সাধারণ জ্ঞানে ভালো করার ১০ পরামর্শ

শেখ নাইমুর রশিদ লিখন 
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২: ০৩

বিসিএস, ব্যাংক, নন-ক্যাডার ও অন্যান্য চাকরির প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার প্রশ্নে একটি বড় অংশ দখল করে থাকে সাধারণ জ্ঞান। সাধারণ জ্ঞানের কোনো শুরু বা শেষ নেই; যেন এক মহাসমুদ্র। অনেক চাকরিপ্রার্থীর জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় দুর্বোধ্য মনে হয়। সাধারণ জ্ঞান আয়ত্তে আনার জন্য ১০টি পরামর্শ দিয়েছেন ৪১তম বিসিএসের কৃষি ক্যাডার শেখ নাইমুর রশিদ লিখন

নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক, অর্থনীতি, সম্পাদকীয় ও খেলাধুলার অংশ। যেকোনো চাকরির প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভায় এটি কাজে লাগবেই।

সাধারণজ্ঞান পড়তে হবে মানচিত্রভিত্তিক। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকের ম্যাপ দুটি পড়ার টেবিলে বা দেয়ালে লাগানো থাকতেই হবে। মুখস্থ করার দরকার নেই। প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা ম্যাপ দেখতে হবে। মহাদেশ, দেশ, শহর, সাগর, মহাসাগর, প্রণালির অবস্থান দেখতে হবে। 

চাকরির পরীক্ষার জন্য যেকোনো একসেট ভালো বই যথেষ্ট। সাধারণ জ্ঞানের জন্য অযথা আলাদা বই কেনার দরকার নেই। আর বইয়ে যেকোনো চ্যাপ্টার সময় নিয়ে বুঝে বুঝে বিস্তারিত পড়তে হবে। শুধু এমসিকিউ পড়ে স্কিপ করলে হবে না। মনে রাখতে হবে, এমসিকিউ মুখস্থ করে হয়তো প্রিলিমিনারি উতরে যাওয়া যায়। কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় কখনোই ভালো করা যায় না।

বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকের দুটি বিষয়ের জন্য দুটি নোট খাতা অবশ্যই তৈরি করতে হবে। দুর্বোধ্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এমন সব বিষয় সংক্ষিপ্ত আকারে নোট খাতায় তুলতে হবে। কোনো চ্যাপ্টার পড়া শেষ হওয়ার পর মাঝে মাঝে নোট খাতা রিভাইজ করতে হবে। 

তুলনামূলক জটিল বিষয়গুলো ছন্দ তৈরি করে মনে রাখা যেতে পারে। যেমন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো: (ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন ও নরওয়ে)। এক বা একাধিক দেশের মুদ্রার নাম একই হলে সেগুলো একসঙ্গে মনে করার চেষ্টা করতে হবে। যেমন পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মুদ্রার নাম রুপি বা টাকা। রাজধানী, মুদ্রা, বন্দর, পত্রিকা, প্রণালি, যুদ্ধক্ষেত্র, বিভিন্ন লাইন—এগুলো বিশ্বরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ও সাম্প্রতিককালে আলোচিত এমন দেশের তথ্যই সাধারণত পরীক্ষায় আসে।

বিভিন্ন তারিখ ও সাল ধারাবাহিকভাবে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে। যেমন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচন ও যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের বিজয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জন।

গ্রুপ করে পড়া যেতে পারে। প্রতিদিন নিজেদের মধ্যে সমসাময়িক বিষয়ে বা যেকোনো টপিকভিত্তিক আলোচনা করতে পারেন। আলোচনা তথ্যসমৃদ্ধ হতে হবে। মুখস্থ করার চেয়ে এই  তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা অনেক বেশি কার্যকর।

ইউটিউবও কাজে লাগাতে হবে। সাধারণ জ্ঞান বইয়ের বাইরে থেকে অর্জিত হলে তা বেশি মনে থাকে। যে টপিকটি কঠিন লাগে, দ্রুত তা নিয়ে একটি ভিডিও দেখে নেবেন। ইউটিউবের Ki Keno Kivabe, Eagle Eyes, Adyopanto; এ রকম চ্যানেলের জিওগ্রাফিক নলেজভিত্তিক ও ঐতিহাসিক ঘটনাভিত্তিক সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে পারেন।

বাংলাদেশের পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলোর ফেসবুক পেজ ফলো দিতে হবে এবং তাদের সংবাদ হোমপেজে এলে দেখতে হবে। এ ছাড়া চাকরির গ্রুপগুলোয় যুক্ত থাকতে হবে। মোটকথা, আপনার ফেসবুক হোমপেজ যেন চাকরির তথ্যসংক্রান্ত কনটেন্টে ভরা থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ইতিহাসগ্রন্থ প্রভৃতি বই পড়া মানুষের জানার আকাঙ্ক্ষা ও জ্ঞানবৃদ্ধির নতুন দ্বার উন্মোচন করে। তাই হাতে সময় থাকলে বিখ্যাত লেখকদের গ্রন্থ পড়া উচিত। এর পরোক্ষ উপকারিতা চাকরির পরীক্ষায়ও পাওয়া যায়। 

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত