সুপ্রিয় সিকদার
কক্সবাজারের অন্য গল্প করা যাক আজ। যে গল্প অনেকেই জানেন না। সমুদ্র মানেই বিপুল জলরাশি। সমুদ্র মানেই ঢেউ আর গর্জন। সমুদ্র মানেই পানির অতলে সূর্যাস্ত। সমুদ্র মানেই নিজেকে তুচ্ছাতিতুচ্ছ মনে হওয়া। সে জন্যই হয়তো আমার প্রিয় জায়গা সমুদ্র, সেটা হোক কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন কিংবা কুয়াকাটা।
সময় ‘ম্যানেজ’ করে আবার কক্সবাজার উপস্থিত হয়েছিলাম দিন কয়েক আগে। কক্সবাজার গেলে সব সময় এমন হোটেলে থাকি, যেখান থেকে সমুদ্র দেখা যায়, সূর্য দেখা যায়। সকালে ঘুম ভাঙে এক নতুন সূর্য দেখে। এ সূর্য কেমন যেন, অদ্ভুত সুন্দর।
কক্সবাজারে আমার মূল উদ্দেশ্য থাকে, কম সময়ে যতটা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সে জন্য আমি শুধু কলাতলী বা লাবণী বিচেই আবদ্ধ থাকি না। চারদিকে যতটা পারি ছড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রে আমার সুবিধার জায়গা হলো, আমি মোটরবাইকপ্রেমী। কক্সবাজার গিয়ে সারা দিনের জন্য বাইক ভাড়া নেওয়া আমার বেশপুরোনো অভ্যাস।
তো এবারও সকাল ১০টায় মোটরবাইক নিয়ে বের হয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য সাবরাং হয়ে টেকনাফের নাফ নদীর মোহনা, যেখান থেকে ছেড়ে যায় সেন্ট মার্টিনের জাহাজ। মনে ভাসে, এর আগে জাহাজ থেকে দেখেছিলাম পাহাড় বেয়ে উঠে যাওয়া আঁকাবাঁকা রাস্তা। কলাতলী থেকে বাইকে করে মেরিন ড্রাইভে উঠতেই আপনার মনে হবে, আপনি স্বর্গে এসেছেন। সবুজের মধ্য দিয়ে গতি বাড়ছে বাইকের। হিমছড়ির পাহাড়কে বাঁয়ে আর সমুদ্রকে ডানে রেখে সামনে আঁকাবাঁকা রাস্তায় এগিয়ে যাচ্ছে আমার মোটরসাইকেল। রেজুখাল নদীর চেকপোস্ট পার হতেই যেন সৌন্দর্য আরও বাড়তে শুরু করল। বাইকের পিঠে আমি, ছুটে চলেছি। ইনানী, পাটুয়ারটেক পার হওয়ার পর সাধারণ পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সাধারণত পর্যটকেরা পাটুয়ারটেক পর্যন্ত যান।
যাঁরা পাটুয়ারটেকের পর মেরিন ড্রাইভ ধরে সামনের দিকে যাননি, তাঁরা বুঝতে পারবেন না, সামনে সুউচ্চ আকাশের সঙ্গে কতটা মিতালি করেছে। সমুদ্রের কথা কীই-বা বলার আছে নতুন করে। সমুদ্র আর পাহাড়ের ছেদ ঘটিয়েছে পিচঢালা রাস্তা। সে রাস্তা ধরেই আমি এগিয়ে যাচ্ছি সাবরাংয়ের দিকে। শামলাপুর, নোয়াখালীপাড়া পার হতে হতে আপনি সবুজে হারিয়ে যাবেন কখনো, কখনো বা মন চাইবে মেরিন ড্রাইভ থেকে সমুদ্রে আছড়ে পড়ি। এদিকে সমুদ্রের পানির রং নীল, অনেকটা সেন্ট মার্টিনের মতো। সুউচ্চ মুইন্না পাহাড়ও এদিকে। চাইলে একজন দক্ষ গাইড নিয়ে ঢুঁ মারতে পারেন।
বাঁয়ে টেকনাফ জিরোপয়েন্টের রাস্তা রেখে মেরিন ড্রাইভ ধরে তিন কিলোমিটার সামনে এগোলেই সাবরাং। বলে রাখা ভালো, সাবরাং টেকনাফের একটি ইউনিয়ন। সম্প্রতি সরকার সাবরাংকে পর্যটন অঞ্চলে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক এখানে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
সাবরাংয়ে কিছু সময় কাটিয়ে ফের রওনা। এবার যাচ্ছি টেকনাফ। টেকনাফ জিরোপয়েন্ট হয়ে সোজা এগিয়ে যাচ্ছে আমার মোটরসাইকেল নাফ নদীর জেটির দিকে। যেখান থেকে সেন্ট মার্টিনের জাহাজ ছেড়ে যায়। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে এগিয়ে যাচ্ছে মোটরসাইকেল, কখনো বেশ উঁচু, কখনো খাড়া ঢাল। পাহাড়ের বুক পাড়ি দিয়ে একসময় পৌঁছে গেলাম জেটিতে।
ঘড়িতে তখন সময় আড়াইটা। তপ্ত রোদ, তবে হিমেল বাতাস যেন কিছু বুঝতেই দিচ্ছে না। এবার কক্সবাজার শহরে ফেরার পালা। বাইপাস হয়ে কিছুটা কম রাস্তায় কক্সবাজার চলে যাওয়া যায়, তবে সেটা করিনি মেরিন ড্রাইভ ধরে ফিরব বলেই। প্রায় ৯০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হবে কক্সবাজার ফিরতে।
ফেরার পথে হাতের বায়ে সমুদ্রের বুকে সূর্য অস্ত যাচ্ছে, ডানে পাহাড়। সন্ধ্যা হতে হতেই পাহাড়ি জনপদে অল্প করে আলো জ্বলতে শুরু করেছে মাত্র। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন তারা। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পৌঁছে গেলাম কক্সবাজার। মোটরসাইকেল ফেরত দিয়ে চলে গেলাম কলাতলী বিচে। সেখানে মাছ ভাজা খাব আর সমুদ্র দেখব শেষবারের জন্য। রাতেই যে ফিরতে হবে।
রাত ৯টার বাসে রওনা দিলাম। পরদিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ফিরলাম যান্ত্রিক শহর ঢাকায়। কিছুটা বিশ্রাম নিয়েই আবার ছুটে যেতে হবে কাজে। আর অপেক্ষা করতে হবে, আবার কবে যাব, কবে যাব, সমুদ্র দর্শনে; শান্ত হব, বিশাল হব।
সতর্কতা
কক্সবাজারের অন্য গল্প করা যাক আজ। যে গল্প অনেকেই জানেন না। সমুদ্র মানেই বিপুল জলরাশি। সমুদ্র মানেই ঢেউ আর গর্জন। সমুদ্র মানেই পানির অতলে সূর্যাস্ত। সমুদ্র মানেই নিজেকে তুচ্ছাতিতুচ্ছ মনে হওয়া। সে জন্যই হয়তো আমার প্রিয় জায়গা সমুদ্র, সেটা হোক কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন কিংবা কুয়াকাটা।
সময় ‘ম্যানেজ’ করে আবার কক্সবাজার উপস্থিত হয়েছিলাম দিন কয়েক আগে। কক্সবাজার গেলে সব সময় এমন হোটেলে থাকি, যেখান থেকে সমুদ্র দেখা যায়, সূর্য দেখা যায়। সকালে ঘুম ভাঙে এক নতুন সূর্য দেখে। এ সূর্য কেমন যেন, অদ্ভুত সুন্দর।
কক্সবাজারে আমার মূল উদ্দেশ্য থাকে, কম সময়ে যতটা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সে জন্য আমি শুধু কলাতলী বা লাবণী বিচেই আবদ্ধ থাকি না। চারদিকে যতটা পারি ছড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রে আমার সুবিধার জায়গা হলো, আমি মোটরবাইকপ্রেমী। কক্সবাজার গিয়ে সারা দিনের জন্য বাইক ভাড়া নেওয়া আমার বেশপুরোনো অভ্যাস।
তো এবারও সকাল ১০টায় মোটরবাইক নিয়ে বের হয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য সাবরাং হয়ে টেকনাফের নাফ নদীর মোহনা, যেখান থেকে ছেড়ে যায় সেন্ট মার্টিনের জাহাজ। মনে ভাসে, এর আগে জাহাজ থেকে দেখেছিলাম পাহাড় বেয়ে উঠে যাওয়া আঁকাবাঁকা রাস্তা। কলাতলী থেকে বাইকে করে মেরিন ড্রাইভে উঠতেই আপনার মনে হবে, আপনি স্বর্গে এসেছেন। সবুজের মধ্য দিয়ে গতি বাড়ছে বাইকের। হিমছড়ির পাহাড়কে বাঁয়ে আর সমুদ্রকে ডানে রেখে সামনে আঁকাবাঁকা রাস্তায় এগিয়ে যাচ্ছে আমার মোটরসাইকেল। রেজুখাল নদীর চেকপোস্ট পার হতেই যেন সৌন্দর্য আরও বাড়তে শুরু করল। বাইকের পিঠে আমি, ছুটে চলেছি। ইনানী, পাটুয়ারটেক পার হওয়ার পর সাধারণ পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সাধারণত পর্যটকেরা পাটুয়ারটেক পর্যন্ত যান।
যাঁরা পাটুয়ারটেকের পর মেরিন ড্রাইভ ধরে সামনের দিকে যাননি, তাঁরা বুঝতে পারবেন না, সামনে সুউচ্চ আকাশের সঙ্গে কতটা মিতালি করেছে। সমুদ্রের কথা কীই-বা বলার আছে নতুন করে। সমুদ্র আর পাহাড়ের ছেদ ঘটিয়েছে পিচঢালা রাস্তা। সে রাস্তা ধরেই আমি এগিয়ে যাচ্ছি সাবরাংয়ের দিকে। শামলাপুর, নোয়াখালীপাড়া পার হতে হতে আপনি সবুজে হারিয়ে যাবেন কখনো, কখনো বা মন চাইবে মেরিন ড্রাইভ থেকে সমুদ্রে আছড়ে পড়ি। এদিকে সমুদ্রের পানির রং নীল, অনেকটা সেন্ট মার্টিনের মতো। সুউচ্চ মুইন্না পাহাড়ও এদিকে। চাইলে একজন দক্ষ গাইড নিয়ে ঢুঁ মারতে পারেন।
বাঁয়ে টেকনাফ জিরোপয়েন্টের রাস্তা রেখে মেরিন ড্রাইভ ধরে তিন কিলোমিটার সামনে এগোলেই সাবরাং। বলে রাখা ভালো, সাবরাং টেকনাফের একটি ইউনিয়ন। সম্প্রতি সরকার সাবরাংকে পর্যটন অঞ্চলে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক এখানে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
সাবরাংয়ে কিছু সময় কাটিয়ে ফের রওনা। এবার যাচ্ছি টেকনাফ। টেকনাফ জিরোপয়েন্ট হয়ে সোজা এগিয়ে যাচ্ছে আমার মোটরসাইকেল নাফ নদীর জেটির দিকে। যেখান থেকে সেন্ট মার্টিনের জাহাজ ছেড়ে যায়। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে এগিয়ে যাচ্ছে মোটরসাইকেল, কখনো বেশ উঁচু, কখনো খাড়া ঢাল। পাহাড়ের বুক পাড়ি দিয়ে একসময় পৌঁছে গেলাম জেটিতে।
ঘড়িতে তখন সময় আড়াইটা। তপ্ত রোদ, তবে হিমেল বাতাস যেন কিছু বুঝতেই দিচ্ছে না। এবার কক্সবাজার শহরে ফেরার পালা। বাইপাস হয়ে কিছুটা কম রাস্তায় কক্সবাজার চলে যাওয়া যায়, তবে সেটা করিনি মেরিন ড্রাইভ ধরে ফিরব বলেই। প্রায় ৯০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হবে কক্সবাজার ফিরতে।
ফেরার পথে হাতের বায়ে সমুদ্রের বুকে সূর্য অস্ত যাচ্ছে, ডানে পাহাড়। সন্ধ্যা হতে হতেই পাহাড়ি জনপদে অল্প করে আলো জ্বলতে শুরু করেছে মাত্র। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন তারা। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পৌঁছে গেলাম কক্সবাজার। মোটরসাইকেল ফেরত দিয়ে চলে গেলাম কলাতলী বিচে। সেখানে মাছ ভাজা খাব আর সমুদ্র দেখব শেষবারের জন্য। রাতেই যে ফিরতে হবে।
রাত ৯টার বাসে রওনা দিলাম। পরদিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ফিরলাম যান্ত্রিক শহর ঢাকায়। কিছুটা বিশ্রাম নিয়েই আবার ছুটে যেতে হবে কাজে। আর অপেক্ষা করতে হবে, আবার কবে যাব, কবে যাব, সমুদ্র দর্শনে; শান্ত হব, বিশাল হব।
সতর্কতা
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
২ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
২ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
২ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
২ দিন আগে