মান্দি ডি কস্তা, ঢাকা
খাবার শুধু মানুষের জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য বস্তুই নয়, এটি ঐতিহ্যেরও বাহক। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের রয়েছে বৈচিত্র্যময়, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবারের নিজস্ব ঐতিহ্য। প্রতি বছর পার্বত্য মেলায় দেশের ও দেশের বাইরের মানুষ এসব খাবারের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। এসব খাবারের স্বাদও পরখ করে দেখার সুযোগ মেলে এই মেলায়। শিল্পকলা একাডেমিতে ১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি ৪ দিনব্যাপী এ মেলায় অন্যতম আকর্ষণ পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ঐতিহ্যের এসব খাবার। স্টল ঘুরে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার নিয়ে আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য এই আয়োজন।
চাকমা খাবার:
এবারের মেলায় খাবারের স্টলগুলোতে চাকমা সম্প্রদায়ের স্টল যেমন বেশি তেমনি খাবারের সংখ্যাটাও বেশি। এসব স্টলের সামনে পাহাড়ি-বাঙালি সবারই ভিড় দেখা যায়।
পিঠা:
মেলায় চাকমাদের বিন্নি পিঠা, বড়া পিঠা ও আর ছাইন্না পিঠাই বিভিন্ন স্টলে প্রদর্শনী ও বিক্রি হচ্ছে। রাঙামাটির কালিন্দীপুরের বাসিন্দা সুচিত্রা চাকমা জানান, ছাইন্না পিঠা বানাতে প্রথমে আতপ চাল সারা রাত ভেজানোর পর শুকিয়ে গুঁড়া করা হয়। এরপর এর সঙ্গে মেশানো হয় নারকেল, আর পিঠার ভেতরে দেওয়া হয় গুড়। এরপর পানির ভাবে সিদ্ধ করা হয়। অনেকটা মোমোর মতো।
বিন্নি পিঠায় বিন্নি চাল, নারকেল ও পাকা কলার মিশ্রণ কলাপাতায় মুড়িয়ে পানির ভাপে সিদ্ধ করা হয়। আর বড়া পিঠায় বিন্নি চাল, পাকা কলা, নারকেল ও পানি দিয়ে মাখিয়ে তেলে ভাজা হয়। ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকার মধ্যে এসব পিঠা পাওয়া যাচ্ছে। আর বিক্রিও জমজমাট।
সুমো গরাং:
বাঁশের চোঙের ভেতরে যে খাবার রান্না করা হয় তাকে চাকমা ভাষায় বলে ‘সুমো গরাং’। খাগড়াছড়ির বাসিন্দা ও মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রয়া চাকমা বলেন, ‘সাধারণত মাছ ও মাংস এই দুই ধরনের সুমো গরাং হয়। এটা আমাদের খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার।’
পাজং:
চাকমাদের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী খাবারের নাম পাজং। সিকো চাকমা বলেন, কাঁচা কাঁঠাল, আলু, শিম, বরবটিসহ হরেক রকম সবজি দিয়ে রানা করা হয় এই খাবার। আর বাবিন চাকমা বলেন, মূলত তেল মসলা ছাড়া সিদোল বা নাপ্পি (চিংড়ি বা ছোট মাছ শুকিয়ে গুঁড়া করে বা মাটি চাপা দিয়ে বানানো বিশেষ খাবার) দিয়ে এ খাবার রান্না করা হয়। তবে তেল, মসলা, শুঁটকি মিশিয়েও পাজং রান্না করা যায়। বিভিন্ন স্টলে শুধু মসলা ও শুঁটকি দিয়ে রান্না করা পাজংই বেশি দেখা গেছে।
মারমাদের খাবার
মুন্ডা:
মেলার খাবারের স্টলগুলোতে অন্যতম আকর্ষণ ছিল মারমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘মুন্ডা’। বান্দরবানের মারমা বাজার থেকে আসা সিংমে মারমা বলেন, চালের নুডলস, সিদ্ধ ডিম, মুরগির মাংস, শুকনা ভাজা মরিচ, মসলা আর স্যুপ দিয়ে তৈরি হয় মুন্ডা। বান্দরবান মধ্যপাড়া থেকে আসা উদ্যোক্তা খিং সাই নিপু মারমা বলেন, এবার মুন্ডার বিক্রি সবচেয়ে বেশি।
কংইয়াং আলুং মুং:
কংইয়াং মানে বিন্নি চাল, আলুং অর্থ গোল আর মুং মানে পিঠা। বাংলা ভাষায় এর অর্থ দাঁড়ায়— বিন্নি চালের গোল পিঠা। বান্দরবানের থুই মে চিং মারমা জানান, বিন্নি চাল ভাপে সিদ্ধ করে চিনি আর নারকেল মিশিয়ে বেসন মাখিয়ে তেলে ভেজে তৈরি করা হয় মারমাদের ঐতিহ্যবাহী এ পিঠা।
বালা চো:
চিংড়ি বা ছোট মাছের শুঁটকি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, রশুন, শুকনো মরিচ ও মসলা দিয়ে ভাজা মারমাদের এই খাবার ‘বালা চো’ নামে পরিচিত।
খিয়াংদের সিজো মৌ বা তেলের পিঠা:
পটুয়াখালীর বাসিন্দা ও মিয়ানমারে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী এলিচান খিয়াং জানান, চালের গুঁড়া, চিনি, নারকেল দিয়ে তৈরি হয় সিজো মৌ পিঠা।
ত্রিপুরা তেলের পিঠা অওয়ান:
রনেশ ত্রিপুরা জাইকার অ্যাডভাইজার হিসেবে চাকরি করছেন ঢাকায়। তিনি জানান, কালো ছোট বিন্নি চাল, চিনি, কলা দিয়ে তৈরি হয় অওয়ান পিঠা।
হাঁসের মাংস, কুচিয়া, কাঁকড়া ভুনাসহ অন্যান্য খাবার:
মেলায় হাঁসের মাংস ও কাঁকড়ার পদের প্রতি দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এ ছাড়া পাহাড়িদের আরেকটি জনপ্রিয় খাবার কুচিয়া ভুনাও ছিল স্টলগুলোতে।
বিন্নি চালের পায়েস:
পার্বত্য চট্টগ্রামের সব পাহাড়ির মধ্যেই বিন্নি চাল দিয়ে বানানো খাবারের প্রচলন আছে। বিন্নি চাল, দুধ, নারকেল ও চিনি বা গুড় দিয়ে রান্না করা হয় সুস্বাদু পায়েস। সাদা, কালো এবং খয়েরি এই তিন রংয়ের বিন্নি চালের খাবার পাওয়া যাচ্ছে মেলায়।
বাঁশের শিকে মাছ ও মাংসের কাবাব:
শূকর, মুরগি, বিভিন্ন মাছ মরিচ মসলা মাখিয়ে পোড়ানো খাবারের কদরও বেশ। বাঁশের চোঙে বিক্রি করা চা, ভুট্টার কাবাবেও দর্শনার্থীদের রয়েছে বিশেষ আগ্রহ।
খাবার শুধু মানুষের জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য বস্তুই নয়, এটি ঐতিহ্যেরও বাহক। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের রয়েছে বৈচিত্র্যময়, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবারের নিজস্ব ঐতিহ্য। প্রতি বছর পার্বত্য মেলায় দেশের ও দেশের বাইরের মানুষ এসব খাবারের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। এসব খাবারের স্বাদও পরখ করে দেখার সুযোগ মেলে এই মেলায়। শিল্পকলা একাডেমিতে ১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি ৪ দিনব্যাপী এ মেলায় অন্যতম আকর্ষণ পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ঐতিহ্যের এসব খাবার। স্টল ঘুরে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার নিয়ে আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য এই আয়োজন।
চাকমা খাবার:
এবারের মেলায় খাবারের স্টলগুলোতে চাকমা সম্প্রদায়ের স্টল যেমন বেশি তেমনি খাবারের সংখ্যাটাও বেশি। এসব স্টলের সামনে পাহাড়ি-বাঙালি সবারই ভিড় দেখা যায়।
পিঠা:
মেলায় চাকমাদের বিন্নি পিঠা, বড়া পিঠা ও আর ছাইন্না পিঠাই বিভিন্ন স্টলে প্রদর্শনী ও বিক্রি হচ্ছে। রাঙামাটির কালিন্দীপুরের বাসিন্দা সুচিত্রা চাকমা জানান, ছাইন্না পিঠা বানাতে প্রথমে আতপ চাল সারা রাত ভেজানোর পর শুকিয়ে গুঁড়া করা হয়। এরপর এর সঙ্গে মেশানো হয় নারকেল, আর পিঠার ভেতরে দেওয়া হয় গুড়। এরপর পানির ভাবে সিদ্ধ করা হয়। অনেকটা মোমোর মতো।
বিন্নি পিঠায় বিন্নি চাল, নারকেল ও পাকা কলার মিশ্রণ কলাপাতায় মুড়িয়ে পানির ভাপে সিদ্ধ করা হয়। আর বড়া পিঠায় বিন্নি চাল, পাকা কলা, নারকেল ও পানি দিয়ে মাখিয়ে তেলে ভাজা হয়। ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকার মধ্যে এসব পিঠা পাওয়া যাচ্ছে। আর বিক্রিও জমজমাট।
সুমো গরাং:
বাঁশের চোঙের ভেতরে যে খাবার রান্না করা হয় তাকে চাকমা ভাষায় বলে ‘সুমো গরাং’। খাগড়াছড়ির বাসিন্দা ও মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রয়া চাকমা বলেন, ‘সাধারণত মাছ ও মাংস এই দুই ধরনের সুমো গরাং হয়। এটা আমাদের খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার।’
পাজং:
চাকমাদের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী খাবারের নাম পাজং। সিকো চাকমা বলেন, কাঁচা কাঁঠাল, আলু, শিম, বরবটিসহ হরেক রকম সবজি দিয়ে রানা করা হয় এই খাবার। আর বাবিন চাকমা বলেন, মূলত তেল মসলা ছাড়া সিদোল বা নাপ্পি (চিংড়ি বা ছোট মাছ শুকিয়ে গুঁড়া করে বা মাটি চাপা দিয়ে বানানো বিশেষ খাবার) দিয়ে এ খাবার রান্না করা হয়। তবে তেল, মসলা, শুঁটকি মিশিয়েও পাজং রান্না করা যায়। বিভিন্ন স্টলে শুধু মসলা ও শুঁটকি দিয়ে রান্না করা পাজংই বেশি দেখা গেছে।
মারমাদের খাবার
মুন্ডা:
মেলার খাবারের স্টলগুলোতে অন্যতম আকর্ষণ ছিল মারমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘মুন্ডা’। বান্দরবানের মারমা বাজার থেকে আসা সিংমে মারমা বলেন, চালের নুডলস, সিদ্ধ ডিম, মুরগির মাংস, শুকনা ভাজা মরিচ, মসলা আর স্যুপ দিয়ে তৈরি হয় মুন্ডা। বান্দরবান মধ্যপাড়া থেকে আসা উদ্যোক্তা খিং সাই নিপু মারমা বলেন, এবার মুন্ডার বিক্রি সবচেয়ে বেশি।
কংইয়াং আলুং মুং:
কংইয়াং মানে বিন্নি চাল, আলুং অর্থ গোল আর মুং মানে পিঠা। বাংলা ভাষায় এর অর্থ দাঁড়ায়— বিন্নি চালের গোল পিঠা। বান্দরবানের থুই মে চিং মারমা জানান, বিন্নি চাল ভাপে সিদ্ধ করে চিনি আর নারকেল মিশিয়ে বেসন মাখিয়ে তেলে ভেজে তৈরি করা হয় মারমাদের ঐতিহ্যবাহী এ পিঠা।
বালা চো:
চিংড়ি বা ছোট মাছের শুঁটকি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, রশুন, শুকনো মরিচ ও মসলা দিয়ে ভাজা মারমাদের এই খাবার ‘বালা চো’ নামে পরিচিত।
খিয়াংদের সিজো মৌ বা তেলের পিঠা:
পটুয়াখালীর বাসিন্দা ও মিয়ানমারে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী এলিচান খিয়াং জানান, চালের গুঁড়া, চিনি, নারকেল দিয়ে তৈরি হয় সিজো মৌ পিঠা।
ত্রিপুরা তেলের পিঠা অওয়ান:
রনেশ ত্রিপুরা জাইকার অ্যাডভাইজার হিসেবে চাকরি করছেন ঢাকায়। তিনি জানান, কালো ছোট বিন্নি চাল, চিনি, কলা দিয়ে তৈরি হয় অওয়ান পিঠা।
হাঁসের মাংস, কুচিয়া, কাঁকড়া ভুনাসহ অন্যান্য খাবার:
মেলায় হাঁসের মাংস ও কাঁকড়ার পদের প্রতি দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এ ছাড়া পাহাড়িদের আরেকটি জনপ্রিয় খাবার কুচিয়া ভুনাও ছিল স্টলগুলোতে।
বিন্নি চালের পায়েস:
পার্বত্য চট্টগ্রামের সব পাহাড়ির মধ্যেই বিন্নি চাল দিয়ে বানানো খাবারের প্রচলন আছে। বিন্নি চাল, দুধ, নারকেল ও চিনি বা গুড় দিয়ে রান্না করা হয় সুস্বাদু পায়েস। সাদা, কালো এবং খয়েরি এই তিন রংয়ের বিন্নি চালের খাবার পাওয়া যাচ্ছে মেলায়।
বাঁশের শিকে মাছ ও মাংসের কাবাব:
শূকর, মুরগি, বিভিন্ন মাছ মরিচ মসলা মাখিয়ে পোড়ানো খাবারের কদরও বেশ। বাঁশের চোঙে বিক্রি করা চা, ভুট্টার কাবাবেও দর্শনার্থীদের রয়েছে বিশেষ আগ্রহ।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে