অনলাইন ডেস্ক
ডোনাল্ড রামসফেল্ড। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে ইরাক যুদ্ধের প্রধান কারিগর ছিলেন। ৮৮ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর তারিখ জানানো হয়নি।
ইরাক ও আফগানিস্তান অভিযান প্রায় একক সিদ্ধান্তে এক হাতে তদারকি করেছিলেন রামসফেল্ড। ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদাম হোসেনের হাতে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র আছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এই ধরনের অস্ত্র থাকার পক্ষে প্রমাণের অভাব থাকা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট বুশকে পীড়াপিড়ি শুরু করেন তিনি। এ সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি ইরাকের অস্ত্র সম্পর্কে ‘জ্ঞাত অজানা’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছিলেন। ওই সময় এই কথাটির জন্যই বেশ আলোচনায় আসেন রামসফেল্ড।
রামসফেল্ড, ভিয়েতনাম যুদ্ধ যুগের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারারের পরেই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। পেন্টাগনের নেতৃত্বে ক্যারিশমা এবং গ্ল্যামার এনেছিলেন তিনি। তাঁর সময় বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতি বুশ প্রশাসনের যুদ্ধংদেহী দৃষ্টিভঙ্গির সাক্ষাৎ মুখ হয়ে উঠেছিল পেন্টাগন।
রামসফেল্ডের নেতৃত্বে মার্কিন বাহিনী খুব দ্রুতই ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে পরাজিত করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র। সুন্নি ও শিয়া মুসলমানদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত–সহিংসতায় দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। এমন পরিস্থিতিতে রামসফেল্ড তাঁর পদ ছাড়ার অনেক পরে ২০১১ সালে ইরাক ছাড়ে মার্কিন সেনারা।
২০০৩ সালের মার্চে ইরাক আক্রমণের আগে বিষয়টি বিশ্ব দরবারে জোরালোভাবে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন রামসফেল্ড। তিনি ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ইরাকি অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করতে শুরু করেন। অথচ ইরাকে কখনোই এমন অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
একমাত্র ম্যাকনামারা রামসফেল্ডের চেয়ে দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। রামসফেল্ড হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফের দায়িত্বও পালন করেছেন। আর জর্জ বুশের সরকারে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কিছু সামরিক কর্মকর্তা এবং কংগ্রেস সদস্যের সঙ্গে রূঢ় আচরণ এবং বুশ প্রশাসনের অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায়ই বিরোধে জড়ানোর জন্য আলোচনায় ছিলেন রামসফেল্ড। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়েছেন তিনি। ইউরোপের মার্কিন মিত্রদেরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলেন।
২০০৪ সালে, বাগদাদের বাইরে আবু গারিব কারাগারে মার্কিন কর্মীদের হাতে কারাবন্দীদের অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর দুইবার পদত্যাগপত্র দেন রামসফেল্ড। কিন্তু বুশ দুবারই প্রত্যাখ্যান করেন। আবু গারিব কারাগারের সেই নৃশংস বীভৎস দৃশ্য জনসম্মুখে আসার পর বিশ্বব্যাপী তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
রামসফেল্ড ব্যক্তিগতভাবে বন্দীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিষ্ঠুর অমানবিক কৌশল অবলম্বনের অনুমতি দিয়েছিলেন। কিউবার গুয়ানতানামো বে-এর মার্কিন নৌঘাঁটিতে রামসফেল্ডের অধীনে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে ইরাক এবং বিদেশি সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা কুড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বুশের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯৭০–এর দশকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং ফোর্ডের শাসনামলে রামসফেল্ডের হয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। সেই থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা।
বারবার সমালোচনার জন্ম দেওয়া এবং ইরাক যুদ্ধের পর রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও ব্যাপকভাবে জনসমর্থনের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬ সালের নভেম্বরে রামসফেল্ডকে সরিয়ে দেন বুশ। ডিক চেনির পরামর্শেই প্রেসিডেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ইরাক যুদ্ধের কারণে ভোটারদের মধ্যে তখন ক্ষোভ ঘনীভূত হচ্ছিল। মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটরা। এমন পরিস্থিতিতে রামসফেল্ড বুশের বাকি মেয়াদেও থেকে যাচ্ছেন এমন ঘোষণা আসার ক’দিন পরই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের নভেম্বরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন রবার্ট গেটস। মৃদুভাষী সিআইএর এ সাবেক পরিচালক দায়িত্ব নেওয়ার পর ইরাকে কৌশলগত ও সামরিক নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন।
অনেক ইতিহাসবিদ এবং সামরিক বিশেষজ্ঞ ইরাক বিপর্যয়ের জন্য রামসফেল্ডকেই দায়ী করেন। রামসফেল্ড অনেক জেনারেলের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ফলে ইরাকে মার্কিন বাহিনী কখনোই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ এবং এর ফলাফল মেনে নিতেও অনেক দেরি করে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
রামসফেল্ডের অধীনে মার্কিন আগ্রাসনের সেনাপতি এল পল ব্রেমার দ্রুত দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন: ইরাকি সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করে হাজার হাজার সশস্ত্র লোককে রাস্তায় নেমে আসার সুযোগ করে দেন। অথচ সিদ্ধান্ত ছিল ইরাকে শান্তি ফেরাতে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা হবে। দ্বিতীয়টি হলো: ইরাকের সরকার থেকে পূর্বের ক্ষমতাসীন বাথ পার্টির এমনকি জুনিয়র সদস্যদেরও নিষিদ্ধ করা। মূলত তাঁরাই এতদিন সরকার চালিয়ে এসেছেন।
নাইন–ইলেভেন হামলার জন্য দায়ী আল কায়েদা নেতা এবং ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার উচ্ছেদ করতে ২০০১ সালে আফগান অভিযানের নেতৃত্বেও ছিলেন রামসফেল্ড। এখানেও ইরাকের মতোই একটি ছোট বাহিনীকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। তালেবানকে হটাতে পারলেও আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র।
রামসফেল্ডের আমলে মার্কিন বাহিনী ওসামা বিন লাদেনের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি। আল-কায়েদার প্রধানকে ২০১১ সালে মেরিন সিলের অভিযানে হত্যা করা হয়। তখন ক্ষমতায় প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
রামসফেল্ড তাঁর সংবাদ সম্মেলনগুলোর জন্য প্রায়ই আলোচনায় উঠে আসতেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরে প্রাণবন্ত হয়ে উঠত তাঁর সাংবাদ সম্মেলনগুলো।
২০০২ সালে ইরাক সন্ত্রাসীদের ব্যাপক ধ্বংসের অস্ত্র দেবে কি–না সে সম্পর্কে বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন: বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদন যখন একটা বিষয়ে বলা হয় যে কিছুই ঘটেনি। সে বিষয়টি নিয়েই সব সময় আমার আগ্রহ থাকে। কারণ আমরা জানি, জ্ঞাত অজানা বলে একটা বিষয় আছে। এমন কিছু বিষয় আছে যা আমাদের জানতে হয়। আমরা আরও জানি যে, জ্ঞাত অজানাও রয়েছে। এর মানে সেখানে এমন কিছু আছে যা আমরা জানি না। কিন্তু এমন কিছু অজানা বিষয় আছে যা আমাদের ধারণার বাইরে। আমরা যেটা জানি না সেটা জানি না।
রামসফেল্ডের এই বক্তব্য ওই সময় বিদগ্ধদের একটি মনোসমীক্ষার কৌশলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এই কৌশল ব্যবহার করে। এটি বলে জোহারির জানালা।
রামসফেল্ড পরে তাঁর স্মৃতিকথার নামই রাখেন ‘জ্ঞাত এবং অজানা’।
এরপর ২০০৩ সালের এপ্রিলে মার্কিন সেনারা ইরাকি রাজধানী বাগদাদ দখলের পর যখন আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি হয় তখন রামসফেল্ড সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওখানে কিছু একটা ঘটছে।
সরকারি পদ থেকে সরানোর পর বাকি জীবন রামসফেল্ড ছিলেন একজন সফল এবং ধনী ব্যবসায়ী। দুটি ফরচুন ৫০০ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে, রামসফেল্ড রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার জন্য মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলে।
রামসফেল্ড নৌবাহিনীর পাইলট, মার্কিন ন্যাটো দূত এবং মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
ডোনাল্ড রামসফেল্ড। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে ইরাক যুদ্ধের প্রধান কারিগর ছিলেন। ৮৮ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর তারিখ জানানো হয়নি।
ইরাক ও আফগানিস্তান অভিযান প্রায় একক সিদ্ধান্তে এক হাতে তদারকি করেছিলেন রামসফেল্ড। ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদাম হোসেনের হাতে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র আছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এই ধরনের অস্ত্র থাকার পক্ষে প্রমাণের অভাব থাকা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট বুশকে পীড়াপিড়ি শুরু করেন তিনি। এ সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি ইরাকের অস্ত্র সম্পর্কে ‘জ্ঞাত অজানা’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছিলেন। ওই সময় এই কথাটির জন্যই বেশ আলোচনায় আসেন রামসফেল্ড।
রামসফেল্ড, ভিয়েতনাম যুদ্ধ যুগের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারারের পরেই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। পেন্টাগনের নেতৃত্বে ক্যারিশমা এবং গ্ল্যামার এনেছিলেন তিনি। তাঁর সময় বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতি বুশ প্রশাসনের যুদ্ধংদেহী দৃষ্টিভঙ্গির সাক্ষাৎ মুখ হয়ে উঠেছিল পেন্টাগন।
রামসফেল্ডের নেতৃত্বে মার্কিন বাহিনী খুব দ্রুতই ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে পরাজিত করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র। সুন্নি ও শিয়া মুসলমানদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত–সহিংসতায় দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। এমন পরিস্থিতিতে রামসফেল্ড তাঁর পদ ছাড়ার অনেক পরে ২০১১ সালে ইরাক ছাড়ে মার্কিন সেনারা।
২০০৩ সালের মার্চে ইরাক আক্রমণের আগে বিষয়টি বিশ্ব দরবারে জোরালোভাবে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন রামসফেল্ড। তিনি ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ইরাকি অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করতে শুরু করেন। অথচ ইরাকে কখনোই এমন অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
একমাত্র ম্যাকনামারা রামসফেল্ডের চেয়ে দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। রামসফেল্ড হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফের দায়িত্বও পালন করেছেন। আর জর্জ বুশের সরকারে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কিছু সামরিক কর্মকর্তা এবং কংগ্রেস সদস্যের সঙ্গে রূঢ় আচরণ এবং বুশ প্রশাসনের অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায়ই বিরোধে জড়ানোর জন্য আলোচনায় ছিলেন রামসফেল্ড। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়েছেন তিনি। ইউরোপের মার্কিন মিত্রদেরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলেন।
২০০৪ সালে, বাগদাদের বাইরে আবু গারিব কারাগারে মার্কিন কর্মীদের হাতে কারাবন্দীদের অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর দুইবার পদত্যাগপত্র দেন রামসফেল্ড। কিন্তু বুশ দুবারই প্রত্যাখ্যান করেন। আবু গারিব কারাগারের সেই নৃশংস বীভৎস দৃশ্য জনসম্মুখে আসার পর বিশ্বব্যাপী তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
রামসফেল্ড ব্যক্তিগতভাবে বন্দীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিষ্ঠুর অমানবিক কৌশল অবলম্বনের অনুমতি দিয়েছিলেন। কিউবার গুয়ানতানামো বে-এর মার্কিন নৌঘাঁটিতে রামসফেল্ডের অধীনে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে ইরাক এবং বিদেশি সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা কুড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বুশের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯৭০–এর দশকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং ফোর্ডের শাসনামলে রামসফেল্ডের হয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। সেই থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা।
বারবার সমালোচনার জন্ম দেওয়া এবং ইরাক যুদ্ধের পর রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও ব্যাপকভাবে জনসমর্থনের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬ সালের নভেম্বরে রামসফেল্ডকে সরিয়ে দেন বুশ। ডিক চেনির পরামর্শেই প্রেসিডেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ইরাক যুদ্ধের কারণে ভোটারদের মধ্যে তখন ক্ষোভ ঘনীভূত হচ্ছিল। মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটরা। এমন পরিস্থিতিতে রামসফেল্ড বুশের বাকি মেয়াদেও থেকে যাচ্ছেন এমন ঘোষণা আসার ক’দিন পরই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের নভেম্বরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন রবার্ট গেটস। মৃদুভাষী সিআইএর এ সাবেক পরিচালক দায়িত্ব নেওয়ার পর ইরাকে কৌশলগত ও সামরিক নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন।
অনেক ইতিহাসবিদ এবং সামরিক বিশেষজ্ঞ ইরাক বিপর্যয়ের জন্য রামসফেল্ডকেই দায়ী করেন। রামসফেল্ড অনেক জেনারেলের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ফলে ইরাকে মার্কিন বাহিনী কখনোই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ এবং এর ফলাফল মেনে নিতেও অনেক দেরি করে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
রামসফেল্ডের অধীনে মার্কিন আগ্রাসনের সেনাপতি এল পল ব্রেমার দ্রুত দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন: ইরাকি সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করে হাজার হাজার সশস্ত্র লোককে রাস্তায় নেমে আসার সুযোগ করে দেন। অথচ সিদ্ধান্ত ছিল ইরাকে শান্তি ফেরাতে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা হবে। দ্বিতীয়টি হলো: ইরাকের সরকার থেকে পূর্বের ক্ষমতাসীন বাথ পার্টির এমনকি জুনিয়র সদস্যদেরও নিষিদ্ধ করা। মূলত তাঁরাই এতদিন সরকার চালিয়ে এসেছেন।
নাইন–ইলেভেন হামলার জন্য দায়ী আল কায়েদা নেতা এবং ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার উচ্ছেদ করতে ২০০১ সালে আফগান অভিযানের নেতৃত্বেও ছিলেন রামসফেল্ড। এখানেও ইরাকের মতোই একটি ছোট বাহিনীকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। তালেবানকে হটাতে পারলেও আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র।
রামসফেল্ডের আমলে মার্কিন বাহিনী ওসামা বিন লাদেনের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি। আল-কায়েদার প্রধানকে ২০১১ সালে মেরিন সিলের অভিযানে হত্যা করা হয়। তখন ক্ষমতায় প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
রামসফেল্ড তাঁর সংবাদ সম্মেলনগুলোর জন্য প্রায়ই আলোচনায় উঠে আসতেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরে প্রাণবন্ত হয়ে উঠত তাঁর সাংবাদ সম্মেলনগুলো।
২০০২ সালে ইরাক সন্ত্রাসীদের ব্যাপক ধ্বংসের অস্ত্র দেবে কি–না সে সম্পর্কে বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন: বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদন যখন একটা বিষয়ে বলা হয় যে কিছুই ঘটেনি। সে বিষয়টি নিয়েই সব সময় আমার আগ্রহ থাকে। কারণ আমরা জানি, জ্ঞাত অজানা বলে একটা বিষয় আছে। এমন কিছু বিষয় আছে যা আমাদের জানতে হয়। আমরা আরও জানি যে, জ্ঞাত অজানাও রয়েছে। এর মানে সেখানে এমন কিছু আছে যা আমরা জানি না। কিন্তু এমন কিছু অজানা বিষয় আছে যা আমাদের ধারণার বাইরে। আমরা যেটা জানি না সেটা জানি না।
রামসফেল্ডের এই বক্তব্য ওই সময় বিদগ্ধদের একটি মনোসমীক্ষার কৌশলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এই কৌশল ব্যবহার করে। এটি বলে জোহারির জানালা।
রামসফেল্ড পরে তাঁর স্মৃতিকথার নামই রাখেন ‘জ্ঞাত এবং অজানা’।
এরপর ২০০৩ সালের এপ্রিলে মার্কিন সেনারা ইরাকি রাজধানী বাগদাদ দখলের পর যখন আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি হয় তখন রামসফেল্ড সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওখানে কিছু একটা ঘটছে।
সরকারি পদ থেকে সরানোর পর বাকি জীবন রামসফেল্ড ছিলেন একজন সফল এবং ধনী ব্যবসায়ী। দুটি ফরচুন ৫০০ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে, রামসফেল্ড রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার জন্য মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলে।
রামসফেল্ড নৌবাহিনীর পাইলট, মার্কিন ন্যাটো দূত এবং মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেও সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে যৌনসঙ্গম ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছে মুম্বাই হাইকোর্ট। আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সম্মতিকে বৈধতার জন্য যুক্তি হিসেবে প্রদর্শন গ্রহণযোগ্য হবে না।
৩ ঘণ্টা আগেএখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে। অতিরিক্ত ভিড় থেকে মসজিদের কার্যক্রম বিঘ্ন হওয়া ঠেকাতে এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্য সংরক্ষণের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেকোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত
৫ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন প্রায় ৯০ জন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা। অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনবিরোধী সহিংসতার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে তাঁরা এ আহ্বান জানান। বার্তা
৬ ঘণ্টা আগে