রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। লড়াইয়ে আরও তিন দলের প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠ জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলের দখলেই আছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর রানীবাজারে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি ভোটের প্রস্তুতি, প্রতিশ্রুতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাসহ নানা বিষয়ে আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক রিমন রহমানের মুখোমুখি হন।
রিমন রহমান
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন চলছে?
লিটন: নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরে বসবাসরত বা কর্মরত যাঁরা আছেন এবং আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের সবার সঙ্গে দফায় দফায় সভা করেছি। এর বাইরেও যত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও পেশাজীবী সংগঠন আছে, তাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছি। প্রায় ৬৫টি সভায় বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি। এতে আমি আমার বক্তব্য তাঁদের দিতে পেরেছি, তাঁরাও কিছু পরামর্শ আমাকে দিয়েছেন।
আজকের পত্রিকা: আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করবেন কবে?
লিটন: আগামী ২ জুন প্রতীক নেওয়ার পরে সারা শহরে পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো হবে। ৩ তারিখ প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ১৪ দলের মিছিল বের হবে। সব মিছিল জয়বাংলা চত্বরে এসে একটা বড় মিছিল বের হবে। সেদিনই আমাদের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। ৩ থেকে ১৯ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার চলবে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর এবং বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দুই বেলা এভাবে করলে সবগুলো ওয়ার্ডেই পৌঁছাতে পারব। নেতা-কর্মীদের বলে রাখব। তাঁরা ওয়ার্ডের মানুষকে জমায়েত করে রাখবেন। আমি গিয়ে আমার বক্তব্য জানাব।
আজকের পত্রিকা: এবার ইশতেহারে নগরবাসীকে কী কী প্রতিশ্রুতি দেবেন?
লিটন: এবারের মূল প্রতিশ্রুতি থাকবে কর্মসংস্থান। তার পরে রাজশাহীর চরে রিভার সিটি ও একটি নৌবন্দর করব। এর মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে নৌপথের ব্যবসা শুরুর পথ খুলবে। শহরের উত্তর দিকে শিল্পাঞ্চল করা হবে। সেখানে বিসিক শিল্পনগরী হয়ে গেছে। আর চামড়াশিল্পের জন্য একটি এলাকা বাছাই করা আছে, সেখানে প্লট বিতরণ করা হবে। এগুলো বড় কাজ। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাই। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে চাই। পাঁচ বছরে আরও অনেক কাজ করতে চাই রাজশাহীর জন্য।
আজকের পত্রিকা: কর্মসংস্থান কীভাবে সৃষ্টি করবেন?
লিটন: কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি আসলে খুব জটিল। অনেক সময় লাগে। অনেক অর্থ লাগে। অনেক প্রশাসনিক স্তর পার হতে হয়। সেটি পাঁচ বছর ধরেই করতে হবে। তাহলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
আজকের পত্রিকা: সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়াদে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পেয়েছেন। কিন্তু কাজ করতে পেরেছেন ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার। বাকি টাকার কাজ কেন করতে পারেননি?
লিটন: সমস্যা ছিল কোভিড। এর কারণে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে, বরাদ্দ এখন কম হবে। প্রথম দিকে আমরা মনে করেছিলাম চার বছরের প্রকল্প ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, ২০২৬ সালও লাগতে পারে। কারণ অর্থ ছাড় যখন কম হয়ে গেল, তখন টেন্ডারও কমিয়ে করতে হলো। এভাবে করতে গিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার টেন্ডার করতে পেরেছি। আর কিছু প্রক্রিয়াধীন। মোটামুটি অর্ধেক টাকা থেকে গেছে। সেই টাকাটা পরবর্তী মেয়াদে খরচ হবে।
আজকের পত্রিকা: গতবারের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া অনেক প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারেননি। এ বিষয়ে কী বলবেন?
লিটন: হ্যাঁ, করোনার কারণে মানুষকে সেবা করতে গিয়ে, মানুষের জীবন বাঁচাতে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করতে হয়েছে। সেই সময়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা যেত। কিন্তু কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা যায়নি প্রায় দেড় বছর। তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি—এই সবকিছু মিলিয়ে কাজ বিলম্বিত হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: মেয়র হিসেবে আপনি কতটা সফল?
লিটন: সেটা রাজশাহীবাসীই মূল্যায়ন করবেন। ২০০৮ সালে প্রথমবার মেয়র হয়েই আমি এই শহরের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম। পরেরবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচারের কারণে বিএনপির প্রার্থী মেয়র হন। কিন্তু তিনি এসে শহরকে আগের অবস্থানে ধরে রাখতে পারেননি। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড একেবারেই থমকে যায়। কর্মচারীদের বেতনটাও তিনি দিতে পারতেন না। ২০১৮ সালে আমি আবার এসে উন্নয়নে গতি ফিরিয়েছি। এক মাসের জন্যও কর্মচারীদের বেতন বকেয়া থাকেনি। রাজশাহীকে এত সুন্দর করে সাজিয়েছি যে, এই শহর দেশের সেরা শহরের খ্যাতি অর্জন করেছে। তিলে তিলে এটা অর্জন করেছি। পরিবেশের দিক দিয়ে রাজশাহী এখন দেশের সবচেয়ে বাসযোগ্য শহর।
আজকের পত্রিকা: সিটি নির্বাচনে এবার বিএনপি অংশ নেয়নি। তাঁদের নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
লিটন: এটা বিএনপির নিজস্ব বিষয়। তাঁরা যেটা বলছে, সেটা তো মানার মতো নয়। কেয়ারটেকার সরকার দিতে হবে, নইলে ভোট করবে না—এটা তো কোনো রাজনৈতিক ভাষা হলো না। কারণ কেয়ারটেকার দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এই নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হবে, এটা আমাদের দলের পক্ষ থেকে বারংবার বলা হয়েছে। তার পরও যদি না আসে, আমাদের কী করার আছে!
আজকের পত্রিকা: এই নির্বাচনে কত শতাংশ মানুষ ভোট দেবে বলে আপনার ধারণা?
লিটন: নানা কারণেই শতভাগ মানুষ ভোট দিতে পারেন না। চাকরির সুবাদে হোক, আর যেকোনো কারণেই হোক, অনেক মানুষই শহরের বাইরে থাকেন। তার পরও কমপক্ষে ৭০ ভাগ ভোটার ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন বলে মনে করি।
আজকের পত্রিকা: এই নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টির প্রার্থী রয়েছেন। বিজয়ী হতে আপনার কোনো চ্যালেঞ্জ আছে?
লিটন: আমি কাউকে ছোট করে দেখি না। প্রার্থী যাঁরা হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের জায়গা থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৪ দলের প্রার্থীকে কতটুকু চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারবেন সেটা দেখার বিষয়। আমি মনে করি না যে খুব একটা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে আবারও বলছি যে, আমি কাউকে ছোট করে দেখি না।
আজকের পত্রিকা: সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। সেই নির্বাচনের পর সতর্ক হচ্ছেন নাকি?
লিটন: গাজীপুরের বিষয়টি ভিন্ন। একসময় জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ করতেন, মেয়র ছিলেন। সেই জাহাঙ্গীর দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার পরে আবার তাঁকে নেওয়া হয়। এই নির্বাচনের সময় তাঁকে আবারও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এই সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তাঁর একটা অবস্থান তৈরি হয়ে গিয়েছিল। অনেক তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ তাঁকে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দেখতেন। কাজেই তিনি যখন মনোনয়ন না পেয়ে ভিন্নভাবে তাঁর মাকে প্রার্থী করে প্রচারে নামলেন, তখন তাঁর আবেগপূর্ণ বক্তব্যে মানুষ কিছুটা তাঁর পক্ষ নিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তৃণমূল থেকে উঠে আসা অত্যন্ত সৎ, যোগ্য, দক্ষ, শিক্ষিত একটা মানুষ। তিনি জিতলে আমি খুশি হতাম। গাজীপুরের মতো পরিস্থিতি রাজশাহীতে নয়।
আজকের পত্রিকা: আলোচনা ছিল আপনি এমপি-মন্ত্রী হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখবেন। মেয়র পদেই নির্বাচন করছেন কেন?
লিটন: সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করলেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসেবে আমার জাতীয়ভাবে কাজ করার সুযোগ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সেই সুযোগটি দিয়েছেন। কাজেই আমি মনে করি দলের প্রধান যেটা চেয়েছেন, তা মানাটাই কর্তব্য। সেটা মেনে নিয়েই আমি মেয়র পদে আছি এবং মেয়র থাকলে এই এলাকার, বিশেষ করে রাজশাহী বিভাগের অনেক কাজ করা সম্ভব হবে। অনেক কাজ বাকি আছে, এটা আমি করতে চাই।
আজকের পত্রিকা: মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন, এটা কত দিন আগে জানতে পারেন?
লিটন: তফসিল ঘোষণার মাস দু-এক আগে থেকেই।
আজকের পত্রিকা: শহীদ জাতীয় নেতার পরিবারের সন্তান হিসেবে আপনাকে নিয়ে রাজশাহীর মানুষের প্রত্যাশা বেশি। দলের কাছে আপনার নিজের কোনো প্রত্যাশা আছে কি না?
লিটন: হ্যাঁ, যারা দলের কর্মী তাঁদের তো একটা প্রত্যাশা থাকবেই। আমাকে দল অনেক দিয়েছে। আমি ইতিমধ্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছি। এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক-সভাপতি দুটো পদেই ছিলাম। ’৯৬-এর পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই আমি মনোনয়ন পেয়েছি। কাজেই দল আমাকে যথেষ্টই দিয়েছে। এর পরও আমার কর্মকাণ্ডে দলের সভাপতি নেত্রী শেখ হাসিনাসহ হাইকমান্ড যদি আরও উচ্চতর কোনো জায়গায় নিয়ে যান, তাঁরা নিতেই পারেন।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন চলছে?
লিটন: নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরে বসবাসরত বা কর্মরত যাঁরা আছেন এবং আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের সবার সঙ্গে দফায় দফায় সভা করেছি। এর বাইরেও যত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও পেশাজীবী সংগঠন আছে, তাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছি। প্রায় ৬৫টি সভায় বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি। এতে আমি আমার বক্তব্য তাঁদের দিতে পেরেছি, তাঁরাও কিছু পরামর্শ আমাকে দিয়েছেন।
আজকের পত্রিকা: আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করবেন কবে?
লিটন: আগামী ২ জুন প্রতীক নেওয়ার পরে সারা শহরে পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো হবে। ৩ তারিখ প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ১৪ দলের মিছিল বের হবে। সব মিছিল জয়বাংলা চত্বরে এসে একটা বড় মিছিল বের হবে। সেদিনই আমাদের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। ৩ থেকে ১৯ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার চলবে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর এবং বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দুই বেলা এভাবে করলে সবগুলো ওয়ার্ডেই পৌঁছাতে পারব। নেতা-কর্মীদের বলে রাখব। তাঁরা ওয়ার্ডের মানুষকে জমায়েত করে রাখবেন। আমি গিয়ে আমার বক্তব্য জানাব।
আজকের পত্রিকা: এবার ইশতেহারে নগরবাসীকে কী কী প্রতিশ্রুতি দেবেন?
লিটন: এবারের মূল প্রতিশ্রুতি থাকবে কর্মসংস্থান। তার পরে রাজশাহীর চরে রিভার সিটি ও একটি নৌবন্দর করব। এর মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে নৌপথের ব্যবসা শুরুর পথ খুলবে। শহরের উত্তর দিকে শিল্পাঞ্চল করা হবে। সেখানে বিসিক শিল্পনগরী হয়ে গেছে। আর চামড়াশিল্পের জন্য একটি এলাকা বাছাই করা আছে, সেখানে প্লট বিতরণ করা হবে। এগুলো বড় কাজ। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাই। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে চাই। পাঁচ বছরে আরও অনেক কাজ করতে চাই রাজশাহীর জন্য।
আজকের পত্রিকা: কর্মসংস্থান কীভাবে সৃষ্টি করবেন?
লিটন: কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি আসলে খুব জটিল। অনেক সময় লাগে। অনেক অর্থ লাগে। অনেক প্রশাসনিক স্তর পার হতে হয়। সেটি পাঁচ বছর ধরেই করতে হবে। তাহলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
আজকের পত্রিকা: সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়াদে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পেয়েছেন। কিন্তু কাজ করতে পেরেছেন ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার। বাকি টাকার কাজ কেন করতে পারেননি?
লিটন: সমস্যা ছিল কোভিড। এর কারণে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে, বরাদ্দ এখন কম হবে। প্রথম দিকে আমরা মনে করেছিলাম চার বছরের প্রকল্প ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, ২০২৬ সালও লাগতে পারে। কারণ অর্থ ছাড় যখন কম হয়ে গেল, তখন টেন্ডারও কমিয়ে করতে হলো। এভাবে করতে গিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার টেন্ডার করতে পেরেছি। আর কিছু প্রক্রিয়াধীন। মোটামুটি অর্ধেক টাকা থেকে গেছে। সেই টাকাটা পরবর্তী মেয়াদে খরচ হবে।
আজকের পত্রিকা: গতবারের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া অনেক প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারেননি। এ বিষয়ে কী বলবেন?
লিটন: হ্যাঁ, করোনার কারণে মানুষকে সেবা করতে গিয়ে, মানুষের জীবন বাঁচাতে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করতে হয়েছে। সেই সময়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা যেত। কিন্তু কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা যায়নি প্রায় দেড় বছর। তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি—এই সবকিছু মিলিয়ে কাজ বিলম্বিত হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: মেয়র হিসেবে আপনি কতটা সফল?
লিটন: সেটা রাজশাহীবাসীই মূল্যায়ন করবেন। ২০০৮ সালে প্রথমবার মেয়র হয়েই আমি এই শহরের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম। পরেরবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচারের কারণে বিএনপির প্রার্থী মেয়র হন। কিন্তু তিনি এসে শহরকে আগের অবস্থানে ধরে রাখতে পারেননি। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড একেবারেই থমকে যায়। কর্মচারীদের বেতনটাও তিনি দিতে পারতেন না। ২০১৮ সালে আমি আবার এসে উন্নয়নে গতি ফিরিয়েছি। এক মাসের জন্যও কর্মচারীদের বেতন বকেয়া থাকেনি। রাজশাহীকে এত সুন্দর করে সাজিয়েছি যে, এই শহর দেশের সেরা শহরের খ্যাতি অর্জন করেছে। তিলে তিলে এটা অর্জন করেছি। পরিবেশের দিক দিয়ে রাজশাহী এখন দেশের সবচেয়ে বাসযোগ্য শহর।
আজকের পত্রিকা: সিটি নির্বাচনে এবার বিএনপি অংশ নেয়নি। তাঁদের নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
লিটন: এটা বিএনপির নিজস্ব বিষয়। তাঁরা যেটা বলছে, সেটা তো মানার মতো নয়। কেয়ারটেকার সরকার দিতে হবে, নইলে ভোট করবে না—এটা তো কোনো রাজনৈতিক ভাষা হলো না। কারণ কেয়ারটেকার দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এই নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হবে, এটা আমাদের দলের পক্ষ থেকে বারংবার বলা হয়েছে। তার পরও যদি না আসে, আমাদের কী করার আছে!
আজকের পত্রিকা: এই নির্বাচনে কত শতাংশ মানুষ ভোট দেবে বলে আপনার ধারণা?
লিটন: নানা কারণেই শতভাগ মানুষ ভোট দিতে পারেন না। চাকরির সুবাদে হোক, আর যেকোনো কারণেই হোক, অনেক মানুষই শহরের বাইরে থাকেন। তার পরও কমপক্ষে ৭০ ভাগ ভোটার ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন বলে মনে করি।
আজকের পত্রিকা: এই নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টির প্রার্থী রয়েছেন। বিজয়ী হতে আপনার কোনো চ্যালেঞ্জ আছে?
লিটন: আমি কাউকে ছোট করে দেখি না। প্রার্থী যাঁরা হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের জায়গা থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৪ দলের প্রার্থীকে কতটুকু চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারবেন সেটা দেখার বিষয়। আমি মনে করি না যে খুব একটা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে আবারও বলছি যে, আমি কাউকে ছোট করে দেখি না।
আজকের পত্রিকা: সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। সেই নির্বাচনের পর সতর্ক হচ্ছেন নাকি?
লিটন: গাজীপুরের বিষয়টি ভিন্ন। একসময় জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ করতেন, মেয়র ছিলেন। সেই জাহাঙ্গীর দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার পরে আবার তাঁকে নেওয়া হয়। এই নির্বাচনের সময় তাঁকে আবারও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এই সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তাঁর একটা অবস্থান তৈরি হয়ে গিয়েছিল। অনেক তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ তাঁকে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দেখতেন। কাজেই তিনি যখন মনোনয়ন না পেয়ে ভিন্নভাবে তাঁর মাকে প্রার্থী করে প্রচারে নামলেন, তখন তাঁর আবেগপূর্ণ বক্তব্যে মানুষ কিছুটা তাঁর পক্ষ নিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তৃণমূল থেকে উঠে আসা অত্যন্ত সৎ, যোগ্য, দক্ষ, শিক্ষিত একটা মানুষ। তিনি জিতলে আমি খুশি হতাম। গাজীপুরের মতো পরিস্থিতি রাজশাহীতে নয়।
আজকের পত্রিকা: আলোচনা ছিল আপনি এমপি-মন্ত্রী হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখবেন। মেয়র পদেই নির্বাচন করছেন কেন?
লিটন: সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করলেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসেবে আমার জাতীয়ভাবে কাজ করার সুযোগ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সেই সুযোগটি দিয়েছেন। কাজেই আমি মনে করি দলের প্রধান যেটা চেয়েছেন, তা মানাটাই কর্তব্য। সেটা মেনে নিয়েই আমি মেয়র পদে আছি এবং মেয়র থাকলে এই এলাকার, বিশেষ করে রাজশাহী বিভাগের অনেক কাজ করা সম্ভব হবে। অনেক কাজ বাকি আছে, এটা আমি করতে চাই।
আজকের পত্রিকা: মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন, এটা কত দিন আগে জানতে পারেন?
লিটন: তফসিল ঘোষণার মাস দু-এক আগে থেকেই।
আজকের পত্রিকা: শহীদ জাতীয় নেতার পরিবারের সন্তান হিসেবে আপনাকে নিয়ে রাজশাহীর মানুষের প্রত্যাশা বেশি। দলের কাছে আপনার নিজের কোনো প্রত্যাশা আছে কি না?
লিটন: হ্যাঁ, যারা দলের কর্মী তাঁদের তো একটা প্রত্যাশা থাকবেই। আমাকে দল অনেক দিয়েছে। আমি ইতিমধ্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছি। এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক-সভাপতি দুটো পদেই ছিলাম। ’৯৬-এর পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই আমি মনোনয়ন পেয়েছি। কাজেই দল আমাকে যথেষ্টই দিয়েছে। এর পরও আমার কর্মকাণ্ডে দলের সভাপতি নেত্রী শেখ হাসিনাসহ হাইকমান্ড যদি আরও উচ্চতর কোনো জায়গায় নিয়ে যান, তাঁরা নিতেই পারেন।
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪