বেলাল হোসেন, জাবি
স্প্রিঙ্গার থেকে প্রকাশিতব্য বইটির মূল বার্তা সম্পর্কে পাঠকদের কিছু বলুন।
তারিকুল ইসলাম: বইটি বাংলাদেশের দুর্যোগ, শাসন ও উন্নয়নের মধ্যকার সম্পর্ক উন্মোচন করবে। এখানে উন্নয়ন পরিকল্পনায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকে মূলধারায় আনার ক্ষেত্রে আইনি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দিকগুলো নিরীক্ষা হয়েছে। দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ইতিহাস ব্যাখ্যা করে বইটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে নজর দিয়েছে। সুশাসন, প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অর্থনীতি কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে প্রভাবিত করে এবং বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সুশাসন কীভাবে কাজ করে, তার সার্বিক মূল্যায়ন বইটিতে রয়েছে।
এ ছাড়া বইটিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির সম্প্রসারণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সুশাসন কীভাবে উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত এবং স্টেকহোল্ডারদের টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য সুশাসন কতটা প্রাসঙ্গিক, তা এই বইটিতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘসহ দাতা সংস্থাগুলোর ভূমিকা এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন কীভাবে অপরিহার্য?
তারিকুল ইসলাম: প্রথমেই বলে রাখি, সুশাসন সব স্তরে জবাবদিহি, স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং আইনের শাসনকে উৎসাহিত করে। ন্যায়সংগত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য মানবিক, প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক এবং আর্থিক সম্পদের দক্ষ ব্যবস্থাপনার অনুমতি দেয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। স্পষ্টতই, বাংলাদেশে ত্রাণকেন্দ্রিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এড়িয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের সংস্কৃতি প্রচারের প্রচেষ্টায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং উন্নয়ন একই সঙ্গে অগ্রসর হওয়া উচিত। যদি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক জননীতির বাস্তবায়ন ও প্রয়োগকে সক্ষম করা হয়, তাহলেই টেকসই জীবিকা অর্জন করা সম্ভব এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। মোদ্দা কথা টেকসই উন্নয়নে সুষ্ঠু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।
বইটিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। দুর্যোগ হ্রাস বা প্রশমনের জন্য সরকারের নীতিগুলো সমন্বয় করা; দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বস্তরে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিশ্চিত করা; একটি দুর্যোগ যখন আঘাত হানে তার প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করা; দুর্যোগ-পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসনের সমন্বয়; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে নাগরিক সম্পৃক্ততা; এবং নাগরিক সনদ নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
তারিকুল ইসলাম: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। কারণ, পেশাগতভাবে দক্ষ লোকেরা তাঁদের দুর্বলতা এবং অগ্রাধিকার ব্যাখ্যা করতে পারে, সমস্যা চিহ্নিত করতে ‘ইনপুট’ প্রদান করতে পারে এবং প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা ডিজাইন ও বাস্তবায়ন করতে পারে। এ ছাড়া নাগরিকদের অংশগ্রহণ দুর্যোগ-পরবর্তী পুনরুদ্ধারের কার্যকারিতা এবং ফলাফলকেও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাঁদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পুনরুদ্ধার কর্মসূচির ডেলিভারি এবং গুণমান উন্নত করতে পারে। পাশাপাশি সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে পারে এবং আরও বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জনগণের অংশগ্রহণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্থানীয়করণের কথা বলতে পারি। বাংলাদেশ সরকার বিগত কয়েক বছরে জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) পর্যায় পর্যন্ত কার্যকর ও পদ্ধতিগত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, লাইন এজেন্সি, স্থানীয় সরকার সংস্থা এবং জনগণের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে তাদের যথাযথ কার্যকারিতা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার গত দশক থেকে কঠোর পরিশ্রম করে আসছে। তৃণমূল স্তরে এই প্রক্রিয়াগুলোকে কার্যকরের জন্য স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার (এসওডি) একটি গাইড বই হিসেবে কাজ করে। এসওডি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করে?
তারিকুল ইসলাম: দুর্ভাগ্যবশত, সাধারণ মানুষের ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকের আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াগুলোতে খুব সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। স্থানীয় দুর্বল ব্যক্তি-গোষ্ঠীর সদস্যদের স্তরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ভূমিকা, আদেশ এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে খুব সীমিত তথ্য রয়েছে। প্রাক-দুর্যোগের সময়কালে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কোনো ভূমিকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এখনো একটি গৌণ অগ্রাধিকার এবং ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে এর যোগ সুসংহত নয়।
আবার যে ব্যক্তিরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিচালনা করেন এবং নেতৃত্ব দেন, তাঁরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ নন। কিন্তু এসওডি তাঁদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রচেষ্টা সমন্বয় ও পরিচালনা করার ক্ষমতা দিয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার নেতৃত্বে জড়িত নয়। তাই জনগণের আগ্রহ ও জবাবদিহির অনুভূতি প্রতিফলিত হয় না। বৃহত্তর দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা লোকেরা প্রায়ই বঞ্চিত হয় এবং বাংলাদেশের উপজেলা ও জেলা প্রশাসন দ্বারা কী ধরনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হয়, সে সম্পর্কে তাঁদের বেশির ভাগই সচেতন নন। অন্যদিকে, ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যরা কমিটি পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষিত নন।
তৃণমূল পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কীভাবে আরও কার্যকর হতে পারে?
তারিকুল ইসলাম: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যকারিতার জন্য আমি বইটিতে নিম্নলিখিত কর্ম পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছি। দুর্যোগের আগে, দুর্যোগের সময় এবং পরবর্তী পর্যায়ে নিয়মিতভাবে ইউডিএমসি সভা আয়োজন করা; দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য নিবেদিত তহবিল সংগ্রহ; প্রতিটি ইউপি অফিসে দুর্যোগ সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থাপন; ইউপি কমপ্লেক্সের মধ্যে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ; জরুরি প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রতিটি ইউপির অধীনে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন; দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ শুরু করা; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচার; এবং দ্রুত ও সময়মতো সবকিছুর সমন্বয় নিশ্চিত করা। এর পাশাপাশি ঝুঁকি মূল্যায়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রস্তুতি ও প্রশমন সমাধানের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সুন্দর মতামত রাখার জন্য এবং মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
তারিকুল ইসলাম: আজকের পত্রিকা ও তার গুরুত্বপূর্ণ পাঠকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
স্প্রিঙ্গার থেকে প্রকাশিতব্য বইটির মূল বার্তা সম্পর্কে পাঠকদের কিছু বলুন।
তারিকুল ইসলাম: বইটি বাংলাদেশের দুর্যোগ, শাসন ও উন্নয়নের মধ্যকার সম্পর্ক উন্মোচন করবে। এখানে উন্নয়ন পরিকল্পনায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকে মূলধারায় আনার ক্ষেত্রে আইনি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দিকগুলো নিরীক্ষা হয়েছে। দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ইতিহাস ব্যাখ্যা করে বইটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে নজর দিয়েছে। সুশাসন, প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অর্থনীতি কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে প্রভাবিত করে এবং বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সুশাসন কীভাবে কাজ করে, তার সার্বিক মূল্যায়ন বইটিতে রয়েছে।
এ ছাড়া বইটিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির সম্প্রসারণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সুশাসন কীভাবে উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত এবং স্টেকহোল্ডারদের টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য সুশাসন কতটা প্রাসঙ্গিক, তা এই বইটিতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘসহ দাতা সংস্থাগুলোর ভূমিকা এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন কীভাবে অপরিহার্য?
তারিকুল ইসলাম: প্রথমেই বলে রাখি, সুশাসন সব স্তরে জবাবদিহি, স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং আইনের শাসনকে উৎসাহিত করে। ন্যায়সংগত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য মানবিক, প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক এবং আর্থিক সম্পদের দক্ষ ব্যবস্থাপনার অনুমতি দেয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। স্পষ্টতই, বাংলাদেশে ত্রাণকেন্দ্রিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এড়িয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের সংস্কৃতি প্রচারের প্রচেষ্টায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং উন্নয়ন একই সঙ্গে অগ্রসর হওয়া উচিত। যদি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক জননীতির বাস্তবায়ন ও প্রয়োগকে সক্ষম করা হয়, তাহলেই টেকসই জীবিকা অর্জন করা সম্ভব এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। মোদ্দা কথা টেকসই উন্নয়নে সুষ্ঠু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।
বইটিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। দুর্যোগ হ্রাস বা প্রশমনের জন্য সরকারের নীতিগুলো সমন্বয় করা; দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বস্তরে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিশ্চিত করা; একটি দুর্যোগ যখন আঘাত হানে তার প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করা; দুর্যোগ-পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসনের সমন্বয়; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে নাগরিক সম্পৃক্ততা; এবং নাগরিক সনদ নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
তারিকুল ইসলাম: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। কারণ, পেশাগতভাবে দক্ষ লোকেরা তাঁদের দুর্বলতা এবং অগ্রাধিকার ব্যাখ্যা করতে পারে, সমস্যা চিহ্নিত করতে ‘ইনপুট’ প্রদান করতে পারে এবং প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা ডিজাইন ও বাস্তবায়ন করতে পারে। এ ছাড়া নাগরিকদের অংশগ্রহণ দুর্যোগ-পরবর্তী পুনরুদ্ধারের কার্যকারিতা এবং ফলাফলকেও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাঁদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পুনরুদ্ধার কর্মসূচির ডেলিভারি এবং গুণমান উন্নত করতে পারে। পাশাপাশি সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে পারে এবং আরও বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জনগণের অংশগ্রহণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্থানীয়করণের কথা বলতে পারি। বাংলাদেশ সরকার বিগত কয়েক বছরে জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) পর্যায় পর্যন্ত কার্যকর ও পদ্ধতিগত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, লাইন এজেন্সি, স্থানীয় সরকার সংস্থা এবং জনগণের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে তাদের যথাযথ কার্যকারিতা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার গত দশক থেকে কঠোর পরিশ্রম করে আসছে। তৃণমূল স্তরে এই প্রক্রিয়াগুলোকে কার্যকরের জন্য স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার (এসওডি) একটি গাইড বই হিসেবে কাজ করে। এসওডি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করে?
তারিকুল ইসলাম: দুর্ভাগ্যবশত, সাধারণ মানুষের ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকের আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াগুলোতে খুব সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। স্থানীয় দুর্বল ব্যক্তি-গোষ্ঠীর সদস্যদের স্তরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ভূমিকা, আদেশ এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে খুব সীমিত তথ্য রয়েছে। প্রাক-দুর্যোগের সময়কালে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কোনো ভূমিকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এখনো একটি গৌণ অগ্রাধিকার এবং ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে এর যোগ সুসংহত নয়।
আবার যে ব্যক্তিরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিচালনা করেন এবং নেতৃত্ব দেন, তাঁরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ নন। কিন্তু এসওডি তাঁদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রচেষ্টা সমন্বয় ও পরিচালনা করার ক্ষমতা দিয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার নেতৃত্বে জড়িত নয়। তাই জনগণের আগ্রহ ও জবাবদিহির অনুভূতি প্রতিফলিত হয় না। বৃহত্তর দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা লোকেরা প্রায়ই বঞ্চিত হয় এবং বাংলাদেশের উপজেলা ও জেলা প্রশাসন দ্বারা কী ধরনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হয়, সে সম্পর্কে তাঁদের বেশির ভাগই সচেতন নন। অন্যদিকে, ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যরা কমিটি পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষিত নন।
তৃণমূল পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কীভাবে আরও কার্যকর হতে পারে?
তারিকুল ইসলাম: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যকারিতার জন্য আমি বইটিতে নিম্নলিখিত কর্ম পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছি। দুর্যোগের আগে, দুর্যোগের সময় এবং পরবর্তী পর্যায়ে নিয়মিতভাবে ইউডিএমসি সভা আয়োজন করা; দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য নিবেদিত তহবিল সংগ্রহ; প্রতিটি ইউপি অফিসে দুর্যোগ সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থাপন; ইউপি কমপ্লেক্সের মধ্যে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ; জরুরি প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রতিটি ইউপির অধীনে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন; দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ শুরু করা; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচার; এবং দ্রুত ও সময়মতো সবকিছুর সমন্বয় নিশ্চিত করা। এর পাশাপাশি ঝুঁকি মূল্যায়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রস্তুতি ও প্রশমন সমাধানের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সুন্দর মতামত রাখার জন্য এবং মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
তারিকুল ইসলাম: আজকের পত্রিকা ও তার গুরুত্বপূর্ণ পাঠকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪