জাহাঙ্গীর আলম
দীর্ঘ কুড়ি বছরের রক্তপাতের পর আফগানিস্তানে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে তালেবান। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে আলোচনা। যেই তালেবানকে হটানোর জন্য ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, দুই দশক পর তাদের ভয়েই সব ছেড়েছুড়ে পালাতে হচ্ছে তাদের। এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় হিসেবেই দেখছেন অনেকে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, নাইন–ইলেভেন হামলার জন্য দায়ী আল–কায়েদাকে ধ্বংস করাই ছিল এই অভিযানের উদ্দেশ্য। সেটি সফল হয়েছে। এখন আফগান জনগণকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ দিতে হবে।
এই তালেবানকে তৈরিই করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সোভিয়েতদের হটাতে অর্থ, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা মুজাহিদীনই হয়ে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ। সেটি অবশ্য গোপন কিছু নয়। এই কথাগুলোই ২০০৯ ও ২০১০ সালে ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন কংগ্রেসে শুনানিতে ও এক সাক্ষাৎকারে কোনো রাখঢাক ছাড়াই বলেছিলেন।
২০১০ সালের ১৮ জুলাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন ছিলেন পাকিস্তান সফরে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসে ফক্স নিউজের সাংবাদিক গ্রেটা ভন সাস্টেরেনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি। তারই সংক্ষিপ্ত অনুবাদ তুলে ধরা হলো—
ম্যাডাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে বেশ ভালো লাগল। আর এটা তো পাকিস্তানে আপনার সঙ্গে দ্বিতীয় সফর।
ক্লিনটন: সেটাই। সঙ্গে আসার জন্য ধন্যবাদ।
ঠিক আছে। এখন তো আমরা দেশে যে ভয়ানক অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে নিপতিত, সেটা তো আর গোপন কিছু নয়। আপনি আমেরিকার জনগণকে কীভাবে বোঝাবেন যে, পাকিস্তানে এখানে পয়সা খরচ করা একটা বিষয়, যেটা আমরা করতে চাইছি?
ক্লিনটন: হুম, আমি মনে করি, এই কাজটা করার তিনটা উপায় আছেন বুঝলেন গ্রেটা। এক নম্বর, এটা সেই জায়গা, যেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রধান সন্ত্রাসী হুমকির সৃষ্টি হয়েছে। আর আমরা দেখেছি, কিছু হামলা প্রতিহত বা ভেস্তে দেওয়া গেছে, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটা ঘটেছে। আর এটা কেবল শুরু। আর আমাদের পাকিস্তানের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকতে হবে। আমাদের অবশ্য আফগানিস্তানকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে। এটা আমাদের জন্য আরও বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাতে আরও পয়সা বেরিয়ে যাবে।
দ্বিতীয়ত, আপনি যদি ভাবেন যে ৯ / ১১–এর পর এই বিষয়টা আমাদের জন্য কত বড় ব্যয়ের কারণ হয়েছে, এটি অবিশ্বাস্য রকমের এক অর্থনৈতিক ধাক্কা। আর এভাবে সন্ত্রাসবাদ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের শীর্ষে যখন থাকে, তখন তা আমাদের জন্য আরও মারাত্মক বিপর্যয়কর হবে। অতএব আমাদের সদাপ্রস্তুত থাকতে হবে এবং এটা যাতে না ঘটে, সে জন্য চেষ্টা করতে হবে।
তৃতীয়ত, আমি মনে করি, বিশ্বের এই অংশটার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক আমাদের অর্থনীতির জন্যই ভালো হবে। এটাই দীর্ঘমেয়াদে আমাদের লাভ বয়ে আনবে। আমি বোঝাতে চাইছি, আমাদের রপ্তানি নিয়ে একটা উদ্যোগ প্রেসিডেন্ট ওবামা ঘোষণা করেছেন। এই ঘোষণা অনুযায়ী আমরা রপ্তানি দ্বিগুণ করব। আমাদের দরকার বাজার সম্প্রসারণ। তাহলে কীভাবে আমরা বাজার সম্প্রসারণ করতে পারব? তাহলে আপনি জীবনযাপনের মান বাড়াতে পারবেন, আপনি নিরাপত্তাহীনতার নিরসন করতে পারবেন, যাতে জনগণ সত্যি সত্যি পণ্য কিনতে পারে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদন করে।
সুতরাং, সন্ত্রাসবাদ, অর্থনৈতিক বিষয়াদি, আরও বেশি বাজারে প্রবেশ—সবকিছু মিলেই পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে বোধগম্য।
তাহলে নিরাপত্তার ব্যাপারটা—আমার মনে হয় আমেরিকানরা সত্যিই নিরাপত্তা চান। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমরা সম্প্রতি টাইমস স্কয়ারের ঘটনা দেখেছি, সেটিরও মূল সূত্র এই দেশেই। কিন্তু আসলেই কি আমরা খেলাটার আগে বাড়তে পারছি? আসলেই কি আমরা নিরাপত্তার নামে যে পয়সটা খরচ হচ্ছে, সেটি কাজে লাগাতে পারছি? কারণ, আমরা সাম্প্রতিক সময়ে এসব ঘটনা দেখেছি এবং এমনকি তারাও—আমরা দেখছি এই দেশে সব সময় সহিংসতা লেগেই আছে।
ক্লিনটন: হুম, আর পাকিস্তানিরা নিজেরাও এর জন্য বড় মূল্য দিচ্ছে। বোমা হামলায় তাদের প্রচুর মানুষের প্রাণ গেছে। পাকিস্তানের জনগণের ওপর ভয়ানক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক জেঁকে বসেছে। যুদ্ধে তাদের সামরিক বাহিনীরও প্রচুর লোকক্ষয় হয়েছে। এটা খুব কঠিন ব্যাপার, আমি এখানে বসে আপনাকে বলতে চাইছি না যে, এটা তেমন কিছু নয়। কিন্তু, এখান থেকে চলে যাওয়াটা হবে একটা ভুল। আমরা এটা করেছি তো। এর আগে ফলাফল সম্পর্কে সবকিছু জেনেও আমরা পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম।
তাহলে আপনি বলছেন, আমরা যদি এখান থেকে চলে যাই, যে টাকা দেওয়া হচ্ছে তা বন্ধ করি, তাহলে নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় এটা আমাদের জন্য আরও খারাপ হবে?
ক্লিনটন: অবশ্যই, অবশ্যই। আমরা এমন একটা সম্পর্ক নির্মাণ করছি, যেটা আগে ছিল না। আমি বলছি, আমাদের সর্বশেষ সফরে আপনি তখন ছিলেন, তখন আমাদের ভয়ানক আস্থা সংকট ছিল। একদিক থেকে বললে, যুক্তরাষ্ট্রের তখন... সত্যি বললে, আমরা যার বিরুদ্ধে এখন যুদ্ধ করছি, তাদের সৃষ্টিতে আমরাই সহায়তা করেছি।
কীভাবে?
ক্লিনটন: কারণ, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায়, আমরা এই চমৎকার ধারণাটি নিয়েছিলাম যে, আমরা পাকিস্তানে যাব এবং মুজাহিদীনদের একটি বাহিনী তৈরি করব। তাদের স্টিংগার মিসাইল ও অন্য সবকিছু দিয়ে সমরসজ্জায় সজ্জিত করব। সোভিয়েতদের ধাওয়া করতে তারা আফগানিস্তানের ভেতরে ঢুকবে। আর আমরা সফল হয়েছিলাম। সোভিয়েতরা আফগানিস্তান ছেড়েছিল। আর তখন বলেছিলাম চমৎকার, বিদায়—এই বলেই সামরিক প্রশিক্ষণ পাওয়া লোকগুলো যারা আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের উগ্র ধার্মিক, তাদের ছেড়ে আসি। তাদের ভালো মতো অস্ত্রসজ্জিত অবস্থায় রেখে আসি। একটা জগাখিচুড়ি বেঁধে যায়। খোলাখুলি বললে, ওই সময় আমরা ব্যাপারটাকে পাত্তা দিইনি। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন দেখে আমরা এতটাই খুশি হই এবং ভাবি, ঠিক আছে, সুন্দর, আমরা তাহলে এখন ঠিকঠাক আছি। সামনে সবকিছু তাহলে খুব ভালোই হতে যাচ্ছে। এখন পেছনে ফিরে দেখুন; আমরা যেই লোকগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি, তাদের আমরা সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করেছি।
তাহলে, আমাদের যদি বিজয়ের একটা অনুভূতি আসতো, যেখানে আমরা এই হতাহতের ঘটনাগুলো দেখছি, আমরা দেখছি আফগানিস্তানে হতাহত বাড়ছে। আমরা যদি বিন লাদেন, ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে পারতাম; আমি জানি সেটা পারব, আমার মনে হয়, সেটা। তাহলে আমেরিকান জনগণকে এই প্রকল্পে আরও প্রতিশ্রুতিশীল হতে উৎসাহিত করবে। আপনি কি মনে করেন, পাকিস্তান সরকার ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে জানে?
ক্লিনটন: আমি মনে করি, এই সরকারের অংশগুলো এটা জানে। আমি আগেও এটা বলেছি। কিন্তু আমি মনে করি, আপনার দর্শকদের এটাও জানা জরুরি যে, আমরা পাকিস্তানের সহযোগিতায় আল–কায়েদার বিপুলসংখ্যক শীর্ষস্থানীয় নেতাকে পেয়েছি। এখন, আমরা বিন লাদেন বা জাওয়াহিরিকে (আইমান আল–জাওয়াহিরি) ধরতে পারিনি। কিন্তু আমরা তাদের শীর্ষস্থানীয় প্রচুর নেতাকে নির্ভুলভাবে শনাক্ত ও হত্যা করতে পেরেছি।
সুতরাং, আমাদের বলার মতো বিষয় আছে। আমি যেটা চাচ্ছি, সেটা এখনো ঘটেনি। কারণ ৯ / ১১–এ নিউইয়র্ক থেকে এক সিনেটর হিসেবে আমি ওই লোকগুলোকে চাই। আমি বলতে চাই, ওদের ধরতে না পারা পর্যন্ত আমি তৃপ্ত হব না। কিন্তু আমরা এরই মধ্যে অনেক অগ্রগতি করেছি। আমরা বর্তমানে সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্য গভীর সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি করেছি।
ঠিক আছে। এখন তাহলে আমরা সম্পতি উগান্ডাতে একটা ঘটনা দেখিছ। আমরা আল–শাবাব, আরেকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং মনে হচ্ছে আরেকটি অঞ্চলে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে। আমাদের সেখানেও জড়িয়ে পড়ার কি কোনো পথ আছে, আল–শাবাবের ব্যাপারে?
ক্লিনটন: হুম। আমরা এএমআইএসওএমকে সহায়তা দিয়েছি। ওটা আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি মিশন, যা ব্যবহার করে উগান্ডা ও বুরুন্ডির সেনাবাহিনী। আসল ব্যাপার হলো, আল শাবাব কাম্পালার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। কারণ, উগান্ডা সোমালিয়ার ভেতরে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আমরা এটাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করছি। আমরা সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা পাঠানোর কোনো চিন্তা করছি না। কিন্তু আমরা আফ্রিকানদের আফ্রিকার জন্য যুদ্ধ করতে সহায়তা করতে চাই এবং যারাই আল–শাবাবের বিরুদ্ধে লড়বে আমরা তাদের সহযোগিতা করব। এরা এখন শুধু সোমালিয়ার ভেতরেরই হুমকি নয়, আপনি সঠিক বলেছেন, এরা সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আপনি যেটা বলছিলেন সেখানে ফেরা যাক, পাকিস্তান সরকারের কিছু পক্ষ তাহলে জানে, ওসামা বিন লাদেন কোথায় আছেন?
ক্লিনটন: হুম। আমি তেমনটাই বিশ্বাস করি। এখন আমি...
আপনি এটা বিশ্বাস করেন। কেন আপনার এমন ধারণা? আমি বলতে চাইছি, কেন আপনি এমনটা ভাবছেন?
ক্লিনটন: হুম। আমার এই বিশ্বাসের কারণ আমি মনে করি, আমি যদি আমাদের সরকারকে একটি নেতৃত্বাস্থানীয় অবস্থানে রাখি এবং কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যদি কোথাও তৎপর থাকে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে প্রত্যন্ত কোনো অঞ্চলেও যদি হয়, কিছু শেরিফ, স্থানীয় পুলিশ, সরকারের কেউ না কেউ জানবে যে, সন্দেহজনক কিছু একটা ঘটছে। সুতরাং ঠিক এই কারণেই আমি মনে করি, কেউ না কউ এই সরকারের কিছু লোক, শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত, জানে বিন লাদেন কোথায়। এবং আমিও সেটা জানতে চাই।
আমরা কি আমাদের টাকা বা অন্য কিছুর ওপর জোর দিতে পারি না...
ক্লিনটন: অবশ্যই, অবশ্যই।
আমি বলছি, এ ব্যাপারে তথ্য পেতে? আমি বলছি, সে সাড়ে ছয় ফুটের একটা লোক, সে তো খুব সহজেই লুকিয়ে থাকতে পারবে না। সুতরাং আমি বলতে চাই...
ক্লিনটন: হুম। আমরা এটার ওপর জোর দিচ্ছি। আমরা এটার ওপরই জোর দিচ্ছি।
২০০৯ সালের ২৪ এপ্রিল পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কংগ্রেসের শুনানিতে হিলারি ক্লিনটন একই ধরনের বক্তব্য দেন। সেখানে আরও সুনির্দিষ্টভাবে পাকিস্তান, পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, সৌদি আরব থেকে ওহাবি মতবাদ আমদানি করে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আফগান মুজাহিদীনদের উজ্জীবিত করা—এসব বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেন তিনি।
কংগ্রেসের শুনানিতে হিলারির বক্তব্যটি ছিল এরকম—
‘আসুন আমরা এখানে মনে রাখি...আজ আমরা যাদের সঙ্গে লড়াই করছি, আমরা তাদের কুড়ি বছর আগে অর্থায়ন করেছি...এবং আমরা এটা করেছি কারণ, আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে লড়াইয়ে একপ্রকার আটকে গিয়েছিলাম।’
‘তারা আফগানিস্তান আক্রমণ করেছিল...এবং আমরা তাদের মধ্যএশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেখতে চাইনি...এবং ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রণাধীন কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে প্রেসিডেন্ট রিগ্যান বলেছিলেন, আসুন আইএসআই ও পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সহায়তায় মুজাহিদীনদের নিয়োগ করি। এটা একটা চমৎকার আইডিয়া ছিল।’
‘এবং আমরা চেয়েছি তারা সৌদি আরব ও অন্য দেশ থেকে আসুক, ইসলামের ওহাবি ব্র্যান্ড নিয়ে আসুক। যাতে আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাজিত করতে পারি।’
‘সুতরাং একটি খুব জোরালো যুক্তি আছে যেটা হলো...এটা সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিপ্রেক্ষিতে খারাপ বিনিয়োগ ছিল না। কিন্তু আসুন আমরা যা বীজ বুনেছি, সে সম্পর্কে সতর্ক থাকি...কারণ আমরা এর ফল ভোগ করব।’
‘তাই আমরা তখন পাকিস্তান ছেড়ে চলে গেলাম...আমরা বললাম ঠিক আছে আপনি এখন এই স্টিংগারদের, যাদের আপনার দেশে রেখে যাচ্ছি, তাদের মোকাবিলা করুন।...আপনি সীমান্তে থাকা মাইনগুলোর ব্যবস্থা করুন এবং আমরা আপনার সঙ্গে আর কিছু করতে চাই না।...আসলে আমরা আপনাকে অনুদান দিচ্ছি।...তাই আমরা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও আইএসআই–এর সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছি।’
সূত্র: মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভ
দীর্ঘ কুড়ি বছরের রক্তপাতের পর আফগানিস্তানে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে তালেবান। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে আলোচনা। যেই তালেবানকে হটানোর জন্য ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, দুই দশক পর তাদের ভয়েই সব ছেড়েছুড়ে পালাতে হচ্ছে তাদের। এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় হিসেবেই দেখছেন অনেকে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, নাইন–ইলেভেন হামলার জন্য দায়ী আল–কায়েদাকে ধ্বংস করাই ছিল এই অভিযানের উদ্দেশ্য। সেটি সফল হয়েছে। এখন আফগান জনগণকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ দিতে হবে।
এই তালেবানকে তৈরিই করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সোভিয়েতদের হটাতে অর্থ, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা মুজাহিদীনই হয়ে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ। সেটি অবশ্য গোপন কিছু নয়। এই কথাগুলোই ২০০৯ ও ২০১০ সালে ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন কংগ্রেসে শুনানিতে ও এক সাক্ষাৎকারে কোনো রাখঢাক ছাড়াই বলেছিলেন।
২০১০ সালের ১৮ জুলাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন ছিলেন পাকিস্তান সফরে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসে ফক্স নিউজের সাংবাদিক গ্রেটা ভন সাস্টেরেনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি। তারই সংক্ষিপ্ত অনুবাদ তুলে ধরা হলো—
ম্যাডাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে বেশ ভালো লাগল। আর এটা তো পাকিস্তানে আপনার সঙ্গে দ্বিতীয় সফর।
ক্লিনটন: সেটাই। সঙ্গে আসার জন্য ধন্যবাদ।
ঠিক আছে। এখন তো আমরা দেশে যে ভয়ানক অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে নিপতিত, সেটা তো আর গোপন কিছু নয়। আপনি আমেরিকার জনগণকে কীভাবে বোঝাবেন যে, পাকিস্তানে এখানে পয়সা খরচ করা একটা বিষয়, যেটা আমরা করতে চাইছি?
ক্লিনটন: হুম, আমি মনে করি, এই কাজটা করার তিনটা উপায় আছেন বুঝলেন গ্রেটা। এক নম্বর, এটা সেই জায়গা, যেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রধান সন্ত্রাসী হুমকির সৃষ্টি হয়েছে। আর আমরা দেখেছি, কিছু হামলা প্রতিহত বা ভেস্তে দেওয়া গেছে, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটা ঘটেছে। আর এটা কেবল শুরু। আর আমাদের পাকিস্তানের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকতে হবে। আমাদের অবশ্য আফগানিস্তানকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে। এটা আমাদের জন্য আরও বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাতে আরও পয়সা বেরিয়ে যাবে।
দ্বিতীয়ত, আপনি যদি ভাবেন যে ৯ / ১১–এর পর এই বিষয়টা আমাদের জন্য কত বড় ব্যয়ের কারণ হয়েছে, এটি অবিশ্বাস্য রকমের এক অর্থনৈতিক ধাক্কা। আর এভাবে সন্ত্রাসবাদ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের শীর্ষে যখন থাকে, তখন তা আমাদের জন্য আরও মারাত্মক বিপর্যয়কর হবে। অতএব আমাদের সদাপ্রস্তুত থাকতে হবে এবং এটা যাতে না ঘটে, সে জন্য চেষ্টা করতে হবে।
তৃতীয়ত, আমি মনে করি, বিশ্বের এই অংশটার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক আমাদের অর্থনীতির জন্যই ভালো হবে। এটাই দীর্ঘমেয়াদে আমাদের লাভ বয়ে আনবে। আমি বোঝাতে চাইছি, আমাদের রপ্তানি নিয়ে একটা উদ্যোগ প্রেসিডেন্ট ওবামা ঘোষণা করেছেন। এই ঘোষণা অনুযায়ী আমরা রপ্তানি দ্বিগুণ করব। আমাদের দরকার বাজার সম্প্রসারণ। তাহলে কীভাবে আমরা বাজার সম্প্রসারণ করতে পারব? তাহলে আপনি জীবনযাপনের মান বাড়াতে পারবেন, আপনি নিরাপত্তাহীনতার নিরসন করতে পারবেন, যাতে জনগণ সত্যি সত্যি পণ্য কিনতে পারে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদন করে।
সুতরাং, সন্ত্রাসবাদ, অর্থনৈতিক বিষয়াদি, আরও বেশি বাজারে প্রবেশ—সবকিছু মিলেই পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে বোধগম্য।
তাহলে নিরাপত্তার ব্যাপারটা—আমার মনে হয় আমেরিকানরা সত্যিই নিরাপত্তা চান। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমরা সম্প্রতি টাইমস স্কয়ারের ঘটনা দেখেছি, সেটিরও মূল সূত্র এই দেশেই। কিন্তু আসলেই কি আমরা খেলাটার আগে বাড়তে পারছি? আসলেই কি আমরা নিরাপত্তার নামে যে পয়সটা খরচ হচ্ছে, সেটি কাজে লাগাতে পারছি? কারণ, আমরা সাম্প্রতিক সময়ে এসব ঘটনা দেখেছি এবং এমনকি তারাও—আমরা দেখছি এই দেশে সব সময় সহিংসতা লেগেই আছে।
ক্লিনটন: হুম, আর পাকিস্তানিরা নিজেরাও এর জন্য বড় মূল্য দিচ্ছে। বোমা হামলায় তাদের প্রচুর মানুষের প্রাণ গেছে। পাকিস্তানের জনগণের ওপর ভয়ানক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক জেঁকে বসেছে। যুদ্ধে তাদের সামরিক বাহিনীরও প্রচুর লোকক্ষয় হয়েছে। এটা খুব কঠিন ব্যাপার, আমি এখানে বসে আপনাকে বলতে চাইছি না যে, এটা তেমন কিছু নয়। কিন্তু, এখান থেকে চলে যাওয়াটা হবে একটা ভুল। আমরা এটা করেছি তো। এর আগে ফলাফল সম্পর্কে সবকিছু জেনেও আমরা পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম।
তাহলে আপনি বলছেন, আমরা যদি এখান থেকে চলে যাই, যে টাকা দেওয়া হচ্ছে তা বন্ধ করি, তাহলে নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় এটা আমাদের জন্য আরও খারাপ হবে?
ক্লিনটন: অবশ্যই, অবশ্যই। আমরা এমন একটা সম্পর্ক নির্মাণ করছি, যেটা আগে ছিল না। আমি বলছি, আমাদের সর্বশেষ সফরে আপনি তখন ছিলেন, তখন আমাদের ভয়ানক আস্থা সংকট ছিল। একদিক থেকে বললে, যুক্তরাষ্ট্রের তখন... সত্যি বললে, আমরা যার বিরুদ্ধে এখন যুদ্ধ করছি, তাদের সৃষ্টিতে আমরাই সহায়তা করেছি।
কীভাবে?
ক্লিনটন: কারণ, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায়, আমরা এই চমৎকার ধারণাটি নিয়েছিলাম যে, আমরা পাকিস্তানে যাব এবং মুজাহিদীনদের একটি বাহিনী তৈরি করব। তাদের স্টিংগার মিসাইল ও অন্য সবকিছু দিয়ে সমরসজ্জায় সজ্জিত করব। সোভিয়েতদের ধাওয়া করতে তারা আফগানিস্তানের ভেতরে ঢুকবে। আর আমরা সফল হয়েছিলাম। সোভিয়েতরা আফগানিস্তান ছেড়েছিল। আর তখন বলেছিলাম চমৎকার, বিদায়—এই বলেই সামরিক প্রশিক্ষণ পাওয়া লোকগুলো যারা আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের উগ্র ধার্মিক, তাদের ছেড়ে আসি। তাদের ভালো মতো অস্ত্রসজ্জিত অবস্থায় রেখে আসি। একটা জগাখিচুড়ি বেঁধে যায়। খোলাখুলি বললে, ওই সময় আমরা ব্যাপারটাকে পাত্তা দিইনি। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন দেখে আমরা এতটাই খুশি হই এবং ভাবি, ঠিক আছে, সুন্দর, আমরা তাহলে এখন ঠিকঠাক আছি। সামনে সবকিছু তাহলে খুব ভালোই হতে যাচ্ছে। এখন পেছনে ফিরে দেখুন; আমরা যেই লোকগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি, তাদের আমরা সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করেছি।
তাহলে, আমাদের যদি বিজয়ের একটা অনুভূতি আসতো, যেখানে আমরা এই হতাহতের ঘটনাগুলো দেখছি, আমরা দেখছি আফগানিস্তানে হতাহত বাড়ছে। আমরা যদি বিন লাদেন, ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে পারতাম; আমি জানি সেটা পারব, আমার মনে হয়, সেটা। তাহলে আমেরিকান জনগণকে এই প্রকল্পে আরও প্রতিশ্রুতিশীল হতে উৎসাহিত করবে। আপনি কি মনে করেন, পাকিস্তান সরকার ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে জানে?
ক্লিনটন: আমি মনে করি, এই সরকারের অংশগুলো এটা জানে। আমি আগেও এটা বলেছি। কিন্তু আমি মনে করি, আপনার দর্শকদের এটাও জানা জরুরি যে, আমরা পাকিস্তানের সহযোগিতায় আল–কায়েদার বিপুলসংখ্যক শীর্ষস্থানীয় নেতাকে পেয়েছি। এখন, আমরা বিন লাদেন বা জাওয়াহিরিকে (আইমান আল–জাওয়াহিরি) ধরতে পারিনি। কিন্তু আমরা তাদের শীর্ষস্থানীয় প্রচুর নেতাকে নির্ভুলভাবে শনাক্ত ও হত্যা করতে পেরেছি।
সুতরাং, আমাদের বলার মতো বিষয় আছে। আমি যেটা চাচ্ছি, সেটা এখনো ঘটেনি। কারণ ৯ / ১১–এ নিউইয়র্ক থেকে এক সিনেটর হিসেবে আমি ওই লোকগুলোকে চাই। আমি বলতে চাই, ওদের ধরতে না পারা পর্যন্ত আমি তৃপ্ত হব না। কিন্তু আমরা এরই মধ্যে অনেক অগ্রগতি করেছি। আমরা বর্তমানে সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্য গভীর সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি করেছি।
ঠিক আছে। এখন তাহলে আমরা সম্পতি উগান্ডাতে একটা ঘটনা দেখিছ। আমরা আল–শাবাব, আরেকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং মনে হচ্ছে আরেকটি অঞ্চলে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে। আমাদের সেখানেও জড়িয়ে পড়ার কি কোনো পথ আছে, আল–শাবাবের ব্যাপারে?
ক্লিনটন: হুম। আমরা এএমআইএসওএমকে সহায়তা দিয়েছি। ওটা আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি মিশন, যা ব্যবহার করে উগান্ডা ও বুরুন্ডির সেনাবাহিনী। আসল ব্যাপার হলো, আল শাবাব কাম্পালার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। কারণ, উগান্ডা সোমালিয়ার ভেতরে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আমরা এটাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করছি। আমরা সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা পাঠানোর কোনো চিন্তা করছি না। কিন্তু আমরা আফ্রিকানদের আফ্রিকার জন্য যুদ্ধ করতে সহায়তা করতে চাই এবং যারাই আল–শাবাবের বিরুদ্ধে লড়বে আমরা তাদের সহযোগিতা করব। এরা এখন শুধু সোমালিয়ার ভেতরেরই হুমকি নয়, আপনি সঠিক বলেছেন, এরা সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আপনি যেটা বলছিলেন সেখানে ফেরা যাক, পাকিস্তান সরকারের কিছু পক্ষ তাহলে জানে, ওসামা বিন লাদেন কোথায় আছেন?
ক্লিনটন: হুম। আমি তেমনটাই বিশ্বাস করি। এখন আমি...
আপনি এটা বিশ্বাস করেন। কেন আপনার এমন ধারণা? আমি বলতে চাইছি, কেন আপনি এমনটা ভাবছেন?
ক্লিনটন: হুম। আমার এই বিশ্বাসের কারণ আমি মনে করি, আমি যদি আমাদের সরকারকে একটি নেতৃত্বাস্থানীয় অবস্থানে রাখি এবং কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যদি কোথাও তৎপর থাকে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে প্রত্যন্ত কোনো অঞ্চলেও যদি হয়, কিছু শেরিফ, স্থানীয় পুলিশ, সরকারের কেউ না কেউ জানবে যে, সন্দেহজনক কিছু একটা ঘটছে। সুতরাং ঠিক এই কারণেই আমি মনে করি, কেউ না কউ এই সরকারের কিছু লোক, শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত, জানে বিন লাদেন কোথায়। এবং আমিও সেটা জানতে চাই।
আমরা কি আমাদের টাকা বা অন্য কিছুর ওপর জোর দিতে পারি না...
ক্লিনটন: অবশ্যই, অবশ্যই।
আমি বলছি, এ ব্যাপারে তথ্য পেতে? আমি বলছি, সে সাড়ে ছয় ফুটের একটা লোক, সে তো খুব সহজেই লুকিয়ে থাকতে পারবে না। সুতরাং আমি বলতে চাই...
ক্লিনটন: হুম। আমরা এটার ওপর জোর দিচ্ছি। আমরা এটার ওপরই জোর দিচ্ছি।
২০০৯ সালের ২৪ এপ্রিল পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কংগ্রেসের শুনানিতে হিলারি ক্লিনটন একই ধরনের বক্তব্য দেন। সেখানে আরও সুনির্দিষ্টভাবে পাকিস্তান, পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, সৌদি আরব থেকে ওহাবি মতবাদ আমদানি করে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আফগান মুজাহিদীনদের উজ্জীবিত করা—এসব বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেন তিনি।
কংগ্রেসের শুনানিতে হিলারির বক্তব্যটি ছিল এরকম—
‘আসুন আমরা এখানে মনে রাখি...আজ আমরা যাদের সঙ্গে লড়াই করছি, আমরা তাদের কুড়ি বছর আগে অর্থায়ন করেছি...এবং আমরা এটা করেছি কারণ, আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে লড়াইয়ে একপ্রকার আটকে গিয়েছিলাম।’
‘তারা আফগানিস্তান আক্রমণ করেছিল...এবং আমরা তাদের মধ্যএশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেখতে চাইনি...এবং ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রণাধীন কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে প্রেসিডেন্ট রিগ্যান বলেছিলেন, আসুন আইএসআই ও পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সহায়তায় মুজাহিদীনদের নিয়োগ করি। এটা একটা চমৎকার আইডিয়া ছিল।’
‘এবং আমরা চেয়েছি তারা সৌদি আরব ও অন্য দেশ থেকে আসুক, ইসলামের ওহাবি ব্র্যান্ড নিয়ে আসুক। যাতে আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাজিত করতে পারি।’
‘সুতরাং একটি খুব জোরালো যুক্তি আছে যেটা হলো...এটা সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিপ্রেক্ষিতে খারাপ বিনিয়োগ ছিল না। কিন্তু আসুন আমরা যা বীজ বুনেছি, সে সম্পর্কে সতর্ক থাকি...কারণ আমরা এর ফল ভোগ করব।’
‘তাই আমরা তখন পাকিস্তান ছেড়ে চলে গেলাম...আমরা বললাম ঠিক আছে আপনি এখন এই স্টিংগারদের, যাদের আপনার দেশে রেখে যাচ্ছি, তাদের মোকাবিলা করুন।...আপনি সীমান্তে থাকা মাইনগুলোর ব্যবস্থা করুন এবং আমরা আপনার সঙ্গে আর কিছু করতে চাই না।...আসলে আমরা আপনাকে অনুদান দিচ্ছি।...তাই আমরা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও আইএসআই–এর সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছি।’
সূত্র: মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভ
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪