তানিয়া ফেরদৌস
ঘ্রাণেই অর্ধেক খাওয়া হয়ে যায়—কথাটি সব সময় ঠিক নয়। খেতে বসে খাবারের ঘ্রাণ নাকে লাগলে পালিয়েও যেতে পারেন অনেকে। যদি আগেভাগে রণে ভঙ্গ দিয়ে পলায়নের ইচ্ছা জাগে, তবে স্বাদ নিতে পারবেন না কোনো কোনো অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবারের। আমাদের দেশে কড়া আর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঘ্রাণের গন্ধ-ভাদাল পাতা, হিদল বা সিদল, চ্যাঁপা শুঁটকি, নাপ্পি, কাঞ্জির ভাত ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী খাবার অনেকেই খুব শখ করে খান। তবে পৃথিবীর সর্বাধিক গন্ধযুক্ত খাবারের বৈচিত্র্যময় তালিকাটি কিন্তু কম লম্বা নয়।
প্রথমেই বলা যায় সুমিষ্ট কাস্টার্ডের মতো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ফল ডুরিয়ানের কথা। কাঁঠাল গোত্রের এই পূর্ব-এশীয় ফল ডুরিয়ানের সমঝদারেরাও কিন্তু একবাক্যে বলেন, এর ঘ্রাণ পেলে কোথাও কিছু মরে পড়ে আছে নাকি, তাই ভাববে সবাই। এই তালিকায় আরও আছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ‘স্টিনকিং টো’ ফ্রুট বা ‘দুর্গন্ধী পদাঙ্গুলি’ ফল। অত্যন্ত কড়া মিঠে স্বাদের এই ফলের গন্ধ ঠিক কী রকম, তা নিশ্চয়ই আর বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে হাসির কথা হলো, এই ফলের খোসা ফাটালে যদি মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বিশিষ্ট গন্ধটি না পাওয়া যায়, তবে ধরে নিতে হবে যে ফলটি পচে গেছে। আমাদের দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল তো গন্ধের দিক থেকে এই ফলগুলোর কাছে নস্যিই বলা যায়।
জারানো মাছ বা ফার্মেন্টেড ফিশ কমবেশি বহু দেশেই খায় সবাই। তবে মাছ দুই মাস লবণ পানিতে ফেলে রেখে টিনজাত করা সুইডিশ সুরস্ট্রমিং–এর পচা ডিমের গন্ধ কিন্তু বরদাশত করা সবার কর্ম নয়। সুইডিশেরা তাদের এই প্রিয় খাবারের গন্ধের তীব্রতা কমাতে একে মাখন, রুটি, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে স্যান্ডউইচ বানিয়ে খেয়ে থাকেন। ঠিক এমনই এক অদ্ভুত কড়া ক্লোরিনগন্ধী হাকার্ল নামের জনপ্রিয় খাবার প্রচলিত আছে আইসল্যান্ডে। এমনিতে বিষাক্ত গ্রিনল্যান্ড শার্কের মাংস বরফে ঢাকা মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় কয়েক মাস। তারপর তা বের করে আবারও দু–এক মাস বাতাসে ঝুলিয়ে রেখে দিলেই তা বিষমুক্ত ও খাদ্যোপযোগী হয়। বড়দিনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক উৎসবের ভোজসভায় টেবিলে মধ্যমণি হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী হাকার্ল।
পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সয়াবিন এক জনপ্রিয় খাদ্য। কিন্তু জাপানে তুমুল জনপ্রিয় প্রাতরাশের খাবার নাটো খাওয়ার জন্য বেশ দুঃসাহসিক হওয়া দরকার। ভেজা সয়াবিন পচিয়ে, গাঁজিয়ে তৈরি করা এক বাটি আঠালো নাটো পেলে অনেক সময় আর কিছুই চায় না জাপানিরা। অথচ তাদের বর্ণনাতেই এসেছে যে, এই খাবারের গন্ধ অনেকটাই স্যাঁতসেঁতে পায়ের মতো। আবার, সারা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় তোফু বা ঘনীভূত সয়া–দুধের পনির। সেই লবণাক্ত সয়া–দুধের জলীয় অংশে ডুবিয়ে ফেলে রেখে তৈরি হয় স্টিংকি তোফু বা গন্ধ-তোফু। হংকংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুডের মধ্যে একটি হলো ডুবো তেলে ভাজা এই গন্ধ-তোফু।
গন্ধে ভিরমি খাওয়ার মতো খাবারের লিস্টি অসম্পূর্ণই রয়ে যাবে চীন দেশের সেঞ্চুরি এগ বা শতবর্ষী ডিম্বের কথা না বললে। হাঁসের ডিম প্রথমে সোডা আর চায়ের দ্রবণে ডুবিয়ে ফেলে রাখা হয়। তারপর বালি, চা পাতা, চুন, আর খড় দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে এই ডিমগুলো দুই মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত রাখা হয়। ইউরিয়ার কড়া গন্ধ, আর বেশ একটা ক্রিমি পুডিংয়ের মতো টেক্সচার হয় এই ডিমের। সিদ্ধ করে বা এমনিতেই সয়াসস বা জারানো আদা কুচি দিয়ে পরিবেশন করা হয় রং বদলে খয়েরি, আর সবুজাভ হয়ে যাওয়া সেঞ্চুরি এগ।
শুঁটকি বা ব্লু চিজের মতোই দীর্ঘদিনের অভ্যাসের কারণেই বিভিন্ন দেশে এই আপাতদৃষ্টিতে অস্বস্তিকর গন্ধযুক্ত খাবারগুলো সবাই খুব আগ্রহ করে খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া এই খাবারগুলোর সঙ্গে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বিভিন্ন জাতির মানুষের অনুভূতি জড়িয়ে আছে। তাই আমাদের কাঞ্জির ভাত হোক, হাকার্ল হোক, আর সেঞ্চুরি এগই হোক—সব খাবারই অনন্যসাধারণ ও বিশিষ্ট।
ঘ্রাণেই অর্ধেক খাওয়া হয়ে যায়—কথাটি সব সময় ঠিক নয়। খেতে বসে খাবারের ঘ্রাণ নাকে লাগলে পালিয়েও যেতে পারেন অনেকে। যদি আগেভাগে রণে ভঙ্গ দিয়ে পলায়নের ইচ্ছা জাগে, তবে স্বাদ নিতে পারবেন না কোনো কোনো অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবারের। আমাদের দেশে কড়া আর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঘ্রাণের গন্ধ-ভাদাল পাতা, হিদল বা সিদল, চ্যাঁপা শুঁটকি, নাপ্পি, কাঞ্জির ভাত ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী খাবার অনেকেই খুব শখ করে খান। তবে পৃথিবীর সর্বাধিক গন্ধযুক্ত খাবারের বৈচিত্র্যময় তালিকাটি কিন্তু কম লম্বা নয়।
প্রথমেই বলা যায় সুমিষ্ট কাস্টার্ডের মতো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ফল ডুরিয়ানের কথা। কাঁঠাল গোত্রের এই পূর্ব-এশীয় ফল ডুরিয়ানের সমঝদারেরাও কিন্তু একবাক্যে বলেন, এর ঘ্রাণ পেলে কোথাও কিছু মরে পড়ে আছে নাকি, তাই ভাববে সবাই। এই তালিকায় আরও আছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ‘স্টিনকিং টো’ ফ্রুট বা ‘দুর্গন্ধী পদাঙ্গুলি’ ফল। অত্যন্ত কড়া মিঠে স্বাদের এই ফলের গন্ধ ঠিক কী রকম, তা নিশ্চয়ই আর বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে হাসির কথা হলো, এই ফলের খোসা ফাটালে যদি মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বিশিষ্ট গন্ধটি না পাওয়া যায়, তবে ধরে নিতে হবে যে ফলটি পচে গেছে। আমাদের দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল তো গন্ধের দিক থেকে এই ফলগুলোর কাছে নস্যিই বলা যায়।
জারানো মাছ বা ফার্মেন্টেড ফিশ কমবেশি বহু দেশেই খায় সবাই। তবে মাছ দুই মাস লবণ পানিতে ফেলে রেখে টিনজাত করা সুইডিশ সুরস্ট্রমিং–এর পচা ডিমের গন্ধ কিন্তু বরদাশত করা সবার কর্ম নয়। সুইডিশেরা তাদের এই প্রিয় খাবারের গন্ধের তীব্রতা কমাতে একে মাখন, রুটি, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে স্যান্ডউইচ বানিয়ে খেয়ে থাকেন। ঠিক এমনই এক অদ্ভুত কড়া ক্লোরিনগন্ধী হাকার্ল নামের জনপ্রিয় খাবার প্রচলিত আছে আইসল্যান্ডে। এমনিতে বিষাক্ত গ্রিনল্যান্ড শার্কের মাংস বরফে ঢাকা মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় কয়েক মাস। তারপর তা বের করে আবারও দু–এক মাস বাতাসে ঝুলিয়ে রেখে দিলেই তা বিষমুক্ত ও খাদ্যোপযোগী হয়। বড়দিনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক উৎসবের ভোজসভায় টেবিলে মধ্যমণি হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী হাকার্ল।
পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সয়াবিন এক জনপ্রিয় খাদ্য। কিন্তু জাপানে তুমুল জনপ্রিয় প্রাতরাশের খাবার নাটো খাওয়ার জন্য বেশ দুঃসাহসিক হওয়া দরকার। ভেজা সয়াবিন পচিয়ে, গাঁজিয়ে তৈরি করা এক বাটি আঠালো নাটো পেলে অনেক সময় আর কিছুই চায় না জাপানিরা। অথচ তাদের বর্ণনাতেই এসেছে যে, এই খাবারের গন্ধ অনেকটাই স্যাঁতসেঁতে পায়ের মতো। আবার, সারা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় তোফু বা ঘনীভূত সয়া–দুধের পনির। সেই লবণাক্ত সয়া–দুধের জলীয় অংশে ডুবিয়ে ফেলে রেখে তৈরি হয় স্টিংকি তোফু বা গন্ধ-তোফু। হংকংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুডের মধ্যে একটি হলো ডুবো তেলে ভাজা এই গন্ধ-তোফু।
গন্ধে ভিরমি খাওয়ার মতো খাবারের লিস্টি অসম্পূর্ণই রয়ে যাবে চীন দেশের সেঞ্চুরি এগ বা শতবর্ষী ডিম্বের কথা না বললে। হাঁসের ডিম প্রথমে সোডা আর চায়ের দ্রবণে ডুবিয়ে ফেলে রাখা হয়। তারপর বালি, চা পাতা, চুন, আর খড় দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে এই ডিমগুলো দুই মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত রাখা হয়। ইউরিয়ার কড়া গন্ধ, আর বেশ একটা ক্রিমি পুডিংয়ের মতো টেক্সচার হয় এই ডিমের। সিদ্ধ করে বা এমনিতেই সয়াসস বা জারানো আদা কুচি দিয়ে পরিবেশন করা হয় রং বদলে খয়েরি, আর সবুজাভ হয়ে যাওয়া সেঞ্চুরি এগ।
শুঁটকি বা ব্লু চিজের মতোই দীর্ঘদিনের অভ্যাসের কারণেই বিভিন্ন দেশে এই আপাতদৃষ্টিতে অস্বস্তিকর গন্ধযুক্ত খাবারগুলো সবাই খুব আগ্রহ করে খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া এই খাবারগুলোর সঙ্গে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বিভিন্ন জাতির মানুষের অনুভূতি জড়িয়ে আছে। তাই আমাদের কাঞ্জির ভাত হোক, হাকার্ল হোক, আর সেঞ্চুরি এগই হোক—সব খাবারই অনন্যসাধারণ ও বিশিষ্ট।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে