এলিজা চৌধুরী
দীর্ঘ এক মাসের রোজা আর ঈদের ছুটি শেষে জীবন আবার চিরাচরিত নিয়মে ফিরছে। রোজা আর ঈদ মিলিয়ে নিয়মিত ফিটনেস রুটিন গিয়েছিল বদলে। ফলে যারা যোগব্যায়াম করতেন, দীর্ঘ বিরতির পর তাদের সময় এসেছে কিছু নিয়ম মেনে আবার যোগ ব্যায়াম শুরু করার।
নতুন করে ফেরা
দীর্ঘ বিরতি থেকে ফিরে সরাসরি কঠিন বা অ্যাডভান্স যোগাসনের অনুশীলন না করাই ভালো। প্রতিদিন যোগাসন অনুশীলন শুরুর আগে ওয়ার্ম-আপ করে শরীরের প্রতিটি সংযোগস্থল ও পেশি সচল করে নিতে হবে। তারপর নিয়মিত আসন করতে হবে। সহজ আসন থেকে ধীরে ধীরে কঠিন আসনগুলোর অনুশীলন করতে হবে। নয়তো হঠাৎ বেশি চাপ পড়ার কারণে মাথা ব্যথা, হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথাসহ শরীরে বিভিন্ন পেশি ও জায়গায় ব্যথা শুরু হতে পারে।
খাবারে লাগাম দিন
ঈদে প্রচুর খাওয়া দাওয়া হয়েছে। তাই এক সপ্তাহে হুট করে ওজন কমানোর আশা করবেন না। যদি স্বাস্থ্য রক্ষা করতে চান তাহলে এখন খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। যেসব খাবারে পরিশোধিত চিনি ব্যবহার করা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলুন। আর মাছ মাংস জাতীয় ভারী খাবার যতটা সম্ভব অল্প খান। সবুজ শাক-সবজি ও ফলমূল পরিমাণ মতো খেতে থাকুন। খাওয়ার পাঁচ মিনিট আগে চেষ্টা করবেন এক থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিতে। যে বেলায় খাবার বেশি হবে সে বেলায় খাবারের পর বজ্রাসনে বসুন। শুধু হাঁটু ভেঙে বজ্রাসনে বসলেই হবে না। বজ্রাসনে বসে হাত মুঠি পাকিয়ে থাই থেকে হাঁটু পর্যন্ত মৃদু পাঞ্চ দিতে থাকুন। পাঞ্চ করতে করতে একবার হাত সামনে হাঁটুর দিকে নিন। আবার পাঞ্চ করতে করতে হাত পেছনে থাইয়ের দিকে আনুন। এভাবে দুই থেকে পাঁচ মিনিট করুন। এটি খাবার দ্রুত হজমে সহায়তা করবে।
বাড়তি ওজন কমাতে
আমাদের দেশে রমজান মাসে বেশি খাওয়া হয়। ফলে ওজন বেড়ে যায়। এ অবস্থায় ওজন কমানোর জন্য হটযোগ, থেরাপিউটিক যোগ বা বিন্যাস ফ্লো বেশি ফলপ্রসূ হবে। এর মাঝে কিছু আসন আছে যা নিয়মিত বেশি সময় নিয়ে চর্চা করলে ওজন কমবে দ্রুত। যেমন, সূর্য নমস্কার প্রতিদিন ৫০ রাউন্ড করতে পারলে ওজন কমানো সহজ হবে। এ ছাড়া জানুশিরাসন, পশ্চিমোত্তানাসন, সর্পাসন, পর্বতাসন, দণ্ডাসন, নৌকাসনের মতো আসনগুলো নিয়মিত চর্চা করলে দ্রুত ওজন কমবে।
সানস্যালুটেশন আসন
সাধারণত ১ থেকে ১২টি আলাদা আলাদা আসন নিয়ে সানস্যালুটেশনের ১টি সার্কেল বা ১ রাউন্ড ধরা হয়। এটি একেক জন একেক ভাবে করে থাকেন। যেমন, ১-৬, ১-১০, ১-১২, ১-১৬, ১-১৮টি আসনের মধ্যে করে থাকেন। তবে সহজ হিসেবে ধরা হয় ১-১২ এর যে রাউন্ড সেটকে। ১-১২ এর আসনগুলো হলে, অঞ্জলিমুদ্রা, হস্থউত্থানাসন, পদহস্তাসন, অর্শ্বসঞ্চালনাসন, পর্বতাসন, অষ্টাঅঙ্গা নমস্কার, ভুজঙ্গাসন, পর্বতাসন, অর্শ্বসঞ্চালনাসন, পদহস্তাসন, ব্যাক বেন্ডিং ও অঞ্জলিমুদ্রা। এই ১২টি আসন একটানা শেষ করলে ১ রাউন্ড হয়।
করার নিয়ম
ইয়োগা ম্যাটে দাঁড়ান। দুই পায়ের পাতা এক সঙ্গে রেখে দুই হাতের তালু কোমরের দুই পাশে সমানভাবে রাখুন। স্বাভাবিক শ্বাস নিন। দুই হাতের তালু এক সঙ্গে করে নমস্কার মুদ্রা করুন। এবার শ্বাস নিতে নিতে ব্যাক বেন্ডিং করুন। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পদহস্তাসনে যান। শ্বাস নিতে নিতে অর্শ্বসঞ্চালনাসন করুন। এবার পর্বতাসনে যান এবং শ্বাস আটকে রাখুন। এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে অষ্টাঅঙ্গা নমস্কারে চলে যান। শ্বাস নিতে নিতে ভুজুঙ্গাসন করুন। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পর্বতাসনে চলে যান এবং অপেক্ষা না করে শ্বাস নিতে নিতে অর্শ্বসঞ্চালনাসনে চলে যান। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পদহস্তাসনে যান। এবার শ্বাস নিতে নিতে ব্যাক বেন্ডিং করুন। তারপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নমস্কার মুদ্রা করুন ও শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক করুন।
একই নিয়মে ৩ থেকে শুরু করে ৩০ বা তারও বেশি যতবার পারবেন করুন। প্রতি ৩ বা ৪ রাউন্ড পর পর দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ আরাম করুন। তারপর আবার সানস্যালুটেশন শুরু করুন। সম্পূর্ণ শেষ হলে শবাসনে বিশ্রাম করুন।
উপকারিতা ও সতর্কতা
সানস্যালুটেশন বা সূর্যনমষ্কারকে বলা হয় যোগব্যায়ামের রাজা। এই আসন ৩ রাউন্ড করলে যতটা উপকার পাওয়া যায় অন্য কোনো আসন তার বেশি সময় করলেও ততটা উপকার পাওয়া যায় না। এটি রক্তসঞ্চালণ বাড়ায়, শরীরের টক্সিন দূর করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, ফুসফুস ভালো রাখে, যৌবন ধরে রাখে, শরীরে দুর্গন্ধ হতে দেয় না, পেটের চর্বি ও ওজন কমাতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, দেহের নমনীয়তা বাড়ায়, থাইরয়েড, গলা, ফুসফুস ও পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে, স্বাভাবিক প্রসবে সাহায্য করে, উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, গর্ভকাল চলছে, মাইগ্রেন ও আলসার রয়েছে তাঁরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এই আসন করবেন না।
লেখক: এলিজা চৌধুরী,প্রশিক্ষক ও স্বত্বাধিকারী এলিজা’স ইয়োগার্ট–ইয়োগা ও ওয়েলবিং সেন্টার
দীর্ঘ এক মাসের রোজা আর ঈদের ছুটি শেষে জীবন আবার চিরাচরিত নিয়মে ফিরছে। রোজা আর ঈদ মিলিয়ে নিয়মিত ফিটনেস রুটিন গিয়েছিল বদলে। ফলে যারা যোগব্যায়াম করতেন, দীর্ঘ বিরতির পর তাদের সময় এসেছে কিছু নিয়ম মেনে আবার যোগ ব্যায়াম শুরু করার।
নতুন করে ফেরা
দীর্ঘ বিরতি থেকে ফিরে সরাসরি কঠিন বা অ্যাডভান্স যোগাসনের অনুশীলন না করাই ভালো। প্রতিদিন যোগাসন অনুশীলন শুরুর আগে ওয়ার্ম-আপ করে শরীরের প্রতিটি সংযোগস্থল ও পেশি সচল করে নিতে হবে। তারপর নিয়মিত আসন করতে হবে। সহজ আসন থেকে ধীরে ধীরে কঠিন আসনগুলোর অনুশীলন করতে হবে। নয়তো হঠাৎ বেশি চাপ পড়ার কারণে মাথা ব্যথা, হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথাসহ শরীরে বিভিন্ন পেশি ও জায়গায় ব্যথা শুরু হতে পারে।
খাবারে লাগাম দিন
ঈদে প্রচুর খাওয়া দাওয়া হয়েছে। তাই এক সপ্তাহে হুট করে ওজন কমানোর আশা করবেন না। যদি স্বাস্থ্য রক্ষা করতে চান তাহলে এখন খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। যেসব খাবারে পরিশোধিত চিনি ব্যবহার করা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলুন। আর মাছ মাংস জাতীয় ভারী খাবার যতটা সম্ভব অল্প খান। সবুজ শাক-সবজি ও ফলমূল পরিমাণ মতো খেতে থাকুন। খাওয়ার পাঁচ মিনিট আগে চেষ্টা করবেন এক থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিতে। যে বেলায় খাবার বেশি হবে সে বেলায় খাবারের পর বজ্রাসনে বসুন। শুধু হাঁটু ভেঙে বজ্রাসনে বসলেই হবে না। বজ্রাসনে বসে হাত মুঠি পাকিয়ে থাই থেকে হাঁটু পর্যন্ত মৃদু পাঞ্চ দিতে থাকুন। পাঞ্চ করতে করতে একবার হাত সামনে হাঁটুর দিকে নিন। আবার পাঞ্চ করতে করতে হাত পেছনে থাইয়ের দিকে আনুন। এভাবে দুই থেকে পাঁচ মিনিট করুন। এটি খাবার দ্রুত হজমে সহায়তা করবে।
বাড়তি ওজন কমাতে
আমাদের দেশে রমজান মাসে বেশি খাওয়া হয়। ফলে ওজন বেড়ে যায়। এ অবস্থায় ওজন কমানোর জন্য হটযোগ, থেরাপিউটিক যোগ বা বিন্যাস ফ্লো বেশি ফলপ্রসূ হবে। এর মাঝে কিছু আসন আছে যা নিয়মিত বেশি সময় নিয়ে চর্চা করলে ওজন কমবে দ্রুত। যেমন, সূর্য নমস্কার প্রতিদিন ৫০ রাউন্ড করতে পারলে ওজন কমানো সহজ হবে। এ ছাড়া জানুশিরাসন, পশ্চিমোত্তানাসন, সর্পাসন, পর্বতাসন, দণ্ডাসন, নৌকাসনের মতো আসনগুলো নিয়মিত চর্চা করলে দ্রুত ওজন কমবে।
সানস্যালুটেশন আসন
সাধারণত ১ থেকে ১২টি আলাদা আলাদা আসন নিয়ে সানস্যালুটেশনের ১টি সার্কেল বা ১ রাউন্ড ধরা হয়। এটি একেক জন একেক ভাবে করে থাকেন। যেমন, ১-৬, ১-১০, ১-১২, ১-১৬, ১-১৮টি আসনের মধ্যে করে থাকেন। তবে সহজ হিসেবে ধরা হয় ১-১২ এর যে রাউন্ড সেটকে। ১-১২ এর আসনগুলো হলে, অঞ্জলিমুদ্রা, হস্থউত্থানাসন, পদহস্তাসন, অর্শ্বসঞ্চালনাসন, পর্বতাসন, অষ্টাঅঙ্গা নমস্কার, ভুজঙ্গাসন, পর্বতাসন, অর্শ্বসঞ্চালনাসন, পদহস্তাসন, ব্যাক বেন্ডিং ও অঞ্জলিমুদ্রা। এই ১২টি আসন একটানা শেষ করলে ১ রাউন্ড হয়।
করার নিয়ম
ইয়োগা ম্যাটে দাঁড়ান। দুই পায়ের পাতা এক সঙ্গে রেখে দুই হাতের তালু কোমরের দুই পাশে সমানভাবে রাখুন। স্বাভাবিক শ্বাস নিন। দুই হাতের তালু এক সঙ্গে করে নমস্কার মুদ্রা করুন। এবার শ্বাস নিতে নিতে ব্যাক বেন্ডিং করুন। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পদহস্তাসনে যান। শ্বাস নিতে নিতে অর্শ্বসঞ্চালনাসন করুন। এবার পর্বতাসনে যান এবং শ্বাস আটকে রাখুন। এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে অষ্টাঅঙ্গা নমস্কারে চলে যান। শ্বাস নিতে নিতে ভুজুঙ্গাসন করুন। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পর্বতাসনে চলে যান এবং অপেক্ষা না করে শ্বাস নিতে নিতে অর্শ্বসঞ্চালনাসনে চলে যান। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পদহস্তাসনে যান। এবার শ্বাস নিতে নিতে ব্যাক বেন্ডিং করুন। তারপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নমস্কার মুদ্রা করুন ও শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক করুন।
একই নিয়মে ৩ থেকে শুরু করে ৩০ বা তারও বেশি যতবার পারবেন করুন। প্রতি ৩ বা ৪ রাউন্ড পর পর দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ আরাম করুন। তারপর আবার সানস্যালুটেশন শুরু করুন। সম্পূর্ণ শেষ হলে শবাসনে বিশ্রাম করুন।
উপকারিতা ও সতর্কতা
সানস্যালুটেশন বা সূর্যনমষ্কারকে বলা হয় যোগব্যায়ামের রাজা। এই আসন ৩ রাউন্ড করলে যতটা উপকার পাওয়া যায় অন্য কোনো আসন তার বেশি সময় করলেও ততটা উপকার পাওয়া যায় না। এটি রক্তসঞ্চালণ বাড়ায়, শরীরের টক্সিন দূর করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, ফুসফুস ভালো রাখে, যৌবন ধরে রাখে, শরীরে দুর্গন্ধ হতে দেয় না, পেটের চর্বি ও ওজন কমাতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, দেহের নমনীয়তা বাড়ায়, থাইরয়েড, গলা, ফুসফুস ও পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে, স্বাভাবিক প্রসবে সাহায্য করে, উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, গর্ভকাল চলছে, মাইগ্রেন ও আলসার রয়েছে তাঁরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এই আসন করবেন না।
লেখক: এলিজা চৌধুরী,প্রশিক্ষক ও স্বত্বাধিকারী এলিজা’স ইয়োগার্ট–ইয়োগা ও ওয়েলবিং সেন্টার
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে