নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়ায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে আইসিসি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ২২
Thumbnail image
নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। ছবি: এএফপি

গাজায় আগ্রাসন ও মানবতা–বিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত বছর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এরপর থেকেই মার্কিন কংগ্রেসে রিপাবলিকানরা আইসিসির নিন্দা করে আসছিলেন। তবে এবার সরাসরি আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট দিলেন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘ইললেজিটিমেট কোর্ট কাউন্টার অ্যাকশন অ্যাক্ট’ বা ‘অবৈধ আদালত বিরোধী আইন’–এর পক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। ২৪৩–১৪০ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।

এই আইনের আওতায় মার্কিন নাগরিক বা ইসরায়েলসহ তার মিত্র দেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক বা বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত যে কোনো বিদেশির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য নয়।

৪৫ জন ডেমোক্র্যাট এবং ১৯৮ জন রিপাবলিকান এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। কোনো রিপাবলিকান এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেননি। নতুন কংগ্রেসের অধিবেশন শুরুর পর এটিই প্রথম ভোট, যার ফলাফল নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদের ইসরায়েলের প্রতি জোরালো সমর্থনকেই তুলে ধরে।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বায়ার্ন মাস্ট ভোটের আগে কংগ্রেসে বলেন, ‘আমরা এই আইন পাস করছি, কারণ একটি ক্যাঙারু কোর্ট আমাদের মহান মিত্র ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে চায়।’

এর আগে ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের তদন্তে আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

২০১৮ সালে আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা ও অন্য কর্মকর্তাদের ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছিল। সেই সময় তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। নতুন প্রস্তাবে আইসিসির কাজে যারা সহায়তা করবেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে আইসিসির প্রেসিডেন্ট তোমোকো আকানে ১২৫টি সদস্য দেশকে জানান, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত করবে এবং এর অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।

আইসিসি জানায়, তারা যথেষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাঁদের উদ্দেশ্য গাজায় চলমান আগ্রাসন ও সংঘাত বন্ধ করা।

ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। নতুন কংগ্রেসে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটের নেতা জন থুন জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবটি দ্রুত অনুমোদন পাবে। আর দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের শপথের পরেই এটি আইনে পরিণত করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত