজসজ্জায় সমকালের প্রভাব আছে। এসব চরিত্রের বর্ণনা থেকে আমাদের এ অঞ্চলের নারীদের প্রাচীন সাজসজ্জা প্রক্রিয়া ও উপকরণের হদিস মেলে।
সাজসজ্জার মূল বিষয় হলো পরিপাটি করে গুছিয়ে নিজেকে ব্যক্তিত্বময় ও আকর্ষণীয় করে তোলা। এ বিষয়ে প্রাচীন বা আধুনিক নারীদের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না। আধুনিককালে নারীদের সাজসজ্জার যে ধারা, সেটা বহু চর্চিত। বলা হয়, নারীর সাজসজ্জা গভীর পরম্পরার বিষয়। আজ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ শ বছর আগে লেখা বইপত্রে নারীর সাজসজ্জার যেসব বর্ণনা পাওয়া যায়, সেগুলো এখনো ব্যবহার করা হয় বিভিন্নভাবে। প্রাচীন ও বর্তমানকালে সাজসজ্জার মূল পার্থক্য উপাদানের সহজলভ্যতা এবং নতুন উপাদানের সংযুক্তি।
একেত বেহুলার রূপ আরো আভরণ।
রূপেতে করিল আলো শতেক যোজন।।
কবি বিজয়গুপ্ত তাঁর ‘পদ্মপুরাণে’-এ বেহুলার সাজসজ্জা বিষয়ে লাইন দুটি লিখেছিলেন আজ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ শ বছর আগে। নারীদের সাজসজ্জার বেলায় কবিরা কোনোকালেই কার্পণ্য দেখাননি। কিন্তু বর্ণনার ইন্দ্রজাল তৈরির ফাঁকে ফাঁকে কবিরা আমাদের জন্য ছেড়ে গিয়েছিলেন প্রচুর তথ্য। একটু খুঁজে নিলে সেগুলো দিয়ে কয়েক শ বছরের পরম্পরা তৈরি করা যায়। বেহুলার বিয়ের বর্ণনায় বিজয়গুপ্ত সে রকমই এক সেতু রচনা করেছিলেন আমাদের জন্য আজ থেকে বহু বহু বছর আগে।
দিনটি ছিল বুধবার। শুভক্ষণে সোয়া পাঁচ শ বছরের ইতিহাস থেকে উঠে আসা চরিত্র চান্দ সওদাগর চলেছেন পুত্রবধূ আনতে। সঙ্গে শতসহস্র মানুষসহ বিশাল লটবহর। উজানী নগরের আকাশে-বাতাসে তখন অদ্ভুত আনন্দ গীত। পাটের শাড়ি পরে বসে আছে ‘ইন্দ্রের অপ্সরী’ বেহুলা। কিন্তু বিয়ে তো আর এমনি এমনি হয় না। তার আগে থাকে কনের সাজসজ্জা। কবি বিজয়গুপ্ত বিয়ের সাজসজ্জার যে বয়ান দিয়েছেন তা এখনকার তারকা হোটেলে বিয়ের সাজসজ্জার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
সে বর্ণনায় পাওয়া যায়, তখন বেহুলার আঙুলে আংটি, গলায় মুক্তার মালা, নাকে বেশর, হাতে সোনার বালা। বেহুলা ফুল দিয়ে চুল বেঁধেছে, পিঠে দুলছে বেণি, পুরো চুলের বিন্যাসে আছে আগরের সুগন্ধ। তার ভ্রুযুগল সুসজ্জিত, তাতে কাজলের ছোঁয়া। আর পোশাক? কবি বলছেন,
অঙ্গেতে পরায় বেহুলার নানা আভরণ।
কটিতে পরায় বেহুলার বিচিত্র বসন।। […]
নেতের বসন দিল কুঁচাইয়া স্থান।
স্বর্গ-বিদ্যাধরী যেন হয় অনুমান।।
এখানে ‘নেতের বসন’ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অভিধান বলছে, নেত অর্থ প্রাচীনকালে ব্যবহৃত একপ্রকার সূক্ষ্ণ বস্ত্রের নাম; পট্টবস্ত্র; গরদ। পট্টবস্ত্র বিষয়টি বহু কারণে রহস্যময় বস্ত্রবয়ন বিশারদদের কাছে। গরদ মূলত রেশমের শাড়ি। নেত শব্দটির কাছাকাছি দুটি শব্দ পাওয়া যায়— নেতধটি ও নেতবাস। ‘নেতধটি’ অর্থ রেশমের তৈরি সূক্ষ্ম বস্ত্র আর ‘নেতবাস’ অর্থ তসরের কাপড়। তসর হলো একধরনের সিল্ক। দেখা যাচ্ছে, নেত, নেতধটি ও নেতবাস তিনটি শব্দই মোটামুটি রেশম বা সিল্কের কাপড় নির্দেশ করছে। এই সিল্ক এখনো যেমন দামি, বেহুলার সমকালেও এটি তেমনই দামি ছিল বলেই ধারণা করা যায়। ফলে দেখা যাচ্ছে, বিয়ের সময় বেহুলা রেশমের দামি শাড়ি পরেছিল। এখনো বিয়ের শাড়ি জামদানি নাকি বেনারসি নাকি বহুমূল্যের রেশমের হবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এ তো গেল বেহুলার সাজসজ্জার কথা। কিন্তু বর লখিন্দর কি সাজেনি বিয়েতে? সেজেছিল। সে সাজ পুরুষালি। কিন্তু তাতেও অতীত আর বর্তমানে তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না। বিয়েযাত্রার আগে স্নানের সময় লখিন্দর আগর দিয়ে কেশ সুবাসিত করেছিল। তারপর নাপিত তার ক্ষৌরকর্ম করে দিয়েছিল অর্থাৎ ক্লিন শেভ। এরপর শরীরে কস্তুরি-চন্দনের সুগন্ধ মেখে গলায় গজমুক্তার হার আর পারিজাত ফুলের মালা দিয়ে, পায়ে নূপুর, মাথায় সোনার মুকুট আর হাতে সোনায় বাঁধানো কাচের আয়না নিয়ে লখিন্দর বিয়ে করতে গিয়েছিল। সোনায় বাঁধানো কাচের আয়না কেন?
অবাক হওয়ার কিছু নেই বিষয়টিতে। আয়না সে সময়ের আভিজাত্যের প্রতীক। সাধারণ মানুষের কাছে আয়না ছিল বহুমূল্যের জিনিস। ফলে সবাই সেটা কিনতে বা সংগ্রহ করতে পারত না। মূল্যবান জিনিস, ফলে সেটা সোনায় বাধানো হওয়াটা স্বাভাবিক ছিল।
সুন্দর নূপুর পায়, রুণুঝুনু শব্দ পায়,
রত্ন আভরণ শোভা পায়।।…
লখিন্দরের পরনেও ছিল বহুমূল্যের পোশাক, কবি যাকে ‘রত্ন আভরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, বিয়ের পোশাক নিয়ে আজকালকার মতো অতীতেও মানুষ ভালোই চিন্তাভাবনা করেছিল।
বিয়ের পোশাক, বিয়ের সজ্জা, বিয়ের গয়না–সবই হতে হবে শ্রেষ্ঠ— এ ভাবনা এখনো যেমন প্রবল, অতীতেও তা-ই ছিল। শুধু বিয়েই নয়, এগুলো যে প্রতিদিনের চর্চায় ব্যবহার করা হতো, তাও জানা যায়। এতে ফ্যাশন, গয়না কিংবা রূপচর্চার ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ঘরানার সন্দেশ মেলে এই একুশ শতকে দাঁড়িয়ে।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে