মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, কিছু ধর্মীয় লাইব্রেরি বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, যারা নির্দিষ্টসংখ্যক বই কিনবে, তাদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে একজনকে ওমরাহ করানো হবে। ওমরাহ করানোর খরচ কী প্রক্রিয়ায় বহন করা হবে, বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে, নাকি বিক্রয়ের লভ্যাংশ থেকে খরচ নির্বাহ করে লটারি বিজয়ীকে ওমরাহ করানো হবে, তা বোধগম্য নয়। আমার জানামতে, ইসলাম লটারি সমর্থন করে না। তাহলে এ ধরনের লটারির বিষয়ে ইসলামের বিধান কী?
মোহাম্মদ এমদাদুল হক, সহকারী রেজিস্ট্রার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
অনেক সময় পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর জন্য বিক্রেতারা বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকেন। বর্তমান সময়ে প্রচলিত একটা অফার হচ্ছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ কিংবা নির্ধারিত মূল্যের সমপরিমাণ পণ্য ক্রয় করলে তাদের একটি কুপন দেওয়া হয় অথবা অন্য কোনো উপায়ে তাদের নাম সংরক্ষণ করা হয়। তারপর লটারির মাধ্যমে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট কয়েকজনকে ওমরাহ করানোসহ বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয়। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি দুই শর্তে জায়েজ। এক. অফারের কারণে পণ্যের দাম স্বাভাবিক মূল্য থেকে বাড়ানো যাবে না এবং গুণগত মান কমানো যাবে না। দুই. পণ্য ক্রয় মূল উদ্দেশ্য হতে হবে। শুধু লটারি বা পুরস্কার পাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও পণ্য কেনা যাবে না। মোটকথা, লটারির মাধ্যমে যে পুরস্কার দেওয়া হবে, তা সম্পূর্ণ বিক্রেতার স্বাভাবিক লভ্যাংশ থেকে দিতে হবে। পুরস্কারের জন্য ক্রেতাদের থেকে আলাদা টাকা নেওয়া যাবে না।
শর্ত পাওয়া গেলে এ ধরনের বেচাকেনা ও অফার গ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা নেই। ওমরাহও করা যাবে। বিখ্যাত ফতোয়া গ্রন্থ ‘ফতোয়ায়ে শামি’তে বলা হয়েছে, ‘লটারির মাধ্যমে হাদিয়া ও পুরস্কার বিতরণ ও গ্রহণ করা বৈধ।’ (৫ / ৩৬২)
ইসলামে সাধারণভাবে সব লটারি হারাম নয়, যেমনটি প্রশ্নকারী মনে করেছেন। যে লটারিতে শুধু জুয়া থাকে, তা হারাম। অর্থাৎ, লটারির কারণে যখন কারও লাভ হয় আর কারও ক্ষতি হয়, তখন তা হারাম। কিন্তু যে লটারিতে কারও লাভ হয়, কিন্তু কারও ক্ষতি হয় না, তা জায়েজ। (আল মুহিতুল বুরহানি: ৭ / ৩৫৬)
উল্লেখ্য, পণ্য মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে শরিয়তের পছন্দনীয় নীতি হলো, পণ্যের গুণগত মান বাড়ানোর মাধ্যমে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা কিংবা সরাসরি মূল্য ছাড় দেওয়া। তা না করে মূল্যের কিছু অংশ অনিশ্চিত পুরস্কারের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা এবং লাখ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা, এরপর অল্প কয়েকজনকে সামান্য পুরস্কার দেওয়া সম্পূর্ণ ধোঁকা। এতে একপ্রকার প্রতীকী প্রতারণা পাওয়া যায়। এভাবে বাজারকে প্রভাবিত করা ইসলামের বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী। পুঁজিবাদীদের আবিষ্কৃত এসব কার্যকলাপ অনেক সময় বাজারকে অসৎ উপায়ে পরিচালিত করে এবং বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করে। মুসলমানদের এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
সূত্র: মাআলিমুস সুনান ৩ / ৪০০; আলমুগনি ১৩ / ৪০৮; মাজমুআতুল ফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১১ / ১৭১; বুহুস ফি কাজায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরাহ ২ / ১৫৮।
উত্তর দিয়েছেন: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, কিছু ধর্মীয় লাইব্রেরি বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, যারা নির্দিষ্টসংখ্যক বই কিনবে, তাদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে একজনকে ওমরাহ করানো হবে। ওমরাহ করানোর খরচ কী প্রক্রিয়ায় বহন করা হবে, বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে, নাকি বিক্রয়ের লভ্যাংশ থেকে খরচ নির্বাহ করে লটারি বিজয়ীকে ওমরাহ করানো হবে, তা বোধগম্য নয়। আমার জানামতে, ইসলাম লটারি সমর্থন করে না। তাহলে এ ধরনের লটারির বিষয়ে ইসলামের বিধান কী?
মোহাম্মদ এমদাদুল হক, সহকারী রেজিস্ট্রার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
অনেক সময় পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর জন্য বিক্রেতারা বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকেন। বর্তমান সময়ে প্রচলিত একটা অফার হচ্ছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ কিংবা নির্ধারিত মূল্যের সমপরিমাণ পণ্য ক্রয় করলে তাদের একটি কুপন দেওয়া হয় অথবা অন্য কোনো উপায়ে তাদের নাম সংরক্ষণ করা হয়। তারপর লটারির মাধ্যমে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট কয়েকজনকে ওমরাহ করানোসহ বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয়। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি দুই শর্তে জায়েজ। এক. অফারের কারণে পণ্যের দাম স্বাভাবিক মূল্য থেকে বাড়ানো যাবে না এবং গুণগত মান কমানো যাবে না। দুই. পণ্য ক্রয় মূল উদ্দেশ্য হতে হবে। শুধু লটারি বা পুরস্কার পাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও পণ্য কেনা যাবে না। মোটকথা, লটারির মাধ্যমে যে পুরস্কার দেওয়া হবে, তা সম্পূর্ণ বিক্রেতার স্বাভাবিক লভ্যাংশ থেকে দিতে হবে। পুরস্কারের জন্য ক্রেতাদের থেকে আলাদা টাকা নেওয়া যাবে না।
শর্ত পাওয়া গেলে এ ধরনের বেচাকেনা ও অফার গ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা নেই। ওমরাহও করা যাবে। বিখ্যাত ফতোয়া গ্রন্থ ‘ফতোয়ায়ে শামি’তে বলা হয়েছে, ‘লটারির মাধ্যমে হাদিয়া ও পুরস্কার বিতরণ ও গ্রহণ করা বৈধ।’ (৫ / ৩৬২)
ইসলামে সাধারণভাবে সব লটারি হারাম নয়, যেমনটি প্রশ্নকারী মনে করেছেন। যে লটারিতে শুধু জুয়া থাকে, তা হারাম। অর্থাৎ, লটারির কারণে যখন কারও লাভ হয় আর কারও ক্ষতি হয়, তখন তা হারাম। কিন্তু যে লটারিতে কারও লাভ হয়, কিন্তু কারও ক্ষতি হয় না, তা জায়েজ। (আল মুহিতুল বুরহানি: ৭ / ৩৫৬)
উল্লেখ্য, পণ্য মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে শরিয়তের পছন্দনীয় নীতি হলো, পণ্যের গুণগত মান বাড়ানোর মাধ্যমে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা কিংবা সরাসরি মূল্য ছাড় দেওয়া। তা না করে মূল্যের কিছু অংশ অনিশ্চিত পুরস্কারের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা এবং লাখ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা, এরপর অল্প কয়েকজনকে সামান্য পুরস্কার দেওয়া সম্পূর্ণ ধোঁকা। এতে একপ্রকার প্রতীকী প্রতারণা পাওয়া যায়। এভাবে বাজারকে প্রভাবিত করা ইসলামের বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী। পুঁজিবাদীদের আবিষ্কৃত এসব কার্যকলাপ অনেক সময় বাজারকে অসৎ উপায়ে পরিচালিত করে এবং বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করে। মুসলমানদের এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
সূত্র: মাআলিমুস সুনান ৩ / ৪০০; আলমুগনি ১৩ / ৪০৮; মাজমুআতুল ফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১১ / ১৭১; বুহুস ফি কাজায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরাহ ২ / ১৫৮।
উত্তর দিয়েছেন: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
৩ ঘণ্টা আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
৩ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
৩ ঘণ্টা আগেনাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা উপহাস করা গুনাহের কাজ। নাম বিকৃত করা, অসম্পূর্ণ নামে ডাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। কারণ প্রকৃত মুসলিমের কথা বা কাজে অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে না। কারও নাম নিয়ে বিদ্রূপ করা তাকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
১ দিন আগে