ড. এ. এন. এম. মাসউদুর রহমান
পবিত্র কোরআনে মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সব সাহাবির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রকাশের কথা এসেছে। তাই ইসলামি বিশ্বাসমতে, সাহাবিরা সবাই জান্নাতি। তবে তাঁদের মধ্যে এমন কিছু মর্যাদাবান সাহাবি রয়েছেন, যাঁদের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহানবী (সা.) দুনিয়ায় থাকতেই তাঁদের জান্নাতি বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। হাদিসের পরিভাষায় তাঁদের ‘আশারা মুবাশ্শারা’ বা ‘সুখবরপ্রাপ্ত ১০ সাহাবি’ বলা হয়। বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থে তাঁদের আলোচনা এসেছে। এখানে তাঁদের নাম-পরিচয় তুলে ধরা হলো।
আবু বকর সিদ্দিক (রা.): প্রকৃত নাম আব্দুল্লাহ ইবনে ওসমান ইবনে আবু কুহাফা আমর। উপাধি আতিক ও সিদ্দিক। পুরুষদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর হাতে হজরত উসমান, যুবাইর, তালহা, আব্দুর রহমান ইবনে আউফসহ অনেক বড় বড় সাহাবি ইসলাম গ্রহণ করেন। মহানবী (সা.)-এর হিজরতের সাথি ছিলেন। ইসলামের প্রথম খলিফা ছিলেন এবং ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। মহানবী তাঁর মেয়ে আয়েশা (রা.)-কে বিয়ে করেছিলেন।
ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.): ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন এবং প্রায় ১১ বছর খেলাফত পরিচালনা করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর হাতে ইসলামকে শক্তিশালী করেন। মহানবী (সা.) তাঁর কন্যা হাফসাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি মুসলিম খেলাফতকে বিভিন্নভাবে সংস্কার করেন এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী গঠন করেন। তাঁর খেলাফতকাল সব যুগের অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে পরিগণিত।
ওসমান ইবনে আফফান (রা.): ইসলামের তৃতীয় খলিফা ছিলেন এবং তাঁর খেলাফতকাল ছিল প্রায় ১২ বছর। তাঁর উপাধি ছিল যুন্নুরাইন বা দুই আলোর অধিকারী। তিনি সম্পর্কের দিক থেকে মহানবী (সা.)-এর জামাতা ছিলেন। মহানবী (সা.) প্রথমে তাঁর সঙ্গে এক কন্যার বিয়ে দেন। এরপর তিনি ইন্তেকাল করলে আরেক কন্যার সঙ্গে বিয়ে হয় এ জন্য তাঁকে যুন্নুরাইন বলা হয়।
আলী ইবনে আবি তালিব (রা.): মহানবী (সা.)-এর চাচাতো ভাই এবং কনিষ্ঠ জামাতা ছিলেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তাবুক ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মহানবী (সা.)-এর মেয়ে ফাতেমা (রা.)-এর স্বামী ছিলেন। ইসলামের চতুর্থ খলিফা ছিলেন।
তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রা.): উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে খুবই দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন। শরীরের ২৪টি স্থানে কাফির কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় মহানবী (সা.) তাঁর নাম রেখেছিলেন ‘তালহাতুল খায়র’ বা কল্যাণকামী তালহা। তিনি উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদাতবরণ করেন।
জুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা.): ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং হাবশায় হিজরত করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথম আল্লাহর রাস্তায় তরবারি চালিয়েছিলেন। তাঁর আকৃতিতে ফেরেশতারা বদর যুদ্ধে অবতরণ করেছিলেন। তিনি উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদাতবরণ করেন।
আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রা.): মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে হাবশায় হিজরত করেছিলেন এবং ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর হাতে অনেক বিধর্মী ইসলাম কবুল করেন।
সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.): প্রথম আল্লাহর রাস্তায় তির নিক্ষেপ করেন। ইসলামের সব যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। তিনি ইসলাম প্রচারের নিমিত্তে বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে মুসলমানেরা বিভিন্ন মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েন।
সাঈদ ইবন জায়েদ (রা.): বদর ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মদিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় মহানবী (সা.)-কে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন।
আবু ওবায়দাহ আল-জাররাহ (রা.): ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর চোয়ালে বিঁধে যাওয়া লৌহবর্ম দাঁত দিয়ে বের করেছিলেন। ফলে তাঁর সামনের দুই দাঁত পড়ে গিয়েছিল। ইসলামে তাঁর অবদান অপরিসীম।
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পবিত্র কোরআনে মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সব সাহাবির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রকাশের কথা এসেছে। তাই ইসলামি বিশ্বাসমতে, সাহাবিরা সবাই জান্নাতি। তবে তাঁদের মধ্যে এমন কিছু মর্যাদাবান সাহাবি রয়েছেন, যাঁদের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহানবী (সা.) দুনিয়ায় থাকতেই তাঁদের জান্নাতি বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। হাদিসের পরিভাষায় তাঁদের ‘আশারা মুবাশ্শারা’ বা ‘সুখবরপ্রাপ্ত ১০ সাহাবি’ বলা হয়। বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থে তাঁদের আলোচনা এসেছে। এখানে তাঁদের নাম-পরিচয় তুলে ধরা হলো।
আবু বকর সিদ্দিক (রা.): প্রকৃত নাম আব্দুল্লাহ ইবনে ওসমান ইবনে আবু কুহাফা আমর। উপাধি আতিক ও সিদ্দিক। পুরুষদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর হাতে হজরত উসমান, যুবাইর, তালহা, আব্দুর রহমান ইবনে আউফসহ অনেক বড় বড় সাহাবি ইসলাম গ্রহণ করেন। মহানবী (সা.)-এর হিজরতের সাথি ছিলেন। ইসলামের প্রথম খলিফা ছিলেন এবং ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। মহানবী তাঁর মেয়ে আয়েশা (রা.)-কে বিয়ে করেছিলেন।
ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.): ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন এবং প্রায় ১১ বছর খেলাফত পরিচালনা করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর হাতে ইসলামকে শক্তিশালী করেন। মহানবী (সা.) তাঁর কন্যা হাফসাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি মুসলিম খেলাফতকে বিভিন্নভাবে সংস্কার করেন এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী গঠন করেন। তাঁর খেলাফতকাল সব যুগের অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে পরিগণিত।
ওসমান ইবনে আফফান (রা.): ইসলামের তৃতীয় খলিফা ছিলেন এবং তাঁর খেলাফতকাল ছিল প্রায় ১২ বছর। তাঁর উপাধি ছিল যুন্নুরাইন বা দুই আলোর অধিকারী। তিনি সম্পর্কের দিক থেকে মহানবী (সা.)-এর জামাতা ছিলেন। মহানবী (সা.) প্রথমে তাঁর সঙ্গে এক কন্যার বিয়ে দেন। এরপর তিনি ইন্তেকাল করলে আরেক কন্যার সঙ্গে বিয়ে হয় এ জন্য তাঁকে যুন্নুরাইন বলা হয়।
আলী ইবনে আবি তালিব (রা.): মহানবী (সা.)-এর চাচাতো ভাই এবং কনিষ্ঠ জামাতা ছিলেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তাবুক ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মহানবী (সা.)-এর মেয়ে ফাতেমা (রা.)-এর স্বামী ছিলেন। ইসলামের চতুর্থ খলিফা ছিলেন।
তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রা.): উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে খুবই দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন। শরীরের ২৪টি স্থানে কাফির কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় মহানবী (সা.) তাঁর নাম রেখেছিলেন ‘তালহাতুল খায়র’ বা কল্যাণকামী তালহা। তিনি উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদাতবরণ করেন।
জুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা.): ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং হাবশায় হিজরত করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথম আল্লাহর রাস্তায় তরবারি চালিয়েছিলেন। তাঁর আকৃতিতে ফেরেশতারা বদর যুদ্ধে অবতরণ করেছিলেন। তিনি উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদাতবরণ করেন।
আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রা.): মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে হাবশায় হিজরত করেছিলেন এবং ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর হাতে অনেক বিধর্মী ইসলাম কবুল করেন।
সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.): প্রথম আল্লাহর রাস্তায় তির নিক্ষেপ করেন। ইসলামের সব যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। তিনি ইসলাম প্রচারের নিমিত্তে বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে মুসলমানেরা বিভিন্ন মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েন।
সাঈদ ইবন জায়েদ (রা.): বদর ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মদিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় মহানবী (সা.)-কে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন।
আবু ওবায়দাহ আল-জাররাহ (রা.): ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর চোয়ালে বিঁধে যাওয়া লৌহবর্ম দাঁত দিয়ে বের করেছিলেন। ফলে তাঁর সামনের দুই দাঁত পড়ে গিয়েছিল। ইসলামে তাঁর অবদান অপরিসীম।
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
৮ ঘণ্টা আগেসমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
১ দিন আগেএখানে কারণগুলো তুলে ধরা হলো—অন্যায় জুলুম থেকে বাঁচার জন্য মজলুম ব্যক্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তার যে দোষ রয়েছে, তা সবিস্তারে তুলে ধরার অনুমতি আছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, একবার আমরা
২ দিন আগেওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
৩ দিন আগে