বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য ঘোষিত নতুন ভিসানীতি নিয়ে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু কথা বলেছেন টেলিভিশন টক শো তৃতীয় মাত্রায়। গতকাল বুধবার রাতে জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় সরাসরি সম্প্রচারিত এই অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড লু ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বলেন। এই নীতির আওতায় ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ বাধাগ্রস্ত করলে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশিদের ভিসায় নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। সাক্ষাৎকারে এই নীতির বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেছেন ডোনাল্ড লু। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
অনলাইন ডেস্ক
জিল্লুর: আমাদের অনুষ্ঠানে স্বাগতম। প্রায় তিন ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছেন। এই নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী এমন যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে। জনাব ডোনাল্ড লু, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন: কেন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসানীতি চালু করতে যাচ্ছে এবং এটি কি সত্যিই দরকার ছিল?
ডোনাল্ড লু: অনেক ধন্যবাদ, জিল্লুর। আজকে এই প্রোগ্রামে থাকার সুযোগ দেওয়ায়। আমি একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই যে আজ আমরা কাউকে স্যাংশন দিচ্ছি না। আপনি যেমনটি বলছিলেন যে সেক্রেটারি অব স্টেট একটি নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন। যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেসব ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে। যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সুতরাং, যে কেউ এর আওতায় পড়তে পারেন। সরকারের লোকজন, বিচার বিভাগের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা বিরোধী দলের কেউ।
আমরা বিষয়টি এভাবে দেখছি যে দক্ষিণ এশিয়া এবং সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে হলে বাংলাদেশের জন্য গণতন্ত্র রক্ষার বিষয়টি একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় এবং অপরিহার্য।
জিল্লুর: দেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অন্য বাংলাদেশিদের কীভাবে এই নীতির আওতায় আনা হবে? আপনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথা উল্লেখ করেছেন–সরকারের কোনো সদস্য কি এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত?
ডোনাল্ড লু: আচ্ছা, জিল্লুর আমি আবারও বলছি, এই নীতিটি সরকারের এবং বিরোধী দলের সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, সামনের নির্বাচনে যদি আমরা দেখি যে বিরোধী দলের কেউ সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন বা ভোটারদের ভয় দেখিয়েছেন, তাহলে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না।
একইভাবে যদি আমরা দেখি যে সরকারের বা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কেউ যদি ভোটারদের ভয় দেখায় অথবা সহিংসতায় জড়ায় অথবা বাক্স্বাধীনতাকে অগ্রাহ্য করে, তবে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
জিল্লুর: যদি এর আওতায় গণমাধ্যম, ইন্টারনেট সেবাদানকারী সংস্থা, বা অন্য যেকোনো সংস্থা, এমনকি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পড়ে?
ডোনাল্ড লু: আচ্ছা জিল্লুর, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করে না। এটি প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। এটা শুধু ব্যক্তিদের জন্য।
জিল্লুর: জড়িত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও কি ভিসা বিধিনিষেধের এই নীতির আওতায় পড়বেন?
ডোনাল্ড লু: উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। নতুন এই নীতি এবং যে আইনটির ওপর ভিত্তি করে এটি নেওয়া হয়েছে, উভয় জায়গাতেই এ বিষয়টি খুব স্পষ্ট। অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে পরিবারের সদস্যরা, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানেরাও এই নীতিতে ভিসা বিধিনিষেধের সম্মুখীন হবেন।
জিল্লুর: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কি আপনারা জানাবেন যে তাঁদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে?
ডোনাল্ড লু: সঠিক, যাদের ভিসা প্রত্যাহার করা হবে—এমন সবাইকেই আমাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তৎক্ষণাৎ জানানো হবে।
জিল্লুর: জনাব ডোনাল্ড, সুনির্দিষ্টভাবে কাদের এই বিধিনিষেধের আওতায় আনা হবে?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, আবারও বলছি, আমরা কেবল সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের অনুমোদন দেওয়া একটি নতুন নীতির বিষয়ে সবাইকে অবহিত করছি। যা এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কারও ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। এই নীতি আমাদের এ রকম যেকোনো ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপে সহায়তা করবে। যারা এই চারটি কাজের যেকোনো একটিতে জড়িত থাকবেন—ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোট কারচুপি, বাক্স্বাধীনতাকে অগ্রাহ্য করা বা সমাবেশ করার অধিকারকে অগ্রাহ্য এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে সহিংসতার ব্যবহার।
আমি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সরকার ও বিরোধীদের উভয়ের ক্ষেত্রেই ন্যায্যতার ভিত্তিতে, গঠনমূলক পদ্ধতিতে এবং সমানভাবে এই নীতির বাস্তবায়ন করা হবে।
নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার কখনোই কোনো পক্ষ নেয় না। আমরা কোনো বিশেষ দল বা কোনো বিশেষ প্রার্থীকে সমর্থন করি না। একমাত্র বিষয়কেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার সমর্থন করে, আর তা হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।
জিল্লুর: সেসব অপরাধীর ওপর নতুন এই নীতি কীভাবে কাজ করবে, যারা ওপরের কর্তাব্যক্তিদের আদেশ বাস্তবায়ন করতে কাজ করে থাকেন?
ডোনাল্ড লু: এটি একটি দারুণ প্রশ্ন। আদেশ দাতা এবং আদেশ গ্রহণকারী উভয়েই এই শাস্তির আওতায় আসবে। যারা আদেশ গ্রহণ করে সহিংসতা, বা ভোটারদের ভয়ভীতি বা ভোট কারচুপির কাজ করবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
একইভাবে যারা এসব কাজের নির্দেশ দেবেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
জিল্লুর: গত ১৪ মে রাষ্ট্রদূত হাসের নিরাপত্তা কমিয়ে আনার ঘটনার জেরেই কি এই নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, বিষয়টি একেবারেই এ রকম না। গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে যখন নতুন এই নীতির বিষয়ে অবহিত করা হয়। তখন আমি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সুতরাং, নতুন এই নীতি এবং এর ঘোষণা কোনোভাবেই সরকারের ১৪ মের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কখনো প্রতিশোধের মনোভাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় না এবং নেবে না।
জিল্লুর: অতীতের কত দূর সময় পর্যন্ত নতুন এই নীতি কার্যকর হবে?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, এটি একটি ভবিষ্যৎমুখী নীতি। যা বাংলাদেশে আগামী দিনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এবং সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করছি। আমরা এ দায়িত্বটি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকি এবং আমরা পেছনে ফিরে তাকাতে চাই না। যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু মনে করে। আমরা নতুন এই নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সরকার, বাংলাদেশি সুশীল সমাজ এবং বাংলাদেশের জনগণের যে চেষ্টা তাকে বেগবান করতে চাই–যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
জিল্লুর: জনাব ডোনাল্ড লু, আপনি কি একটু বলবেন যে বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। আমাদের কাছে এই দেশটির বিশেষ স্থান রয়েছে। এ দুই দেশের মানুষে-মানুষে, পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোম্পানি পর্যায়ে দারুণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে চেষ্টা করি; যা বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের গণতন্ত্র রয়েছে, যে কারণেই এখানে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার।
জিল্লুর: আপনি কি আরও কিছু যোগ করতে চান?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, আমি জানি এই নতুন এই নীতিটি অনেক প্রশ্ন তৈরি করবে। আমি আবারও জোর দিয়ে বলতে চাই যে আমরা এ সিদ্ধান্তটি সবচেয়ে গঠনমূলক এবং ইতিবাচক উপায়ে নিয়েছি। আমরা চাই এটি বাংলাদেশে সংলাপ এবং আগামী বছরে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ—সবার প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে। সামনের সময়টি বাংলাদেশের জন্য কঠিন হতে পারে। অথবা এ সময়টি সত্যিই একটি আনন্দময় যুগের সূচনা করতে পারে। যেখানে বাংলাদেশ তার সমস্ত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অর্জন উদ্যাপন করবে। এমন একটি নির্বাচন করে যা আগের সব নির্বাচনের চেয়ে ভালো—এটাই আমাদের আশা।
জিল্লুর: অ্যাম্বাসেডর, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনার সময় দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, আপনার সঙ্গে যোগ দিতে পেরে বেশ আনন্দিত হয়েছি। আমি আপনার এবং আপনার শ্রোতাদের সাফলতা কামনা করি।
জিল্লুর: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি বাংলাদেশে শিগগির দেখা হবে।
ডোনাল্ড লু: আমিও এই অপেক্ষায় রইলাম।
জিল্লুর: আমাদের অনুষ্ঠানে স্বাগতম। প্রায় তিন ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছেন। এই নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী এমন যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে। জনাব ডোনাল্ড লু, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন: কেন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসানীতি চালু করতে যাচ্ছে এবং এটি কি সত্যিই দরকার ছিল?
ডোনাল্ড লু: অনেক ধন্যবাদ, জিল্লুর। আজকে এই প্রোগ্রামে থাকার সুযোগ দেওয়ায়। আমি একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই যে আজ আমরা কাউকে স্যাংশন দিচ্ছি না। আপনি যেমনটি বলছিলেন যে সেক্রেটারি অব স্টেট একটি নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন। যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেসব ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে। যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সুতরাং, যে কেউ এর আওতায় পড়তে পারেন। সরকারের লোকজন, বিচার বিভাগের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা বিরোধী দলের কেউ।
আমরা বিষয়টি এভাবে দেখছি যে দক্ষিণ এশিয়া এবং সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে হলে বাংলাদেশের জন্য গণতন্ত্র রক্ষার বিষয়টি একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় এবং অপরিহার্য।
জিল্লুর: দেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অন্য বাংলাদেশিদের কীভাবে এই নীতির আওতায় আনা হবে? আপনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথা উল্লেখ করেছেন–সরকারের কোনো সদস্য কি এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত?
ডোনাল্ড লু: আচ্ছা, জিল্লুর আমি আবারও বলছি, এই নীতিটি সরকারের এবং বিরোধী দলের সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, সামনের নির্বাচনে যদি আমরা দেখি যে বিরোধী দলের কেউ সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন বা ভোটারদের ভয় দেখিয়েছেন, তাহলে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না।
একইভাবে যদি আমরা দেখি যে সরকারের বা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কেউ যদি ভোটারদের ভয় দেখায় অথবা সহিংসতায় জড়ায় অথবা বাক্স্বাধীনতাকে অগ্রাহ্য করে, তবে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
জিল্লুর: যদি এর আওতায় গণমাধ্যম, ইন্টারনেট সেবাদানকারী সংস্থা, বা অন্য যেকোনো সংস্থা, এমনকি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পড়ে?
ডোনাল্ড লু: আচ্ছা জিল্লুর, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করে না। এটি প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। এটা শুধু ব্যক্তিদের জন্য।
জিল্লুর: জড়িত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও কি ভিসা বিধিনিষেধের এই নীতির আওতায় পড়বেন?
ডোনাল্ড লু: উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। নতুন এই নীতি এবং যে আইনটির ওপর ভিত্তি করে এটি নেওয়া হয়েছে, উভয় জায়গাতেই এ বিষয়টি খুব স্পষ্ট। অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে পরিবারের সদস্যরা, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানেরাও এই নীতিতে ভিসা বিধিনিষেধের সম্মুখীন হবেন।
জিল্লুর: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কি আপনারা জানাবেন যে তাঁদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে?
ডোনাল্ড লু: সঠিক, যাদের ভিসা প্রত্যাহার করা হবে—এমন সবাইকেই আমাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তৎক্ষণাৎ জানানো হবে।
জিল্লুর: জনাব ডোনাল্ড, সুনির্দিষ্টভাবে কাদের এই বিধিনিষেধের আওতায় আনা হবে?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, আবারও বলছি, আমরা কেবল সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের অনুমোদন দেওয়া একটি নতুন নীতির বিষয়ে সবাইকে অবহিত করছি। যা এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কারও ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। এই নীতি আমাদের এ রকম যেকোনো ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপে সহায়তা করবে। যারা এই চারটি কাজের যেকোনো একটিতে জড়িত থাকবেন—ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোট কারচুপি, বাক্স্বাধীনতাকে অগ্রাহ্য করা বা সমাবেশ করার অধিকারকে অগ্রাহ্য এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে সহিংসতার ব্যবহার।
আমি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সরকার ও বিরোধীদের উভয়ের ক্ষেত্রেই ন্যায্যতার ভিত্তিতে, গঠনমূলক পদ্ধতিতে এবং সমানভাবে এই নীতির বাস্তবায়ন করা হবে।
নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার কখনোই কোনো পক্ষ নেয় না। আমরা কোনো বিশেষ দল বা কোনো বিশেষ প্রার্থীকে সমর্থন করি না। একমাত্র বিষয়কেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার সমর্থন করে, আর তা হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।
জিল্লুর: সেসব অপরাধীর ওপর নতুন এই নীতি কীভাবে কাজ করবে, যারা ওপরের কর্তাব্যক্তিদের আদেশ বাস্তবায়ন করতে কাজ করে থাকেন?
ডোনাল্ড লু: এটি একটি দারুণ প্রশ্ন। আদেশ দাতা এবং আদেশ গ্রহণকারী উভয়েই এই শাস্তির আওতায় আসবে। যারা আদেশ গ্রহণ করে সহিংসতা, বা ভোটারদের ভয়ভীতি বা ভোট কারচুপির কাজ করবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
একইভাবে যারা এসব কাজের নির্দেশ দেবেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
জিল্লুর: গত ১৪ মে রাষ্ট্রদূত হাসের নিরাপত্তা কমিয়ে আনার ঘটনার জেরেই কি এই নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, বিষয়টি একেবারেই এ রকম না। গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে যখন নতুন এই নীতির বিষয়ে অবহিত করা হয়। তখন আমি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সুতরাং, নতুন এই নীতি এবং এর ঘোষণা কোনোভাবেই সরকারের ১৪ মের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কখনো প্রতিশোধের মনোভাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় না এবং নেবে না।
জিল্লুর: অতীতের কত দূর সময় পর্যন্ত নতুন এই নীতি কার্যকর হবে?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, এটি একটি ভবিষ্যৎমুখী নীতি। যা বাংলাদেশে আগামী দিনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এবং সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করছি। আমরা এ দায়িত্বটি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকি এবং আমরা পেছনে ফিরে তাকাতে চাই না। যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু মনে করে। আমরা নতুন এই নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সরকার, বাংলাদেশি সুশীল সমাজ এবং বাংলাদেশের জনগণের যে চেষ্টা তাকে বেগবান করতে চাই–যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
জিল্লুর: জনাব ডোনাল্ড লু, আপনি কি একটু বলবেন যে বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। আমাদের কাছে এই দেশটির বিশেষ স্থান রয়েছে। এ দুই দেশের মানুষে-মানুষে, পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোম্পানি পর্যায়ে দারুণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে চেষ্টা করি; যা বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের গণতন্ত্র রয়েছে, যে কারণেই এখানে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার।
জিল্লুর: আপনি কি আরও কিছু যোগ করতে চান?
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, আমি জানি এই নতুন এই নীতিটি অনেক প্রশ্ন তৈরি করবে। আমি আবারও জোর দিয়ে বলতে চাই যে আমরা এ সিদ্ধান্তটি সবচেয়ে গঠনমূলক এবং ইতিবাচক উপায়ে নিয়েছি। আমরা চাই এটি বাংলাদেশে সংলাপ এবং আগামী বছরে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ—সবার প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে। সামনের সময়টি বাংলাদেশের জন্য কঠিন হতে পারে। অথবা এ সময়টি সত্যিই একটি আনন্দময় যুগের সূচনা করতে পারে। যেখানে বাংলাদেশ তার সমস্ত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অর্জন উদ্যাপন করবে। এমন একটি নির্বাচন করে যা আগের সব নির্বাচনের চেয়ে ভালো—এটাই আমাদের আশা।
জিল্লুর: অ্যাম্বাসেডর, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনার সময় দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।
ডোনাল্ড লু: জিল্লুর, আপনার সঙ্গে যোগ দিতে পেরে বেশ আনন্দিত হয়েছি। আমি আপনার এবং আপনার শ্রোতাদের সাফলতা কামনা করি।
জিল্লুর: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি বাংলাদেশে শিগগির দেখা হবে।
ডোনাল্ড লু: আমিও এই অপেক্ষায় রইলাম।
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪