সানজিদা সামরিন, ঢাকা
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছেন শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতা আঁকি।’
১৯০৭ সালের ৬ জুলাই জন্ম ফ্রিদার। তাঁর শৈশব কেটেছে মেক্সিকো শহরে, এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন জার্মান-হাঙ্গেরিয়ান। আর মা স্প্যানিশ ও তেহুয়ানা আদিবাসী মিশ্র রক্তের মানুষ। তাই জন্মের পর থেকেই এক মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ফ্রিদা কাহলো।
ছয় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিদার ডান পা আকারে ছোট ও নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে। এ কারণে সহপাঠীদের কাছে কম হাসি-ঠাট্টার পাত্রী হতে হয়নি ছোট্ট ফ্রিদাকে। তিনি যে বড় ঝুলের জামা পরতেন, এর মূল কারণ ছিল শরীরের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। দুই পা যেন মোটামুটি সমান দেখায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ডান পায়ে কয়েক স্তরবিশিষ্ট মোজা পরতে শুরু করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের দিকের প্রায় ২০টি হাড় ভেঙে যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ১৯২৭ সালে কিছুটা সুস্থ হন।
বাস দুর্ঘটনার পর মোট ৩০টি অপারেশন করতে হয়েছিল। একটু সেরে ওঠার পর ফ্রিদা পেইন্টিং করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি মেক্সিকান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৮ সালে কাহলোর সঙ্গে দিয়েগো রিভেরার পরিচয় হয়। ১৯২৯ সালে কাহলো রিভেরাকে বিয়ে করেন। তবে বিবাহিত জীবন যে খুব সুখে কেটেছে, তা-ও নয়। ফলে কাহলোর আত্মপ্রতিকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি, ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ এবং নারীত্বকে। তাঁর নামকরা চিত্রকর্মগুলোয় জীবনের দুটি বড় ঘটনা ঘুরেফিরে এসেছে। দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তরুণ বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা—ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন।
ফ্রিদা চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছবি আঁকবেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, ‘যত দিন ছবি আঁকতে পারছি, তত দিন বেঁচে থাকলে আমি খুশি।’ ফ্রিদা কাহলোর সেরা কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতির কথাই হচ্ছে এখন—
সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড, ১৯৪০
একটু আগেই তো বলা হলো, ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন। এর মধ্য়ে ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ উল্লেখযোগ্য।
কত মানুষ যে মোহিত হয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি দেখেছে, তার হিসাব নেই। ১৯৪০ সালে মেক্সিকান ম্যুরালিস্ট দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পরে এই চিত্রকর্ম শেষ করেন কাহলো। মনে করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে কাহলো যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, এই আত্মপ্রতিকৃতি তারই প্রতিচ্ছবি।
ছবিতে কাহলোর এক পাশে কালো চিতা, অন্য পাশে কালো বানর। এখানে বলে নেওয়া ভালো, কাহলো আর রিভেরা অনেক বানর পুষতেন। সেখান থেকেই এই বানরের প্রতিকৃতি নেওয়া হয়েছে। কাহলোর গলায় নেকলেসের মতো জড়িয়ে রয়েছে কাঁটাযুক্ত গাছের শাখা। যার মধ্যস্থলে ডানা মেলে রয়েছে হামিংবার্ড। কাঁটার আঘাতে গলার এখান-সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। কিন্তু কাহলোর মুখে নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিহীন ভাব। ব্যথিত হয়েও এই শান্ত দৃষ্টি ধরে রাখাই যেন কাহলোর আদর্শ। বিবাহবিচ্ছেদে বিধ্বস্ত হলেও কাহলো বলেছিলেন, ‘দিন শেষে আমরা যতটুকু ভাবতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহ্য করতে পারি।’
দ্য টু ফ্রিদাস, ১৯৩৯
রিভেরার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির প্রতিক্রিয়ায় ‘দ্য টু ফ্রিদাস’ এঁকেছিলেন কাহলো। এই ছবিতে কাহলো নিজের দুটি দিক সন্ধান করেন। বাঁ দিকের প্রতিকৃতিতে তিনি নিজের ভঙ্গুর রূপ দেখিয়েছেন। নিজেকে ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় গাউন পরিহিত একটি ভাঙা হৃদয় বয়ে বেড়ানো নারী হিসেবে এঁকেছেন।
ডান দিকে নিজেকে আধুনিক মেক্সিকান পোশাক পরিয়েছেন। রিভেরার সঙ্গে বিয়ের সময় তিনি এমন পোশাক পরেছিলেন। দুটি প্রতিকৃতিই বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। দুজনেই বসে আছে হাত ধরাধরি করে। দুজনের হৃদয় থেকে একটি শিরা অঙ্কুরিত হয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাদের বাহুতেও জড়িয়ে যায় সেই শিরা। বাঁ দিকে যে ফ্রিদা বসে রয়েছে, সে সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে শিরা কেটে দেয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ডান দিকে বসে থাকা কাহলোর শিরা রিভেরার একটি ছোট্ট প্রতিকৃতিতে নিয়ে যায়। এই প্রতিকৃতি তার হাতেই ছিল।
এই অনন্য আত্মপ্রতিকৃতি সম্ভবত বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আত্ম অনুসন্ধানের যে সংগ্রাম করছিলেন কাহলো, তারই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়বস্তুতে পরাবাস্তব হওয়া সত্ত্বেও কাহলো জোর দিয়েছিলেন, এজাতীয় চিত্রাবলি বাস্তব জীবনে মূল এবং তাই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। ফ্রিদা কাহলো ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না। আমি আমার নিজস্ব বাস্তবতা আঁকি।’
দ্য উন্ডেড ডিয়ার, ১৯৪৬
‘দ্য উন্ডেড ডিয়ার’ আরেকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যা কাহলোর শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতীকীভাবে সমন্বয় করেছে। ছবিতে কাহলো নিজেকে হরিণ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কাহলোর পোষা হরিণ গ্রানিজো। গ্রানিজোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছবিটি এঁকেছেন। তিরের আঘাতে কাহলোর মুখশ্রী ধারণ করা এই হরিণ যে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, তা ছবিতে স্পষ্ট। এই ছবি আঁকার সময় কাহলোর শরীর ভেঙে পড়েছিল। শরীরে ব্যর্থ কাটাছেঁড়া, দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক ব্যথা ছাড়াও তিনি গ্যাংগ্রিন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণার প্রকাশ রয়েছে ছবিটিতে।
সূত্র: মাই মডার্ন মেট ডট কম
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছেন শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতা আঁকি।’
১৯০৭ সালের ৬ জুলাই জন্ম ফ্রিদার। তাঁর শৈশব কেটেছে মেক্সিকো শহরে, এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন জার্মান-হাঙ্গেরিয়ান। আর মা স্প্যানিশ ও তেহুয়ানা আদিবাসী মিশ্র রক্তের মানুষ। তাই জন্মের পর থেকেই এক মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ফ্রিদা কাহলো।
ছয় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিদার ডান পা আকারে ছোট ও নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে। এ কারণে সহপাঠীদের কাছে কম হাসি-ঠাট্টার পাত্রী হতে হয়নি ছোট্ট ফ্রিদাকে। তিনি যে বড় ঝুলের জামা পরতেন, এর মূল কারণ ছিল শরীরের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। দুই পা যেন মোটামুটি সমান দেখায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ডান পায়ে কয়েক স্তরবিশিষ্ট মোজা পরতে শুরু করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের দিকের প্রায় ২০টি হাড় ভেঙে যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ১৯২৭ সালে কিছুটা সুস্থ হন।
বাস দুর্ঘটনার পর মোট ৩০টি অপারেশন করতে হয়েছিল। একটু সেরে ওঠার পর ফ্রিদা পেইন্টিং করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি মেক্সিকান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৮ সালে কাহলোর সঙ্গে দিয়েগো রিভেরার পরিচয় হয়। ১৯২৯ সালে কাহলো রিভেরাকে বিয়ে করেন। তবে বিবাহিত জীবন যে খুব সুখে কেটেছে, তা-ও নয়। ফলে কাহলোর আত্মপ্রতিকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি, ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ এবং নারীত্বকে। তাঁর নামকরা চিত্রকর্মগুলোয় জীবনের দুটি বড় ঘটনা ঘুরেফিরে এসেছে। দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তরুণ বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা—ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন।
ফ্রিদা চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছবি আঁকবেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, ‘যত দিন ছবি আঁকতে পারছি, তত দিন বেঁচে থাকলে আমি খুশি।’ ফ্রিদা কাহলোর সেরা কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতির কথাই হচ্ছে এখন—
সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড, ১৯৪০
একটু আগেই তো বলা হলো, ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন। এর মধ্য়ে ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ উল্লেখযোগ্য।
কত মানুষ যে মোহিত হয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি দেখেছে, তার হিসাব নেই। ১৯৪০ সালে মেক্সিকান ম্যুরালিস্ট দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পরে এই চিত্রকর্ম শেষ করেন কাহলো। মনে করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে কাহলো যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, এই আত্মপ্রতিকৃতি তারই প্রতিচ্ছবি।
ছবিতে কাহলোর এক পাশে কালো চিতা, অন্য পাশে কালো বানর। এখানে বলে নেওয়া ভালো, কাহলো আর রিভেরা অনেক বানর পুষতেন। সেখান থেকেই এই বানরের প্রতিকৃতি নেওয়া হয়েছে। কাহলোর গলায় নেকলেসের মতো জড়িয়ে রয়েছে কাঁটাযুক্ত গাছের শাখা। যার মধ্যস্থলে ডানা মেলে রয়েছে হামিংবার্ড। কাঁটার আঘাতে গলার এখান-সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। কিন্তু কাহলোর মুখে নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিহীন ভাব। ব্যথিত হয়েও এই শান্ত দৃষ্টি ধরে রাখাই যেন কাহলোর আদর্শ। বিবাহবিচ্ছেদে বিধ্বস্ত হলেও কাহলো বলেছিলেন, ‘দিন শেষে আমরা যতটুকু ভাবতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহ্য করতে পারি।’
দ্য টু ফ্রিদাস, ১৯৩৯
রিভেরার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির প্রতিক্রিয়ায় ‘দ্য টু ফ্রিদাস’ এঁকেছিলেন কাহলো। এই ছবিতে কাহলো নিজের দুটি দিক সন্ধান করেন। বাঁ দিকের প্রতিকৃতিতে তিনি নিজের ভঙ্গুর রূপ দেখিয়েছেন। নিজেকে ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় গাউন পরিহিত একটি ভাঙা হৃদয় বয়ে বেড়ানো নারী হিসেবে এঁকেছেন।
ডান দিকে নিজেকে আধুনিক মেক্সিকান পোশাক পরিয়েছেন। রিভেরার সঙ্গে বিয়ের সময় তিনি এমন পোশাক পরেছিলেন। দুটি প্রতিকৃতিই বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। দুজনেই বসে আছে হাত ধরাধরি করে। দুজনের হৃদয় থেকে একটি শিরা অঙ্কুরিত হয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাদের বাহুতেও জড়িয়ে যায় সেই শিরা। বাঁ দিকে যে ফ্রিদা বসে রয়েছে, সে সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে শিরা কেটে দেয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ডান দিকে বসে থাকা কাহলোর শিরা রিভেরার একটি ছোট্ট প্রতিকৃতিতে নিয়ে যায়। এই প্রতিকৃতি তার হাতেই ছিল।
এই অনন্য আত্মপ্রতিকৃতি সম্ভবত বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আত্ম অনুসন্ধানের যে সংগ্রাম করছিলেন কাহলো, তারই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়বস্তুতে পরাবাস্তব হওয়া সত্ত্বেও কাহলো জোর দিয়েছিলেন, এজাতীয় চিত্রাবলি বাস্তব জীবনে মূল এবং তাই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। ফ্রিদা কাহলো ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না। আমি আমার নিজস্ব বাস্তবতা আঁকি।’
দ্য উন্ডেড ডিয়ার, ১৯৪৬
‘দ্য উন্ডেড ডিয়ার’ আরেকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যা কাহলোর শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতীকীভাবে সমন্বয় করেছে। ছবিতে কাহলো নিজেকে হরিণ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কাহলোর পোষা হরিণ গ্রানিজো। গ্রানিজোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছবিটি এঁকেছেন। তিরের আঘাতে কাহলোর মুখশ্রী ধারণ করা এই হরিণ যে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, তা ছবিতে স্পষ্ট। এই ছবি আঁকার সময় কাহলোর শরীর ভেঙে পড়েছিল। শরীরে ব্যর্থ কাটাছেঁড়া, দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক ব্যথা ছাড়াও তিনি গ্যাংগ্রিন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণার প্রকাশ রয়েছে ছবিটিতে।
সূত্র: মাই মডার্ন মেট ডট কম
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে