মো. ইকবাল হোসেন
প্রতিটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্মের পর প্রধান খাবার হয় তার মায়ের বুকের দুধ। বিজ্ঞান নির্ভর পৃথিবীতে প্রমাণিত যে, শিশুর জন্য তার মায়ের দুধের গুরুত্ব অপরিসীম। আর জন্মের পর শালদুধ শিশুর প্রথম টিকা। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই শিশু যার, দুধ তার হতে হবে। আপনি যদি মানব শিশুকে জন্মের পর গরু-ছাগলের শালদুধ খাওয়ান, তাহলে সেটা কাজে আসবে না।
প্রতিটি প্রাণীর দুধের উপাদানের পরিমাণ আলাদা থাকে, যা শুধু ওই প্রাণীর বাচ্চার জন্যই উপযোগী। মানব শিশুর হাড়, দাঁত, মস্তিষ্কসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গঠনে যে উপাদান যতটুকু দরকার, মায়ের দুধে ঠিক ততটুকুই আছে। আবার গরুর দুধে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা গরুর বাছুরের দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধির জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এই উচ্চ প্রোটিন মানব শিশুর জন্য প্রযোজ্য নয়। অপরদিকে মায়ের দুধে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে যা, মানব শিশুর জন্য খুব দরকারি কিন্তু গরুর বাছুরের জন্য নয়। আবার বুকের দুধে উন্নতমানের কার্বোহাইড্রেট অলিগোস্যাকারাইড পাওয়া যায়, যা গরুর দুধে পাওয়া যায় না। একই ভাবে গরুর দুধে আয়রন এবং ফাইবারের পরিমাণ খুবই কম থাকে, যা মায়ের দুধে অনেক বেশি থাকে।
গরুর দুধ | মায়ের বুকের দুধ |
কার্বোহাইড্রেট ৪.৫ গ্রাম | কার্বোহাইড্রেট ৭.১ গ্রাম |
প্রোটিন ৩.৫ গ্রাম | প্রোটিন ১.১ গ্রাম |
চর্বি ৩.৯ গ্রাম | চর্বি ৪.১ গ্রাম |
আয়রন ০.১ মিলিগ্রাম | আয়রন ০.২ মিলিগ্রাম |
ফাইবার ০.১ গ্রাম | ফাইবার ০.২ |
ক্যালসিয়াম ১২৫ মিলিগ্রাম | ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম ০.৭৭ গ্রাম | সোডিয়াম ০.১৭ গ্রাম |
জিংক ৪ মিলিগ্রাম | জিংক ১.৮ মিলিগ্রাম |
মায়ের দুধ এবং গরুর দুধের উপাদানের পরিমাণ (প্রতি ১০০ মিলি লিটারে) :
এ ছাড়াও মায়ের বুকের দুধে বিশেষ কিছু এনজাইম থাকে যা, শিশুর জন্য অত্যন্ত জরুরি। যেমন মায়ের বুকের দুধে চর্বি পরিপাককারী লাইপেজ এনজাইম থাকে, যা গরু-ছাগলের দুধে থাকে না। মায়ের দুধ যেহেতু সরাসরি পান করা হয়, তাই প্রতিটি এনজাইমের কার্যকারিতা অক্ষুণ্ন থাকে। অন্যদিকে গরুর দুধে কিছু প্রয়োজনীয় এনজাইম থাকলেও তা বারবার ফুটানোর কারণে অনেকটাই অকেজো হয়ে যেতে পারে।
মানব শিশুর জন্য মানুষের দুধ আর গরু-ছাগলের বাচ্চার জন্য গরু-ছাগলের দুধ। এটিই প্রাকৃতিক এবং স্বাভাবিক। তাই শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ান। জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব (আধ ঘণ্টার মধ্যে) বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা উচিত। শুরুতেই হয়তো বাচ্চা বুকের দুধ পাওয়া যাবে না, তাই বলে কিন্তু খাওয়ানো বন্ধ রাখা যাবে না।
শিশু দুধ না পেলেও বারবার তাকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, এতে দ্রুত মায়ের বুকে দুধ আসবে। পূর্ণ ছয় মাস (১৮০ দিন) বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ (এক ফোঁটা পানিও নয়) খাওয়াতে হবে। এই ছয় মাসে শিশুর শরীর এবং মস্তিষ্কের গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান মায়ের বুকের দুধেই আছে। শিশুর জন্য মায়ের দুধ বাদে অন্য কোনো প্রাণীর দুধ, যেমন গরু, ছাগল ইত্যাদির দুধ বা টিনের দুধ ব্যবহার করলে তাকে বিকল্প দুধ বলা হয়। বুকের দুধ শিশুর জীবনে শ্রেষ্ঠ সূচনা।
শিশুর আয়ু, পুষ্টি, বৃদ্ধি ও বিকাশ সব মঙ্গল নিহিত আছে এতে। এ ছাড়া মায়ের বুকের দুধ পানে মা এবং সন্তান উভয়েরই কিছু উপকারী দিক আছে।
মায়ের দুধে শিশুর উপকারিতা:
বুকের দুধ খাওয়ানোয় মায়ের উপকারিতা:
বিকল্প দুধ শিশুর যেসব ক্ষতি করতে পারে:
লেখক: পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
প্রতিটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্মের পর প্রধান খাবার হয় তার মায়ের বুকের দুধ। বিজ্ঞান নির্ভর পৃথিবীতে প্রমাণিত যে, শিশুর জন্য তার মায়ের দুধের গুরুত্ব অপরিসীম। আর জন্মের পর শালদুধ শিশুর প্রথম টিকা। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই শিশু যার, দুধ তার হতে হবে। আপনি যদি মানব শিশুকে জন্মের পর গরু-ছাগলের শালদুধ খাওয়ান, তাহলে সেটা কাজে আসবে না।
প্রতিটি প্রাণীর দুধের উপাদানের পরিমাণ আলাদা থাকে, যা শুধু ওই প্রাণীর বাচ্চার জন্যই উপযোগী। মানব শিশুর হাড়, দাঁত, মস্তিষ্কসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গঠনে যে উপাদান যতটুকু দরকার, মায়ের দুধে ঠিক ততটুকুই আছে। আবার গরুর দুধে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা গরুর বাছুরের দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধির জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এই উচ্চ প্রোটিন মানব শিশুর জন্য প্রযোজ্য নয়। অপরদিকে মায়ের দুধে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে যা, মানব শিশুর জন্য খুব দরকারি কিন্তু গরুর বাছুরের জন্য নয়। আবার বুকের দুধে উন্নতমানের কার্বোহাইড্রেট অলিগোস্যাকারাইড পাওয়া যায়, যা গরুর দুধে পাওয়া যায় না। একই ভাবে গরুর দুধে আয়রন এবং ফাইবারের পরিমাণ খুবই কম থাকে, যা মায়ের দুধে অনেক বেশি থাকে।
গরুর দুধ | মায়ের বুকের দুধ |
কার্বোহাইড্রেট ৪.৫ গ্রাম | কার্বোহাইড্রেট ৭.১ গ্রাম |
প্রোটিন ৩.৫ গ্রাম | প্রোটিন ১.১ গ্রাম |
চর্বি ৩.৯ গ্রাম | চর্বি ৪.১ গ্রাম |
আয়রন ০.১ মিলিগ্রাম | আয়রন ০.২ মিলিগ্রাম |
ফাইবার ০.১ গ্রাম | ফাইবার ০.২ |
ক্যালসিয়াম ১২৫ মিলিগ্রাম | ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম ০.৭৭ গ্রাম | সোডিয়াম ০.১৭ গ্রাম |
জিংক ৪ মিলিগ্রাম | জিংক ১.৮ মিলিগ্রাম |
মায়ের দুধ এবং গরুর দুধের উপাদানের পরিমাণ (প্রতি ১০০ মিলি লিটারে) :
এ ছাড়াও মায়ের বুকের দুধে বিশেষ কিছু এনজাইম থাকে যা, শিশুর জন্য অত্যন্ত জরুরি। যেমন মায়ের বুকের দুধে চর্বি পরিপাককারী লাইপেজ এনজাইম থাকে, যা গরু-ছাগলের দুধে থাকে না। মায়ের দুধ যেহেতু সরাসরি পান করা হয়, তাই প্রতিটি এনজাইমের কার্যকারিতা অক্ষুণ্ন থাকে। অন্যদিকে গরুর দুধে কিছু প্রয়োজনীয় এনজাইম থাকলেও তা বারবার ফুটানোর কারণে অনেকটাই অকেজো হয়ে যেতে পারে।
মানব শিশুর জন্য মানুষের দুধ আর গরু-ছাগলের বাচ্চার জন্য গরু-ছাগলের দুধ। এটিই প্রাকৃতিক এবং স্বাভাবিক। তাই শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ান। জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব (আধ ঘণ্টার মধ্যে) বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা উচিত। শুরুতেই হয়তো বাচ্চা বুকের দুধ পাওয়া যাবে না, তাই বলে কিন্তু খাওয়ানো বন্ধ রাখা যাবে না।
শিশু দুধ না পেলেও বারবার তাকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, এতে দ্রুত মায়ের বুকে দুধ আসবে। পূর্ণ ছয় মাস (১৮০ দিন) বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ (এক ফোঁটা পানিও নয়) খাওয়াতে হবে। এই ছয় মাসে শিশুর শরীর এবং মস্তিষ্কের গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান মায়ের বুকের দুধেই আছে। শিশুর জন্য মায়ের দুধ বাদে অন্য কোনো প্রাণীর দুধ, যেমন গরু, ছাগল ইত্যাদির দুধ বা টিনের দুধ ব্যবহার করলে তাকে বিকল্প দুধ বলা হয়। বুকের দুধ শিশুর জীবনে শ্রেষ্ঠ সূচনা।
শিশুর আয়ু, পুষ্টি, বৃদ্ধি ও বিকাশ সব মঙ্গল নিহিত আছে এতে। এ ছাড়া মায়ের বুকের দুধ পানে মা এবং সন্তান উভয়েরই কিছু উপকারী দিক আছে।
মায়ের দুধে শিশুর উপকারিতা:
বুকের দুধ খাওয়ানোয় মায়ের উপকারিতা:
বিকল্প দুধ শিশুর যেসব ক্ষতি করতে পারে:
লেখক: পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
১ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
১ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
১ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
১ দিন আগে