রাষ্ট্রধর্ম ও ৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া নিয়ে বক্তব্য দিয়ে প্রথম আলোচনায় এসেছিলেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। এরপর বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সর্বশেষ চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীর সঙ্গে অশ্লীল কথোপকথনের ফোন কলের রেকর্ড ফাঁস হলে সেই সমালোচনার ঝড় আরও তীব্রতর হয়। এরপর হারান মন্ত্রিত্ব, সংসদ সদস্য ও দলীয় পদ। পরে অবশ্য দল থেকে সাধারণ ক্ষমাও পেয়েছেন। সবকিছুর পর দীর্ঘদিন আড়ালে থাকলেও বর্তমানে খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্বাচনী প্রচার নিয়ে। নিজ এলাকা জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচনী গণসংযোগের ফাঁকে সরিষাবাড়ী বয়রাবাজার এলাকায় তাঁর সঙ্গে একান্তে আলাপ করেন আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক নাজমুল হাসান সাগর।
নাজমুল হাসান সাগর
আজকের পত্রিকা: বিতর্কের পর নির্বাচনী মাঠে, কেমন দেখছেন সবকিছু?
মুরাদ হাসান: রাজনীতিতে নানান রকম পরিস্থিতি, চড়াই-উতরাই, ভালো-মন্দ অনেক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই তো আসলে যেতে হয়। একচ্ছত্রভাবে সবাই খালি ভালোই করবে বা তার ভাগ্যে ভালোই হবে এটা তো হয় না আসলে। আমাদের হয়তো রাজনৈতিক বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এ রকম একটা পরিস্থিতি এসেছে সেটা আমার জন্য হয়তো সুখকর ছিল না, ভালো ছিল না। আমি এমপি হিসেবে পাঁচ বছরের তিন বছর মন্ত্রী ছিলাম। এরপর মন্ত্রিসভার দায়িত্ব ছেড়েছি৷ সংসদ সদস্যের দায়িত্ব ছেড়ে তারপরে আবার দুই বছর কাজ করে আবার এইবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আসলে আমার যেই ব্যাপারগুলো সেগুলো হচ্ছে জাতীয় বা মন্ত্রিসভা বা এই সংক্রান্ত। সরিষাবাড়ির মানুষের এখানে কোনো এফেক্ট হয়নি। তাঁরা কিন্তু যেভাবে আমাকে ভালোবাসত, আমাকে বিশ্বাস করত, একইভাবে এখনো ভালোবাসে এবং বিশ্বাস করে।
এই সরিষাবাড়িতে আমি প্রথম নির্বাচিত হই নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। সে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আমাদের জনগণ আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমাদের নেতা-কর্মীরা কখনো আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমাকে যে দুইবার নৌকা প্রতীক দিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দুইবারেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমরা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী শামীম তালুকদারকে পরাজিত করতে পেরেছি। তা আপনারা জানেন। এখন যেটা হল যে, বিএনপি জামায়াত আমাদের ভোটে অংশগ্রহণ করছে না। সে ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশনা আছে। যে হ্যাঁ, ঠিক আছে নৌকার প্রার্থী কিন্তু অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি নির্বাচনে না আসে, ভোটারবিহীন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না আসলে। সে নির্বাচনের আসলে কোনো অর্থও হয় না, মানেও হয় না। মানুষ এগুলো নিয়ে অনেক কথাও বলে যেটা আমাদের জন্য অনেক বিব্রতকর। কি দেশে, বিদেশে।
সেকারণে আমরা যেটা বলতে চাই যে, প্রথমত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। সেই সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী এলাকার জনগণের কাছে আমাদের কমিটমেন্ট আছে, উই আর কমিটেড। আমরা এমন না, যে হঠাৎ করে শীতের পাখির মতন এসেছি, আবার চলে যাব। আমাদের যাওয়ার জায়গা নাই। আমাদের এটাই মাটি, এটাই শিকড়। এখানেই জন্মেছি, মৃত্যু এখানেই হবে। বাবার কবরও এখানে, দাদার কবরও এখানে।
আজকের পত্রিকা: বিগত তিনটা নির্বাচন কিংবা তার আগের নির্বাচনের থেকে এবারের নির্বাচন একটু আলাদা।
মুরাদ হাসান: না, বিগত তিনটা না, তিনটা বললে বোধ হয় ঠিক হবে না। ২০০৮ সালের নির্বাচন অত্যন্ত ভালো হয়েছে আপনি বলতে পারেন ২০১৪ এবং ২০১৮।
আজকের পত্রিকা: না না আমি নির্বাচন ভালো হওয়ার কথা বলছি না। প্রতিবারেই তো পট পরিবর্তন হচ্ছে নির্বাচনের। সব মিলিয়ে এবারেরটা একদমই ব্যতিক্রম। সে ক্ষেত্রে আপনি কি ধরনের নির্বাচনী কৌশল অবলম্বন করছেন? বা আসলেই কোনো কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে কী-না?
মুরাদ হাসান: আমাদের কৌশল তো না। কৌশল তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। কৌশল তো রাজনৈতিক, কৌশল তো জনগণ যেন পবিত্র ভোট প্রয়োগ করতে পারে। এখানে কৌশল কিন্তু এটাই আসলে। এখানে আলাদা কোনো কৌশল নাই। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চান, সেটার বাস্তবায়ন হোক। আমি মুরাদ, এমপি হলেও সমস্যা নাই, না হলেও সমস্যা নাই। কিন্তু আমি যেটা চাই, আমার যেটা লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য যে জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে যায় এবং ভোটটা প্রত্যেকেই....... .
সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে আপনাকে বলি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন, প্রত্যেক ভোটার যেন মনে করে এই ভোট টা আমার। আমি যাকে ইচ্ছা, যাকে আমার ভালো লাগবে, যাকে আমি মনে করব যে আমাদের প্রতিনিধি, এমপি এই ভদ্রলোকটা হইতে পারেন, বা এই ভদ্র মহিলা হতে পারেন তাঁরা তাঁকে ভোটটা দেবেন। এটাই আমরা চাই।
আজকের পত্রিকা: এবার নির্বাচিত হলে এলাকার জন্য কি করবেন?
মুরাদ হাসান: যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা করেছি। মসজিদ, মন্দির করেছি, অনুদান দিয়েছি। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যেটা লক্ষ্য, আমাদের নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তাঁরা যেন অর্থাভাব বা খাদ্যের অভাবে না ভোগে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকে। যদি না থাকে সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকলভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করছেন। এটার ইতিহাস অনেক লম্বা...। আমি বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। মূলত আমাদের যেটা হচ্ছে, এবার লক্ষ্য থাকবে, যেমন অসমাপ্ত কাজ যেগুলি আছে বা সম্পন্ন হয়নি বা অনেকটুকু হয়েছে, একটু বাকি আছে, বাকি কাজগুলো যেটি অসম্পূর্ণ সেগুলো আমরা সম্পন্ন করতে চাই।
আজকের পত্রিকা: এবার তো আপনার দলীয় মনোনয়ন নেই। নৌকা প্রতীক অন্য কেউ পেয়েছেন। আরও একজন আওয়ামী লীগ নেতা আপনার মত স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। আপনি কি অন্য কোনো প্রার্থীদের থেকে পেশি শক্তি ও অর্থনৈতিক শক্তির মাধ্যমে কোনো ধরনের চাপ বা হুমকি পাচ্ছেন?
মুরাদ হাসান: আসলে স্বতন্ত্র নির্বাচনটা এর আগে আমার অভিজ্ঞতা নাই বা আমি করি নাই। ভাবিও নাই কখনো। এবারেও ভাবতাম না, যদি না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই অপশন বা সেই নির্দেশনাটা না দিতেন। আমরা কখনোই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কথা চিন্তাও করি না, ভাবিও না। নির্বাচনে নিশ্চয়ই আপনি জানেন, কিছু অর্থ খরচ করতেই হবে। সেক্ষেত্রে পেশি শক্তি বা অর্থনৈতিক যেটাই হোক না কেন, সেটা আমাদের উপরে প্রয়োগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এ রকম আমি বলব না। বা কিছু এমন আছে যারা অর্বাচীন, কিছু বাজে লোক আছে যারা কথাবার্তা বলতে জানে না। তারা কিছু নাম্বার নেওয়ার জন্য বা কারও চামচামি করার জন্য তার বেশি কাছের, এই ধরনের লোকেরা যারা বেশি চামচামি করে তাদের চরিত্র এমনই। যখন যার কাছে ক্ষমতা থাকে তখন তাদের দালাল হওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায়। এদেরকে নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমাদেরকে হুমকি দেবে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করবে। এ রকম নাই, পারবে না।
আজকের পত্রিকা: বিতর্কের আগে মন্ত্রী মুরাদ হাসান, নৌকা প্রতীকের মুরাদ হাসান এবং বিতর্কের পরে স্বতন্ত্র মুরাদ হাসানকে সরিষাবাড়ির মানুষ কি আগের মতই গ্রহণ করছে?
মুরাদ হাসান: না। বিতর্ক নিয়ে আপনি বারবার যে কথাটা বলছেন, আমি যে ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলেছি, জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ হবে এমন কোনো কথাই আমি বলিনি। এতে কারও ক্ষতি হওয়ার তো কিছু নাই। জনগণের ক্ষতি হওয়ার তো কিছু নাই, সম্পর্কই তো নাই। আমার সরিষাবাড়ির জনগণ, আমার ভোটারদের এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারই তো কিছু নাই। সারা বাংলাদেশেরও কোনো মানুষের এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো কিছু নাই। এটা একটা এবসিলিউটলি ভিন্ন ইস্যু। আমার সরিষাবাড়ির মানুষ আমাকে একইভাবে স্নেহ করে একইভাবে ভালোবাসে। যারা আমাকে শ্রদ্ধা করার শ্রদ্ধা করে। সবচেয়ে বেশি যেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তাঁরা যেন আমাকে বিশ্বাস করে, আস্থা রাখে এটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় রাজনীতিতে আপনার অবস্থান তৈরি হচ্ছিল যেটা থেকে ছিটকে পড়েছেন। সেটা কী আবার পুনরুদ্ধার সম্ভব, হলে কতটা কষ্টসাধ্য হবে?
মুরাদ হাসান: না, এখন ব্যাপারটা হল, জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখার জন্য আমার কতটুকু প্রয়োজন; যোগ্যতা আছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কীভাবে আমাকে নিয়ে ভাবছেন তা সময়ই বলে দেবে। নির্বাচন করা আমাদের এখন লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হওয়া এখন আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য। ইনশা আল্লাহ যদি আল্লাহর রহমতে যদি আমরা জয়ী হই তারপরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নিয়ে কীভাবে ভাববেন, কতটুকু ভাববেন, জাতীয় সূত্রে আমাকে কতটুকু কাজে লাগাবেন সেটা তার উপরে নির্ভর করবে। আমি আমার মত, আমার দায়িত্ব হচ্ছে কাজ করা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে। নৌকার পক্ষে আমি সব সময়ই ছিলাম। এ নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে তো আমি করতাম না, পরিষ্কার কথা। আমরা আওয়ামী লীগের বাইরে না, অবশ্যই আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে।
আজকের পত্রিকা: আপনার এলাকার মানুষদের আলাদা করে কিছু বলার আছে?
মুরাদ হাসান: আলাদা করে আমি জনগণকে ভালোবাসি, আমি মুরাদ হাসান জনগণের জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে পারি তা জনগণ জানেন। আমি সব সময় সরিষাবাড়ির মানুষ শান্তিতে থাকুক, নিরাপদে থাকুক সরিষাবাড়ির মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হোক, সরিষাবাড়িকে আধুনিক, উন্নত, ডিজিটাল, স্মার্ট সরিষাবড়ি মডেল উপজেলা হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা পাক, প্রতিষ্ঠিত হোক, এটাই আমার লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য, স্বপ্ন ও প্রত্যাশা। এই লক্ষ্য নিয়েই আমি রাজনীতি করি।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
মুরাদ হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: বিতর্কের পর নির্বাচনী মাঠে, কেমন দেখছেন সবকিছু?
মুরাদ হাসান: রাজনীতিতে নানান রকম পরিস্থিতি, চড়াই-উতরাই, ভালো-মন্দ অনেক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই তো আসলে যেতে হয়। একচ্ছত্রভাবে সবাই খালি ভালোই করবে বা তার ভাগ্যে ভালোই হবে এটা তো হয় না আসলে। আমাদের হয়তো রাজনৈতিক বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এ রকম একটা পরিস্থিতি এসেছে সেটা আমার জন্য হয়তো সুখকর ছিল না, ভালো ছিল না। আমি এমপি হিসেবে পাঁচ বছরের তিন বছর মন্ত্রী ছিলাম। এরপর মন্ত্রিসভার দায়িত্ব ছেড়েছি৷ সংসদ সদস্যের দায়িত্ব ছেড়ে তারপরে আবার দুই বছর কাজ করে আবার এইবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আসলে আমার যেই ব্যাপারগুলো সেগুলো হচ্ছে জাতীয় বা মন্ত্রিসভা বা এই সংক্রান্ত। সরিষাবাড়ির মানুষের এখানে কোনো এফেক্ট হয়নি। তাঁরা কিন্তু যেভাবে আমাকে ভালোবাসত, আমাকে বিশ্বাস করত, একইভাবে এখনো ভালোবাসে এবং বিশ্বাস করে।
এই সরিষাবাড়িতে আমি প্রথম নির্বাচিত হই নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। সে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আমাদের জনগণ আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমাদের নেতা-কর্মীরা কখনো আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমাকে যে দুইবার নৌকা প্রতীক দিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দুইবারেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমরা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী শামীম তালুকদারকে পরাজিত করতে পেরেছি। তা আপনারা জানেন। এখন যেটা হল যে, বিএনপি জামায়াত আমাদের ভোটে অংশগ্রহণ করছে না। সে ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশনা আছে। যে হ্যাঁ, ঠিক আছে নৌকার প্রার্থী কিন্তু অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি নির্বাচনে না আসে, ভোটারবিহীন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না আসলে। সে নির্বাচনের আসলে কোনো অর্থও হয় না, মানেও হয় না। মানুষ এগুলো নিয়ে অনেক কথাও বলে যেটা আমাদের জন্য অনেক বিব্রতকর। কি দেশে, বিদেশে।
সেকারণে আমরা যেটা বলতে চাই যে, প্রথমত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। সেই সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী এলাকার জনগণের কাছে আমাদের কমিটমেন্ট আছে, উই আর কমিটেড। আমরা এমন না, যে হঠাৎ করে শীতের পাখির মতন এসেছি, আবার চলে যাব। আমাদের যাওয়ার জায়গা নাই। আমাদের এটাই মাটি, এটাই শিকড়। এখানেই জন্মেছি, মৃত্যু এখানেই হবে। বাবার কবরও এখানে, দাদার কবরও এখানে।
আজকের পত্রিকা: বিগত তিনটা নির্বাচন কিংবা তার আগের নির্বাচনের থেকে এবারের নির্বাচন একটু আলাদা।
মুরাদ হাসান: না, বিগত তিনটা না, তিনটা বললে বোধ হয় ঠিক হবে না। ২০০৮ সালের নির্বাচন অত্যন্ত ভালো হয়েছে আপনি বলতে পারেন ২০১৪ এবং ২০১৮।
আজকের পত্রিকা: না না আমি নির্বাচন ভালো হওয়ার কথা বলছি না। প্রতিবারেই তো পট পরিবর্তন হচ্ছে নির্বাচনের। সব মিলিয়ে এবারেরটা একদমই ব্যতিক্রম। সে ক্ষেত্রে আপনি কি ধরনের নির্বাচনী কৌশল অবলম্বন করছেন? বা আসলেই কোনো কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে কী-না?
মুরাদ হাসান: আমাদের কৌশল তো না। কৌশল তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। কৌশল তো রাজনৈতিক, কৌশল তো জনগণ যেন পবিত্র ভোট প্রয়োগ করতে পারে। এখানে কৌশল কিন্তু এটাই আসলে। এখানে আলাদা কোনো কৌশল নাই। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চান, সেটার বাস্তবায়ন হোক। আমি মুরাদ, এমপি হলেও সমস্যা নাই, না হলেও সমস্যা নাই। কিন্তু আমি যেটা চাই, আমার যেটা লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য যে জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে যায় এবং ভোটটা প্রত্যেকেই....... .
সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে আপনাকে বলি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন, প্রত্যেক ভোটার যেন মনে করে এই ভোট টা আমার। আমি যাকে ইচ্ছা, যাকে আমার ভালো লাগবে, যাকে আমি মনে করব যে আমাদের প্রতিনিধি, এমপি এই ভদ্রলোকটা হইতে পারেন, বা এই ভদ্র মহিলা হতে পারেন তাঁরা তাঁকে ভোটটা দেবেন। এটাই আমরা চাই।
আজকের পত্রিকা: এবার নির্বাচিত হলে এলাকার জন্য কি করবেন?
মুরাদ হাসান: যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা করেছি। মসজিদ, মন্দির করেছি, অনুদান দিয়েছি। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যেটা লক্ষ্য, আমাদের নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তাঁরা যেন অর্থাভাব বা খাদ্যের অভাবে না ভোগে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকে। যদি না থাকে সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকলভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করছেন। এটার ইতিহাস অনেক লম্বা...। আমি বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। মূলত আমাদের যেটা হচ্ছে, এবার লক্ষ্য থাকবে, যেমন অসমাপ্ত কাজ যেগুলি আছে বা সম্পন্ন হয়নি বা অনেকটুকু হয়েছে, একটু বাকি আছে, বাকি কাজগুলো যেটি অসম্পূর্ণ সেগুলো আমরা সম্পন্ন করতে চাই।
আজকের পত্রিকা: এবার তো আপনার দলীয় মনোনয়ন নেই। নৌকা প্রতীক অন্য কেউ পেয়েছেন। আরও একজন আওয়ামী লীগ নেতা আপনার মত স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। আপনি কি অন্য কোনো প্রার্থীদের থেকে পেশি শক্তি ও অর্থনৈতিক শক্তির মাধ্যমে কোনো ধরনের চাপ বা হুমকি পাচ্ছেন?
মুরাদ হাসান: আসলে স্বতন্ত্র নির্বাচনটা এর আগে আমার অভিজ্ঞতা নাই বা আমি করি নাই। ভাবিও নাই কখনো। এবারেও ভাবতাম না, যদি না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই অপশন বা সেই নির্দেশনাটা না দিতেন। আমরা কখনোই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কথা চিন্তাও করি না, ভাবিও না। নির্বাচনে নিশ্চয়ই আপনি জানেন, কিছু অর্থ খরচ করতেই হবে। সেক্ষেত্রে পেশি শক্তি বা অর্থনৈতিক যেটাই হোক না কেন, সেটা আমাদের উপরে প্রয়োগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এ রকম আমি বলব না। বা কিছু এমন আছে যারা অর্বাচীন, কিছু বাজে লোক আছে যারা কথাবার্তা বলতে জানে না। তারা কিছু নাম্বার নেওয়ার জন্য বা কারও চামচামি করার জন্য তার বেশি কাছের, এই ধরনের লোকেরা যারা বেশি চামচামি করে তাদের চরিত্র এমনই। যখন যার কাছে ক্ষমতা থাকে তখন তাদের দালাল হওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায়। এদেরকে নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমাদেরকে হুমকি দেবে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করবে। এ রকম নাই, পারবে না।
আজকের পত্রিকা: বিতর্কের আগে মন্ত্রী মুরাদ হাসান, নৌকা প্রতীকের মুরাদ হাসান এবং বিতর্কের পরে স্বতন্ত্র মুরাদ হাসানকে সরিষাবাড়ির মানুষ কি আগের মতই গ্রহণ করছে?
মুরাদ হাসান: না। বিতর্ক নিয়ে আপনি বারবার যে কথাটা বলছেন, আমি যে ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলেছি, জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ হবে এমন কোনো কথাই আমি বলিনি। এতে কারও ক্ষতি হওয়ার তো কিছু নাই। জনগণের ক্ষতি হওয়ার তো কিছু নাই, সম্পর্কই তো নাই। আমার সরিষাবাড়ির জনগণ, আমার ভোটারদের এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারই তো কিছু নাই। সারা বাংলাদেশেরও কোনো মানুষের এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো কিছু নাই। এটা একটা এবসিলিউটলি ভিন্ন ইস্যু। আমার সরিষাবাড়ির মানুষ আমাকে একইভাবে স্নেহ করে একইভাবে ভালোবাসে। যারা আমাকে শ্রদ্ধা করার শ্রদ্ধা করে। সবচেয়ে বেশি যেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তাঁরা যেন আমাকে বিশ্বাস করে, আস্থা রাখে এটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় রাজনীতিতে আপনার অবস্থান তৈরি হচ্ছিল যেটা থেকে ছিটকে পড়েছেন। সেটা কী আবার পুনরুদ্ধার সম্ভব, হলে কতটা কষ্টসাধ্য হবে?
মুরাদ হাসান: না, এখন ব্যাপারটা হল, জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখার জন্য আমার কতটুকু প্রয়োজন; যোগ্যতা আছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কীভাবে আমাকে নিয়ে ভাবছেন তা সময়ই বলে দেবে। নির্বাচন করা আমাদের এখন লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হওয়া এখন আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য। ইনশা আল্লাহ যদি আল্লাহর রহমতে যদি আমরা জয়ী হই তারপরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নিয়ে কীভাবে ভাববেন, কতটুকু ভাববেন, জাতীয় সূত্রে আমাকে কতটুকু কাজে লাগাবেন সেটা তার উপরে নির্ভর করবে। আমি আমার মত, আমার দায়িত্ব হচ্ছে কাজ করা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে। নৌকার পক্ষে আমি সব সময়ই ছিলাম। এ নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে তো আমি করতাম না, পরিষ্কার কথা। আমরা আওয়ামী লীগের বাইরে না, অবশ্যই আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে।
আজকের পত্রিকা: আপনার এলাকার মানুষদের আলাদা করে কিছু বলার আছে?
মুরাদ হাসান: আলাদা করে আমি জনগণকে ভালোবাসি, আমি মুরাদ হাসান জনগণের জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে পারি তা জনগণ জানেন। আমি সব সময় সরিষাবাড়ির মানুষ শান্তিতে থাকুক, নিরাপদে থাকুক সরিষাবাড়ির মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হোক, সরিষাবাড়িকে আধুনিক, উন্নত, ডিজিটাল, স্মার্ট সরিষাবড়ি মডেল উপজেলা হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা পাক, প্রতিষ্ঠিত হোক, এটাই আমার লক্ষ্য এবং উদ্দ্যেশ্য, স্বপ্ন ও প্রত্যাশা। এই লক্ষ্য নিয়েই আমি রাজনীতি করি।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
মুরাদ হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ।
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪